বয়স মাত্র ৮! কেন এই শিশুকেই বৌদ্ধদের তৃতীয় সর্বোচ্চ ধর্মগুরু নিযুক্ত করলেন দলাই লামা?

8-year-old boy Third highest leader in Buddhism: আট বছর বয়সী মার্কিন বংশোদ্ভূত এই শিশুর এক যমজ ভাইও রয়েছে।

বয়স মাত্র ৮। এই বয়সেই বৌদ্ধধর্মের তৃতীয় সর্বোচ্চ নেতা হয়ে উঠেছে এক মঙ্গোলিয়ান শিশু! মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে জন্ম এই শিশুর। দলাই লামা এই শিশুরই নাম ঘোষণা করেছেন খালখা জেটসুন ধাম্পা রিনপোচে হিসেবে। তিব্বতি বৌদ্ধধর্মের তৃতীয় সর্বোচ্চ পদ এইটিই। দলাই লামাকে হিমাচল প্রদেশের ধর্মশালায় মার্চ মাসেই অনুষ্ঠিত একটি অনুষ্ঠানে অংশ নিতে দেখা যায়। সেখানেই আট বছর বয়সী এই শিশুর সঙ্গে তাঁকে দেখা যায়।

আট বছর বয়সী মার্কিন বংশোদ্ভূত এই শিশুর এক যমজ ভাইও রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকের সন্তান এবং মঙ্গোলিয়ার প্রাক্তন সাংসদের নাতিই এবার বৌদ্ধধর্মের তৃতীয় সর্বোচ্চ পদাধিকারী মানুষ। কেন এক শিশুকে এমন বড় দায়িত্বে অভিষিক্ত করা হলো? তার আগে একটি বিষয় বিশেষ উল্লেখযোগ্য। তিব্বতীয় বৌদ্ধধর্মের তৃতীয় সর্বোচ্চ লামা হিসাবে আট বছর বয়সী শিশুকে অভিষিক্ত করার পদক্ষেপকে মোটেও ভালোভাবে নিচ্ছে না চিন। চিন একটি বিষয়ে চিরকালই অনড়। চিন শুধুমাত্র নিজের সরকার দ্বারা নির্বাচিত বৌদ্ধ নেতাদেরই স্বীকৃতি দেবে বলে ঘোষণা করেছিল। কিন্তু এই শিশুর লামা হয়ে ওঠার অনুষ্ঠানের খবর যেমন উত্তেজনা ছড়িয়েছে তেমনই বাড়িয়েছে আশঙ্কাও। চিনের তরফে বিষয়টিকে যে মোটেও ভালোভাবে দেখা হবে না, তা একপ্রকার স্পষ্ট।

দলাই লামা জানিয়ে দেন মঙ্গোলিয়ার খালখা জেটসুন ধাম্পা রিনপোচের পুনর্জন্ম ঘটেছে এই শিশুর মধ্যে। দলাই লামা আরও জানান, এই শিশুর পূর্বসূরিদের চক্রসম্ভারের কৃষ্ণাচার্য বংশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। তাদের মধ্যেই একজন মঙ্গোলিয়ায় একটি মঠ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। আট বছর বয়সী এই শিশুর দ্বৈত নাগরিকত্ব রয়েছে। ৬০০ জনেরও বেশি মঙ্গোলিয়ান মানুষ সেদিন তাঁর লামা হয়ে ওঠার এই অনুষ্ঠানের সাক্ষী ছিলেন।

আরও পড়ুন- কে এই মহিলা? চিনা গুপ্তচর নাকি! দলাই লামার জীবন নিয়ে কেন আশঙ্কা ভারতের

১৯৯৫ সালে, যখন দলাই লামা একাদশতম পঞ্চেম লামার নাম ঘোষণা করেন, তখন চিন কর্তৃপক্ষ তাঁকে এবং তাঁর পরিবারকে তড়িঘড়ি অপহরণ করে এবং তারপর তাঁকে আর কখনও দেখাও যায়নি, কথা শোনাও যায়নি। চিন তখন তিব্বতি বৌদ্ধধর্মের দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ আধ্যাত্মিক নেতা পঞ্চেম লামার জায়গায় নিজস্ব প্রার্থীর নাম ঘোষণা করে।

দলাই লামার ৯০ বছর বয়স হয়ে গেলে তিনি তাঁর উত্তরসূরি ঘোষণা করবেন। দলাই লামা তাঁর জন্মভূমি তিব্বতের হয়ে শান্তিপূর্ণ ভূমিকার জন্য ১৯৮৯ সালের ১০ ডিসেম্বর নোবেল শান্তি পুরস্কার পান। দলাই লামার জন্ম ১৯৩৫ সালে। যখন তাঁর দুই বছর বয়স, তখন তাঁকে পূর্ববর্তী দলাই লামার পুনর্জন্ম হিসাবে চিহ্নিত করা হয়।

চিনের শাসনের বিরুদ্ধে এক ব্যর্থ বিদ্রোহের পর তিনি ১৯৫৯ সালের গোড়ার দিকে তিব্বতের রাজধানী লাসা থেকে ভারতে পালিয়ে আসেন দলাই লামা এবং তারপর থেকে প্রত্যন্ত ও পাহাড়ি মাতৃভূমিতে ভাষাগত ও সাংস্কৃতিক স্বায়ত্তশাসনের জন্য বিশ্বব্যাপী সমর্থন অর্জনের লক্ষ্যে কাজ করেছেন তিনি।

More Articles