ভারতে এক বছরে ১৬ লাখ মানুষের মৃত্যু দূষণে! যেসব ভয়াবহ সত্য প্রকাশ রিপোর্টে

Air pollution deaths India: ২০২১ সালে ভারতে বায়ু দূষণের কারণে ১৬ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়েছে!

দীপাবলি এলেই দিল্লি কেড়ে নেয় জাতীয় সংবাদপত্রের শিরোনাম! ধোঁয়ায় ঢাকা রাজধানী হয়ে ওঠে মৃত্যপুরী। তবে শুধু দিল্লি বা দীপাবলি কেন, সারা ভারতই সারা বছর ধরে বায়ুদূষণের কারণে প্রায় মৃত্যুপুরীই। ২০২১ সালে ভারতে বায়ু দূষণের কারণে ১৬ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়েছে! এক বছরে ১৬ লক্ষ মৃত্যু দেখেছে দেশে! এর মধ্যে ৩৮% মৃত্যু ঘটেছে কয়লা এবং তরল প্রাকৃতিক গ্যাসের মতো জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে কার্বন নির্গমনের কারণে, জানাচ্ছে মেডিকেল জার্নাল দ্য ল্যানসেটের একটি প্রতিবেদন।

স্বাস্থ্য ও জলবায়ু পরিবর্তনের উপর ল্যানসেট কাউন্টডাউন ২০২৪ জানাচ্ছে, জীবাশ্ম জ্বালানি এবং জৈব পদার্থের ক্রমাগত ব্যবহার বায়ু দূষণ ক্রমেই বাড়াচ্ছে। শ্বাসযন্ত্র এবং কার্ডিওভাসকুলার রোগ, ফুসফুসের ক্যান্সার, ডায়াবেটিস, স্নায়ুর সমস্যা, প্রতিকূল গর্ভাবস্থার ঝুঁকি সহ সামগ্রিক রোগের বোঝা এবং মৃত্যুহার বাড়াচ্ছে এই দূষণ।

ওই প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ভারতে পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তির ব্যবহার ২০০০ সাল থেকেই বেড়েছে। ২০২২ সালে দেশের বিদ্যুতের রেকর্ড ১১% এসেছে এই পুনর্নবীকরণযোগ্য উৎস থেকেই। তবে, কয়লা এখনও ভারতের বিদ্যুৎ উৎপাদনের সিংহভাগের উৎস, ৭১% অংশ। অবিলম্বে পুনর্নবীকরণযোগ্য অন্যান্য প্রাকৃতিক শক্তির প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেওয়া আশু কর্তব্য হয়ে যাচ্ছে। দেখা যাচ্ছে, ২০২২ সালে, ভারত বিশ্বব্যাপী ১৫.৮% PM 2.5 নির্গমন করেছে, উৎপাদন-ভিত্তিক নির্গমনের পরিমাণ ১৬.৯%। বিশ্বব্যাপী PM2.5-এর দ্বিতীয়-সর্বোচ্চ নির্গমনকারী দেশ ভারত।

আরও পড়ুন- Climate Change: আগামী দিনে খেয়ে-পরে বাঁচবে তো মানুষ? যে আশঙ্কার কথা জানালেন পরিবেশবিজ্ঞানীরা

PM2.5 কী? মানুষের চুলের প্রস্থের চেয়ে প্রায় ৩০ গুণ ছোট বায়ুবাহিত কণা হচ্ছে এই PM2.5। সহজেই শ্বাসের মাধ্যমে ফুসফুস এবং রক্ত প্রবাহে মিশে যায় এই কণা।

ল্যানসেটের প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ২০২৩ ছিল বিশ্বের রেকর্ড সবচেয়ে উষ্ণ বছর। চরম তাপমাত্রা এবং পাল্টে যাওয়া বৃষ্টিপাতের ধরণ হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছে মানুষ। এর ফলে মারাত্মক খরা, মারাত্মক তাপপ্রবাহ, ধ্বংসাত্মক দাবানল, ঝড় এবং বন্যা বিশ্বজুড়েই স্বাস্থ্য, জীবন ও জীবিকার উল্লেখযোগ্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতিবেদনে অনুযায়ী, ২০১৪ সাল থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে, ভারতে শিশুরা প্রতি বছর গড়ে ৭.৭ তাপপ্রবাহের দিন কাটিয়েছে। ৬৫ বছরের বেশি বয়সিরা বার্ষিক ৮.৪টি চরম তাপপ্রবাহের দিন কাটিয়েছে। ১৯৯০ এবং ১৯৯৯-এর দশকের তুলনায় এই পরিসংখ্যান যথাক্রমে ৪৭% এবং ৫৮% বেশি৷

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ভারত ২০২৩ সালে ১৮১ বিলিয়ন সম্ভাব্য শ্রমঘণ্টা কম পেয়েছে তাপের কারণে। অর্থাৎ ভারতের নাগরিকরা তাপের কারণে কাজ না করতে পারায় মানুষে আয় কমেছে ১৪১ বিলিয়ন ডলার বা ভারতীয় মুদ্রায় ১১ লক্ষ কোটি টাকার কিছু বেশি। ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রা এবং বৃষ্টিপাতের ধরন পাল্টে যাওয়ার ফলে ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া, ওয়েস্ট নাইল ভাইরাস-সম্পর্কিত অসুস্থতা এবং ভাইব্রোসিসের মতো মারাত্মক রোগের বাড়ছে বিশ্বব্যাপী। ভারতে, ১৯৫০-এর দশক থেকে শুরু করে ২০১৪-২০২৩ সালের মধ্যে ডেঙ্গুর সংক্রমণ ৮৫% বৃদ্ধি পেয়েছে।

More Articles