জিহাদের বিষয়-আশয়: অভিষেক ঝা

Bengali Short Story: বিজেপি, ভারত আর মুসলমানের মাঝখানের সীমানা হিসেবে সে চিহ্নিত করে এই রেললাইন। ভারতে থাকার প্রবল ইচ্ছায় সে এই সীমানা ভাঙতে এগোয় বাকি অনেক মানুষের সঙ্গে, গাঁইতি, শাবল নিয়ে।

ke krca খুনকা নাদ্দি বাইরা রোনেকা ম্যন আঁখমে
tmr pic dktace দুনিয়া রোরাহা তাকলিফ মে সিন্না হায় হায় কাররাহা
dlt kara আসগর তাই কাঁহা গিয়ারে
akbr daki পানিকা বিনা মারগিয়া
ke dkar ace একবার আকে মাকো দেখলে
ank sexi ধূলাকা আঁধি উঠ গিয়া
klk sex krba কাফেরলোগরা মৌজমস্তি কাররাহা
kakn আদমিকো যো লোক মারা
dopora কাশেম তাঁই কাহা মে
thk ace সখীনাকো দেখকে যা
ame balei korta hba তেরা সখীনা বাইঠকে রোরি
jakne blba তেরা দেখা নাই হে রে
akani সখীনা বেবা হো গায়ি
akani কো দেখেগা তোকে আজ
ha কোন কিনারামে যাকে লাগে গা
prblm ace বংশমে কোই বাঁচকে নাই হে
sonbo na জয়নাল জেল মে
nahle লাগা এজিদকা হাতমে মার জাগা
sexi pic snt krbana বহু বাচ্চা সবকোই কানিস
akani krba আল্লাহ হামকো বাঁচা
ha হামলোক তেরা ভারোসা মে হায়

কতদিন পর বাঁশের ঝাড়ে বাতাস বওয়ার আওয়াজ শুনছিল সে! বাঁশের পাতাগুলা আলাদা আলাদা কাঁপে। ঝরনার মতো লাগে খানিক। গলার শির ফুলিয়ে কান্না লাগে তার। এত খুন মন থেকে ঝরে! এত খুন তার ফইন্নি শরীলে! মনজুড়ে একটা আঁকুপাঁকু। চিল্লে সবাইকে সবকিছু বলে দিতে মন চায়। তাইলে তার মানের কী হবে? ফিরোজার না থাক, তার তো নিজের মান আছে কিছু। তার আম্মা কেন এমন করল! চিল্লাতে সাধ জাগলেই ঢোক গিলে নেয় সে। সারা শরীর আর মন বিষাচ্ছে। এত এত বিষ মনে নিয়ে সে বাঁশঝাড়ের বাতাসে কান দেয়। এত এত বিষ জানের ভেতর নিয়ে সে বাতাসে কান পাতে। পাতার আওয়াজ কানে সইতে না সইতেই বাঁশের গা’গুলোর মোচড়ে কান যায়। কখনও জাঁতা-র আওয়াজ মনে হয়। শব্দ করে কলাই ভাঙছে ফিরোজা বেওয়া। রাতশেষে সকালে বিছানার চাদরে পরিপাটি করে ঝাঁটা বুলোচ্ছে ফিরোজা। কখনও মনে হয় ওই বাঁশঝাড়ের শব্দেই চুলা ঝেড়ে চলেছে আম্মা। কখনও হাওয়া এমনভাবে বইছে যেন ঘর ঝাড়পোঁছ করতে গিয়ে কাচের চুড়িগুলো নেড়েচেড়ে দেখছে তার বিবি। এখন হাওয়া দক্ষিণ থেকে বইছে। আরেকটু পর পছিয়া লাগবে এই হাওয়ার সঙ্গে। তখনের আওয়াজে মহরমের ঝারনির আওয়াজ মিশে যায়। নিজের খোলা পিঠে বাঁশের ঝারনিটা চাবকে সে কেঁদে ওঠে:

শুখখা মাট্টি, শুখা জামিন মিট্টি কারবালাকা
গারাম বালুমে পানি নাই হে, খালি খুনকা নাদ্দি হায়
কাহে হিংসা, কাহে এত্তা লাড়াই?
হোগাই তো, হাবিল-কাবিল কা তো হুয়া এইসে পাইহলে
জামি তো আল্লাকা। ইজ্জাত আল্লাকা, কাহে এই দোনোঠো লেকে এত্তা লাড়াই?

এইসবই বা এইসবের মতোই কিছু ঘটছিল তার ইংরেজবাজার থেকে ফুলহরের ধারে ফিরে আসার কিছুকাল পরের বিকেলে। এইসবের মতোই কিছু বা এইসবই ঘটছিল তার মৈমনসিং, মধুপুর, এলেঙ্গা, সিরাজগঞ্জ, নাটোর, রাজশাহী, চাঁপাই নবাবগঞ্জ, রংরেজবাজার হয়ে ফুলহরের ধারে অনেক, অনেকদিন পর ফিরে আসার কিছুকাল পরের বিকেলে।

শুরুর দিকে ভয় লাগত খুব। কেউ যদি দেখে ফেলে? তাই চারপাশ দেখে তাড়াতাড়ি পা চালিয়ে যেতাম উকিলবাবুর বাড়ির দিকে। কাঁধের ব্যাগটা পেটমোটা হয়ে আছে দুইটা বোরখা চেপেচুপে ঢুকিয়ে রাখায়। অথচ একদম শুরুর দিকে তার বাড়ি থেকে যে বোরখা পরে বেড়াতাম, খুলতাম একদম তার বাড়ি ফিরে। মাঝে কোথাও না। গরম লাগত খুব সারাদিন পরে থাকতে। উকিলবাবু প্রতি মাসেই বলত, সে আর অল্প দিন পরেই ছাড়া পেয়ে যাবে। সেই অল্প দিন আসতে আসতে মাসের পর মাস ফুরোয়। বছরও ঘুরে যায়। টিএমসি নেতার কাছেও যেতাম প্রতি হপ্তায়। তার একই কথা: বিজেপি কেস দিয়েছে। বিজেপি কেস দিয়েছে তো তোমরা লড়ো না কেন? সে তো পঞ্চায়েতে তোমাদের হয়ে ভোট করেছিল। আচ্ছা মানলাম বিজেপির কেসে তোমরা কিছু করতে পারবে না। উকিলের টাকাটা তো খানিক দিতে পারো? আমার যাতায়াতের ভাড়াটা কমপক্ষে? নইলে পার্টি করে লাভ কী! তার বাপকে স্টেশন বাজারের কাছেই একটা পাঁচ কাঠা জমি বেচে তো দিতে হল এসবের চক্করে। নেহাত বুড়া কানে কিছুই শোনে না আর, আর কোনও জোয়ানমদ্দ নেই বাড়িতে। নইলে বাড়ির বউকে জান থাকতে এত দৌড়াদৌড়ি করতে দিত না। বুড়া মাজার সামলাচ্ছে এখন প্রায় একাই। কেসের তারিখগুলার আগের শুক্রবার ঠ্যাংকাট্টা পীরের কবর গিয়ে কম্পাসটা ছুঁয়ে বসে থাকতো ঘণ্টার পর ঘণ্টা। বেরনোর আগে মাথায় ঠ্যাংকাট্টার তাবিজ ছুঁইয়ে বিড়বিড়াত: “মজনু শাহকা দোয়া হইল হাম্মার বেটাকা উপ্পর। বউমা তুমি কিন্তু ইংরেজবাজার শহরে একটু বুঝেসুঝে চলাফেরা করো। খুব বিপদের সময় আমাদের।"

এসব দোয়ার ওপর ভরসা রাখতে পারলে আমি মাসের পর মাস কি মালদাটাউনে দৌড়োতাম? এত গরম ছিল সেদিন যে, বোরখার ভেতর জান হাঁসফাঁস আমার। বাস থেকে নেমেই সুলভে গিয়ে বোরখা খুলে ফেললাম। তারপর বোরখা না পরেই উকিলবাবুর বাড়ি। “আপনার মুখ’টাকে কাজে লাগাতে হবে বুঝলেন?”- আমি কিছুই বুঝিনি যদিও সেইদিন। শুধু এইটুকু বুঝলাম, উকিলবাবু বেশি বেশি কথা বললেন সেদিন আমার সঙ্গে। তারপর যতবারই মালদাটাউন গেছি, নেমেই সুলভে গিয়ে বোরখা ব্যাগে ভরেছি। ফেরার আগে সুলভে ঢুকে ফের বোরখা পরে বাস। ভালুকা পৌঁছতে পৌঁছতেই সাড়ে সাত। ফতেপুর ঢুকতে ঢুকতে আট-সাড়ে আট। নামতে না নামতেই কোনও না কোনও মুরুব্বি জিজ্ঞাসা করবেই, "ইংরেজবাজার থেকে ফিরলা?" সতেরো ক্রোশের এই রাস্তা এই এক বছরে কত রংই না দেখাল আমায়!

সে জেলে না গেলে এত রাত অবধি কি বাইরে থাকতে পেতাম কোনও দিন? সে জেলে না গেলে কি এত লোকের সঙ্গে পরিচয় হতো? সে জেলে না গেলে কি মালদাটাউনে এত ভালো ভালো রেস্টুরেন্ট আছে, জানতে পারতাম? সে জেল যাওয়ার একমাস অবধি প্রতিদিন ভাবতাম, সামনের হপ্তাতেই বাড়ি চলে আসবে। সামনের হপ্তা আসেই না দেখে রাতের ঘুম যেত পিছিয়ে। ঘুম পিছিয়ে গেলে ফোন ছাড়া আর কার কাছে যাব? মোহরের পরে ফেসবুক ছেড়ে দিতে হয়েছিল। আবার অ্যাকাউন্ট খুললাম। Angel Moon 2002। Nispap Balak ওয়েভিং। hi-hi, ke krca- dnr hlo, gd nght-gd nght… সাইকেলে বাতাস কেটে উড়ে যাওয়ার ইস্কুলে পড়ার সময়ের সেই দিনের মতো লাগছে আমার।

হিজাব পরে ইস্কুল যেতে শুরু করেছি তখন। আল মাহমুদ বলে এক কবির কবিতা সেদিন পড়ানো ছিল ক্লাসে। স্যার এরই কী একটা যেন কবিতার কথা বলেছিল। সব লাইন মাথা থেকে উড়ে গিয়েছিল। খালি একটা লাইনই মাথায় নিয়ে জোরকদমে সাইকেল চালিয়ে ফুলহরের পাশে এসে দাঁড়ালাম। এইখানে কেউ কোথাও নাই এখন নদীর ধারে। চারদিকে তাকিয়ে হিজাব খুলে ফেলেছিলাম। ক্লিপ আলগা করে চুলটাও খুলে দিলাম। ফুলহরের হাওয়া ঝাপট মারছে মুখে। চুল উড়ছে কারবালার নিশানের মতো। গলা ফেড়ে চিল্লালাম, “কবিতা তো মক্তবের মেয়ে চুলখোলা আয়েশা আক্তার।" তিনবার চিল্লে চিল্লে বললাম লাইনটা। তারপর ফের চুল বেঁধে , হিজাব পরে সুদমাসের মতো বাড়ির দিকে সাইকেলের প্যাডেল মারলাম।

“তু ফকির কব সে হই গেলিন বেটা!”, জাঁতায় আরেক মুঠ কলাই দিয়ে, গলায় এক আশমান অবিশ্বাস নিয়ে তার আম্মা তাকে পুছেই ফেলল। জিজ্ঞাসা করার মতো এবং তার চেয়েও বেশি অবাক হওয়ার মতো বিষয় এটি আলবাৎ। তার মতো বহুত জোয়ান মর্দ এই খানকাহতে থাকত তালিব হিসেবে। তালিম-শেষে বেশিরভাগই ঘর গেরস্থালির কাজে যুতে যেত। পীর দূরের কথা, ঠিকঠাকও মুরিদও বেরোয়নি এই খানকাহ থেকে। কত দূরদূরান্ত থেকে শালিকরা আসেন এখানে! সেইসব দূর দেশ থেকে আসা সূফিয়ান মানুষ জানেন কত কিসসা! বলেন কত কিসসা! কত জলসা হয় এখানে! কিন্তু সবকিছু শেষ অবধি ঠেকে লঙ্গরখানায়। রাতশেষে ভোরবেলার গরুর নাল্লি সুরুয়া আর চালের রুটি খেয়ে বছর কে বছর সব তালিবই গেরস্থ হয়ে যায়। গঙ্গাজলী গম বোনে। নামাজ পড়ে। ভাদোই ধান বোনে। নামাজ পড়তে ভুলে যায়। বন্যা-শেষে ফুলহর আর গঙ্গা বিন খাটনির চাষের জন্য পলি ফেলে যায়। কলাই ছড়িয়ে দেয় ঘুট্টিতে পলি মাখতে মাখতে। নামাজ পড়ে। কলাইয়ের রুটি মাটির সরায় আঁচ পায়। কলাইয়ের রুটিতে তেল-নুন মাখিয়ে মরিচে কামড় দেয়। নামাজ পড়তে ভুলে যায়। মহরমের সময় ঝারনি গান গেয়ে কারবালার প্রতি কর্তব্যও তারা সেরে নেয় বছর কে বছর। লঙ্গরখানার গরুর পায়ার কথা জিভে এলে খানকাহের মজলিশে ভিড় বাড়তে থাকে। কিন্তু তা বলে সে সত্যিকারের ফকির হয়ে যাবে আর ফকিরদের হয়ে কোম্পানির বিরুদ্ধে লড়তেও রাজি হয়ে যাবে- এই কথা ফিরোজার কাছে আজরাইল নেমে আসার মতোই বিভীষিকা। ফিরোজা ভেবেছিল, তার বিয়া করাবে সামনের সনে। ঘরে পোতা আসবে জলদি জলদি। পোতার জন্য কাঁথায় তোতাপাখি, বিল্লি আঁকবে সূঁই দিয়ে। কালো সর্ষা ভরে বালিশ বানাবে পোতার। দুনিয়া পাবে আরেক খাটিয়া জোলাহ-কে। সমস্ত কিছু বানে ভেসে গিয়ে তার ফকির হয়ে যাওয়া তো ফিরোজার কাছে আজরাইলই। সমস্ত বিভীষিকাই একসময় সয়ে আসে। সমস্ত আজরাইলকেই মানুষ মেনে নেয়। “একঠো বাত কানপট্টি মে ঘুষালে, ই তল্লাটি মে তুয়ার ভিখমাগনাগিরি হাম্মার জিন্দা থাকিতে না হইবে। যাহ ভাগ। উ ফকিরুয়াকা গুষ্টি বাঁচা”, যাঁতায় আরেক মুঠ কলাই দিয়ে গলায় সাত আশমানের আদেশ নিয়ে ফিরোজা তার দিকে তাকিয়ে আছে।"

"আম্মা! বাকের মহাম্মাদ হামলোগোকো রংরেজবাজার সে যাকে রাজশাহী মে মিলনেকো কহিছাও। ওহিসে মহাস্থানগড়কে খানকাহমে যানা পড়ে হো। ফির কুছ মাহিনা বাদ মৈমনসিং, দিনাজপুর, ফির রংপুর, ফির কোচবিহার”, অস্বস্তিকর চুপচাপে ভরে যায় চারপাশ। “কোম্পানিকে লাথ খাকে জাহান্নামমে সড়েগা তু অর তুয়ারি ফইন্নি চামগুদর মজনু”, স্বস্তি ফিরিয়ে আরেক মুঠ কলাই ফিরোজা জাঁতায় দিতেই ঝারনির শব্দ শুনতে পায় সে-

ভাইকা দুখমে হানিফা আয়া বেটিকো বেহা ছোড়কে
ইমাম গুষ্টিকো বাঁচানা হোগা আই সোচকে।
বেইমান লোগকা মারকে বাঁচানেকে লিয়ে আগুরায়ে
আপনা বিরানা সাবকো আজাদ কারিন
ইসলামকো ঝান্ডা দিন জয়নাল কা হাত মে।
নারায়ে তাকবির আওয়াজ উঠা বাহুত জোর সে…

'নারায়ে তাকবির'- এই হাঁক তুমি জীবনে কোনও দিন দিয়েছিলা সেদিনের আগে? dnr hlo? তোমায় কোনদিন জুম্মার নামাজটুকু ছাড়া আর কোনও নামাজ নিয়ম মেনে পড়তে যেতে দেখেছে কেউ এইসব ঝুটঝামেলার আগে? rply krcona kno? লুঙ্গি পরে স্টেশন বাজারে ঘোরাফেরা করবা তুমি- তোমার মরে যাওয়া আম্মাও কি ভাবতে পেরেছিল? hlo sab thk ace? এমন দাড়ি রাখলা কেন যে, তোমার থুতনির তিল’টা আর চোখেই পড়ত না? kno prblm? তুমি কি এখনও জানো ওই তিলটার দিকে আমি তাকাতাম মোহর হওয়ার আগে থেকেই? sin kre rply dcho na kno? অভিজিৎ, কুমার শানু, বাবুল সুপ্রিয়র গান ছাড়া যে তুমি ইউটিউবে আরও কিছু শুনতা, তা জানতে পারিনি কেন? tmi nje fb krtcho ekhn? হুজুরদের কোনও কথা জলসায় গিয়ে শুনেছ কোনও দিন? hi ke krco Angel Moon? তোমার বাবার চোখ এড়িয়ে ঠ্যাংকাট্টা পীরের মাজারের দানবাক্স থেকে টাকা সরিয়ে আমার জন্য বাঘছাল ব্রা-প্যান্টি কিনে আনার পরে চার আনা ভয়ও কি ছিল তোমার চোখে? 1ta ktha bli? ওই কোন ইমামের কথায় কী জাদুমন্ত্র পেয়েছিলা? rag krba nato? “আব ওয়াক্ত ইয়ে হ্যায় কি হাম গয়ের মুসলমানো কো বোলে কি আগর হামদর্দ হো, তো হামারি শর্তো পে আ কে খাড়ে হো। আগর হামারি শর্তো পে নাহি খাড়ে হো সকতে , তো হামদর্দ নহি”, শুনতে শুনতে ভাবি ও তো শালা সত্যিকারের ইমামও নয়, তাহলে এই কথা শুনে তুমি দলবল জুটিয়ে চলে গেলা রেললাইন উপড়াতে? Tmi ke jno tmi kub hot? যেদিন রেললাইন উপড়ে সুন্দর লেডিস ঘড়িটা এনে দিলা, সেইটা কার ছিল? Angel Moon tmi ki jno tmi kube sexi? কারও হাত থেকে জোর করে খুলে এনেছিলা ওই ঘড়িটা, তাই না? ktha blba na? তুমি কি মেয়েমানুষটাকে মেরে ফেলেছিলে? dstrb karce? তোমাকে জেল থেকে বের করে আনতে পারব কি? ghomea gaco? জেলে পচে মুসার মতো মরুক ওই হারামির বাচ্চা শার্জিল। তোমাকে জেল থেকে যে করেই হোক আমি বের করব, এইটা আমার লড়াই। gd nght? darao । ktha blcila na kno? make osud dcilam। o। sex krba? ekn? ha। aca।‌

 

Illustration

গ্রাফিক্স: এক্ষণ পাল

কাউকে না জানিয়েই জিনিসটা নিজের কাছে রেখে দিয়েছে সে। জিনিসটা কী, ঠিক বুঝতেও পারছে না। পিতলের একটা গোল বাক্সমতো। ডালা লাগানো, ডালাটা আবার চাপ দিলে খুলে যায়। সাদা গোলমতো একটা কাচের ভেতর একটা ছোটকা তির খানিক ঘুরে ফিরে থেমে যাচ্ছে। তিরের মুণ্ডিটায় লাল দাগ দেওয়া। সবার চোখের আড়ালে ঝোলা থেকে বার করে জিনিসটা মাঝে মাঝেই দেখছে সে এই হপ্তাটাজুড়ে। বাকের কোম্পানির কোনও কিছু ছুঁতেই বারণ করে দিয়েছে তাদের। কোম্পানির সবকিছুকে এই মাটি থেকে না তাড়ানো অবধি বাড়ি ফেরা নাই। কোম্পানির লোক, লোকদের পোশাক, লোকগুলোর ভাষা- সবকিছুকে ঘেন্না করতে বলে বাকের। একদিন রাতে খাওয়ার পর কোম্পানি কী খতরনাক, বোঝাচ্ছিল বাকের। সে ঢুলছিল শুনতে শুনতে। তাকে গুদগুদি দিয়ে বাকের জাগিয়ে বলেছিল, কোম্পানি জিতে গেলে কোম্পানি নাকি রংরেজবাজারকে ইংরেজবাজার বানিয়ে ছাড়বে। ইংরেজবাজার নামটা শুনে সে খুব হেসেছিল। কোম্পানির নাম আর নিশান মিটিয়ে দিবে তারা এই মাটিতে থেকে। কোম্পানির ওই 'কাফের' বোল আর কেউ শুনবে না এই মাটিতে। ঘেন্না সে করেও কোম্পানিকে ভয়ংকর। ঘেন্না না করলে ঘোড়া থেকে তরোয়ালের কোপে পড়ে গিয়ে কিছুক্ষণ পর এমনিই মরতে চলা লোকটার গলার নলিতে হাঁসুয়ার চারখান কোপ বসাতে পারতো কখনো? দেড়শো’টা লাশ হয়ে যাওয়া ফকির সেই সময় তার আশেপাশে জড়ো হয়ে তার জন্য দোয়া করছিল, সে জানে। কোম্পানির সাদা চামগুদরটা মরে গেলে তার কোমরে সে এই পিতলের ছোট ডালাসমেত বাক্সটা খুঁজে পায়। ঘেন্না কমে গেলে লোভ আসে খানিক। সেই লোভ থেকেই এইটা নিয়ে নেয়। কোম্পানির সবকিছু যেদিন এই মাটি থেকে মুছে ফেলবে তারা, সেদিন না হয় কোনও জলে সে ফেলে দিয়ে আসবে এইটা। ফেলে দেওয়ার আগে আম্মাকে একবার দেখাবে। মৈমনসিং ছেড়ে তিনদিন হলো এসেছে কালেশ্বরে। ফকিরদের এই ডেরায় এখন সে আর কিছু ঘোড়া ছাড়া আর কেউই জেগে নাই বোধহয়। অন্ধকারেই পিতলের ডালাটা বারবার খোলে আর বন্ধ করে সে। সে শুনেছে, ফজরের নামাজের ঠিক আগে আগে মরে যাওয়া ফকিররা সব জায়গা থেকে উড়ে উড়ে এসে বাকেরকে সব খবর দিয়ে যায়। তাই কিছুতেই কোম্পানি মজনু শাহর খোঁজ পায় না। সেইদিন কি মরে যাওয়া ফকিররাও ঘুমাচ্ছিল? না কি কোম্পানির এই জিনিসটা তার কাছে থাকার জন্য মরে যাওয়া ফকিররা এই ডেরাকে কোম্পানির ছাউনি ভেবে বাকেরকে খবর দিতে আসে নি? কোম্পানির সামনে মজনু শাহ আর তার দলবল এইবার দুই ঘণ্টাও টিকতে পারেনি। নিজের বন্ধুদের লাশ মাড়িয়ে গুলি এফোঁড়-ওফোঁড় হয়ে যাওয়া একটা পা নিয়ে সে বাকেরের সঙ্গেই বেরিয়ে পড়েছিল। মধুপুর, এলেঙ্গা হয়ে ব্রহ্মপুত্র টপকেছিল এই পা নিয়ে। পা দিয়ে গন্ধ বের হতে শুরু করেছে তখন। পরের কিছু সপ্তাহে সেই পা নিয়েই সিরাজগঞ্জ, নাটোর-রাজশাহী, চাঁপাই নবাবগঞ্জ হয়ে রংরেজবাজার। এইখান থেকে সতেরো ক্রোশ দূরে তার বাড়ি। ততদিনে তার পা ঝুলে শুকিয়ে এসেছে। হেকিম মলম লাগিয়ে দেয়। মনে হয়, সে বেঁচে যাবে। রংরেজবাজার হয়ে রাজমহলের গঙ্গার দিকে এগোচ্ছিল পরের দুই দিন। এতদিন পর সে ফিরেছে এখানে যে, মনে হয় নতুন এক জায়গা। সব নয়া নয়া ঠেকে। টান আসে আবার। সে মীরাট অবধি যেতে পারবে না। তার ঝুলে থাকা অসাড় পা তাকে এখানে থেকে যেতে বলে। সে নিজেই বাকের-কে বলে এক বিকেলে, যে সে আর পারবে না। সে আলাদা পথ ধরে। রজব মাসের বিকেলের গঙ্গার আলোয় বাকেরের নৌকো যখন আলো হয়ে আসছে, সে আর বাকেরকে দেখতে পায় না। বাকেরের সঙ্গেও আর কাউকে দেখতে পায় না। গুলি-খাওয়া বিষানো ঠ্যাং নিয়ে সে দেখে, মজনু শাহ আলো হয়ে রাজমহলের দিকে চলে গেল। সারাটা জীবন সে কাউকে বলতে পারেনি যে, সে কোনও বাকের মহাম্মাদকে চিনত। তাকে যখন পীর বানিয়ে দিল, তার চারপাশ সে যে প্রশ্নের উত্তর খুঁজেই চলত, তা হলো বাকের মহাম্মদের আলোই কি মজনু শাহ, না কি, কোম্পানির হাতে খুন হওয়া সব ফকিরের আলো বাকেরের ভেতর এসে জুড়েছিল? ওইসব মরে যাওয়া ফকিরদের আলোতেই বাকেরকে কি সে মজনু শাহ দেখত? মজনু শাহের দোয়া আছে তার সঙ্গে- ফুলহরের ধারের এই গ্রামে তার ফিরে আসার কিছু বছর পর বলতে থাকে লোকে। অনেকদিন পর কোম্পানির না চিনতে পারা জিনিসটা এক হাতে নিয়ে তার না থাকা পায়ের দিকে তাকিয়ে আরেক হাত দিয়ে বাঁশের ঝারনি’টা চাবকেছিল নিজের পিঠে। গেয়ে উঠেছিল:

কারবালাকা খাজুর মিঠঠা, তাবভি আদমি সাবকা মন এত্তা তিত্তা কাহে?
আসগার, আকবার সবকোই তিত্তা হোকেই মারা ।
আল্লা ইনলোগোকো রাস দিয়ো, পানি দিয়ো আল্লা।

এই কম্পাসটা ঠ্যাংকাট্টা পীরের মাজারে কোথা থেকে এল? কীসের জন্যই বা থেকে গেল? ঠ্যাংকাট্টা পীর কি ইংরেজিও জানত? জ্ঞান হওয়া ইস্তক তার এই সকল কৌতূহল। কোনও দিনই কেউ সদুত্তর দিতে পারেনি তার এই জিজ্ঞাসার। কম্পাসে খোদাই করা: জর্জ থ্রি, লন্ডন, ১৭৬০। এই কম্পাসটার জন্য পীরের মাহাত্ম্য যে খানিক বেড়েছিল তা সে, তার আব্বা, তার বড়দাদা সকলেই মনে মনে জানত। তার বড়দাদার থেকে শোনা গল্প, তার আব্বা মাজারে আসা লোকজনকে শোনাতো। এই কম্পাস আসলে এক জাদুকম্পাস। মজনু শাহ এই কম্পাস দিয়েই ইংরেজদের আসার পথ জেনে যেত। তাই ইংরেজরা কিছুতেই মজনু শাহকে ধরতে পারত না। এমনকী, যুদ্ধে হেরে গেলেও, এই কম্পাস ছিল বলেই মজনু শাহ উধাও হয়ে যান। এই কম্পাস ছুঁয়ে সে ফিরোজাকে চেয়েছিল। পেয়েছে। যতবার মাজারের দানবাক্সের টাকা সরিয়েছে, ততবার এই কম্পাস ছুঁয়ে দোয়া মেঙেছে, আব্বা যাতে টের না পায়। আব্বা কোনও দিন কিছু বলেনি তাকে এই নিয়ে। সে কম্পাসের এই জাদুতে ততদিন ভরসা করেছিল, যতদিন না পুলিশ রেললাইন উপড়ানো আর ট্রেনে লুঠপাঠ চালিয়েছে কারা- খোঁজ নিতে নিতে তার কাছে এসে পৌঁছলো। আজকাল তার মনে হয়, সব দোষ মোবাইলের। না থাকত মোবাইল, না তার কাছে এসে পৌঁছতো শার্জিল ইমাম। শার্জিল ইমামের কথা সে প্রথম পেয়েছিল হোয়াটস্যাপে। মাজারে বসেই শুনেছিল। তারপর ইউটিউব খুঁজে খুঁজে শার্জিলের কথা শুনত। ফেজ আর লুঙ্গি পরে স্টেশন বাজারে যেতে শুরু করে রোজ। ফিরোজা ছিল না ঘটনার দিন। নিজের আব্বার বাড়ি গিয়েছিল আগের রাতে। ফিরোজার সুরমাদানী থেকে চোখের তলে জীবনে প্রথমবারের জন্য সুরমাও লাগিয়ে নেয় সে। 'নারায়ে তাকবীর!'- বিজেপি, ভারত আর মুসলমানের মাঝখানের সীমানা হিসেবে সে চিহ্নিত করে এই রেললাইন। ভারতে থাকার প্রবল ইচ্ছায় সে এই সীমানা ভাঙতে এগোয় বাকি অনেক মানুষের সঙ্গে, গাঁইতি, শাবল নিয়ে। সীমানা ভাঙে। ভাঙা সীমানায় থাকা ট্রেনের অচেনা মানুষগুলো সব বিজেপি, এমনই ঠাহর করে সে। নইলে বারবার বলা সত্ত্বেও ট্রেন থেকে নামতে চাইছিল না কেন? এই এনআরসি-র বাজারে কেউ বেরোয়? ট্রেনের কাচ ভাঙে। লাঠির বাড়ি পড়ে কিছু লোকের পিঠে। একটা লেডিজের হাত থেকে খুব ভালো দেখতে একটা ঘড়ি খুলে নেয় সে। লেডিজটা একটু ছটফট করেছিল, তারপর ভয় পেয়ে চুপ করে গিয়েছিল। ফিরোজা খুব খুশি হয়েছিল ঘড়িটা পেয়ে। মাজারের বাক্স থেকে টাকা সরিয়েছে সে আবার, ভেবেই নিয়েছিল ফিরোজা আগেরবারের মতোই।

মজনু শাহ কোনও জাদুকর ছিল না, সে হাড়ে-মজ্জায় টের পায় তিনদিন পর পুলিশ গ্রামে পা দিলে। লুকোনোর একটাও জায়গা না পেয়ে ঠ্যাংকাট্টা পীরের কম্পাস আঁকড়ে ধরে প্রথমে ঠ্যাংকাট্টা পীরকে ডাকতে থাকে সে। কাজ না হওয়ায় মজনু শাহ-কে ডাকতে থাকে কলিজার ভেতর থেকে জীবনে প্রথমবার। কাজ হয় না। কম্পাসটা জড়িয়ে উধাও হতে চায়। তাতেও কাজ হয় না। কিছুদিন পর লক আপে পাছায় গোটা রাতের বেল্টের দাগ নিয়ে বসে সে মহরমের সময় মনে করে গেয়ে ওঠে:

দুনিয়াকো বাস্তে আল্লাহ হোসেনকো দাওয়াত দিস থা
জান কুরবানকো লেকে দাওয়াত কাবুল কারিন থা
রে জালিম সীমার তাই কোন পাত্থরকা তৈয়ারি থা।
জাহান্নমকা আগ তেকো ঘিন কারেগা
জিন্দা খালেগা তেকো

“সার, সার ও আরবী ভাষায় জেহাদের গান গাইছে”, তার পাশে থাকা এক পকেটমার দেশভক্তিমূলক চুকলি করে দেয় লক আপ থেকে। পাঁচ মিনিটের ভেতর আবার পাছায় বেল্ট নেমে আসে।

ফিরোজা বেওয়া ফের ফিরোজা বিবি হয়ে গেছে। ঘটনাটা মজনু শাহ-র আলো হয়ে যাওয়ার মতোই মনে হয় তার। সে তো মুসলমানকে বাঁচানোর জন্যই কোম্পানির সঙ্গে লড়তে গিয়েছিল। গুলি খেয়ে পচে যাওয়া পা তাকে বাদ দিতে হয়েছে তার নিজের কউমের জন্য লড়াইয়ে। তাইলে আল্লাহ তার সঙ্গে এত বড় জুলুমটা হতে কী করে দিল? “তেকো জিন্দা দেখিগো, ই আশা নাই ছিল মোর”, চুলায় চাপানো মাটির সরাতে কলাইয়ের রুটিতে তাপ দিতে দিতে ফিরোজা বিবি জানায়। সে বেঁচে আছে। এই বেঁচে থাকা তার আম্মার কাছে ঠিক কতটা অস্বস্তির, তা বোঝার চেষ্টা করে, অস্বস্তি কাটাতে আম্মার কাছে কলাইয়ের রুটির আবদার করে। নুন, তেল দিয়ে দুটো কলাইয়ের রুটি খেয়ে চলে আসে এই বাঁশঝাড়ে। গলার শির ফুলিয়ে কান্না লাগে তার। এত খুন মন থেকে ঝরে! এত খুন তার ফক্কিনি শরীলে! এত এত বিষ মনে নিয়ে সে বাঁশঝাড়ের বাতাসে কান দেয়। বাঁশের পাতাগুলো আলাদা আলাদা কাঁপে। ঝরনার মতো লাগে খানিক। এত এত বিষ জানের ভেতর নিয়ে সে বাতাসে কান পাতে। পাতার আওয়াজ কানে সইতে না সইতেই বাঁশের গা-গুলোর মোচড়ে কান যায়। কখনও জাঁতার আওয়াজ মনে হয়। শব্দ করে কলাই ভাঙছে ফিরোজা বেওয়া। কখনও মনে হয় ওই বাঁশঝাড়ে শব্দেই চুলা ঝেড়ে চলেছে আম্মা। এখন হাওয়া দক্ষিণ থেকে বইছে। আরেকটু পর পছিয়া লাগবে এই হাওয়ার সঙ্গে। তখনের আওয়াজে মহরমের ঝারনির আওয়াজ মিশে যায়। নিজের খোলা পিঠে বাঁশের ঝারনিটা চাবকে সে কেঁদে ওঠে:

হোগাই তো, হাবিল-কাবিল কা তো হুয়া এইসে পাইহলে জামি তো আল্লাকা। ইজ্জাত আল্লাকা, কাহে এই দোনোঠো লেকে এত্তা লাড়াই?

কীসের লড়াই লড়েছ তুমি? পুলিশের জুতার লাথ খেয়েছ কখনও? পাছায় বেল্টের পর বেল্ট মারলে কেমন লাগে জানো? দুটা তাগড়া হারামি গোয়ালা জেলে জয়শ্রীরাম বলতে বলতে পেছন মারলে কেমন লাগে জানা ‌আছে? পরের দিন পায়খানা যেতে কেমন লাগে জানো? জেলের ভেতরের খাবারের গন্ধ শুঁকেছ কোনও দিন? জলের সঙ্গে পারদ মিশিয়ে খাওয়ালে কেমন গলা শুকোয় জানা আছে? তুমি কি বোঝো, মুসলমানের আব্রুর জন্য লড়ছি আমি? তোমার লজ্জা লাগেনি এমন বেহায়া হয়ে উকিলের কাছে আসতে? এমন বেআব্রু হয়ে চলাফেরা করলা কী করে? আমি তো খালি একদিনের কথা শুনেছি সইফুলের কাছ থেকে, এর বাইরে এমন কয়দিন তুমি রেস্টুরেন্টে খেতে গেছ উকিল আর পুলিশ অফিসারটার সঙ্গে? আমি কি বুঝি না, তোমার কী কী দেখে আমার জামিন করানো হয়েছে? তুমি পারলা কী করে এইসব করতে? তোমাকে স্টেশন বাজারেও বোরখা ছাড়া দেখেছে কেউ কোনও দিন? তুমি চুল খুলে, মাথায় কাপড়টুকু না দিয়ে এজলাসে বসে থাকলা কী করে? গোটা মালদাটাউন বোরখা ছাড়া ঘুরেছো তুমি, আর ভেবে নিলা কেউ দেখতে পাবে না তোমায়? তোমার মুখ, চুল দেখে ওই হিন্দুর বাচ্চাগুলার লাল ঝরবে , আর সেটা দেখতে তোমার খুব ভালো লাগে, তাই না? ওদের সামনে মুজরা করে আমাকে জেল থেকে বার করেছ, তাই তো? আমাকে চেনো না তুমি, ভেবেছ তোমার সব খবর জানতে পারব না? এত মোবাইল ঘাঁটো কেন তুমি? দাও, মোবাইল দাও, চড় খাবা? ফেসবুক খুলেছ? দেখি কী করো ফেসবুকে? কে এই Nispap Balak? ওই উকিলটা? ও না হলে কে? নিজের ন্যাংটা ছবি দাও? আমি জেলে গেলাম আর তুমি ফূর্তি করলা? কাউকেই ভয় পাও না? কোথা থেকে আসে এত সাহস? আমি মুসলমানদের জান, মান বাঁচাতে জেল খাটতে চলে গেলাম আর তুমি এইসব করলা ফেসবুকে? তুমি কেমন মানুষ? তুমি কি সবার সঙ্গে সেক্স করতে পারো? তুমি কি খানকি?

উত্তরের অপেক্ষা না করেই বুকভর্তি আনচান নিয়ে সে চলে আসে এই বাঁশঝাড়ে। হাতে ফিরোজার মোবাইল। ঘাঁটতে থাকে। কতদিন পর বাঁশের ঝাড়ে বাতাস বওয়ার আওয়াজ শুনছিল সে! বাঁশের পাতাগুলা আলাদা আলাদা কাঁপে। ঝরনার মতো লাগে খানিক। মনজুড়ে একটা আঁকুপাঁকু। Angel Moon আর Nispap Balak-এর কথা চালাচালি পড়ছে সে। চিল্লে সবাইকে বলে দিতে মন চায় সবকিছু। তাইলে তার মানের কী হবে? ফিরোজার না থাক, তার তো নিজের মান আছে কিছু। চিল্লাতে সাধ জাগলেই ঢোক গিলে নেয় সে। এত এত বিষ মনে নিয়ে সে বাঁশঝাড়ের বাতাসে কান দেয়। এত এত বিষ জানের ভিতর নিয়ে সে বাতাসে কান পাতে। পাতার আওয়াজ কানে সইতে না সইতেই বাঁশের গাগুলোর মোচড়ে কান যায়। রাতশেষে সকালে বিছানার চাদরে পরিপাটি করে ঝাঁটা বুলাচ্ছে ফিরোজা। কখনও হাওয়া এমনভাবে বইছে, যেন ঘর ঝাড়পোঁছ করতে গিয়ে কাচের চুড়িগুলো নেড়েচেড়ে দেখছে তার বিবি। এখন হাওয়া দক্ষিণ থেকে বইছে। আরেকটু পর পছিয়া লাগবে এই হাওয়ার সঙ্গে। তখনের আওয়াজে মহরমের ঝারনির আওয়াজ মিশে যায়। নিজের খোলা পিঠে বাঁশের ঝারনিটা চাবকে সে কেঁদে ওঠে:

খুনকা নাদ্দি বাইরা রোনেকা ম্যন আঁখমে
দুনিয়া রোরাহা তাকলিফ মে সিন্না হায় হায় কাররাহা
আসগার তাই কাঁহা গিয়ারে
পানিকা বিনা মারগিয়া
একবার আকে মাকো দেখলে

ধূলাকা আঁধি উঠ গিয়া
কাফেরলোগরা মৌজমস্তি কাররাহা

More Articles