বাংলাদেশী সন্দেহে আটক! ১০টি রাজ্যকে হলফনামা দিতে হবে সুপ্রিম কোর্টে
Bangladeshi: বোর্ডের আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ দ্য ওয়্যার-কে বলেন, অনেক ক্ষেত্রেই পরিচয়পত্র যাচাই করার পর দেখা যায় বাংলাদেশী সন্দেহে আটক করা প্রায় সকল শ্রমিকই ভারতীয় নাগরিক।
বেশ কয়েকটি রাজ্যে বাংলাদেশি সন্দেহে বাংলাভাষী শ্রমিকদের উচ্ছেদ করা হচ্ছে। কয়েকমাস ধরেই এই নিয়ে তোলপাড় দেশ। কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করা হয়েছিল আগেই। এবার জনস্বার্থ মামলার শুনানি হলো সুপ্রিম কোর্টে।
ওয়েস্ট বেঙ্গল মাইগ্রেন্ট ওয়ার্কারস ওয়েল ফেয়ার বোর্ডের পক্ষ থেকে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করে অভিযোগ করা হয়েছিল, মে মাসে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সার্কুলার জারি করার পর থেকে, বিভিন্ন রাজ্য সরকার বাংলাভাষী মুসলিম শ্রমিকদের বাংলাদেশি দাবী করে আটকে করছে। গত ৮ অগাস্ট মামলাটি করা হয়। ১৪ অগাস্ট সেই মামলার শুনানি ছিল।
বিচারপতি সূর্য কান্ত ও বিচারপতি জয়মাল্য বাগচির ডিভিশন বেঞ্চে ওঠে মামলাটি। সেই মামলায় দেশের ১০টি রাজ্যের কাছে হলফনামা তলব করল শীর্ষ আদালত। রাজ্যগুলি হলো- ওড়িশা, রাজস্থান, মহারাষ্ট্র, দিল্লি, বিহার, উত্তরপ্রদেশ, ছত্তিশগড়, হরিয়ানা এবং পশ্চিমবঙ্গ।
১৪ অগাস্টের শুনানিতে সুপ্রিম কোর্ট জানতে চায়, ভিন রাজ্যে কাজ করতে যাওয়া শ্রমিকদের নিজেদের রাজ্যে যাচাইয়ের জন্য কোনো নোডাল এজেন্সি আছে কি না, যা দুই রাজ্যের মধ্যে সমন্বয় রাখতে পারবে।
আরও পড়ুন-আটমাসের অন্তঃসত্ত্বা, বীরভূমের সোনালি খাতুনকে যেভাবে বাংলাদেশে ঘাড়ধাক্কা
আবেদনকারীর আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ দাবি করেছেন, এই ধরনের অভিযান বন্ধ করা জরুরি। কিন্তু আদালতের জানিয়েছে, বিষয়টি উপেক্ষা করা যাবে না। আদালতের বক্তব্য, অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, সেটি জানা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিচারপতি সূর্যকান্ত শুনানিতে প্রশ্ন তুলেছেন— 'যদি কোনো অনুপ্রবেশকারী অবৈধভাবে প্রবেশ করে, তবে কী হবে?'
দ্য ওয়্যার-এর তথ্য অনুযায়ী, ২ মে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সমস্ত রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের প্রশাসনের প্রধানদের, রাজ্য পুলিশকে এবং সীমান্তরক্ষা বাহিনীকে অবৈধ বাংলাদেশী নাগরিক এবং রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর একটি সার্কুলার দেয়।
বোর্ডের আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ দ্য ওয়্যার-কে বলেন, অনেক ক্ষেত্রেই পরিচয়পত্র যাচাই করার পর দেখা যায় বাংলাদেশী সন্দেহে আটক করা প্রায় সকল শ্রমিকই ভারতীয় নাগরিক।
আরও পড়ুন- কালিয়াচকের পরিযায়ী শ্রমিক আমির শেখকে যেভাবে বাংলাদেশে ঠেলে দেওয়া হল
গত মাসে, দ্য ওয়্যার একটি প্রতিবেদন করেছিল। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছিল গুরুগ্রামে পুলিশ পশ্চিমবঙ্গ এবং আসাম থেকে আসা শত শত বাংলাভাষী শ্রমিককে (বেশিরভাগই মুসলিম) - বাংলাদেশি সন্দেহে আটক করে। পরে শুধুমাত্র ১০ জন ছাড়া সকলকে ছেড়ে দেওয়া হয়। প্রশান্ত ভূষণ উল্লেখ করেন, আটক করা বেশ কিছু বাংলাভাষী শ্রমিকদের জোরপূর্বক বাংলাদেশে পাঠানোর পর জানা গেছে যে তাঁরা ভারতীয়, পরে তাঁদের ফেরত আনা হয়েছে।
প্রশান্ত ভূষণ উল্লেখ করেছেন, ওই শ্রমিকদের আটক ও নির্যাতনের ফলে দেশজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে। তাঁর কথায়, "আন্তর্জাতিক আইন কাউকে বিদেশী সন্দেহে আটক করার ক্ষমতা দেয় না"।
উল্লেখ্য, ১৪ অগাস্ট সব অভিযোগ শুনে দিল্লি, মহারাষ্ট্র, রাজস্থান, ওড়িশা, বিহার, উত্তরপ্রদেশ, ছত্তিশগড়, হরিয়ানা-সহ দশ রাজ্যকে হলফনামা দিতে বলেছে ডিভিশন বেঞ্চ। রিপোর্ট দিতে হবে কেন্দ্রীয় সরকারকেও। সব রাজ্যের বক্তব্য জানতে চেয়েছে আদালত। আগামী সপ্তাহে এই মামলার শুনানি। এখন দেখার, কী রায় দেয় আদালত?

Whatsapp
