আয়তনে টেক্কা দেয় ইউরোপীয় দেশকেও, ভারতের এই মন্দিরে রয়েছে আস্ত একটা শহর! জানেন কোথায়?

Indian Temple : মন্দির মানে আমরা বুঝি, বিগ্রহ এবং তাকে ঘিরে কিছুর পুজোর সামগ্রী এবং পুজো সংক্রান্ত কিছু জায়গা, ব্যাস! কিন্তু মন্দিরের মধ্যেই যদি থাকে আস্ত একটা শহর, তাহলে? আসুন ঘুরে দেখা যাক সেই বিশেষ মন্দির...

প্রাচীন মন্দির মানেই তার প্রতিটা গম্বুজ এবং খিলানের মধ্যেও জমা রয়েছে অজস্র ইতিহাস। সারা ভারত জুড়েই ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে এমনই সব নিদর্শন। কোথাও বাইরের স্থাপত্য চমকে দেয় আজও, কোথাও আবার লুকিয়ে রয়েছে এমন সব ঐতিহাসিক গল্প যা আজও শিহরণ জাগায় আমাদের। এছাড়াও ভারতে এমন অনেক মন্দিরই রয়েছে যার আয়তন টেক্কা দেয় বিশ্বের অন্যান্য মন্দিরকেও। বড় মন্দির শুনেছেন ঠিকই, তাই বলে একটা দেশের সমান আয়তনের মন্দির, এমনটা হলে কেমন হয়? শুনতে অবাক লাগলেও এটাই সত্যি, ভারতেই রয়েছে এই বিশেষ উদাহরণ।

মন্দির মানে আমরা বুঝি, বিগ্রহ এবং তাকে ঘিরে কিছুর পুজোর সামগ্রী এবং পুজো সংক্রান্ত কিছু জায়গা, ব্যাস! কিন্তু মন্দিরের মধ্যেই যদি থাকে আস্ত একটা শহর, তাহলে। আয়তনে ইউরোপের ভ্যাটিক্যান সিটির চেয়েও বড় ভারতের দক্ষিণ প্রান্তে অবস্থিত এই মন্দির। কথা হচ্ছে, তামিলনাড়ুর শ্রী রঙ্গনাথস্বামী মন্দিরটি নিয়ে। তামিলনাড়ুর কাবেরী এবং কালিদাম নদীর মধ্যবর্তী একটি দ্বীপে নির্মিত হয়েছে এই মন্দির। এখানে ভগবান বিষ্ণু, রাম, শ্রীকৃষ্ণ এবং লক্ষ্মীর পুজো করা হয়।

আরও পড়ুন - পাহাড়, নদী আর বরফের স্বর্গ! যে গন্তব্য আজও বাঙালি পর্যটকদের অজানা!

ঐতিহাসিক তথ্য ঘেঁটে জানা যায়, এই বিশেষ শ্রী রঙ্গনাথস্বামী মন্দিরটি নির্মাণ করানকরেছে দ্রাবিড়দের শাসনকালে। এই মন্দিরের দেওয়ালের স্থাপত্য প্রতি মুহূর্তে জানান দেয় সেই সত্য। এটি নির্মিত হয়েছে প্রাচীন দ্রাবিড় শৈলীতে। হোয়সালা এবং বিজয়নগর স্থাপত্যের একটি চমৎকার মিশ্রণ চোখে পড়ে এই মন্দিরের দেওয়ালে। দূর থেকে দেখলে মনে হয়, এই মন্দিরটি যেন আস্ত একটা দূর্গ। দেওয়ালে দেওয়ালে খোদাই করা গোপুরামগুলিও দেখতে অপূর্ব সুন্দর।

মূলত ভগবান বিষ্ণুর ২৪টি অবতারের মূর্তিই এখনকার মূল আরাধ্য এই মূর্তিগুলি আজও খোদাই করা রয়েছে মন্দিরের দেওয়ালে। পাশাপাশি এখানে তৈরি করা হয়েছে ৪টি স্তম্ভ। এগুলোকে বলা হয় চতুর্বিমষ্টী। এখানে শায়িত ভঙ্গিতেও রয়েছে একটি বিষ্ণু মূর্তি। বছরের একটি নির্দিষ্ট সময়ে এখানে পালিত হয় বিশেষ ওঞ্জল উৎসব। এই উৎসবে রঙ্গনাথ স্বামীর মূর্তিকে বসানো হয় পালকিতে। প্রাচীনকাল থেকে চলে আসা এই ঐতিহ্যে আজও কোনও বদল আসেনি। পালকিতে চড়ে রঙ্গনাথ স্বামীকে নিয়ে চলে বিশেষ শোভাযাত্রা। বৈদিক মন্ত্র এবং তামিল সংগীত একযোগে পরিবেশন করা হয় এই উৎসবে। আর মুহূর্তে যেন দুমড়ে মুচড়ে যায় ধর্মীয় বিভেদের সমস্ত বেড়াজাল। অফবিট ভ্রমণ করতে চাইলে সামনে গ্রীষ্মের ছুটিতে বেছে নাইট পারেন এই মন্দিরটিকে। মন্দিরের অপরূপ নিদর্শনের সঙ্গে আশপাশে মনোরম পরিবেশ তাক লাগবে নিমেষেই।

More Articles