এপ্রিল থেকেই একগুচ্ছ বদল আয়করে, কোথায় কীভাবে টাকা রাখলে পাবেন বাড়তি সুবিধা?

Income Tax Rules : ১ এপ্রিল ২০২৩ থেকে আয়কর সংক্রান্ত ১০ নিয়মে বদল, না জানলে কোন কোন অসুবিধায় পড়বেন আমআদমি?

আজ এপ্রিল মাসের এক তারিখ, আনকোরা নতুন একটা অর্থবছরের শুরু আজ থেকেই। গত এক মাস ধরে আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত একাধিক বিষয় শিল শিরোনামে। আইডি কার্ডের লিংক করানো থেকে শুরু করে ব্যাংক অ্যাকাউন্টের নমিনেশন, আয়কর দাখিলের নিয়ম সব কিছু নিয়েই চলেছে জোর তরজা। আজ থেকে বদলে গিয়েছে একাধিক নিয়মও। সেই বদলে যাওয়া নিয়মের নিরিখে কোথাও বেড়েছে সুদের হার কোথাও আবার আয়কর দাখিল সংক্রান্ত নথিতে এসেছে নতুন নিয়ম। ১ এপ্রিল থেকে নয়া আয়কর নীতিই ডিফল্ট হয়ে যাচ্ছে। তবে করদাতারা চাইলে পুরনো কর নীতি বেছে নিতে পারবেন। অর্থাৎ আজ থেকেই বদলে যাচ্ছে একগুচ্ছ নিয়ম, না জেনে কাজ করলে বিপদে পড়তে পারেন আপনিও। এক ঝলকে দেখে নিন সেইসব।

১. চেয়েই কেউ পুরনো নিয়ম বেছে নাইট পারেন ঠিকই তবে, এই বেছে নেওয়া কাজ না করলে সাধারণভাবে নতুন বদলে যাওয়া নিয়মই কার্যকর হবে আজকের পর থেকে। নতুন আয়কর ব্যবস্থার নিয়মে জানা গেছে, ১ এপ্রিল, ২০২৩ থেকে বার্ষিক ১৫ লক্ষ টাকা বা তার বেশি বেতনভোগী ব্যক্তি এবং পেনশনভোগীদের জন্য করযোগ্য আয়ের জন্য নতুন স্কিমের অধীনে স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশন হল ৫২,৫০০ টাকা। ২০২০-২১ বাজেটে এই নতুন নিয়মের কথা ঘোষণা করে বলা হয়েছিল, একজন ব্যক্তি বা হিন্দু অবিভক্ত পারিবারিক মোট আয়করের হার আগের থেকে কম হতে পারে যদি তারা এই নতুন আয়কর ব্যবস্থা বেছে নেন। ২.৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয়কর ছাড়ের কথা ঘোষণা করা হয় এই নতুন ব্যবস্থায়। কিন্তু সেক্ষেত্রে এইচআরএ, গৃহঋণের সুদ, ৮০সি, ৮০ডি, ৮০সিসিডি ধারায় বিনিয়োগ আয়কর ছাড়ের সুযোগ আর পাওয়া যাবে না, বলেও জানানো হয়েছে।

আরও পড়ুন - মোবাইলেই রয়েছে সব হিসেব, আয়কর জমা সহজ করতে নতুন কোন অ্যাপ চালু করল সরকার?

২. পাশাপাশি বার্ষিক কর ছাড়ের পরিমাণ এতদিন পর্যন্ত যেখানে ছিল ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত, সেখানে এপ্রিলের শুরু থেকে তা বাড়িয়ে করা হয়েছে ৭ লক্ষ টাকা পর্যন্ত।

৩. আয়কর দাখিলের পুরনো কর ব্যবস্থা বেছে নেওয়া কর্মী অথবা পেনশনভীদের ক্ষেত্রে পূর্বের মতো বার্ষিক ৫০,০০০ টাকা পর্যন্ত স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশন বহাল থাকবে, নতুন নিয়মের আওতায় এলে সেটি আরও আড়াই হাজার টাকা বেড়ে যাবে।

৪. এলটিএ :
২০০২ সাল থেকে প্রচলিত নিয়মে এল বদল।সরকারি ক্ষেত্র ব্যতীত অন্যান্য ক্ষেত্রে কর্মরতদের জন্য ‘লিভ এনক্যাশমেন্ট’-এর জন্য এতদিন পর্যন্ত ৩ লক্ষ টাকা পর্যন্ত উর্ধ্বসীমা ধার্য ছিল। এখন তা বাড়িয়ে করা হয়েছে ২৫ লক্ষ।

৫. এপ্রিল মাসের এক তারিখ থেকে মার্কেট লিঙ্কড ডিবেঞ্চারে (MLDs) বিনিয়োগ স্বল্পমেয়াদি মূলধন সম্পদ (short term capital) হিসাবে গণ্য হবে।

৬. মিউচুয়াল ফান্ডে এলটিসিজি করের সুবিধা:
জানা গিয়েছে ১ এপ্রিল ২০২৩ থেকে ডেট মিউচুয়াল ফান্ডে এলটিসিজি ট্যাক্স সুবিধা দেওয়া হবে না। অর্থাৎ ১ এপ্রিল থেকে ডেট মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করলে তা স্বল্পমেয়াদি মূলধন লাভ হিসেবে আয়করের আওতায় পড়বে।

৭. পাশাপাশি lic বা অন্য কোনও জীবন বিমা প্রিমিয়াম বার্ষিক ৫ লক্ষ টাকার বেশি হলে তাও ১ এপ্রিল ২০২৩ থেকে তা করের আওতায় পড়বে।

আরও পড়ুন - মধ্যবিত্তদের জন্য বিরাট স্বস্তির সম্ভাবনা! নতুন বছরে কীভাবে বাঁচাবেন আয়কর?

৮. গত ফেব্রুয়ারিতে এই নয়া আয়কর কাঠামোর বিষয়ে বাজেটে ঘোষণা করেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। আয়কর স্তরের নতুন বিন্যাস হল নিম্নরূপ :

০-৩ লক্ষ টাকায় আয়কর ০
৩-৬ লক্ষ টাকায় আয়কর ৫ শতাংশ
৬-৯ লক্ষ টাকায় আয়কর ১০ শতাংশ
৯-১২ লক্ষ টাকায় আয়কর ১৫ শতাংশ
১২-১৫ লক্ষ টাকায় আয়কর ২০ শতাংশ
১৫ লক্ষ টাকা বা তার বেশি আয়ের ক্ষেত্রে ৩০ শতাংশ আয়কর ধার্য হয়েছে।

৯. নতুন নিয়মেও আলাদা চার রয়েছে প্রবীণদের :
এসসিএসএস-এ টাকা জমা রাখার উর্ধ্বসীমা ১৫ লক্ষ থেকে বাড়িয়ে ৩০ লক্ষ করা হয়েছে। মাসিক ইনকাম স্কিমের ক্ষেত্রে সিঙ্গল অ্যাকাউন্টের উর্ধ্বসীমা ৪.৫ লক্ষ থেকে বাড়িয়ে ৯ লক্ষ এবং জয়েন্ট অ্যাকাউন্টের ক্ষেত্রে ৭.৫ লক্ষ থেকে বাড়িয়ে ১৫ লক্ষ করা হয়েছে। সুদের হারও বাড়ানো হয়েছে প্রতি ক্ষেত্রে কম করে ০.১ থেকে ০.৫ শতাংশ পর্যন্ত।

১০. ২০২৩ বাজেট বক্তৃতায় নির্মলা সীতারমণ ঘোষণা করেছিলেন, যদি ফিজিক্যাল গোলডকে ই-গোল্ড রসিদে রূপান্তরিত করা যায় তাহলে তাল ক্যাপিটাল গেন ট্যাক্স-এর আওতায় পড়বে না, ফলে কোনও কর দিতে হবে না। এই নিয়মটিও আজ থেকেই লাগু করা হয়েছে আয়কর বিভাগের তরফে।

More Articles