বিস্ফোরক ভর্তি গাড়ি নিয়ে সেনা কনভয়ে হামলা! ঠিক কী ঘটেছে ওয়াজিরিস্তানে?

Waziristan: শনিবার (২৮ জুন) উত্তর ওয়াজিরিস্তান জেলার খাড্ডি গ্রামে আত্মঘাতী হামলার ঘটনায় উত্তাল পাকিস্তান৷ বরাবরের মতোই এই ঘটনায় ভারতকে দায়ী করেছে পাকিস্তান।

ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে দু'সপ্তাহও হয়নি। এর মধ্যেই ফের দ্বন্দ্ব। শনিবার (২৮ জুন) উত্তর ওয়াজিরিস্তান জেলার খাড্ডি গ্রামে আত্মঘাতী হামলার ঘটনায় উত্তাল পাকিস্তান৷ বরাবরের মতোই এই ঘটনায় ভারতকে দায়ী করেছে পাকিস্তান। পাকিস্তানের দাবি নস্যাৎ করে পাল্টা বিবৃতি দিয়েছ ভারত। কী ঘটেছিল সে দিন?

পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের উত্তর ওয়াজিরিস্তান জেলায় কর্মরত এক পুলিশ আধিকারিক সংবাদ সংস্থা এএফপি-কে জানিয়েছে, একটি বিস্ফোরক ভর্তি গাড়ি সেনা কনভয়ে ধাক্কা মারে। এই ঘটনায় ১৬ জন জওয়ান নিহত হয়েছেন। পাশাপশি ১০ সেনাকর্মী এবং ১৯ জন সাধারণ নাগরিক আহত হয়েছেন। এছাড়াও দু'টি বাড়ির ছাদ ভেঙে গিয়েছে।

শনিবার করাচিতে পাকিস্তান নাভাল অ্যাকাডেমির অনুষ্ঠানে ভাষণ দেন মুনির। তিনি বলেন, কোনও রকম প্ররোচনা ছাড়া ভারত দু'-দু'বার হামলা চালিয়েছে পাকিস্তানে। ভারতই এই আঞ্চলিক অশান্তির জন্য দায়ী। আগামীতে ভারত ফের আগ্রাসন দেখালে, পাকিস্তান যোগ্য জবাব দেবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি।

ভারতও পাল্টা জবাব দেয়। ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমাদের নজরে এসেছে, পাক সেনা একটি বিবৃতি জারি করে ২৮ জুন ওয়াজিরিস্থানের হামলার জন্য ভারতকে দায়ী করেছে। এই বিবৃতির তীব্র নিন্দা করছে ভারত। একইসঙ্গে বিবৃতিতে ওঠা দাবি প্রত্যাখান করে জানানো হচ্ছে এরকম কোনও কিছুর সঙ্গে ভারত যুক্ত নয়।’

এদিকে তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তানের (টিটিপি) শাখা সংগঠন হাফিজ গুল বাহাদুর মেনে নিয়েছে হামলা তারাই করেছিল। স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশ আধিকারিকরা এমনই জানিয়েছেন সংবাদ সংস্থা এএফপিকে।

আরও পড়ুন-কমান্ডার অভিনন্দনকে আটক করেছিলেন, জঙ্গিদের গুলিতে নিহত সেই পাকিস্তানি মেজরই

২০২১ সালে কাবুলে তালিবান ক্ষমতায় পাওয়ার পর থেকে আফগানিস্তানের সীমান্তবর্তী অঞ্চলে পাকিস্তানে হিংসার ঘটনা বেড়েছে। বহুদিন ধরেই পাকিস্তান আফগানিস্তানের মদতপুষ্ট টিটিপি জঙ্গি গোষ্ঠী নিয়ে চিন্তায়। খাইবার পাখতুনখোয়া, বালুচিস্তান-সহ পাক-আফগান সীমান্তে এদের ঘাঁটি বলে পরিচিত। সেখান থেকে মাঝেমধ্যেই পাক সেনাবাহিনীর উপর হামলা করে এই জঙ্গিগোষ্ঠী। এই অঞ্চলগুলোর উপর দিয়েই চিন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোর বা সিপিইসি-র রাস্তা গিয়েছে। এই জঙ্গিগোষ্ঠী চিনা অধিকারিকদের উপরেও বহুবার হামলা করেছে। ওই অঞ্চলে বারংবার জঙ্গি হামলার কারণে পাকিস্তানের অর্থনীতিতে প্রভাব পড়ে।

ইসলামাবাদ এসব ঘটনার পেছনে আফগানিস্তানে ক্ষমতায় থাকা তালেবানের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছে। তবে তালেবান বরাবরই এসব অভিযোগ নাকচ করেছে। তবে তালেবান বরাবরই এসব অভিযোগ নাকচ করেছে।

এএফপি-র তথ্য অনুযায়ী, এ বছর এখনও অবধি খাইবার পাখতুনখাওয়া এবং বালুচিস্তানে সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধে জড়িত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলির হামলায় প্রায় ২৯০ জন নিহত হয়েছেন। তাঁরা বেশিরভাগই নিরাপত্তা কর্মকর্তা। বিশ্ব সন্ত্রাসবাদ সূচক অনুযায়ী, ২০২৩ সালে পাকিস্তানে সন্ত্রাস হামলায় মৃত্যু হয়েছিল ৭৪৮ জনের। ২০২৪ সালে ১,০৮১ জনের মৃত্যু হয়। ২০২৫ সালে তা আরও ৪৫ শতাংশ বৃদ্ধি পায়।

More Articles