ভারতের আক্রমণ আসন্ন, তৈরি পাক বাহিনী? যা জানাচ্ছেন পাক প্রতিরক্ষামন্ত্রী

Pahalgam Tensions: পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী খাজা মুহাম্মদ আসিফ সোমবার জানিয়েছেন, প্রতিবেশী ভারতের তরফে সামরিক আগ্রাসন 'আসন্ন’।

পহেলগাঁওয়ে নিরস্ত্র পর্যটকদের উপর সন্ত্রাসী হামলার পর থেকে ভারতের সঙ্গে পড়শি দেশ পাকিস্তানের উত্তেজনা ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। পাকিস্তানকে কড়া জবাব দিতে কিছু কূটনৈতিক সিদ্ধান্ত ইতিমধ্যেই নিয়েছে ভারত। পাল্টা পাকিস্তানও প্রায় একইরকমের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই টানাপড়েনের মধ্যে, পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী খাজা মুহাম্মদ আসিফ সোমবার জানিয়েছেন, প্রতিবেশী ভারতের তরফে সামরিক আগ্রাসন 'আসন্ন’। তাই ইসলামাবাদ তার সেনা বাহিনীকে শক্তিশালী করেছে।

গত সপ্তাহে, ২২ এপ্রিল পাকিস্তান সমর্থিত সন্ত্রাসী গোষ্ঠী টিআরএফ-এর সন্ত্রাসবাদীরা জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ের মনোরম বৈসরন উপত্যকায় নিরস্ত্র পর্যটকদের উপর গুলি চালায়। এই ঘটনায় স্থানীয় একজনসহ ২৬ জন নিহত হন। এই দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট বা টিআরএফ হচ্ছে নিষিদ্ধ পাক জঙ্গী সংগঠন লস্কর-ই-তৈবার (এলইটি) একটি ছায়া সংগঠন।

ইসলামাবাদে বসে এক সাক্ষাৎকারে প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মুহাম্মদ আসিফ রয়টার্সকে জানিয়েছেন, "আমরা আমাদের বাহিনীকে শক্তিশালী করেছি কারণ বিষয়টি এখন আসন্ন। তাই সেই পরিস্থিতিতে কিছু কৌশলগত সিদ্ধান্ত নিতেই হবে। সেই সব সিদ্ধান্তই নেওয়া হয়েছে।"

আসিফ আরও বলেছেন, ভারতের তরফে সামরিক প্রত্যাঘাতের বিষয়ে কথাবার্তা বৃদ্ধি পাচ্ছে। পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী ভারতীয় আক্রমণের সম্ভাবনা সম্পর্কে পাক সরকারকে অবহিত করেছে। তবে এই বিষয়ে বিশদে কিছুই মন্তব্য করেননি তিনি কারণ তাঁর আশঙ্কা, সেনা অনুপ্রবেশ আসন্ন।

আরও পড়ুন- পাকিস্তানের পাল্টা, সিমলা চুক্তির স্থগিতাদেশে কী প্রভাব পড়বে ভারতে?

পহেলগাঁওয়ে হামলার পর ভারত সন্দেহভাজন দুই সন্ত্রাসবাদীকে পাকিস্তানি বলে চিহ্নিত করেছে। ইসলামাবাদ অবশ্য এর সঙ্গে সেই দেশের জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছে এবং নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে।

আসিফ বলছেন, পাকিস্তান জুড়ে এখন হাই অ্যালার্ট। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, ভারতের তরফে আগ্রাসন যদি পাকিস্তানের অস্তিত্বের জন্য সরাসরি হুমকি হয়ে দাঁড়ায় তাহলে পাকিস্তান পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের দিকে হাঁটবে। সামা টিভি-র এক সাক্ষাৎকারে আসিফের বক্তব্য, আগামী দুই থেকে চার দিনের মধ্যে যুদ্ধের মেঘ ঘনিয়ে আসছে।

পরে অবশ্য জিও নিউজের একটি সাক্ষাত্কারে, প্রতিরক্ষা মন্ত্রী আসিফ বলেন ভারতের 'আসন্ন' সামরিক আগ্রাসনের বিষয়ে তাঁর মন্তব্য 'ভুল ব্যাখ্যা' করা হয়েছে।

অন্যদিকে, পহেলগাঁও সন্ত্রাসী হামলায় আন্তঃসীমান্ত সংযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পাকিস্তান তার মন্ত্রীদের ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কের অবনমনের বিষয়ে কথা বলা থেকে বিরত থাকতে নির্দেশ দিয়েছে। সূত্রের খবর, পাক সরকার তার মন্ত্রীদের নির্দেশ দিয়েছে, পরিবেশ ইতিমধ্যেই উত্তেজনাপূর্ণ তাই আগুনে ঘৃতাহূতি না দেওয়াই ভালো।

পহেলগাঁও হামলার পর ভারত সিন্ধু জল চুক্তি স্থগিত এবং আটারি সীমান্ত বন্ধ করা সহ বেশ কিছু পদক্ষেপ করে। তবে, ভারতের নাগরিক এবং রাজনীতিবিদদের বড় অংশের থেকে উরি সার্জিক্যাল স্ট্রাইক এবং বালাকোট বিমান হামলার মতোই এই হামলার বিরুদ্ধেও কঠোর প্রতিক্রিয়ার আহ্বান উঠেছে।

২০১৯ সালে পুলওয়ামায় নৃশংস হামলার পর, ভারত পাকিস্তানের বালাকোটে জইশ-ই-মহম্মদ (জেএম) গোষ্ঠীর প্রশিক্ষণ শিবিরকে লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালায়। ২০১৬ সালে, ভারতীয় সেনাবাহিনী উরিতে একটি সেনা ঘাঁটিতে একটি সন্ত্রাসী হামলার প্রতিশোধ হিসাবে পাক অধিকৃত কাশ্মীরে সন্ত্রাসী শিবিরগুলিতে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক চালায়। উরিতে পাকিস্তানের সন্ত্রাসী হামলায় ১৯ জন সৈন্য প্রাণ হারিয়েছিলেন।

পহেলগাঁওয়ের হামলার আবহে জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন ডিরেক্টর জেনারেল অফ পুলিশ (ডিজিপি) শেশ পল বৈদ বলছেন, পাক অধিকৃত কাশ্মীর পুনরুদ্ধার করা হবে এবং পাকিস্তানকে চারটি ভাগে বিভক্ত করা হবে।

More Articles