পোষ্য বিড়ালকে ঘরে রাখা উচিত না কি বাইরে? গবেষকদের এই তথ্য চমকে দেবে
Cat Interesting Facts: মনে হতেই পারে যে বিড়াল তো আদতে শিকারিই। শিকারের চোটে আশেপাশের স্থানীয় খুদে প্রাণীগোষ্ঠীরা ভয়ে সিঁটিয়ে থাকে।
বিড়াল যে অন্যতম আদুরে পোষ্য তা নিয়ে সন্দেহ নেই। সময় কাটানোর অন্যতম নরম সঙ্গী বিড়াল, বিড়ালের ছানাপোনা। কিন্তু বাড়ির মধ্যে থাকার হ্যাপাও বিস্তর! জিনিসপত্র তোলপাড় করে, আপনার কাজের ষোলটা বাজিয়েও শান্তি দেবে না। তাহলে কী করা উচিত? আদর করে, খাইয়ে দাইয়ে বাইরে ছেড়ে দেওয়াই উচিত নাকি বাড়ির পোষ্য বাড়িতেই রেখে দেওয়া উচিত? বিড়ালদের মানুষ অভিভাবকদের এই প্রশ্ন ভাবায়। যুক্তি রয়েছে দু' তরফেই। তবে একটি সাম্প্রতিক গবেষণা আপনার এই দীর্ঘকালের প্রশ্নের যুতসই উত্তর দিলেও দিতে পারে। পোষা বিড়ালদের বাড়ির বাইরে যেতে দেওয়ার বিরুদ্ধেই কথা বলছে ওই গবেষণা।
গবেষণার প্রধান লেখক ড্যানিয়েল হেরেরা বলছেন, "আমরা আবিষ্কার করেছি যে ওয়াশিংটন ডি.সি-তে গড়ে গৃহপালিত বিড়ালকে সেই একই জায়গায় পাওয়া যাওয়ার সম্ভাবনা ৬১ শতাংশ, যেখানে রেকুন, লাল শেয়াল আর ভার্জিনিয়া অপসামও মেলে। বিষয়টা বিড়ালের মতো ছোট্ট প্রাণীর জন্য ভালো নয়। রেকুনের কথাই ধরা যাক, দেখতে যতই মিষ্টি হোক না কেন আমেরিকার সবচেয়ে ভয়াবহ র্যাবিশ বাহক তারাই। লাল শিয়াল এবং অপসাম দুই-ই জলাতঙ্ক ছড়াতে পারে। বিড়ালদের ঘরের বাইরে রেখে আমরা ওদের স্বাস্থ্যকেই ঝুঁকির মুখে ফেলছি।"
মনে হতেই পারে যে বিড়াল তো আদতে শিকারিই। শিকারের চোটে আশেপাশের স্থানীয় খুদে প্রাণীগোষ্ঠীরা ভয়ে সিঁটিয়ে থাকে। তাহলে শেয়াল, রেকুনের থেকে এত ভয়ের কী আছে? বিড়ালের শিকার নিয়ে গর্ব করার আগে একটি বিষয় ভাবা দরকার। আপনি যদি ভাবেন যে বিড়াল ছোট ছোট কীটপতঙ্গকে খেয়ে আপনার উপকার করছে, আপনি ভুল করছেন।
অনেকেই ভাবেন যে বিড়ালরা ইঁদুরের মতো প্রাণী শিকার করছে, ছোট দেশিয় প্রজাতির নানা শিকার করতেই বিড়াল পছন্দ করে। বিড়ালদের ভয়ে ইঁদুররা পাড়ার ত্রিসীমানা মাড়ায় না। কিন্তু সত্যিই এমন কোনও প্রমাণ নেই যে তারা ইঁদুরের জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করছে। উল্টে বিড়াল স্থানীয় প্রাণীদের জনসংখ্যা নষ্ট করে স্থানীয় বাস্তুতন্ত্রের সমস্যা ঘটাচ্ছে।
মানুষের বসতি আর বিড়ালের প্রজাতির বাসস্থানের মধ্যে নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। অন্য শিকার বা প্রাণী রয়েছে এমন অবস্থানের চেয়ে কিন্তু মানুষ রয়েছে এমন স্থানেই বিড়াল মেলে বেশি। মানুষের জনসংখ্যার ঘনত্বের সঙ্গে বিড়ালের আবাস ইতিবাচকভাবে যুক্ত। অর্থাৎ প্রাকৃতিক কারণ না, বিড়ালরা কোন জায়গা বেছে নিচ্ছে তা মূলত মানুষের দ্বারাই চালিত হয়। যেহেতু বিড়ালরা কোথায় থাকবে তা মানুষই অনেকাংশে প্রভাবিত করে, তাই মানুষ এই বিড়ালদের নানা ঝুঁকি এবং স্থানীয় বন্যপ্রাণীদের ক্ষতিরও কারণ হয়ে ওঠে।
তাহলে সমাধান কী? গবেষকদের মতে, বিড়ালদের ঘরেই রাখা উচিত- বিশেষ করে এমন পরিস্থিতিতে যেখানে তারা স্থানীয় বন্যপ্রাণীদের সংস্পর্শে আসতে পারে। এতে বিড়ালরা অন্য প্রাণীদের থেকে, বিশেষত জলাতঙ্কের বাহক এমন প্রাণীদের থেকে যেমন নিরাপদে থাকতে পারে, তেমনই স্থানীয় অন্য প্রাণীদের সংখ্যাও বজায় থাকে। বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য রক্ষিত হয়।

Whatsapp
