অল ইজ নট ওয়েল ইন লাদাখ! ১৮০০০ ফুট উচ্চতায়, -৪০ ডিগ্রিতে কেন অনশনে বসছেন ওয়াংচুক?

Ladakh Glacier: লাদাখের মতো দুর্গম জায়গাতেও শিল্প এবং মানুষের অত্যাচারে ফুরিয়ে যাচ্ছে হিমবাহ

অল ইজ নট ওয়েল ইন লাদাখ! লিখছেন থ্রি ইডিয়টসের সোনম ওয়াংচুক। গবেষণা বলছে, লাদাখের ২/৩ ভাগ হিমবাহই বিলুপ্তির পথে। লাদাখের মতো দুর্গম জায়গাতেও শিল্প এবং মানুষের অত্যাচারে ফুরিয়ে যাচ্ছে হিমবাহ, আর এমনটা চলতে থাকলে হিমবাহ বিলুপ্ত হয়ে ভারত আর তার আশেপাশের এলাকায় তীব্র জল সংকট দেখা যাবে। লাদাখের সমাজকর্মী ওয়াংচুককে এখন প্রায় সকলেই চেনেন আমির খানের সিনেমার সৌজন্যে। লাদাখে বিকল্প শিক্ষার মাইলস্টোন স্থাপন করেছেন তিনিই। সেই ওয়াংচুকই লিখছেন তাঁর এলাকা ভালো নেই। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে লাদাখের সুরক্ষা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য অনুরোধও করেছেন তিনি।

"যদি ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তাহলে লাদাখে শিল্প, পর্যটন এবং বাণিজ্যের বিকাশ অব্যাহত থাকবে এবং জায়গাটা শেষ হয়ে যাবে৷ কাশ্মীর বিশ্ববিদ্যালয় এবং অন্যান্য গবেষণা সংস্থাগুলির সাম্প্রতিক গবেষণা এই সিদ্ধান্তেই পৌঁছেছে যে লেহ-লাদাখের হিমবাহগুলির প্রায় ২/৩ ভাগ শেষ হয়ে যাবে যদি না সঠিক যত্ন নেওয়া হয়। কাশ্মীর বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, হাইওয়ে নির্মাণ এবং মানুষের কার্যকলাপের কারণে হিমবাহগুলি দ্রুত হারে গলে যাচ্ছে। শুধু আমেরিকা এবং ইউরোপের কারণে বিশ্ব উষ্ণায়ন জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী নয়, স্থানীয় দূষণ এবং নির্গমনও এর জন্য সমানভাবে দায়ী। লাদাখের মতো অঞ্চলে, মানুষের কার্যকলাপ ন্যূনতম হওয়া উচিত যাতে হিমবাহগুলি অক্ষত থাকতে পারে,” লিখেছেন ওয়াংচুক।

আরও পড়ুন- ধ্বংস হয়েছে ১০০ কোটি টাকারও বেশি সম্পত্তি, পথে বসেছে মানুষ, যে হাড়হিম ছবি দেখাল ২০২২

 

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে লাদাখ এবং হিমালয়ের অন্যান্য অঞ্চলের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য শিল্প গড়া থেকে দূরে থাকতেও আবেদন করেছেন তিনি। "প্রধানমন্ত্রী মোদির কাছে আমার আবেদন এই শিল্প শোষণ থেকে লাদাখ এবং হিমালয়ের অন্যান্য অঞ্চলকে বাঁচান কারণ এটি জনগণের জীবন ও চাকরিকে প্রভাবিত করবে৷ আমি বিশ্বাস করি, সরকারের পাশাপাশি জনগণেরও সচেতন হওয়া উচিত।" সোনম ওয়াংচুক তাঁর ইউটিউব চ্যানেলে শেয়ার করা একটি ভিডিওতে, লাদাখের মতো সংবেদনশীল অঞ্চলকে রক্ষা করতে সাহায্য করার জন্য দেশ ও বিশ্বের জনগণের কাছে আবেদন করেছেন। ভারতীয় সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিলের অধীনে বাস্তুতন্ত্র রক্ষার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে আবেদন করেছেন ওয়াংচুক। সরকার ও বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে ১৮০০০ ফুট উচ্চতায় -৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় খারদুংলা পাসে ২৬ জানুয়ারি থেকে টানা ৫ দিন #ClimateFast-এ বসার পরিকল্পনাও করেছেন তিনি। চরম প্রাকৃতিক পরিবেশে ৫ দিনের এই প্রতীকী অনশন আসলে হিমবাহ বাঁচানোর এক তীব্র আর্তি।

১৯৬৬ সালে জন্মগ্রহণ করেন ওয়াংচুক। মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার এবং হিমালয়ান ইনস্টিটিউট অব অল্টারনেটিভস, লাদাখ (HIAL)-এর পরিচালক ওয়াংচুক ২০১৮ সালে ম্যাগসেসে পুরস্কারও অর্জন করেন। লাদাখের এই ইঞ্জিনিয়ার তার উদ্ভাবনী স্কুল, স্টুডেন্টস এডুকেশনাল অ্যান্ড কালচারাল মুভমেন্ট অফ লাদাখ (SECMOL) স্থাপনের জন্য বিখ্যাত। এই স্কুলের ক্যাম্পাস চলে সৌর শক্তিতে। রান্না, আলো বা গরম করার জন্য কোনও জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার হয় না। তিনি ১৯৮৮ সালে লাদাখের সেই শিশু ও যুবদের প্রশিক্ষণের লক্ষ্যে SECMOL প্রতিষ্ঠা করেন যাদের প্রথাগত শিক্ষাব্যবস্থা কোনও দিন মর্যাদাও দেয়নি। ১৯৯৪ সালে, ওয়াংচুক সরকারি স্কুল ব্যবস্থায় সংস্কার আনতে অপারেশন নিউ হোপ চালু করেন।

More Articles