ট্রাম্পের যুদ্ধবিরতিকে বুড়ো আঙুল! ইজরায়েলে কেন হামলা অব্যহত ইরানের?
Iran Israel Ceasefire: ইরানের বিদেশমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি বলেছেন, ইজরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি নিয়ে কোনও চুক্তিই হয়নি
তিনি ইদানীং যুদ্ধবিরতি ঘোষণার হোতা। ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে অপারেশন সিঁদুর পরবর্তী সংঘাতেও ভারত নয়, পাকিস্তানও নয়, তিনিই সংঘর্ষ বিরতির ঘোষণা করে দেন। এই মুহূর্তে ইরানও না, ইজরায়েলও না তিনিই যুদ্ধবিরতির ডাক দিয়ে দিয়েছেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলে দিয়েছেন যে, ইজরায়েল এবং ইরান এই ‘১২ দিনের যুদ্ধ'-র অবসান ঘটাতে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। যুদ্ধবিরতি পর্যায়ক্রমে অনুষ্ঠিত হবে বলেও ট্রাম্প ঘোষণা করে দিয়েছেন। তবে, ভারত পাকিস্তানের ক্ষেত্রেও ক্রমাগত যুদ্ধবিরতি পর্যায়ে সীমান্ত লঙ্ঘন করে হামলা চলেছে, এই ক্ষেত্রেও তার অন্যথা হলো না। ইজরায়েল জানিয়েছে, দক্ষিণ ইজরায়েলি শহর বে'র শেভা-তে একটি আবাসিক ভবনে আঘাত হানে ইরানের মিসাইল। মঙ্গলবার সকালে এই হামলায় কমপক্ষে তিন জন নিহত ও ১০ জন আহত হয়েছেন। এই হামলার ফলে ওই আবাসিক ভবনের তিনটি অ্যাপার্টমেন্টের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এখনও সেখানে অনুসন্ধান ও উদ্ধারকার্য চলছে। উদ্ধারকারী দলগুলি জানিয়েছে, আরও অনেক মানুষ ধ্বংসস্তূপে আটকে পড়ে রয়েছেন বলে আশঙ্কা। ইজরায়েল ও ইরানের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তির ঘোষণার মাত্র কয়েক ঘণ্টা পরেই এই হামলা। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, যুদ্ধবিরতি নিয়ে এমন প্রহসনের অর্থই বা কী!
এখনও অবধি যে তিনটি নিশ্চিত প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে, তার মধ্যে রয়েছেন বছর চল্লিশের একজন মহিলা, বছর চল্লিশের একজন পুরুষ এবং বছরর কুড়ির এক যুবক। আরও দু'জন ব্যক্তিকে গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।
ইরান মূলত দক্ষিণ, মধ্য ও উত্তর ইজরায়েল জুড়ে বিমান হামলা চালিয়েছে, তারই মধ্যে একটি ছিল মারাত্মক এই হামলাটি। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, প্রথমে দু'টি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছিল। পরবর্তী দফায় কমপক্ষে চারটি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছিল, যার মধ্যে একটি বে'র শেভার ওই ভবনে সরাসরি আঘাত করে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইজরায়েল ও ইরানের মধ্যে পর্যায়ক্রমে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এই হামলা প্রমাণ করে দেয়, ইরানের তরফে এই যুদ্ধবিরতিতে কোনও সায় নেই। ট্রাম্পের হিসেব অনুযায়ী ইরান ১২ ঘণ্টা হামলা বন্ধ রাখবে, তারপর ইজরায়েলও একই ধরনের বিরতি পালন করবে। অথচ বে'র শেভাতে হামলার অল্প সময়ের মধ্যেই, হাইফা, জেজরিল উপত্যকা, নর্দার্ন শ্যারন, কার্মেল, সামেরিয়া, ওয়াদি আরা এবং গ্যালিলি সহ মধ্য ও উত্তর ইজরায়েল জুড়ে বহু সাইরেন শোনা গিয়েছিল।
ইরানের বিদেশমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি বলেছেন, ইজরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি নিয়ে কোনও চুক্তিই হয়নি। তবে স্থানীয় সময় ভোর চারটের মধ্যে ইজরায়েল যদি 'অবৈধ আগ্রাসন' বন্ধ করে দেয় তাহলে, তেহরানও আক্রমণ থামিয়ে দেবে। ইজরায়েল অবশ্য এই নিয়ে এখনও প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্য করেনি।
ইরানের দাবি, ইজরায়েল ১৩ জুনে আক্রমণ চালানোর পর থেকে ১৩ জন শিশু সহ ৪০০ জনেরও বেশি মানুষ মারা গেছেন এবং কমপক্ষে ৩,০৫৬ জন আহত হয়েছেন। অন্যদিকে ইজরায়েলে ইরানের আক্রমণে কমপক্ষে ২৪ জন নিহত হয়েছেন।