আরজি কর কাণ্ডে হাইকোর্টের প্রশ্নে বিদ্ধ রাজ্য, নির্দেশ এখনই সিবিআই তদন্তেরও

R G Kar Case Hearing: মোট পাঁচটি জনস্বার্থ মামলা এদিন ওঠে ডিভিশন বেঞ্চের কাছে। যেখানে আদালতের প্রশ্নে বিদ্ধ হল রাজ্য। একই সঙ্গে সেই মামলায় সিবিআই তদন্তেরও নির্দেশ দিল আদালত।

আরজি কর হাসপাতালের চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের হয়েছিল একাধিক জনস্বার্থ মামলা। মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম ও বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চে শুনানির জন্য ওঠে মামলাগুলি। মোট পাঁচটি জনস্বার্থ মামলা এদিন ওঠে ডিভিশন বেঞ্চের কাছে। যেখানে আদালতের প্রশ্নে বিদ্ধ হল রাজ্য। একই সঙ্গে সেই মামলায় সিবিআই তদন্তেরও নির্দেশ দিল আদালত। আদালতের নজরদারিতে তদন্ত এবং তার পর তিন সপ্তাহ পর সেই মামলার ফের শুনানি হবে বলে এদিন জানিয়ে দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি।

গত শুক্রবার আরজি কর মেডিক্যাল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চার তলার সেমিনার রুম থেকে উদ্ধার হয় এক ট্রেনি চিকিৎসকের ক্ষতবিক্ষত দেহ। তাঁকে ধর্ষণ করা হয়েছে বলেও জানা গিয়েছে ময়নাতদন্তের রিপোর্টে। সেই ঘটনায় তোলপাড় গোটা রাজ্য। ইতিমধ্যেই সেই ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছে এক সিভিক পুলিশ। আরজি কর কলেজের চিকিৎসককে খুনের প্রতিবাদে আন্দোলনে নেমেছেন রাজ্য জুড়ে সমস্ত মেডিক্যাল কলেজের পড়ুয়া, চিকিৎসক, জুনিয়র ডাক্তারেরা। যার জেরে গোটা রাজ্যেই কার্যত অচল হয়ে পড়েছে চিকিৎসা ব্যবস্থা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, রবিবারের এই মামলার তদন্তে অগ্রগতি না হলে তদন্তভার দেওয়া হবে সিবিআইএয়ের উপরে। এই পরিস্থিতিতে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে উঠল আরজি কর সংক্রান্ত একাধিক জনস্বার্থ মামলা।

আরও পড়ুন: আরজি কর কাণ্ডে ধৃত সঞ্জয় কীভাবে সিভিক ভলান্টিয়ার হলো? কীভাবে নিয়োগ হয় এদের?

এদিন আরজি কর সংক্রান্ত একটি জনস্বার্থ মামলায় আইনজীবী ফিরোজ এডুলজি আদালতে প্রশ্ন তোলেন,“কামদুনিতে ধর্ষণ এবং খুনের মামলা যে ভাবে সাজানো হয়েছিল, সেই একই কায়দায় আরজি করের মামলা সাজানো হচ্ছে।” রাজ্যের তরফে অবশ্য প্রাথমিক ভাবে সব উত্তর দেওয়ার জন্য বুধবার সকাল পর্যন্ত সময় চাওয়া হয়। জনস্বার্থ মামলার আইনজীবীদের আশঙ্কা, ওই মামলার তথ্যপ্রমাণ নষ্ট করা হতে পারে। শুভেন্দু অধিকারীর তরফে যে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয়েছিল, তার আইনজীবী আদালতে জানান, “৩০ মিনিটের মধ্যে এক জনের পক্ষে ওই ঘটনা ঘটানো সম্ভব নয়। রবিবার পর্যন্ত দেখা হবে বলা হচ্ছে। তার পরে সিবিআইকে তদন্তভার দেওয়া হবে। কিন্তু প্রতি মুহূর্তে তথ্যপ্রমাণ নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।” একই আশঙ্কার কথা প্রকাশ করেছেন আদালতে নিহত চিকিৎসকের পরিবারের আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যও। তিনি বলেন, “ময়নাতদন্তের রিপোর্ট ইঙ্গিত করছে এক জনের পক্ষে ওই ধরনের জঘন্য অপরাধ করা সম্ভব নয়। আরও কেউ জড়িত রয়েছেন।” কেন সিবিআইকে দ্রুত তদন্তভার দেওয়া হল না, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন বিকাশরঞ্জন। তিনি বলেন, “কেন সিবিআইকে দেওয়ার জন্য আরও সময় দেওয়া হবে? তথ্য নষ্ট হওয়ার যথেষ্ট আশঙ্কা রয়েছে।” কেন্দ্রের আইনজীবী আদালতকে জানান, সিবিআই এখনই তদন্ত করতে প্রস্তুত।

জনস্বার্থ মামলার প্রেক্ষিতে একাধিক প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে এই আরজি কর মামলা নিয়ে। সোমবার নিহতের বাড়িতে গিয়েছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিহতের পরিবারের সঙ্গে দেখা করার পর সাংবাদিকদের মুখোমুখী হয়ে মুখ্যমন্ত্রী কার্যত মেনে নেন, পরিবারের দাবি অনুযায়ী, এই ঘটনায় ভিতরের কেউ জড়িয়ে থাকতেই পারে। তা নিয়ে তদন্ত হওয়া প্রয়োজন বলেই জানিয়েছিলেন তিনি। এদিন আদালতে প্রধান বিচারপতি জানতে চান, নিহত চিকিৎসক যে আত্মহত্যা করেছেন, এই কথা কে বলেছিলেন? সেই প্রশ্নর উত্তরে নিহতের পরিবারের আইনজীবী বিকাশরঞ্জন জানান, , “প্রথমে পরিবারকে কেউ ফোন করে বলেন, আপনাদের মেয়ে অসুস্থ। তার পরে আবার ফোন করে বলা হয়, আপনাদের মেয়ে আত্মহত্যা করেছেন। কিন্তু ময়নাতদন্ত তা বলছে না। ঘটনাস্থলে ওই মহিলা চিকিৎসককে এমন অবস্থায় দেখা যায়, সাধারণ ভাবে যে কেউ বলবেন এটা কোনও ভাবেই আত্মহত্যা হতে পারে না। মেয়ের মৃত্যুর খবর পেয়ে হাসপাতালে গেলে চিকিৎসকের পরিবারকে হাসপাতালে ৩ ঘণ্টা বসিয়ে রাখা হয় বলেও দাবি করেন বিকাশরঞ্জন। এই বিভ্রান্তির উত্তরে অবশ্য রাজ্য সরকার জানিয়েছে, প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের বেঞ্চে রাজ্য সরকার জানান, ফোন করা নিয়ে পরিবার যে দাবি করছে তা ঠিক। শুক্রবার সকালে মৃতার পবিবারকে দু’টো ফোন করা হয়েছিল। হাসপাতালের সহকারী সুপারই ফোন করে খবর দিয়েছিলেন। তবে ফোনে কী বলা হয়েছিল, তা আদালতে কিছু বলেনি রাজ্য। কেস ডায়েরিতে সেই বিষয় নিয়ে কিছু রয়েছে কি না, তা-ও এখনই স্পষ্ট নয়।

এদিকে, আইনজীবী এডুলজি তদন্তপ্রক্রিয়া থেকে কলকাতা পুলিশের কমিশনার বিনীত গোয়েলকে সরানোর জন্য হাই কোর্টে আর্জি জানান। কামদুনির ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে তাঁর সওয়াল, “কামদুনির ঘটনার সময় বিনীত গোয়েল সিআইডির আইজি ছিলেন। আরজি কর মামলাও একই কায়দায় সাজাচ্ছেন বিনীত। তাঁকে এই তদন্ত থেকে সরানো হোক।” একাধিক অভিযোগের প্রেক্ষিতে রাজ্যের তরফে আদালতে বলা হয়, “তদন্ত করছে পুলিশ। কিছু লুকিয়ে রাখা হচ্ছে না। সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে, আরও এক জন জড়িত। কিন্তু এর কোনও সত্যতা এখনও পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।” রাজ্যের তরফে এ-ও জানানো হয় যে, তদন্ত নিয়ে তারা বিস্তারিত রিপোর্ট দিতে প্রস্তুত। তবে আদালতের কাছে সময় চেয়ে রাজ্য জানায়, বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় সকল প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে। তদন্তের গতিপ্রকৃতি জানিয়ে বলা হয়, আরজি করের ঘটনায় ইতিমধ্যেই ৩৫-৪০ জনের বয়ান নথিভুক্ত করা হয়েছে। একই সঙ্গে কলকাতা হাই কোর্টের বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যেই আরজি কর মামলার কেস ডায়েরি আদালতে জমা করা হয়েছে বলেও দাবি করেছে রাজ্য সরকার। প্রধান বিচারপতির এজলাসে মঙ্গলবার আরজি করের চিকিৎসক মৃত্যু নিয়ে পাঁচটি জনস্বার্থ মামলার শুনানি ছিল। সকালে সেই শুনানিতে এই মামলা সংক্রান্ত কেস ডায়েরি দুপুর ১টার মধ্যে আদালতে জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রধান বিচারপতি। সেই মতোই রিপোর্ট জমা পড়ে। শুধু কেস ডায়েরি নয়, আরজি করের সদ্যপ্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের পদত্যাগপত্র, নতুন নিয়োগপত্রও জমা করা হয় হাই কোর্টে। পুলিশ রিপোর্ট দিয়ে ঘটনার তদন্তের ব্যাখ্যা করে আদালতে। কোন কোন সময়ে কী কী করা হয়েছিল, তা আদালতে জানায় রাজ্য।

রাজ্য সরকার আদালতে এদিন জানায়, শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ টালা থানায় খবর পাঠানো হয় আরজি কর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে। খবর পেয়েই সকাল ১১টা নাগাদ হোমিসাইড বিভাগ হাসপাতালে পৌঁছয়। সাড়ে ১১টার মধ্যেই পুলিশের শীর্ষ আধিকারিকেরা হাসপাতালে যান। ওই সময়ের মধ্যে ফরেন্সিক টিম হাসাপাতালের সেমিনার রুমে যায়। তার পর বিকেলে শিয়ালদহ কোর্টের বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের অনুমতিতে প্রাথমিক অনুসন্ধান করা হয়। একই সঙ্গে রাজ্যের উদ্দেশে একাধিক প্রশ্ন এদিন ছুড়ে দিয়েছে আদালত। প্রশ্ন উঠেছে, কেন ঘটনাস্থলে পর্যাপ্ত সিসি ক্যামেরা ছিল না। তার উত্তরে রাজ্য সরকারের তরফে আইনজীবী জানান, গোটা ক্যাম্পাস জুড়ে সিসিটিভি বসানো সম্ভব নয়। একই সঙ্গে রাজ্য জানিয়েছে, সমাজমাধ্যমে ভুল তথ্য ছড়ানো হচ্ছে। সরকার সবরকম চেষ্টা চালাচ্ছে। তদন্ত চলছে। মূল অভিযুক্ত গ্রেফতার হয়েছে। এর পাশাপাশি তথ্যপ্রমাণ যে নষ্ট হবে না এবং তদন্ত স্বচ্ছ ভাবে হবে, তা নিশ্চিক করার কথা বলা হয় রাজ্যকে। তার প্রেক্ষিতে বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য জানান, তাঁর একজন প্রাক্তন সরকারি ফরেনসিক বিশেষজ্ঞর সঙ্গে গতকাল কথা হয়েছে তিনি জানিয়েছেন এই অপরাধ একজনের পক্ষে করা সম্ভব নয়। আদালত জানতে চাইলে সেই নাম তিনি বলতে পারেন। রাজ্যের তরফে জানানো হয়েছে, পরিবারের তরফে তদন্ত নিয়ে যে অনুরোধ রাখা হয়েছে তা মেনে চলছে পুলিশ। প্রতিদিন একজন সিনিয়র পুলিশ অফিসার পরিবারের সঙ্গে সমন্বয়ে রেখে চলেছে। তদন্তের জন্য কোন সিট গঠন করা হয়েছে কিনাও এদিন রাজ্যের কাছে জানতে চায় আদালত।

ওই চিকিৎসকের খুনকে আত্মহত্যা বলে দাবি করার প্রেক্ষিতে এদিন প্রধান বিচারপতি রাজ্যকে প্রশ্ন করে,এটা কি সত্য পুলিশ প্রথম বলে আত্মহত্যা করেছে? রাজ্য তার উত্তরে জানায়, এটা সত্য নয়। পরিবারকে হাসপাতালে আসতে বলা হয় এবং সেখানে পরিবারকে জানানো হয় আত্মহত্যার কথা। তার পরেই হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি জানান, তাহলে এটা স্পষ্ট প্রশাসন পরিবারের সঙ্গে ছিল না। আদালতের পর্যবেক্ষণ, নিহত ঐ চিকিৎসকের সঙ্গে এরকম ব্যবহার করা যেতে পারে না। সেখানে কিছুটা হলেও সুবিবেচনা দেখানো উচিত ছিল। কোনও সংশোধনাগার থেকে আসামিকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করা এবং আসামীর মৃত্যুর খবর জানানোর মতন ব্যবহার করা যায় না ওই চিকিৎসকের সঙ্গে। রাজ্য এদিন আদালতকে জানিয়েছে, ঘটনার দিন সকাল ৯:৩০ নাগাদ ফোন করা হয় হাসপাতালের তরফে। অ্যাসিস্টান্ট সুপার ফোন করে দু'বার। টালা হাসপাতাল ফাঁড়িতে সকাল ১০:১০ নাগাদ খবর আসে। টালা থানা জানতে পারে ১০:৩০ নাগাদ। আইসি খবর পাঠায় ডেপুটি কমিশনার -সহ শীর্ষ অফিসারদের। বেলা ১১টার সময় হোমিসাইড টিম পৌঁছায় হাসপাতালে। সেসময়ে হাসপাতালে দেড়শো লোকের জমায়েত হয়ে গিয়েছে। কারা জমায়েত করেছিল, তার সদুত্তর দিতে পারেনি রাজ্য। সোদপুর থেকে নিহতের পরিজনেরা আসেন বেলা একটা নাগাদ। রাজ্য জানিয়েছে, ফরেনসিক টিম ততক্ষণে সেমিনার রুমে কাজ করছিল। অভিভাবকের অভিযোগ পাওয়ার পরেই শীর্ষ আধিকারিকদের জানিয়ে ১০ মিনিটের মধ্যে তাঁদের নিয়ে যাওয়া হয় সেমিনার হলে। সেখানে চেয়ার বসতে দেওয়া। তখন ফরেনসিক চলছিল। ৩ ঘন্টা অপেক্ষা করেছে দেহ দেখতে দেওয়ার জন্য, এটা মিথ্যা। তখন জনতার মধ্যে থেকে দাবি ওঠে দেহ ছাড়া হবে না। যা হবে এখানেই হবে। দাবি ওঠে জুডিসিয়ারি মাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে ইনকোয়েস্ট হবে। দুপুর ১টা থেকে ২টো পর্যন্ত চলে এটা। ৩:৫৫ অভিভাবকেরা লিখিত ভাবে জানায় ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে ইনকোয়েস্ট হতে হবে। ইনকোয়েস্ট রিপোর্টে সই করেন মৃতার মা। রাজ্য জানিয়েছে, জমায়েত থেকে বিক্ষোভ দেখানো হচ্ছিল সেসময়। ফলে এই সময়ে দেহ বার করা যায়নি। মাজিস্ট্রেট উপস্থিতিতে ইনকোয়েস্ট হয়। ভিডিওগ্রাফি হয়েছে। এরপর দেহ পোস্টমর্টেমে যায় ৫:৩০ নাগাদ। এই সময় রাজনৈতিক দল ঘটনায় ঢুকে পড়ে। ব়্যাফ ডাকতে হয় হাসপাতালে।

এর পরেই প্রধান বিচারপতি প্রশ্ন করেন, ময়নাতদন্ত ৬:১০-৭:১০ নাগাদ হয় কিনা? কেন দেরি জানতে চেয়ে আদালতের প্রশ্ন, এটা কোনও রাস্তায় পড়ে থাকা দেহ নয় এটা। সেক্ষেত্রে প্রিন্সিপ্যাল বা সুপার কেন কোনও অভিযোগ করেননি, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে আদালত। রাজ্য তার প্রেক্ষিতে জানায়, কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দেরি না করে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে বলেও জানায় রাজ্য। সিট ছ'জন ডাক্তারের ছ'টি বিবৃতি রেকর্ড করেছে বলেও জানানো হয়। সব মিলিয়ে মোট ২৭টি বয়ান রেকর্ড করা হয়। এ নিয়ে আদালতের একগুচ্ছ প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয় রাজ্যকে। এদিকে এই মামলায় মৃতার পরিবারকে যুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। আরজি কর-কাণ্ডে দায়ের হওয়া একাধিক জনস্বার্থ মামলার শুনানি চলাকালীন এদিন সোজা প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের এজলাসে চলে যান নিহত চিকিৎসকের বাবা। তিনি আর্জি জানান, আদালতের হস্তক্ষেপে তাঁর মেয়ের খুনের ঘটনার তদন্ত করা হোক। তার পরই মৃতার পরিবারকে মামলায় যুক্ত করার নির্দেশ দেন প্রধান বিচারপতি।

আরও পড়ুন: সকালে ইস্তফা, বিকেলে নিয়োগ! আরজি করের সন্দীপ ঘোষকে বাঁচাতেই উদ্যোগী সরকার?


প্রসঙ্গত, জনস্বার্থ মামলায় মূলত তিনটি আবেদন করা হয়েছিল হাই কোর্টে। তার মধ্যে প্রধান হল নিরপেক্ষ সংস্থাকে দিয়ে এই ঘটনার তদন্ত করানো। আবেদনকারীদের বক্তব্য, সিবিআই বা অন্য কোনও নিরপেক্ষ সংস্থাকে এই ঘটনার তদন্তভার দেওয়া হোক। যে সংস্থার উপর রাজ্যের প্রভাব থাকবে না। এ ছাড়াও ওই ঘটনায় কে বা কারা জড়িত, অবিলম্বে তদন্ত করে তা প্রকাশ্যে আনার আবেদন জানিয়েছেন মামলাকারীরা। তাঁরা চান, এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিক আদালত। সমস্ত সরকারি হাসপাতালে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানোর আবেদনও জানানো হয়েছে। মামলাকারীদের বক্তব্য, হাসপাতালের প্রতিটি তলার মূল প্রবেশপথে যাতে সিসিটিভি থাকে, তা নিশ্চিত করা হোক। রবিবারের পর সিবিআই তদন্তের কথা বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে ততদিন অপেক্ষা করতে চায় না আদালত। এখনই ওই মামলায় সিবিআই তদন্ত শুরু করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। ওই মামলার সমস্ত কেস ডায়েরি নথি কেস ডায়েরি নথি বুধবার ১০টার মধ্যে সিবিআইকে হস্তান্তরের নির্দেশ আদালতের। আর তা হবে কোর্টরুমের ভিতরেই। তেমনটাই জানিয়ে দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। একই সঙ্গে জানানো হয়েছে হাইকোর্টের নজরদারিতে তদন্ত চলবে ওই মামলায়। ৩ সপ্তাহ পর ফের শুনানি হবে আরজি কর কাণ্ডের।

More Articles