কে এই মহিলা? চিনা গুপ্তচর নাকি! দলাই লামার জীবন নিয়ে কেন আশঙ্কা ভারতের

Dalai Lama: দলাই লামার ক্ষতি করতে বৌদ্ধগয়ায় চিনা মহিলা? বিপরীতে তৎপর ভারতীয় প্রশাসন

বিভেদের মাঝে যে মহা মিলনের বার্তা ভারত চিরকাল দিয়ে এসেছে, তাতেই আস্থা দলাই লামার। ভারতে থাকতেই তিনি বেশি পছন্দ করেন, তাই আর চিনে ফিরতে চান না, সম্প্রতি স্পষ্ট ভাষায় এ কথা জানিয়ে দিয়েছিলেন বৌদ্ধ ধর্মগুরু। অবশ্য এই প্রথম নয় এর আগেও বহুবার বহু বিতর্কে চিনের বিপরীতে ভারতীয় পক্ষ নিতেই দেখা গিয়েছে তাঁকে। জন্মস্থান যাই হোক না কেন, তিনি মনে প্রাণে নিজেকে একজন ভারতীয় ভাবতেই স্বচ্ছন্দ বোধ করেন। যদিও তাঁর এই আচরণ ঘিরে এর আগেও বিতর্ক ছড়িয়েছে চীনে। এবার সেই বিতর্কের রেশ আরও খানিকটা বাড়িয়ে দিয়ে প্রকাশ্যে এল সন্দেহভাজন এক মহিলার স্কেচ।

দলাই লামার বিরুদ্ধে গোয়েন্দাগিরি! সম্প্রতি তেমনটাই খবর পেয়েছেন ভারতীয় নিরাপত্তা এজেন্সি৷ লামাকে খুন করতে পারেন এক চিনা মহিলা, আশঙ্কা প্রকাশ করেছে গয়া পুলিশ। তা ঘিরে ইতিমধ্যেই জোরদার করা হয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা। গয়ায় ব্যাপক তল্লাশি অভিযানও চালানো হয়েছে। এবং তার জেরেই সামনে এসেছে স্কেচটি। আশঙ্কা করা হয়েছে, ইনি একজন চিনা চর, যিনিগোপনে অনুসরণ করছিলেন লামাকে। এবং তাঁর খবরাখবর চালান করছিলেন চীনে। হঠাৎই বেপাত্তা হয়ে গিয়েছেন মহিলা। আর তারপর থেকেই জোট পাকিয়েছে রহস্যের। পুলিশের তরফে ইতিমধ্যে তল্লাশি শুরু হয়েছে। পাশাপাশি স্কেচটি ছড়িয়েও দেওয়া হয়েছে বিভিন্ন জায়গায়।

প্রসঙ্গত, ১৯৫৯ সালে যখন তিব্বতকে নিজেদের অংশ বলে দাবি করে দখল নিয়েছিল বেজিং, তখনই তিব্বতের লাসা থেকে ভারতে পালিয়ে আসেন দলাই লামা। তিনি একা নন, তাঁর সঙ্গে চলে আসে অনুগামীরাও। সেই থেকেই তিনি মনে প্রাণে ভারতীয়। বর্তমানে তাঁর স্থায়ী ঠিকানা হিমাচল প্রদেশের ধর্মশালা। তাই লামার নিরাপত্তা নিয়ে সবসময়ই তৎপর থেকেছে ভারত। উল্লেখ্য ডিসেম্বরের প্রথম দিকে অরুণাচল প্রদেশে তাওয়াংয়ে ভারত-চিন সেনাবাহিনীর মধ্যে যে সংঘর্ষ বেঁধেছিল তা নিয়েও প্রশ্ন করা হয়েছিল লামাকে। সেখানে তিনি সরাসরি চিন সম্পর্কে কোনও বিরোধী মন্তব্য করেননি ঠিকই তবে চীনের বদলে ভারতেই থাকতে চেয়েছেন তিনি। এর থেকে প্রচ্ছন্ন হলেও পক্ষপাতিত্ব প্রকাশ পেয়েছে ভারতের প্রতি।

আরও পড়ুন - বৌদ্ধ ধর্ম নেওয়ার পরেও নৃশংস ছিলেন সম্রাট অশোক! আজও ফুরোয়নি যে বিতর্ক

অন্যদিকে তিব্বত দখলের এত দশক পরও তিব্বতিদের পুরোপুরি বাগে আনতে পারেনি চিন। তার অন্যতম কারণ ভারতের ধর্মশলায় বসবাসরক ধর্মীয় গুরু দলাই লামা। এই আবহে সম্প্রতি, তিব্বতের ধর্মীয় নেতা দলাই লামার উত্তরসূরি বেছে নেওয়ার বিষয়ে চিন দাবি করেছিল, তারাই তিব্বতের পরবর্তী ধর্মীয় গুরু বেছে নেবে। যদিও তার বিরোধিতা করেছিল ভারতের বহু রাজ্যই। টে ওপর স্বয়ং লামার কথা তাতে ঘৃতাহুতি দিয়েছে। তবে কি সেই রাগের বশেই লামার ওপর গোপনে নজরদারি চালাচ্ছে চিন? প্রশ্ন ঘনিয়েছে।

এর মধ্যেই গত সপ্তাহে বোধগয়ায় উপস্থিত হয়েছেন দালাই লামা। আজ থেকে ৩১ ডিসেম্বর কালচক্র ময়দানে বক্তৃতা দেওয়ার কথাও রয়েছে তাঁর। তাই এই অবস্থায় চিনা চরের আশঙ্কাকে উড়িয়ে দিতে নারাজ প্রশাসন। নিরাপত্তায় কোনওরকম ফাঁকা রাখতে চাইছেন না তাঁরা। একদিকে ভারত-চিনের মধ্যে সম্পর্কের উত্তেজনা তো রয়েইছে, তার ওপর বহুদিন তিব্বত ছেড়ে ভারতের আশ্রয়েই থাকতে চেয়েছেন লামা, ফলে সব মিলিয়ে একটা ভয় থেকেই যায়। এদিকে ভারত অতিথি পরায়ন, তাই ভারতে লামার কোনও ক্ষতি হতে দেওয়া যাবে না, সেই চেষ্টাই আপ্রাণ করছে পুলিশ। চিনা ছোবল ঠেকাতে এখন সবরকমভাবে তৎপর ভারত।

More Articles