বাহ ১২! ১২ দিনের যুদ্ধে ট্রাম্পের ১২টি পোস্ট
US-Iran Relations: ট্রাম্পের এই পোস্টগুলো যুদ্ধের সময় বিশ্বের মনোযোগ কাড়তে সফল হয়েছে। এই ১২টি পোস্টের মাধ্যমে ট্রাম্প শুধু যুদ্ধের ধারাবিবরণীই দেননি, নিজেকে বিশ্বনেতা হিসেবে তুলে ধরার মরিয়া চেষ্টা করেছেন।
গত ১২ দিন ধরে ইরান ও ইজরায়েলের মধ্যে চলা তুমুল সংঘাত গোটা বিশ্বের নজর কেড়েছে। মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাতের আবহে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ট্রুথ সোশ্যালে একের পর এক পোস্ট করে যুদ্ধের ধারাবিবরণী তুলে ধরেছেন। ১২ দিনের যুদ্ধের সঙ্গে ট্রাম্পের ১২টি পোস্ট, এখন এই আপাত শান্তিপূর্ণ অবস্থায় ফিরে দেখা যেতে পারে।
যুদ্ধ শুরু, ইজরায়েলের হামলা ও ট্রাম্পের প্রথম প্রতিক্রিয়া
১৩ জুন, ২০২৫, ইজরায়েল ইরানের পারমাণবিক ও সামরিক কেন্দ্রগুলিতে বিমান হামলা শুরু করে। ইজরায়েল দাবি করে, ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির পথে এগোচ্ছে, যা তারা কখনোই মেনে নেবে না। হামলার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ট্রাম্প ট্রুথ সোশ্যালে লেখেন, “ইজরায়েল ঠিক পদক্ষেপ নিয়েছে। ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ধ্বংস করতেই হবে। আমেরিকা পাশে আছে।” এই পোস্টে তিনি ইরানকে সতর্ক করে বলেন, শান্তি না চাইলে তাদের “কঠিন পরিণতি” ভোগ করতে হবে।
১৫ জুন, ইরান ইজরায়েলের দিকে একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে। তেল আভিভ ও হাইফায় বিস্ফোরণের খবর আসে। ট্রাম্প তৎক্ষণাৎ ট্রুথ সোশ্যালে লেখেন, “ইরানকে এখনই থামতে হবে, নইলে ইরানের কিছুই বাকি থাকবে না। আমেরিকা ও ইজরায়েল মিলে সম্মিলিত ভাবে ইরানকে বার্তা দিচ্ছে।” তিনি ইরানের পারমাণবিক কেন্দ্রগুলি ধ্বংসের ঘটনায় আমেরিকার সমর্থনের কথা জোর দিয়ে বলেন।
২১ জুন, আমেরিকা ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনা—ফোর্ডো, ইসফাহান ও নাতাঞ্জে হামলা চালায়। ট্রাম্প ট্রুথ সোশ্যালে ঘোষণা করেন, “আমরা ইরানের পারমাণবিক স্বপ্ন শেষ করে দিয়েছি। এটাই আমেরিকার শক্তি!” তিনি এই হামলাকে “বিশ্ব শান্তির জন্য” অপরিহার্য বলে দাবি করেন এবং ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান।
আরও পড়ুন-দলের অন্দরেই অসন্তোষ! ইরান আক্রমণ করে আইন ভেঙেছেন ট্রাম্প ?
২৩ জুন, ইরান ইজরায়েলের গোলান মালভূমিতে হামলা চালায়। ট্রাম্প পোস্ট করেন, “ইরান ভুল করছে। তারা এই যুদ্ধে জিততে পারবে না। আমেরিকা ও ইজরায়েল একসঙ্গে অপ্রতিরোধ্য।” এই পোস্টে তিনি চিন ও রাশিয়াকে ইরানকে সমর্থন না করার জন্য সতর্ক করেন।
২৪ জুন, জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় শান্তি আলোচনার প্রাথমিক খবর আসে। ট্রাম্প লেখেন, “আমি শান্তি চাই, কিন্তু ইরানকে তাদের অস্ত্র কর্মসূচি বন্ধ করতে হবে। আমেরিকা শান্তির জন্য কাজ করছে, কিন্তু বুঝতে হবে আমরা দুর্বল নই।” তিনি নিজেকে এই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে উপস্থাপন করেন।
২৫ জুন, যুদ্ধবিরতির ঘোষণা আসে। ট্রাম্প তাঁর শেষ পোস্টে লেখেন, “ইজরায়েল ও আমেরিকা জিতেছে। ইরান পিছু হটেছে। আমি বলেছিলাম, আমরা শান্তি ফিরিয়ে আনব।” তিনি এই বিজয় তাঁর নেতৃত্বের ফল বলে দাবি করেন। মনে রাখতে হবে, একই ভাবে ভারত পাক যুদ্ধবিরতির কৃতিত্বও ট্রাম্প দাবি করেছিলেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্পের এই পোস্টগুলো যুদ্ধের সময় বিশ্বের মনোযোগ কাড়তে সফল হয়েছে। এই ১২টি পোস্টের মাধ্যমে ট্রাম্প শুধু যুদ্ধের ধারাবিবরণীই দেননি, নিজেকে বিশ্বনেতা হিসেবে তুলে ধরার মরিয়া চেষ্টা করেছেন। মধ্যপ্রাচ্যে তার নিয়ন্ত্রণ অবিসংবাদিত, এমনটাই প্রমাণ করতে চেয়েছেন।

Whatsapp
