বনধে উত্তাল বাংলা! ভাটপাড়ায় গুলি! কোচবিহার থেকে আসানসোল, কোথায় কী পরিস্থিতি?
BJP Bangla Bandh: ভাটপাড়ার ঘোষপাড়া এলাকায় গুলি চলার ঘটনায় বিজেপির একজন কর্মী আহত হয়েছেন বলেও খবর।
বিজেপির ডাকা বনধে জেলায় জেলায় উত্তেজনা ছড়িয়েছে। মঙ্গলবার আরজি কর কাণ্ডের বিচার চেয়ে 'পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ' নবান্ন অভিযানের ডাক দেয়। সেই অভিযানকে ঘিরে পুলিশের দমনপীড়নের প্রতিবাদে বুধবার বাংলা বনধ ডেকে দেয় বিজেপি। এই বনধকে কেন্দ্র করে সকাল থেকেই রেল অবরোধ, সড়ক অবরোধের কর্মসূচি নেন বিজেপির কর্মী-সমর্থকরা। সরকারি বাস চললেও বেসরকারি বাস চলেনি একটিও। স্থানীয় বাজারগুলিতে দোকানপাট বন্ধ। বনধকে কেন্দ্র করে চলেছে গুলিও! ভাটপাড়ার ঘোষপাড়া এলাকায় এই গুলি চলার ঘটনায় বিজেপির একজন কর্মী আহত হয়েছেন বলেও খবর। ব্যারাকপুরের প্রাক্তন সাংসদ তথা বিজেপি নেতা অর্জুন সিং এই ঘটনায় তৃণমূলের বিরুদ্ধেই আঙুল তুলেছেন স্বাভাবিকভাবেই। ব্যারাকপুরের বিজেপি নেতা অর্জুন সিংয়ের অভিযোগ, দুই বিজেপি নেতার গাড়িতে অন্তত ছ’ রাউন্ড গুলি চালানো হয়েছে। তিনজন আহত। অর্জুন সিং বলছেন, গুলি চালানোর পাশাপাশি বোমাবাজিও হয়েছে দুই বিজেপি নেতার গাড়ির সামনে।
অন্যদিকে, বিভিন্ন জেলায় বনধকে কেন্দ্র করে বিক্ষিপ্ত উত্তেজনা দেখা গিয়েছে। ব্যাপক পুলিশি ধরপাকড়ও চলেছে। পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটালের সেন্ট্রাল বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন এলাকায় বন্ধের সমর্থনে বিজেপির মিছিল আটকে দেয় পুলিশ। প্রতিবাদে রাস্তাতেই শুয়ে পড়েন বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা। পুলিশের সঙ্গে ব্যাপক ধস্তাধস্তি শুরু হয় এই বিজেপি কর্মীদের। হিংসা ছড়ানোর অভিযোগে বিধায়ক-সহ কয়েকজন বিজেপি নেতাকে আটক করে পুলিশ। মাথাভাঙা-কোচবিহার রাজ্য সড়কে এনবিএসটিসির বাসে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ উঠেছে বিজেপির বন্ধ সমর্থকদের বিরুদ্ধে। রাস্তায় বাস-গাড়ি আটকানোর অভিযোগও উঠেছে। কোচবিহারে বনধ ঠেকাতে পাল্টা পথে নামে জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। কোচবিহারে ৩০ জনকে গ্রেফতারও করা হয়েছ। তাঁদের মধ্যে আবার দু’জন বিজেপি বিধায়কও রয়েছেন। তুফানগঞ্জের বিধায়ক মালতী রাভা রায় এবং কোচবিহার দক্ষিণের বিধায়ক নিখিলরঞ্জন দে-কে আটক করে পরে গ্রেফতার করে পুলিশ।
আরও পড়ুন- কলাপাতা ফেলে প্রতিবাদ! বিজেপির বনধে রাজ্যজুড়ে কোথায় কোথায় বিপর্যস্ত ট্রেন পরিষেবা?
বনধের দিন শাসকগোষ্ঠী তৃণমূলের সঙ্গে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন বিজেপি কর্মীরা। অভিযোগ, কোন্নগর চলচ্চিত্র মোড়ে জমায়েত করে বিজেপি কর্মীরা স্থানীয় ব্যবসায়ীদের দোকান বন্ধ রাখার হুমকি দেন। বিজেপির এই হুমকিকে চ্যালেঞ্জ করে তৃণমূল কর্মীরা ঘটনাস্থলে গেলে দুই পক্ষের মধ্যে বচসা, ধস্তাধস্তি শুরু হয়। আসানসোলেও মহীশিলা কলোনি এলাকায় এমনই ঘটনা ঘটেছে। বিজেপির বন্ধ সমর্থকেরা কলোনির বাজার বন্ধ করিয়ে দেন বলে অভিযোগ। পরে তৃণমূলের কর্মীরা বাজার চালু করতে এলে দুই দলের মধ্যে হাতাহাতি ঘটে।
হিন্দমোটরের মালির বাগান এলাকার বনধ সমর্থকরা একটি বেসরকারি স্কুলে গিয়ে স্কুল বন্ধ করে দেওয়ার চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ। তাঁদের আটকাতে গেলে বচসায় জড়িয়ে পড়েন অভিভাবকেরা। বুধবার সকালে কালিয়াগঞ্জ শহরের সুকান্ত মোড় থেকে বিবেকানন্দ মোড় পর্যন্ত একটি মিছিল করেন বিজেপি সমর্থকেরা। বিবেকানন্দ মোড়ে কিছুক্ষণ পথ অবরোধ করেন তাঁরা। আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখান।
বালুরঘাট সরকারি বাস স্ট্যান্ডের সামনে বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা পিকেটিং করেন। পাল্টা বনধ ঠেকাতে বিরোধিতায় পথে নামে তৃণমূলও। বালুরঘাটে অশান্তি ছড়ানোর অভিযোগে বালুরঘাট বিজেপির টাউন সভাপতি সমীরপ্রসাদ দত্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মেদিনীপুর সদর শহরে টায়ার জ্বালিয়ে রাস্তায় বিক্ষোভ দেখান বিজেপি সমর্থকেরা। মেদিনীপুর শহরে এখনও পর্যন্ত মোট পাঁচজনকে আটক করেছে কোতোয়ালি থানার পুলিশ। বিজেপি কর্মীরা যাত্রিবাহী বাস ও গাড়ি আটকাতে শুরু করেন, গাড়ির সামনে শুয়ে পড়েন বিজেপির মহিলা সমর্থকেরা। ঘটনাস্থলে এসে বেলদা থানার পুলিশ বনধ সমর্থকদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে বচসায় জড়ান পুলিশ আধিকারিকেরা।