জয়ী না হওয়া অবধি যুদ্ধ চলবে! ৮,৩০০ মৃত্যুর পর কোন পথে এগোবে ইজরায়েল?

Israel Hamas War : অপহৃতা শানি লুককে পিকআপ ট্রাকেই মুখ থুবড়ে পড়ে থাকতে দেখা গেছে।

যুদ্ধবিরতি চায় না ইজরায়েল। গাজায় ৮,০০০ মানুষের মৃত্যুর পরেও থামতে চায় না ইজরায়েল। হামাসের বিরুদ্ধে এই যুদ্ধে কোনও রকমের যুদ্ধবিরতি প্রত্যাখ্যান করেছে ইজরায়েল, ইজরায়েলি স্থল বাহিনী গাজা উপত্যকায় ফিলিস্তিনি হামাস জঙ্গিগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে এই যুদ্ধ চালিয়ে যেতেই বদ্ধপরিকর। ৭ অক্টোবরের সন্ত্রাসী হামলার প্রতিশোধ নিতে বিমান বোমা হামলা চালিয়ে যাবে ইজরায়েল, তাতে মৃত্যু যতই সীমা ছাড়াক না কেন।

ইজরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু জানাচ্ছেন, যুদ্ধবিরতির প্রশ্নই নেই কারণ যুদ্ধবিরতি মানে হামাসের কাছে আত্মসমর্পণের সমান। "যুদ্ধবিরতি ডাকা মানেই হচ্ছে ইজরায়েলকে হামাসের কাছে আত্মসমর্পণের জন্য, সন্ত্রাসবাদের কাছে আত্মসমর্পণের জন্য আহ্বান করা... এমনটা ঘটবে না," বলছেন নেতানিয়াহু। এখানেই শেষ না। নেতানিয়াহু বলে দিয়েছেন, "এই যুদ্ধে জয়ী না হওয়া পর্যন্ত ইজরায়েল লড়াই করবে।" ইজরায়েলের বন্ধু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও যুদ্ধবিরতিতে আপত্তি জানিয়েছে।

গাজা উপত্যকায় প্রায় ২৩০ জন ইজরায়েলি এবং বিদেশি নাগরিককে অপহরণ করে বন্দি করে রাখা হয়েছে। নেতানিয়াহুর সরকারের উপর ক্রমেই বাড়ছে চাপ। হামাসের কাছে এই অপহৃতরা যুদ্ধের গুরুত্বপূর্ণ তাস। হামাস ৭ অক্টোবর ইজরায়েলে যে হামলা চালায়, সেই হামলার সময় অপহৃত তিন মহিলার একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে। ইজরায়েলের ইতিহাসে সবচেয়ে মারাত্মক এই ঘটনা। নেতানিয়াহু এই তিন মহিলার ছবি প্রকাশ্যে আসতেই অপহৃত ব্যক্তিদের দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য সব সীমা ছাড়িয়ে যেতে বদ্ধপরিকর।

আরও পড়ুন- ২০ দিনে ৩,৩০০ শিশুর মৃত্যু! কেন এত শিশু মারা যাচ্ছে গাজার যুদ্ধে?

ইজরায়েলি সেনাবাহিনী অভিযানের সময় গাজা উপত্যকা থেকে একজন মহিলা সৈনিককে মুক্ত করে ফিরিয়ে এনেছে। ইজরায়েলি সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে জানায়, সৈনিক ওরি মেগিদিশকে ৭ অক্টোবর হামাস অপহরণ করে। গাজাতে হামলা চালিয়ে ইজরায়েল সেই সেনাকে ছাড়িয়ে উদ্ধার করে আনে।

হামাস এর আগে দুই মার্কিন নাগরিকসহ চার বন্দিকে মুক্তি দিয়েছিল। হামাস এও জানিয়েছিল যে অপহৃতদের মুক্তির জন্য যুদ্ধবিরতি জরুরি। হামাস বন্দি বিনিময় চুক্তির আহ্বান জানায়। গাজায় বন্দি সমস্ত অপহৃতের বিনিময়ে ইজরায়েলি কারাগার থেকে সমস্ত ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি দেওয়ার প্রস্তাব দেয় হামাস।

গাজা সীমান্তের কাছে একটি সঙ্গীত উত্সব থেকে অপহরণ করা হয়েছিল এক জার্মান মহিলাকে। হামাস পিকআপ ট্রাকে তুলে নিয়ে যায় তাঁকে, নগ্ন করে হাঁটানো হয়। সেই জার্মান মহিলা গতকাল মারা গেছেন। হামাসের শেয়ার করা ভিডিওগুলোতেই অপহৃতা শানি লুককে পিকআপ ট্রাকেই মুখ থুবড়ে পড়ে থাকতে দেখা গেছে।

গাজা উপত্যকায় ইজরায়েলের তীব্র সামরিক অভিযানে ৮,৩০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন এখনও। ৭ অক্টোবর ইজরায়েলে হামাসের ভয়ঙ্কর রকেট হামলাতে ১,৪০০ সাধারণ মানুষ মারা যায়।এই হামলার বদলা নিতে পাল্টা আক্রমণ চালায় ইজরায়েল। যুদ্ধে জয়ী হওয়াই যে দেশের লক্ষ্য, বলা বাহুল্য সেই যুদ্ধে মৃত্যু ও নৃশংসতা কোন সীমা ছাড়াবে, তা কল্পনা করাও যায় না। বিশ্ব কেবল লাশ গুনবে।

 

More Articles