দ্রৌপদীর ডিনারে নিরামিষ 'ভারত', শেষপাতে 'মধুরিমা'
G20 Summit 2023: বিশ্বনেতাদের খাতিরদারিতে চেষ্টার ত্রুটি রাখেননি রাষ্ট্রপতি। যাকে বলে এলাহি আয়োজন! সূত্রের খবর রূপোর থালায়, রূপোর গ্লাসে অতিথিদের পরিবেশন করা হয়েছে নৈশভোজ।
জি-২০ সম্মেলনের ঠিকানা এবার এদেশের রাজধানী। দেশ-বিদেশ থেকে জড়ো হয়েছেন তাবড় সব রাষ্ট্রনেতা ও দূত। হাজির বিভিন্ন দেশের সংবাদমাধ্যমকর্মীরা। এমন এক মুহূর্তে জি-২০ সম্মেলনে আগত রাষ্ট্রনেতাদের নিয়ে নৈশভোজের আয়োজন করেছেন রাষ্ট্রপতি। সেখানে দেশবিদেশের রাষ্ট্রনেতারা তো থাকবেনই, থাকবেন প্রধানমন্ত্রী এবং দেশের বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরাও। কথায় বলে, 'The way to a man's heart is through his stomach'। তা তাবড় রাষ্ট্রনেতাদের মনের হদিশ পেতে কী কী রাখা হল এদিনের খাবারের মেনুতে?
কোন কোন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যোগ দেবেন, কোন কোন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীই বা কৌশলে এড়ালেন আমন্ত্রণ, তা নিয়ে দিনভর চর্চা চলেছে। অবশেষে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর আমন্ত্রণে এলাহি ভোজে যোগ দিলেন বাইডেন, ঋষি সুনক কিংবা পুতিনের মতো প্রথম বিশ্বের একগুচ্ছ দেশের নেতৃত্বরা। তাঁদের খাতিরদারিতে চেষ্টার ত্রুটি রাখেননি রাষ্ট্রপতি। যাকে বলে এলাহি আয়োজন! সূত্রের খবর রূপোর থালায়, রূপোর গ্লাসে অতিথিদের পরিবেশন করা হয়েছে নৈশভোজ। আমন্ত্রিত অতিথি বলে কথা।
আরও পড়ুন: ইন্ডিয়া নয়, ভারতেই জোর মোদির! জি-২০ তে স্পষ্ট হচ্ছে যেসব ইশারা
জানা গিয়েছে, অতিথিদের খাবারের মেনুতে ছিল মরসুমি সবজির বাহার। তবে আমিষপ্রেমী অতিথিদের জন্য এদিনের মেনু একটু হতাশাব্যাঞ্জক তো ছিলই। কারণ এদিন অতিথিবরণ করা হয়েছে নানাবিধ নিরামিষ পদে। তবে আয়োজন যে এলাহি, তা মানতে হবেই।
প্রথমেই শরবৎ দিয়ে স্বাগত জানানো হয় অতিথিদের। যেখানে এই নৈশভোজের আয়োজন করা হয়েছিল, তার নাম দেওয়া হয়েছে ভারত মণ্ডোলপম। এবারে জি-২০ সম্মেলনের বিষয়ভাবনা 'ওয়ান আর্থ, ওয়ান ফ্যামিলি, ওয়ান ফিউচার'। অর্থাৎ কিনা 'এক বিশ্ব, এক পরিবার, এক ভবিষ্যৎ'। 'বসুদেব কুটুম্বকম' এই মন্ত্রই ভারতীয় সংস্কৃতির বীজ। এদিনের মেনুকার্ডেও তার ছোঁয়াচ ছিল প্রথমেই। মোট চারটি পর্বে অতিথিদের খাবার পরিবেশন করা হয়।
গোড়াতেই ছিল স্টার্টার, যাকে 'পাত্রম: এক মুঠো টাটকা নিঃশ্বাস' বলে বর্ণনা করা হয়েছে মেনুকার্ডে। সেখানে ফক্সটেইন মিলেট বা কাওন চালের তৈরি এক ধরনের পদ পরিবেশন করা হয়। সেই খাবারের খাদ্যগুণ থেকে ক্যালোরির পরিমাপ সবই উল্লেখ করা ছিল মেনুকার্ডেই।
এর পরেই অতিথিরা ঢুকে পড়েন মেন কোর্সে, মেনু কার্ডে যাকে 'বনবর্ণম:মাটির শক্তি' বলে বর্ণনা করা হয়েছে। সেখানে এঁচোর ও মাশরুম, বাজরা ও কারিপাতা দিয়ে তৈরি আরেকটি পদ পরিবেশন করা হয়।
এরপরে ছিল ভারতের রুটির বাহার। সেখানে ছিল মুম্বই পাও ও বাখারখানি। আর তার পরে মেনুকার্ড অতিথিদের পৌঁছে দেয় সোজা ডেজার্টে, যাকে মেনুকার্ডে উল্লেখ করা হয়েছে 'মধুরিমা: সোনার পাত্র' নামে। সেখানে ছিল পুডিং-সহ নানাবিধ মিষ্টি পদ।
পানীয় হিসেবে কাশ্মীরি কাওয়া, ফিল্টার কফি ও ভারতেক ঐতিহ্যশালী দার্জিলিং চা। এবং মুখশুদ্ধি হিসেবে ছিল পানের সুগন্ধ যুক্ত চকলেট।
আরও পড়ুন:মোদি বিরোধিতার স্পষ্ট বার্তা? রাষ্ট্রপতির ডাকা জি-২০ নৈশভোজ কেন এড়াচ্ছেন বিরোধী-মুখ্যমন্ত্রীরা?
মোটামুটি এই ছিল জি-২০ নৈশভোজের লম্বা মেনুকার্ড। এদিনের নৈশভোজে বিশেষ ভাবে বাজরার উপরে জোর দেওয়া হয়েছিল। তবে তার নেপথ্যের কারণ ঠিক স্পষ্ট নয়। এই এলাহি আয়োজন এবং বৈচিত্রময় খাবারদাবার অতিথিদের তুষ্ট করতে পেরেছে কিনা, তা অবশ্য ক্রমশ প্রকাশ্য।