চাঁদে কি আদৌ কোনও দিন পা দিয়েছিলেন নীল আর্মস্ট্রং?

Moon landing conspiracy theories: হলিউডের কোনও এক স্টুডিওতেই নাকি শ্যুট করা হয়েছিল সেই গোটা 'সিনেমা'! কতটা সত্যি, আর কতটা মিথ্যে লুকিয়ে রয়েছে মানব সভ্যতার প্রথম চন্দ্রাভিযানের পিছনে?

সমস্ত গল্পই কোথাও না কোথাও সত্যি। আবার সমস্ত সত্যিকেও কতসময় শোনায় গল্পেরই মতো। আর এ সমস্ত কিছুর মধ্যেই দোল খেতে থাকে আমমানুষের জল্পনা এবং কল্পনা। পৃথিবীর জল স্থল ইতিমধ্যেই জয় করেছে মানুষ। বিজ্ঞানের সাহায্যে, প্রযুক্তির সাহায্যে সে হয়ে উঠেছে সর্বশক্তিমান। এমনকী অন্তরীক্ষকেও ছাড়েনি সে। গ্রহ থেকে গ্রহান্তরে যন্ত্র পাঠিয়েছে। জয় করে ফেলেছে চাঁদও। সেই চাঁদ, যাকে নিয়ে আপামর বিশ্ববাসীর রোম্যান্টিসিজমের কোনও শেষ নেই। কবির কল্পনায়, আঁকিয়ের ক্য়ানভাসে বা প্রেমিকের স্বপ্নচয়নে, যুগে যুগে চাঁদকে বড় আপন মনে করেছে মানুষ। তাঁকে নিয়ে স্বপ্ন দেখেছে যত, তত তীব্র হয়েছে তাঁর চন্দ্রাভিযানের আকাঙ্খা।

১৯৬৯ সালের ২০ জুলাই, চাঁদের মাটিতে পা পড়ে প্রথম মানুষের। অসামান্য কীর্তিধারী সেই ব্যক্তির নাম নীল আর্মস্ট্রং। সেই ঘটনা বিশ্বজুড়ে দেখেছেন কোটি কোটি মানুষ। কিন্তু সত্যিই কি নীল আর্মস্ট্রং এবং এডউইন অলড্রিন সেদিন চাঁদের মাটিতে নেমেছিলেন? নাকি পুরোটাই মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার পরিকল্পনা। সেদিন মানব সভ্যতাকে বোকা বানাতে রচনা করা হয়েছিল গোটা একটা চিত্রনাট্য? এমনটা অবশ্য মনে করেন খোদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেরই বহু নাগরিক। অনেকে বলেন, অ্যাপোলো-১১ মহাকাশযানের এই দু'জন মহাকাশচারী আদৌ কোনও দিন চাঁদে নামেনইনি। মানব সভ্যতার সেই প্রথম চন্দ্রবিজয়ের ভিডিওটাও নাকি একেবারে ভুয়ো! হলিউডের কোনও এক স্টুডিওতে নাকি শ্যুট করা হয়েছিল সেই গোটা 'সিনেমা'! কতটা সত্যি, আর কতটা মিথ্যে লুকিয়ে রয়েছে মানব সভ্যতার প্রথম চন্দ্রাভিযানের পিছনে? নীল আমস্ট্রং যা বলেন, তা কি আদৌ ঘটেছিল? নাকি শুধুমাত্র বিশ্ববাসীকে ঠকানোর জন্যই বানানো হয়েছিল সেই শতাব্দী-সেরা চিত্রনাট্য?

আরও পড়ুন: চাঁদে বেড়াতে যাবেন? আপনার সেবায় হাজির পৃথিবীর বেওয়ারিশ শরণার্থীরা…

বছর কয়েক আগে প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিজ্ঞান প্রযুক্তি উপদেষ্টা বিশিষ্ট বিজ্ঞানী ডেভিড গেলান্টার এমনই একটি মন্তব্য করে বিতর্কের সম্মুখীন হন। মঙ্গল গ্রহে মানুষের বসবাস প্রসঙ্গে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বিজ্ঞানী গেলান্টার বলেছিলেন, "আমরা এখনও পর্যন্ত চাঁদেই যেতে পারলাম না! মঙ্গলে যাওয়া কি আর সহজ হবে? খুবই হাস্যকর ভাবনা এটা।" ওবামা সরকারের এই পরিকল্পনা 'হাস্যকর' বলেই উড়িয়ে দেন তিনি।

তবে কি এটাই আসল সত্যি, যা এতদিন পর্যন্ত লুকিয়ে রাখতে চেয়েছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র? ৫৩ বছর আগে গোটা বিশ্বের মানুষকে কীভাবে তারা বোকা বানিয়েছিল, সেই সত্যটাই কি তুলে ধরেছিলেন সেদিন বিজ্ঞানী গেলান্টার? শুধু তিনি একা নন, ২০১৯ সালে রয়েল মিউজিয়াম অফ গ্রিনিচে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ন্যাশনাল স্পেস সেন্টারের ডিসকভারি ডিরেক্টর প্রফেসর অনু ওঝাও বলেছিলেন, "এই ইন্টারনেটের জগতে যেটুকু তথ্য পাওয়া যায়, তা নিয়েই আমরা সবসময় মাতামাতি করি। বিগত দু'বছরে মানবতার ইতিহাসে এই বিষয়টা নিয়ে যত তথ্য বেরিয়েছে, তাতে আর্মস্ট্রংদের চন্দ্রাভিযান নিয়ে প্রশ্ন ওঠাটাই স্বাভাবিক। আমরা আদতে একটা তথ্যের সমুদ্রের মধ্যে রয়েছি। প্রতিদিন নতুন নতুন তথ্য আসছে। প্রতিদিন নতুন করে তোলপাড় হচ্ছে এই সমুদ্র। তাই আসল সত্যিটা কি, সেটা খুঁজে বের করা খুব একটা সহজ কাজ নয়।"

অনেকে মনে করেন, মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার তেমন প্রযুক্তিগত উৎকর্ষ সেই সময় ছিল না। সফল অভিযানের জন্য যেটা দরকার, তা কখনওই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে সেই সময় ছিল না। তাই নাসা তাঁদের অভিযানে যে সফল হবে না, সেটা আগেভাগেই বুঝে গিয়েছিল। কাজেই সোভিয়েত ইউনিয়নকে মহাকাশ অভিযানের টেক্কা দেওয়ার জন্য চাঁদে সফল অভিযানের এই নাটক সাজিয়েছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। মহাকাশ অভিযানে সোভিয়েত ইউনিয়ন যুক্তরাষ্ট্রের থেকে সবসময়ই অনেকটা এগিয়ে। এমনকি চাঁদের বুকে একটি মহাকাশযানের ক্র্যাশ ল্যান্ড করিয়েছিল তারা, তখন নাসার অ্যাপোলো-১১ তৈরিও হয়নি।

এসবের মাঝেই নাসার এই মহাকাশযানের সত্যতা নিয়ে উঠে আসে বেশ কিছু ষড়যন্ত্রের তত্ত্ব। ১৯৭৬ সালে সাংবাদিক বিল কেসিং-এর লেখা একটি বই প্রকাশ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই নাসার বিরুদ্ধে উঠতে শুরু করে একগুচ্ছ প্রশ্নচিহ্ন। নাসার একটি ঠিকাদার সংস্থাপ জনসংযোগ বিভাগে বেশ কিছুদিন কাজ করেছিলেন বিল কেসিং। সেখান থেকেই প্রাপ্ত তথ্য নিয়ে তিনি লিখে ফেলেন একটি বই। বইটির নাম ছিল, "উই নেভার ওয়েন্ট টু মুন: আমেরিকাজ থার্টি বিলিয়ন ডলার সুইন্ডল"। এই বইতে লেখকের মূল বক্তব্য, মানুষ আসলে কখনওই চাঁদে যায়নি। এই বইতে এমন কিছু বিষয় তুলে ধরা হয়েছে, যা পরবর্তী কালে নাসার চন্দ্র অভিযানের সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।

প্রথম ষড়যন্ত্র তত্ত্ব - চাঁদের বাতাসহীন পরিমণ্ডলে পতাকা উড়ছে কীভাবে?

চাঁদে কিন্তু আসলে বাতাস নেই। কিন্তু মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থার প্রকাশিত ছবিতে আপনারা স্পষ্ট দেখতে পান, চাঁদের মাটিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পতাকা উড়ছে। তাহলে প্রশ্ন ওঠে, যে পরিমণ্ডলে বাতাসই নেই, সেখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই পতাকা উড়ছে কীভাবে? যদিও এই ষড়যন্ত্র তত্ত্বকে নাকচ করে দেওয়ার মতো অনেক বৈজ্ঞানিক যুক্তি রয়েছে। ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফর্নিয়ার অধ্যাপক মাইকেল রিক বলছেন, নীল আমস্ট্রং যখন পতাকা চাঁদের মাটিতে স্থাপন করেছিলেন সেই সময় পতাকা কুঁচকে গিয়েছিল। আর যেহেতু পৃথিবীর তুলনায় চাঁদের মাধ্যাকর্ষণ শক্তি প্রায় ৬ গুণ কম, তাই পতাকাটি নিজের জায়গাতেই থেকে যায়। পাশাপাশি এই পতাকার উপরের দিকে একটি বিশেষ পোল সেট করা হয়েছিল। সে কারণেও এই পতাকা নিচের দিকে নামেনি। ফলে এই ষড়যন্ত্র তত্ত্ব নিয়ে বিশেষ আলোচনা হয়নি।

দ্বিতীয় ষড়যন্ত্র তত্ত্ব - চাঁদের আকাশে তারা নেই কেন?

যদি চাঁদের মাটি থেকেই এই সমস্ত ছবি গ্রহণ করা হয় তাহলে চাঁদের আকাশে তারা থাকার কথা। যেহেতু চাঁদে কোনও পরিমণ্ডল নেই তাই মেঘ থাকা অসম্ভব। তাহলে সে ক্ষেত্রে চাঁদের তারা দেখতে পাওয়ার কথা, খুব পরিষ্কার ভাবে। কিন্তু চাঁদের আকাশে তারা দেখা গেল না কেন? এই প্রসঙ্গে নাসার জবাব, যেহেতু শুধুমাত্র ওই মহাকাশচারীদের উপরেই ফোকাস রাখতে চাওয়া হয়েছিল, তাই ইচ্ছে করেই বাদ দেওয়া তারায় ভরা আকাশ। যদিও এ প্রসঙ্গে আরো একটি ব্যাখ্যা চলে। যদি ছবিটা ভালো করে দেখা যায় তাহলে বোঝা যাবে এই দু'জন মহাকাশচারী সূর্যের আলোতে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। সেই সময় এই ছবি তোলা হচ্ছে। চাঁদের যে জায়গায় মহাকাশযান নেমেছে, সেখানে সেই সময় দিনের বেলা। দিনের বেলায় এরকম ছবি তুলতে হলে আপনার ক্যামেরার শাটার স্পিড অত্যন্ত বেশি থাকতে হবে এবং আপনার অ্যাপারচারও কম থাকতে হবে। সেরকম ভাবে ছবি তোলা হলে আকাশ অনেক সময় কালো দেখাতে পারে এবং তারা জাতীয় ছোট জিনিস ক্যামেরায় না-ও ধরা পড়তে পারে


তৃতীয় ষড়যন্ত্র তত্ত্ব - চাঁদে থাকা পায়ের ছাপ সম্পূর্ণ নকল

নভোশ্চরেরা চাঁদের বুকে যে পায়ের ছাপ রেখে এসেছিলেন সেটা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। তাঁদের কথায়, চাঁদে কোনওরকম আর্দ্রতা নেই। তাই নীল আর্মস্ট্রংরা সেখানে যে পায়ের ছাপ রেখে গেছেন সেগুলো থাকারই কথা নয়। এ প্রত্যুত্তরে বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা দিয়েছেন আরিজোনা স্টেট ইউনিভার্সিটি অধ্যাপক মার্ক রবিনসন। তিনি বলেছেন, 'চাঁদের মাটি এক ধরনের পাথর এবং ধুলো দিয়ে ঢাকা। এই জিনিসটিকে বলে রেগোলিথ। পৃথিবীতেও এই জিনিসটা দেখা যায় তবে খুব বেশি পরিমাণে নয়। এই স্তর অত্যন্ত ফাঁপা এবং পা রাখলেই নিচে ডেবে যায়। আর মাটির কণাগুলো যেহেতু একটার সঙ্গে একটা লেগে থাকে তাই, জুতো পরা থাকলে সেই ছাপ একই রকম থেকে যায়।' রবিনসন আরও বলেন, যেহেতু চাঁদের বুকে কোন রকম পরিমণ্ডল নেই সেই কারণে এই পায়ের ছাপ বছরের পর বছর ধরে একই রকম থেকে যাওয়ার কথা।

চতুর্থ ষড়যন্ত্র তত্ত্ব - ভ্যান অ্যালেন রেডিয়েশন বেল্টের তেজস্ক্রিয়তায় মহাকাশচারীদের মৃত্যু হওয়ার কথা!

নাসা তাদের রিপোর্টে দাবি করেছিল, অ্যাপোলো-১১ ভ্যান অ্যালেন রেডিয়েশন বেল্টের ভিতর দিয়েই অতিক্রম করে চাঁদে পৌঁছেছে। চাঁদে পৌঁছতে গেলে এই রেডিয়েশন বেল্ট অতিক্রম করা আবশ্যক। এই মণ্ডলটিকে পাশ কাটানোর কোনও রাস্তা নেই। পৃথিবীকে ঘিরে থাকা এই তেজস্ক্রিয় অঞ্চলে প্রতিনিয়ত সৌর ঝড় আর পৃথিবীর চুম্বকীয় ক্ষেত্রের নানা রকম ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া হতে থাকে। তার কারণে বারংবার তেজস্ক্রিয়তার সৃষ্টি হয়। মহাকাশ অভিযান নিয়ে যখন প্রতিযোগিতা চলছে সেই সময় তেজস্ক্রিয়তা নিয়েও বিজ্ঞানীদের মধ্যে ছিল মারাত্মক উদ্বেগ। অনেকেই আশঙ্কা করতেন, মানুষ যে কোনও সময় মারাত্মক তেজস্ক্রিয়তার শিকার হতে পারেন। ফলে, নাসার বিরুদ্ধে এই ভ্যান অ্যালেন রেডিয়েশন বেল্ট নিয়ে উঠেছিল প্রশ্ন।

তবে নাসার বিজ্ঞানীরা বলেছিলেন, তারা মানছেন, চাঁদে যেতে গেলে এই বেল্ট অতিক্রম করতেই হয়। এই বেল্টের তেজস্ক্রিয়তার প্রভাবে মানুষের মৃত্যু হতে পারে। এমনকী মুহূর্তের মধ্যে মানুষ ঝলসে যেতে পারেন। কিন্তু সব জায়গায় এই ভ্যান অ্যালেন রেডিয়েশন বেল্টের তেজস্ক্রিয়তার মাত্রা একই রকম নয়। কথাটা যদিও সত্যি। সব জায়গায় এই বেল্টের তেজস্ক্রিয়তার মাত্রা একই রকম নয় মোটেও। কিছু জায়গাতে তেজস্ক্রিয়তা বেশি থাকলেও অনেক জায়গাই আছে যেখানে তেজস্ক্রিয়তা খুব একটা বেশি নয়। নাসার সেই মহাকাশযান মূলত ওই নির্দিষ্ট জায়গা দিয়েই গিয়েছিল যেখানে তেজস্ক্রিয়তার মাত্রা ছিল কম। আর যেখানে তেজস্ক্রিয়তার মাত্রা সবচেয়ে বেশি, সেখানে তাঁরা ছিলেন মাত্র পাঁচ মিনিটের জন্য। ফলে তাদের উপর তেজস্ক্রিয়তার তেমন প্রভাব পড়েনি। যদিও নাসার এই যুক্তি নিয়ে বিতর্ক রয়েছে।

যদিও এগুলি ছাড়াও, আরো কিছু তত্ত্ব এমন রয়েছে যেগুলির ব্যাখ্যা এখনো পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। কিছু প্রশ্ন এমন রয়েছে যেগুলোর ব্যাখ্যা এখনো পর্যন্ত নাসা দিতে পারেনি। এর মধ্যে প্রথম বিতর্কের জায়গাটা হল, হেলমেটের কাঁচে দৃশ্যমান একটি অস্পষ্ট ছবি, যা দেখে মনে হচ্ছে, সেটা আদত একটি দড়ি বা কোনও রকম তার, যেখানে কোনও বস্তু ঝুলছে। ওরকম দৃশ্য নাকি ফিল্ম স্টুডিওতে দেখা যায় বলে অনেক বিজ্ঞানী অভিযোগ তোলেন। তার পাশাপাশি, চাঁদের একটি নুড়ির গায়ে ইংরেজি হরফে 'C' লেখা একটি ক্রস দাগ রয়েছে। স্টুডিওতে শুট করার সময় এই সংকেত অনেক সময়ে ব্যবহার করা হয়। যদিও এই যুক্তির কোন পাল্টা ব্যাখ্যা দিতে পারেনি নাসা। শুধুমাত্র নিম্নমানের ছবির দোহাই দিয়েই এই দুটি অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছে এই মার্কিন গবেষণা সংস্থাটি।

আরও পড়ুন: চাঁদে যেতে গিয়ে পুড়ে ছাই হয়ে গেছিলেন ওঁরা

ফলে চন্দ্র বিজয়ের সত্যতা নিয়ে খচখচানিটা এখনো রয়েছে একইরকম ভাবে। স্বনামধন্য বিজ্ঞানীরা মাঝেমধ্যে এই ষড়যন্ত্র তত্ত্বকারীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। অনেক বিজ্ঞানীই নাসার এই সমস্ত ছবি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। খুঁত বের করেছেন ছবির বিভিন্ন বিষয় নিয়ে। এসব প্রশ্নে নাসা কর্ণপাত না করলেও, ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরেই লেখা রয়েছে নীল আর্মস্ট্রং এবং এডউইন অলড্রিনের নাম। ষড়যন্ত্র তত্ত্ব তৈরি হলেও, বিশ্বের মানুষ আজীবন মনে রাখবেন এই দু'জনের নাম। উপরন্তু, যেখানে সোভিয়েত ইউনিয়নের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তীব্র স্নায়ুযুদ্ধ আর চাঁদে মানুষ পাঠানোর প্রতিযোগিতা চলছে, সেখানে কেন সোভিয়েত ইউনিয়ন মার্কিনিদের এই সাজানো ঘটনা মেনে নেবে? নাসার এক ইতিহাসবিদ রবার্ট লনিয়াস একদা বলেছিলেন, "আমরা যদি চাঁদে না গিয়ে থাকি এবং এরকম নাটক সাজিয়ে থাকি তাহলে সোভিয়েতদের তো সেটা ফাঁস করে দেওয়ার সক্ষমতা এবং ইচ্ছে দুটোই ছিল। কিন্তু তারা তো একটি শব্দও বলেনি এই নিয়ে। বরং মার্কিনিদের বিজয় নিয়ে কোন প্রশ্ন করেনি তারা। এটাই তো এর পক্ষে সবথেকে বড় প্রমাণ!"

তবে আর্মস্ট্রংরা যাক বা না-যাক, চন্দ্রাভিযানের শুরুটা কিন্তু ঘটেছিল তাঁদের নামেই। যে চাঁদ নিয়ে স্বপ্ন দেখে যে মানুষ, তাঁদের পা যে পড়তে পারে সেই চাঁদের বাস্তবে, সেই উচ্চাকাঙ্খাটা কিন্তু বছরের পর বছর ধরে মানুষের মনে গ্রন্থন করে চলেছে ওই একটি নাম। নীল আর্মস্ট্রং, যে নামের মোহে আজও মহাকাশ জয়ের স্বপ্ন দেখে আমআদমী। কিচ্ছু না-বুঝে, কিচ্ছু না-জেনে। আর কে না জানে, বিশ্বাসে মিলায় বস্তু...

More Articles