“গণতন্ত্রে সেন্সরশিপের স্থান নেই”! জাভেদ আখতার বিতর্কে যা বলছে আন্তজার্তিক উর্দু সংগঠনগুলি
Javed Akhtar faced communal backlash: ৩ সেপ্টেম্বর এক বিবৃতিতে ‘উর্দু কালচার লন্ডন’ এবং ‘অঞ্জুমান তরক্কি উর্দু ইউকে’ জানিয়েছে, “আমরা স্পষ্টভাবে এই ধরনের সাহিত্য ও শিল্পচর্চা বন্ধ করার প্রচেষ্টাকে নিন্দা করছি।
কলকাতা উর্দু একাডেমির আয়োজিত অনুষ্ঠান বাতিলের ঘটনাকে “গণতান্ত্রিক সমাজের জন্য লজ্জাজনক” বলে তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ব্রিটেনভিত্তিক দুই উর্দু সাংস্কৃতিক সংগঠন। ৩ সেপ্টেম্বর এক বিবৃতিতে ‘উর্দু কালচার লন্ডন’ এবং ‘অঞ্জুমান তরক্কি উর্দু ইউকে’ জানিয়েছে, “আমরা স্পষ্টভাবে এই ধরনের সাহিত্য ও শিল্পচর্চা বন্ধ করার প্রচেষ্টাকে নিন্দা করছি। মতভেদকে সম্মান জানানো জরুরি হলেও ভয় দেখানো, চাপ সৃষ্টি কিংবা সেন্সরশিপ কোনো গণতান্ত্রিক সমাজে স্থান পায় না।”
পশ্চিমবঙ্গ সরকার পরিচালিত উর্দু একাডেমিতে তিন দিনব্যাপী ‘হিন্দি ছবিতে উর্দুর ভূমিকা’ শীর্ষক একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। এই কর্মসূচির অধীনে ১ সেপ্টেম্বর একটি উর্দু কবিতা পাঠ অনুষ্ঠান এবং একটি আলোচনা সভা হওয়ার কথা ছিল। দুটি অনুষ্ঠানেই উপস্থিত থাকার কথা ছিল বিখ্যাত উর্দু কবি, গীতিকার এবং ছায়াছবির লেখক জাভেদ আখতারের।
আরও পড়ুন- সংখ্যার রাজনীতিতে জাভেদ আখতাররাই চিরশত্রু
কিন্তু শেষ মুহূর্তে একাডেমি অনুষ্ঠানটি বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেয়। একাডেমির পক্ষ থেকে এর কোনো আনুষ্ঠানিক কারণ জানানো হয়নি।
কেন আপত্তি? বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, অনুষ্ঠানটিতে অতিথি হিসাবে জাভেদ আখতারকে আমন্ত্রণ জানাতেই শুরু হয়েছিল বিতর্ক। এতে প্রবল আপত্তি তোলে দু’টি ইসলামি সংগঠন জমিয়ত উলেমা-ই-হিন্দ (কলকাতা শাখা) এবং ওয়াহইন ফাউন্ডেশন। তাদের অভিযোগ, জাভেদ আখতার অতীতে ধর্মবিশ্বাস এবং ধর্মীয় মানুষদের নিয়ে কটাক্ষ করেছেন। সেই কারণেই তাঁকে আমন্ত্রণ জানিয়েও পড়ে কর্মসূচি বাতিল করা হয়েছে।
এই ঘটনায় বিতর্ক ছড়িয়ে পড়েছে। সমালোচকরা বলছেন, একজন শিল্পী কিংবা সাহিত্যিকের মতামতের সঙ্গে দ্বিমত থাকতেই পারে, কিন্তু তাঁর শিল্পীসত্ত্বার প্রকাশকে দমন করার চেষ্টা গণতন্ত্র বিরোধী।
আরও পড়ুন- মুক্তমনা বলেই বাতিল করতে হলো জাভেদ আখতারের অনুষ্ঠান?
ব্রিটেনভিত্তিক সংগঠন দুটি মনে করিয়ে দিয়েছে, উর্দু ভাষা এবং সাহিত্য ভারতীয় উপমহাদেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য। চলচ্চিত্র থেকে শুরু করে সংগীত, কবিতা ও নাটক— সর্বত্র উর্দু সংস্কৃতির অবদান অমূল্য। আর সেই ঐতিহ্যকে সামনে রেখে আয়োজন করা অনুষ্ঠানের পথে বাধা সৃষ্টি করা শুধু একটি শিল্পীর নয়, আসলে গোটা সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের উপর আঘাত।
অনুষ্ঠানটি আদৌ আর অনুষ্ঠিত হবে কিনা, তা এখনও পরিষ্কার নয়। তবে সাহিত্য ও সংস্কৃতির আলোচনায় রাজনৈতিক কিংবা ধর্মীয় চাপের প্রভাব নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে।
সংস্কৃতিমহলের একাংশ বলছেন, এই ঘটনা শুধু জাভেদ আখতারকে নয়, গোটা সমাজকে ভেবে দেখার সুযোগ দিল— আমরা আসলে কোন পথে এগোচ্ছি? ভিন্নমত দমনের প্রবণতাই কি তবে দিন দিন বাড়বে?
Whatsapp
