আট বছর বাদে হৃতিকের মনে অন্য কেউ, কে এই সাবা আজাদ!

হৃতিক রোশন এবং সাবা আজাদের প্রেমের খবর কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে বলিউডের আনাচে-কানাচে। এই বছরের গোড়ার দিকেই বান্দ্রার একটি ক্যাফে থেকে হাত ধরে বের হতে দেখা যায় হৃতিক এবং সাবাকে। এরপর থেকেই মিডিয়া এবং অনুগামী মহলে জল্পনার অন্ত নেই। তবে কি স্ত্রী সুজানের সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের আট বছর পর আবার কেউ স্থান করে নিয়েছে সকলের প্রিয় কৃশের হৃদয়ে? যদিও দুই তারকার কেউই এখনও অবধি এই সম্পর্ক নিয়ে নিজেদের মুখ খোলেননি। সাবাকে ফোন করে এই সম্পর্কের কথা জিজ্ঞেস করা হলে তিনি আপাতত ব্যাস্ত আছেন বলে বিষয়টি পাশ কাটিয়ে যান। কিছুদিন আগেই ফারহান আখতারের বিয়েতে হৃতিকের এক ঘনিষ্ঠ বন্ধু অবশ্য এই সম্পর্কের কথা জানিয়েছেন এবং আরও বলেছেন তারা দু'জনেই এই সম্পর্কে খুবই খুশি রয়েছেন, নিজেদের মতো করে একে অপরের সঙ্গে সময় কাটাচ্ছেন। তবে বেশ খানিকটা সময় নিয়েই তাঁরা কোন সিদ্ধান্ত নিতে চান।    

কে এই সাবা আজাদ? 

তিনি একাধারে যেমন একজন বলিউডের নায়িকা তেমনই আবার একজন সুগায়িকাও। তবে তাঁর আসল নাম সাবা সিং গ্রেওয়াল। ২০০৮ সালে বলিউডে তিনি পা রেখেছিলেন ‘ দিল কবাডি’ ছবির মাধ্যমে। এরপর ২০১১ সালে ‘মুঝসে ফ্রেনডশিপ কারোগে’ ছবিতে তিনি শীর্ষ অভিনেত্রী ছিলেন। বিগত বছরে নেটফিলক্সের ‘ফিল লাইক ইশক’ নামে এক আন্থ্রোলজিতে তাঁকে দেখা গিয়েছিল, এছাড়াও চলতি বছরের সনি লাইভে ‘রকেট বয়েজ’ বলে একটি বাওপিকে তিনি অভিনয় করেছেন। বড়পর্দার পাশাপাশি তিনি আবার কিছু শর্টফিল্মেও কাজ করেছেন যেমন, ঈশান নাইয়ারের ‘গুরুর’। আসলে সাবার একটি থিয়েটারমুখী পরিবারেই  জন্মগ্রহণ করেন। তিনি অভিনয়ের জগতে পা রাখেন ‘জানা নাট্য মঞ্চ’ র মধ্যে দিয়ে।

শরীরে বইছে সফদরের রক্ত

তাঁর কাকু, সাফদার হাশমি ছিলেন একজন বিখ্যাত নাট্যকর্মী এবং একজন কমিউনিস্ট নাট্য রচয়িতা। ১৯৮৯ সালে ‘হাল্লা বোল’ নামে একটি পথনাটক করতে গিয়ে তিনি খুন হন। তাই হয়তো বলিউডে পা রাখার পরেও সাবা নাটক থেকে সম্পূর্ণ মুখ ফিরিয়ে নেয়নি বরং ‘দ্যা স্কিন’ নামে তাঁর নিজেস্ব একটি থিয়েটার দলও রয়েছে। এছাড়াও তিনি ‘ম্যাডবয়/মিঙ্ক’ নামে একটি ব্যান্ডের লিড ভোকালিস্ট। এই ব্যান্ডে তিনি ছাড়াও শীর্ষ নেতৃত্বে রয়েছেন নাসিরুদ্দিন শাহের ছেলে ইমাদ শাহ। তাঁদের দুজনের প্রচেষ্টায় ২০১২ সালে এই ব্যান্ডটি জন্ম নিয়েছিল। সঙ্গীত দলের সহকর্মী ছাড়াও ইমাদের সঙ্গে সাবার অন্য একটি সম্পর্ক ছিল। ম্যাডবয়/মিঙ্ক গঠিত হবার পর, ২০১৩ সাল থেকে সাবা এবং ইমাদ দীর্ঘ সাত বছর রিলেশনশিপে ছিলেন। অবশেষে ২০২০ সালে সেই দীর্ঘ সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসেন সাবা। যদিও সম্পর্কের ভাঙলেও ম্যাডবয়/মিঙ্ক ভাঙেনি। গত বছরেই তিনি এইচ অ্যান এম’র মত ব্র্যান্ডের সঙ্গেও কাজ করেছেন।

যিনি রাঁধেন তিনিই চুল বাঁধেন

সাবা আবার একজন প্রশিক্ষিত নৃত্যশিল্পী। ওড়িশি, ব্যালে, জ্যাজ, ল্যাটিন এবং কনটেম্পোরারি ডান্সেও তিনি বেশ পারদর্শী, এমনকী তিনি দেশের বাইরেও একজন নৃত্যশিল্পী হিসাবে অসংখ্য অনুষ্ঠান করেছেন। এছাড়া বিভিন্ন সময় অসংখ্য ব্রান্ডের অ্যাডেও তাঁকে দেখা গেছে। বলিউডে কোন বড় জায়গা না করতে পারলেও, তিনি যে একেবারে গুণে সরস্বতী একথা বলার অবকাশ আশা করি আর থাকে না।

 নিজেদের সম্পর্কের কথা মুখে স্বীকার না করলেও, ইন্সটাগ্রামে নজর রাখলেই বোঝা যায় সম্পর্ক বেশটাই গভীর হয়েছে। অসংখ্যবার একে অপরকে ট্যাগ কিম্বা নিজেদের স্টোরিতে উল্লেখ করা কিন্তু অনুগামীদের নজর এড়াতে পারেনি। হৃতিকের সাবার ছবিতে দুর্দান্ত সব মন্তব্য দেখেই বোঝা যায়, স্বয়ং গ্রীক গড একেবারে প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছেন। শুধু গ্রিক গডই বা কেন, তাঁর গোটা পরিবারের মনও কিন্তু সাবা ইতিমধ্যেই জয় করে ফেলেছেন। কিছুদিন আগেই একটি রবিবারে, সাবা নিজে হৃতিকের কাকু এবং বিশিষ্ট সঙ্গীত পরিচালক রাজেশ রোশনের জন্মদিনে একটি লাঞ্চেরও আয়োজন করেন। সেখানে উপস্থিত ছিল হৃতিকের গোটা পরিবার এবং তাঁর দুই ছেলে হৃদান এবং হৃহানকেও। প্রাক্তন স্ত্রী সুজানকেও সাবার বিভিন্ন পোস্টে মন্তব্য করতে দেখা গিয়েছে। শুধু তাই নয় তিনি সাবার সঙ্গীতের বেশ ভক্তও বটে তাই তো ম্যাডবয়/মিঙ্ক-এর একটি অনুষ্ঠানে হৃতিক না থাকতে পারলেও সেখানে উপস্থিত ছিলেন সুজান নিজে, ইন্সটাগ্রামের একটি পোস্ট থেকে এ ঘটনা পরিষ্কার বোঝা গিয়েছে।

কানাঘুষো শোনা যাচ্ছে হৃদান এবং হৃহান দুজনে ইতিমধ্যেই নাকি সাবার সঙ্গীতের বেশ অনুরাগী হয়ে উঠেছে। সুতরাং সাবার সঙ্গে হৃতিকের সম্পর্কের জল যে তলায় তলায় অনেকখানি গড়িয়েছে তা সহজেই বোঝা যাচ্ছে, শুভার্থীরা বলছেন এখন অপেক্ষা শুধু সাতপাকে বাঁধা পরার। অন্তত অনুগামীরা তো সেই শুভক্ষণেরই দিন গুনছেন।    

More Articles