টেট পরীক্ষার ফলাফলে নজরকাড়া সাফল্য, যেভাবে পথ দেখাচ্ছে বাংলার মেয়েরা

Primary Tet result : শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠকে ৬ লাখ ২০ হাজার পরীক্ষার্থীর ফলাফল ঘোষণা করে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। আর এই ফলাফল প্রকাশের পরই নজর কেড়েছে একটি বিশেষ বিষয়। ফলাফল তালিকায় প্রথম পাঁচটি নামই বাংলার মেয়েদের।

দীর্ঘদিন ধরেই একটা টালমাটাল পরিস্থিতির সম্মুখীন বাংলার ভবিষ্যত। নতুন চাকরির সুযোগ তো নেইই, উপরন্তু পুরনো চাকরিতেও ছাঁটাইয়ের পরোয়ানা জারি হচ্ছে দিকে দিকে। সুতোয় ঝুলছে রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থা। শিক্ষামন্ত্রী জেলে, শিক্ষকের চাকরি আশায় হাজার হাজার পরীক্ষার্থীর ঠাঁই হয়েছে গাছতলায়। আর ঠিক এরকম পরিস্থিতির মধ্যেই দীর্ঘদিনের বিরতি কাটিয়ে প্রকাশিত হয় টেট পরীক্ষার নির্দেশিকা। দীর্ঘদিনের ক্ষরা পরিস্থিতির মধ্যে এক ফোঁটা বৃষ্টির নিঃশ্বাস হিসেবে আসে এই নোটিশ। এ বছরের টেট পরীক্ষায় বসা পরীক্ষার্থীদের সংখ্যাটাও তাই ছিল আকাশছোঁয়া।

শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠকে ৬ লাখ ২০ হাজার পরীক্ষার্থীর ফলাফল ঘোষণা করে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। আর এই ফলাফল প্রকাশের পরই নজর কেড়েছে একটি বিশেষ বিষয়। ফলাফল তালিকায় প্রথম পাঁচটি নামই বাংলার মেয়েদের। প্রথম এবং দ্বিতীয় এই দুই স্থানেই রয়েছে পাঁচজন মেয়ের নাম। এই ফলাফল কি তবে ভবিষ্যতের কোনও এক সত্যির ইঙ্গিত দিচ্ছে, যার জেরে পুরুষ তান্ত্রিকতার বিপরীতে দাঁড়িয়ে পরিচালনার জোয়ালটা থাকবে মেয়েদেরই কাঁধে? শুধু প্রথম পাঁচজন নয়, সার্বিক ভাবেই টেট পরীক্ষার ফলাফলে মেয়েদের অবস্থান নজরকাড়া। প্রাথমিকের টেটে পুরুষ পরীক্ষার্থীদের তুলনায় মেয়েদের সাফল্যই বেশি দেখা গিয়েছে।

আরও পড়ুন - ধর্ম নয়, চাকরিই পথ! ত্রিপুরাতে কি এবার হারানো গড় ফিরে পাবে বামেরা?

ফলাফলে এবার প্রথম হয়েছেন পূর্ব বর্ধমানের ইনা সিং। ১৫০ নম্বরের মধ্যে তাঁর প্রাপ্য নম্বর ১৩৩। অন্যদিকে ১৩২ নম্বর পেয়ে দ্বিতীয় স্থানেও রয়েছেন চারজন মহিলা পরীক্ষার্থী। এখানেই শেষ নয় প্রথম দশটি স্থানে মোট ১৭৭ জনের মধ্যেও মহিলাদের সংখ্যাটা রীতিমতো নজরে পড়ার মতোই। টেট পরীক্ষার ফলাফলে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন যথাক্রমে হুগলি জেলা থেকে মৌনিসা কুণ্ডু, পশ্চিম মেদিনীপুরের মেঘনা চক্রবর্তী এবং দীপিকা রায় ও পূর্ব বর্ধমানের অদিতি মজুমদার।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, টেট পরীক্ষার ফলাফলে কলকাতার থেকে জেলার অবস্থান বেশি চমকপ্রদ। প্রথম দশে একটাও নাম নেই কলকাতার। তৃতীয়, চতুর্থ এবং পঞ্চম স্থানে যথাক্রমে চার, ছয় এবং চার জন রয়েছেন। এদের মধ্যেও সংখ্যা গরিষ্ঠ মেয়েরাই। উত্তর থেকে দক্ষিণ, পূর্ব থেকে পশ্চিম জয়জয়কার বাংলার মেয়েদের। ধনুক ভাঙা পণ করে বসেছিল সকলেই, তারই ফল মিলেছে ইতিমধ্যে। এখন দেখার আগামী নিয়োগের প্রক্রিয়া কত দ্রুত হয়। কারণ জেনে রাখা দরকার, টেট পরীক্ষা কোনও চাকরির নিশ্চয়তা দেয় না। এটা একটা কোয়ালিফাইং পরীক্ষা মাত্র। এরপরও একটা লম্বা পথ পেরিয়ে তবে চাকরির চিঠি হাতে পাওয়া সম্ভব। তাই ধৈর্য্যের যে পথে চলা শুরু করেছিল পরীক্ষার্থীরা, তার এখানেই শেষ নয়, আরও অনেকটা পথ চলা বাকি। যার সঠিক উদযাপন হবে প্রথম মাসের মাইনেতেই। তবে আজকের এই ফলাফল যে আরও একবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল সমাজে আর পিছিয়ে নেই মেয়েরা, তা বলাই বাহুল্য।

More Articles