ভারত বিশ্বের নবম বৃহত্তম বনভূমি! FAO রিপোর্টে নতুন যে তথ্য উঠে এল

India environment news: FAO-র গ্লোবাল ফরেস্ট রিসোর্সেস অ্যাসেসমেন্ট (GFRA) ২০২৫ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের মোট বনভূমি বর্তমানে প্রায় ৭২.৭৩ মিলিয়ন হেক্টর, যা বিশ্বে শীর্ষ দশ দেশের তালিকায় এক ধাপ এগিয়ে দিয়েছে।

T

জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (FAO) সাম্প্রতিক রিপোর্টে উঠে এসেছে— বিশ্বের মোট বনভূমির আয়তনে ভারত এখন নবম স্থানে। FAO-র গ্লোবাল ফরেস্ট রিসোর্সেস অ্যাসেসমেন্ট (GFRA) ২০২৫ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের মোট বনভূমি বর্তমানে প্রায় ৭২.৭৩ মিলিয়ন হেক্টর। অন্যদিকে, গ্লোবাল ফরেস্ট ওয়াচ-এর তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গিয়েছে, ২০০০ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে ভারতের প্রকৃত প্রাকৃতিক বনভূমি অনেকটাই কমেছে। প্রশ্ন উঠছে, বন সাফ করে উন্নয়ন করছে ভারত? 

রিপোর্ট অনুযায়ী, পৃথিবীর মোট স্থলভাগের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ, অর্থাৎ প্রায় ৪.১৪ বিলিয়ন হেক্টর জায়গা বনাঞ্চল। FAO-র এই মূল্যায়ন প্রতি পাঁচ বছর অন্তর প্রকাশিত হয়। এখানে সদস্য দেশগুলির তথ্যের উপর ভিত্তি করে বিশ্বব্যাপী বনসম্পদের অবস্থা বিশ্লেষণ করা হয়।

আরও পড়ুন

রসায়নে নোবেল ২০২৫: CO₂ বন্দি, মরুভূমিতে জল সঞ্চার সম্ভব হবে এবার

ভারতের বনাঞ্চলের আয়তন বৃদ্ধির ফলে এবার নবম স্থানে পেয়েছে। একই সঙ্গে বনক্ষয়-বৃদ্ধির (net forest area gain) দিক থেকেও ভারত বিশ্বের তৃতীয় স্থানে রয়েছে।  ভারত পরিবেশ বাঁচানো আর দূষণ কমানোর পথে এগিয়ে চলেছে বলেই রিপোর্টে উঠে এসেছে। পরিবেশ মন্ত্রকের মতে, সরকার বিভিন্ন সামাজিক বনায়ন প্রকল্প, মিশন গ্রিন ইন্ডিয়া, এবং স্থানীয় সম্প্রদায়ভিত্তিক বন-ব্যবস্থাপনা কর্মসূচির মাধ্যমে বনভূমি বৃদ্ধিতে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে।

তবে পরিবেশবিদদের মতে, এই উন্নতি আসলে সংখ্যার খেলাও হতে পারে। FAO বলেছে, এক হেক্টরের বেশি জায়গায় যদি অন্তত ১০ শতাংশ গাছ থাকে, সেটাকেই বনভূমি হিসেবে ধরা হয়। তাই অনেক বাগান, চাষের জমি বা গাছ বেশি থাকা যে কোনো অঞ্চলও এই হিসেবে বনভূমির মধ্যে পড়ছে। 

তবে ভারতের বনভূমি বৃদ্ধির এই পরিসংখ্যান অবশ্যই পরিবেশ ও জলবায়ু নীতির ক্ষেত্রে ইতিবাচক। বনাঞ্চল বৃদ্ধি মানে কার্বন নিঃসরণ হ্রাস, জীববৈচিত্র্য রক্ষা, মাটির ক্ষয় কমানো এবং জলচক্রের স্থিতি রক্ষা। কিন্তু কেবল পরিমাণ নয়, বনভূমির গুণগত মান বজায় রাখাটাই এখন সবচেয়ে বড়ো চ্যালেঞ্জ।

আরও পড়ুন

উন্নয়নের নামে যেভাবে বিপর্যয় ডেকে আনা হলো উত্তরবঙ্গে

পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, উন্নয়নমূলক প্রকল্প যেমন রাস্তা বানানো, খনন বা নগর সম্প্রসারণ বনভূমির উপর ক্রমবর্ধমান চাপ তৈরি করছে। একই সঙ্গে, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে অনেক অঞ্চলে বনাঞ্চলের প্রাকৃতিক প্রজনন ও পুনরুজ্জীবন ক্ষমতাও হ্রাস পাচ্ছে।

বন রক্ষার জন্য সবচেয়ে জরুরি হলো স্থানীয় মানুষ ও বনবাসীদের যুক্ত থাকা। তাদের জীবিকা ও অধিকার সুরক্ষিত না থাকলে বন টিকিয়ে রাখা সম্ভব নয়। এ ছাড়াও দায়িত্ব থাকবে— বনকে প্রকৃতভাবে বাঁচানো, প্রাণীদের রক্ষা করা এবং পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখা।

More Articles