রয়েল বেঙ্গল নয়, সুন্দরবনের এই প্রাণীটির ওপরেই এখন নজর পশুপ্রেমীদের

Sunderbans: সুন্দরবনে বেশিরভাগ প্রাণী এখন প্রায় বিলুপ্ত হতে চলেছে, তার মধ্যে উদ্বেগজনক অবস্থায় রয়েছে বাঘরোল।

সুন্দরবন বললেই অবধারিতভাবে মনে পড়বে রয়েল বেঙ্গল টাইগারের কথা। বাংলার এই বনঘেরা ব-দ্বীপে অবাধ বিচরণ দক্ষিণরায়দের। সুখবর, ক্রমে বাড়ছে বা‌ংলার এই ম‍্যানগ্রোভ-সৌন্দর্যের ডোরাকাটা বাসিন্দাদের স‌ংখ‍্যা। কিন্তু পর্যটনের আলোর আড়ালে চাপা পড়ে যাচ্ছে না তো বন‍্যপ্রাণ সচেতনতা? বাঘ যে কোনও অভয়ারণ‍্যর প্রধান ভিত গড়ে তোলে, নিঃসন্দেহে। কিন্তু বাঘ ছাড়াও ক‍্যাট স্পিসিজের আরও বেশ কিছু প্রাণীর বাস সুন্দরবনে‌। তার মধ্যে অবশ্যই উল্লেখযোগ্য রাজ‍্য-প্রাণী বা স্টেট অ্যানিম‍্যাল, বাঘরোল।

সুন্দরবনে বেশিরভাগ প্রাণী এখন প্রায় বিলুপ্ত হতে চলেছে, তার মধ্যে উদ্বেগজনক অবস্থায় রয়েছে বাঘরোল। বেশ কয়েক বছর ধরেই বিপন্ন বাঘরোলকে বাঁচাতে উদ্যোগ নিয়েছিল সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্প। এবার বাংলায় প্রথম বাঘরোল-শুমারির কাজ করল তারা৷ সম্প্রতি বাঘশুমারির সময় গভীর অরণ্যের বিভিন্ন জায়গায় বসানো হয়েছিল ক্যামেরা। সেই ক্যামেরাতেই ধরা পড়ে বাঘরোলের ছবি। সেসব ছবি দেখে, যথাযথ পর্যালোচনা করে সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের অধীন জঙ্গলে প্রায় ৩৬৫টি বাঘরোল চিহ্নিত হয়েছে বলে দাবি বনাধিকারিকদের।

আরও পড়ুন: মহুয়ার বনে দেখা মিলবে নেকড়েদের! ঝাড়খণ্ডের এই জঙ্গলে কেন আসতেই হবে

বনদফতর সূত্রে খবর, বাঘগণনার জন্য ব‍্যাঘ্র প্রকল্পের অধীন জঙ্গলের বিভিন্ন এলাকায় মোট ৫৭৩টি ক্যামেরা বসানো হয়েছিল। তার মধ্যে বসিরহাট রেঞ্জ থেকে ১৪৪, সজনেখালি ওয়াইল্ডলাইফ স্যাংচুয়ারিতে ১২০টি, ন্যাশনাল পার্ক (ইস্ট) থেকে ৭৪টি এবং ন্যাশনাল পার্কএ ১২০টি বাঘরোল চিহ্নিত হয়। সুন্দরবনের পাখিরালা-র বাবলাতলায় বন্যপ্রাণপ্রেমী সংগঠন 'শের'-এর উদ্যোগে তৈরি করা হয়েছে একটি কমিউনিটি সেন্টার। 'বাঘবন' নামে সেই কমিউনিটি সেন্টারে 'মানুষ ও বন্যপ্রাণ সংঘাত' নিয়ে বিশেষ কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছিল সম্প্রতি। সেখানে উপস্থিত হয়ে বাঘরোল গণনা নিয়ে বিস্তারিতভাবে জানান সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের সহ-ক্ষেত্র অধিকর্তা জোনস জাস্টিন। তিনি বলেন, "সুন্দরবন মানে শুধু বাঘ নয়। অন্য পশুপাখিও রয়েছে। তাদের মধ্যে অন্যতম বাঘরোল। পশ্চিম বাংলায় প্রথম এই প্রাণীটির শুমারির কাজ হলো।" এদিনের কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক অভিজিৎ চট্টোপাধ্যায়, পরিবেশবিদ অনিন্দিতা মজুমদার প্রমুখ। এই বিষয়ে রাজ্য বন্যপ্রাণ উপদেষ্টা পর্যদের সদস্য তথা 'শের'-এর কর্নধার জয়দীপ কুন্ডু বলেন, "যৌথ বন পরিচালন ব্যবস্থার মাধ্যমে বাঘ ও বন্যপ্রাণ সংরক্ষণে কাজ করি আমরা। সুন্দরবনকে প্লাস্টিকমুক্ত করতে ডাক দেওয়া হয়েছিল। এগিয়ে এসেছিলেন পর্যটক থেকে সুন্দরবনপ্রেমীরা, সাফল্য পেয়েছিল সেই উদ্যোগ। কিন্তু এ-বছরে আবার নতুন করে সুন্দরবনের পর্যটকদের অঙ্গীকারবদ্ধ হতে হবে প্লাস্টিকমুক্ত।"

More Articles