থমকে আমদানি রপ্তানি! বাংলাদেশে আন্দোলনের জেরে যেভাবে ক্ষতি কয়েক'শ কোটির
Bangladesh Quota Protest: বাংলাদেশে কার্ফিউ, হিংসা, মৃত্যুর জেরে ব্যাপক প্রভাব পড়েছে সীমান্ত বাণিজ্যে।
বাংলাদেশে উত্তপ্ত। সপ্তাহজুড়ে অগ্নিগর্ভ বাংলাদেশে থামিয়ে দেওয়া হয়েছে ইন্টারনেট। বহির্বিশ্বের সঙ্গে যোগাযোগবিচ্ছিন্ন পড়শি দেশ। কোটা আন্দোলনের জেরে হাসিনা সরকারের ভয়াবহ রূপ দেখেছে বিশ্ব। ছাত্র আন্দোলনের নির্মম দমনপীড়নের মাঝে সেদেশের সুপ্রিম কোর্ট নিজের রায়ে জানিয়েছে সরকারি চাকরিতে ৯৩% নিয়োগ হবে মেধার ভিত্তিতেই। মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের জন্য বরাদ্দ ৫%। বাংলাদেশের প্রতিমুহূর্তের পরিস্থিতি আর সহজেই জানা যাচ্ছে না। জানা যাচ্ছে না আমজনতার জীবন এই সপ্তাহব্যাপী হিংসা ও মৃত্যুতে কীভাবে থিমকে গেল, খেটে খাওয়া মানুষের জীবন কতটা অসহায় হলো আরও। বাংলাদেশে জিনিসের দাম বৃদ্ধি নিয়ে অভিযোগ ছিল আগেই। এই হিংসাত্মক পরিবেশে আরও ক্ষতিগ্রস্ত হলো বাংলাদেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য। এই মুহূর্তে ঘোজাডাঙ্গা সীমান্তে প্রায় ৪০০ থেকে ৪৫০ পণ্যবাহী ট্রাক কাঁচামাল নিয়ে আটকে রয়েছে। থমকে আছে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য। কোটি কোটি টাকার পণ্য নষ্টের মুখে।
বাংলাদেশে কার্ফিউ, হিংসা, মৃত্যুর জেরে ব্যাপক প্রভাব পড়েছে সীমান্ত বাণিজ্যে। বাংলাদেশে অচলাবস্থার জন্য এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম স্থলবন্দর বসিরহাটের ঘোজাডাঙ্গা সীমান্তে আমদানি রপ্তানি বন্ধ। সমগ্র বাংলাদেশ জুড়ে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ থাকায় ঘোজাডাঙ্গা সীমান্তে দাঁড়িয়ে রয়েছে হাজার হাজার পণ্যবাহী ট্রাক। ইন্টারনেট বন্ধের জেরে সীমান্তে বাংলাদেশ থেকে ভারতে আসা ও ভারত থেকে বাংলাদেশে যাওয়া কোন ট্রাকের তথ্যই নথিভুক্ত করা যাচ্ছে না। এর জেরেই ব্যহত হচ্ছে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য। যার ফলে ক্ষতির মুখে প্রচুর জরুরি পণ্য। টমেটো, কাঁচালঙ্কা, পেঁয়াজ, আদা, রসুন এবং বিভিন্ন ফলের ট্রাকও দাঁড়িয়ে রয়েছে সীমান্তে। পচনশীল এই সমস্ত পণ্যই নষ্ট হওয়ার মুখে। সময় যত যাচ্ছে ক্ষতির আশঙ্কা ততই বাড়ছে। কোটি কোটি টাকার এইসব কাঁচামালে ইতিমধ্যেই পচন ধরতে শুরু করেছে।
আরও পড়ুন- আবু সাঈদের স্বপ্নের মৃত্যু, একবার, আবার, বারবার
ভারতের সীমান্তে কোনও সমস্যা নেই কিন্তু বাংলাদেশ সীমান্তে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ থাকায় কোন পণ্যবাহী ট্রাকই ঢুকতে পারছে না। ফলে উত্তরপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, বিহার, পঞ্জাব ও অন্ধ্রপ্রদেশ সহ ভারতের ভিনরাজ্য থেকে আসা ট্রাকের চালক ও খালাসিরা বেজায় সমস্যায় পড়েছেন। তাঁদের খাবারের রসদ ফুরিয়ে যাচ্ছে। কোনভাবে ট্রাকচালক ও খালাসিরা দু'মুঠো ভাতের সংস্থান করে সীমান্তেই রান্না করে খেয়ে বেঁচে আছেন। এই সময় যদি দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হয় তাহলে তাঁদের আরও সমস্যায় পড়তে হবে।
কোচবিহারের চ্যাংড়াবান্ধা সীমান্ত দিয়েও রপ্তানি আমদানি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এই সীমান্ত দিয়ে প্রায় প্রতিদিন ভারত ও ভুটান থেকে ২৫০ থেকে ৩০০ গাড়ি চলে, সেটাও বন্ধ। যার ফলে সীমান্তে সার দিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে ট্রাক। চ্যাংড়াবান্ধ এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের জানাচ্ছে, প্রতিদিন প্রায় আড়াই কোটি টাকার উপরে ব্যবসা হয় এই বন্দর দিয়ে, যা বর্তমানে বন্ধ রয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। শুক্রবার রাত থেকে কাঁচামালসহ লরিগুলি আটকে রয়েছে এই সীমান্তে। চ্যাংড়াবান্ধা ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে সাধারণ মানুষের যাতায়াত কম হওয়ায় ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরাও।