ভোটে জিতেও মিলল না ছাড়! মহিলা জওয়ানের হাতে সপাটে চড় খেলেন কঙ্গনা

Kangana Ranaut: দিনের আলোয় সকলের সামনে অপদস্থ হতে হল অভিনেত্রীকে। চন্ডীগড় বিমানবন্দরে সিআইএসএফের এক মহিলা কনস্টেবলের হাতে সপাটে চড় খেলেন কঙ্গনা।

এর আগে বহুবার বহু বিতর্কে জড়িয়েছেন বলিউডের এই অভিনেত্রী। পড়েছেন বহু বিপাকেও। কখনও তাঁর মুম্বইয়ের অফিস গুঁড়িয়ে দিয়েছে বিএমসি, কখনও সহ-অভিনেতার সঙ্গে চিঠি বিতর্কে জড়িয়ে চর্চায় এসেছেন। তবে সেসব বিতর্ক বিবাদের সংস্পর্শ এড়িয়ে এবার লোকসভার ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাউত। এবং হিমাচল প্রদেশের মাণ্ডি লোকসভা কেন্দ্র থেকে বিজেপির টিকিটে জিতেও যান কঙ্গনা। তবে ভোটে জেতার পরেই বিরাট বিপাকে পড়লেন কঙ্গনা। দিনের আলোয় সকলের সামনে অপদস্থ হতে হল অভিনেত্রীকে। চন্ডীগড় বিমানবন্দরে সিআইএসএফের এক মহিলা কনস্টেবলের হাতে সপাটে চড় খেলেন কঙ্গনা।

সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার মোহালি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে নয়াদিল্লি যাচ্ছিলেন সদ্য জয়ী সাংসদ। বিমানবন্দরের লাউঞ্জে ঘটনাটি ঘটে বলে খবর। কঙ্গনাকে চড় মারার ঘটনায় জড়িত কনস্টেবলের নাম কুলবিন্দর কৌর বলে জানা গিয়েছে। কিন্তু কী কারণে সদ্য নির্বাচিত সাংসদকে চড় খেতে হল সিআইএসএফ জওয়ানের হাতে? কী এমন করেছিলেন কঙ্গনা।

আরও পড়ুন: রাম মন্দিরে দ্রৌপদী মুর্মু নেই, কঙ্গনা রানাওয়াত আছেন! কেন?

কিছুদিন আগেই কৃষক বিক্ষোভে অশান্ত হয়ে উঠেছিল পঞ্জাব। সেই আঁচ এসে পৌঁছয় দিল্লিতে। কৃষক আন্দোলনের জের যে এখনও ভীষণ ভাবে টাটকা পঞ্জাব জুড়ে, তার প্রমাণ লোকসভা ভোটে পঞ্জাবের ফলাফল। একটিও আসন সেখানে পায়নি বিজেপি। সে সময়ে কৃষক আন্দোলন সম্পর্কে ভুলভাল কথা বলে বিতর্কে জড়ান কঙ্গনা। বিলকিস বানোর ছবি পোস্ট করে তাঁকে পঞ্জাবের কৃষক বলে পরিচয় দিয়েছিলেন কঙ্গনা। টুইট করে এ-ও বলেন, শাহিনবাগ দাদি কৃষকদের আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন। তাঁর সেই বক্তব্য ঘিরে জোর বিতর্ক হয়। তার পরে অবশ্য টুইটটি উড়িয়ে দেন কঙ্গনা। এই বক্তব্যের জন্য কঙ্গনাকে ক্ষমা চাইতে পর্যন্ত বলেছিল সংযুক্ত কিসান মঞ্চ।

এখানেই শেষ নয়। কৃষক আন্দোলনে সামিল মহিলারা একশো টাকার বিনিময়ে বিক্ষোভে এসেছেন বলেও মন্তব্য করেছিলেন কঙ্গনা। সূত্রের খবর, সেই আন্দোলনে ছিলেন সিআইএসএফ জওয়ান কুলবিন্দর কৌরের মা-ও। কঙ্গনার সেই বক্তব্যকে ঘিরে অনেকদিন ধরেই ক্ষোভ জমে ছিল ভিতরে তাঁর। কৃষিজীবী মায়ের সেই অপমান মানতে পারেননি কুলবিন্দর। 

কঙ্গনার তখনকার সেই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া যে এতদিন পরে এই ভাবে তাঁর দিকে ছুটে আসবে, তা কি আদৌ কখনও কল্পনা করতে পেরেছিলেন বিজেপি সাংসদ। এদিন মোহালির বিমানবন্দরে সেই প্রসঙ্গ তুলেই তাঁর গালে একটি সপাটে থাপ্পড় বসিয়ে দেন দায়িত্বরত সিআইএসএফ কনস্টেবল। তবে শুধু এইটুকু কারণেই বিবাদ নয়। সূত্রের খবর, ওই সিআইএসএফ কনস্টেবল নিরাপত্তা চেকিংয়ের সময় কঙ্গনাকে তাঁর মোবাইলটি ট্রে-তে রাখার নির্দেশ দেন। আর তা করতে রাজি হননি কঙ্গনা। উল্টে ওই কনস্টেবলকেই শাঁসাতে থাকেন কঙ্গনা। ধাক্কা পর্যন্ত মারেন। এর পরেই ধৈর্যচ্যুতি হয় ওই নিরাপত্তা কর্মীর। এর বিবাদ অশান্তিতে গড়াতেই কষিয়ে চড় বসিয়ে দেন তিনি সাংসদের গালে। ঘটনায় পাল্টা মারতে গিয়েছিলেন কঙ্গনাও। বাকিরা ধরে বেঁধে তাঁকে সামলান।

 

যদিও ধাক্কাধাক্কির কথা অস্বীকার করেছেন কঙ্গনা। তাঁর অভিযোগ, ওই মহিলা কৃষক আন্দোলনের সমর্থক। তাই তাঁকে আক্রমণ করেছেন তিনি। একটি ভিডিওবার্তায় কঙ্গনা বলছেন, ‘‘আমার কাছে অনেক ফোন আসছে। প্রথমেই জানাই, আমি ভাল আছি। আজ চণ্ডীগড় বিমানবন্দরে নিরাপত্তা তল্লাশির পর আমি যখন বেরোলাম, পাশের একটি কেবিন থেকে এক মহিলা নিরাপত্তারক্ষী বেরিয়ে এসে পাশ থেকে আমার গালে মারেন। আমাকে গালিগালাজও করেন। আমি ওঁকে যখন জিজ্ঞেস করলাম, কেন উনি এমন করলেন, উনি বললেন, উনি কৃষক আন্দোলনকে সমর্থন করেন। আমি নিরাপদে আছি। কিন্তু পঞ্জাবে যে ভাবে আতঙ্কবাদ এবং উগ্রবাদ বেড়ে চলেছে, তা নিয়ে আমি উদ্বিগ্ন।’’

আরও পড়ুন:জারি ১৪৪ ধারা, ভোটের আগে দিল্লির পারদ চড়াছে কৃষক বিক্ষোভের আঁচ

জানা গিয়েছে, এর পর বিকেল তিনটের ভিস্তারা ফ্লাইটে দিল্লি উড়ে গিয়েছেন কঙ্গনা। সূত্রের খবর, দিল্লিতে নেমে সিআইএসএফের ডিরেক্টর জেনারেল নীনা সিংহ এবং অন্যান্য শীর্ষ স্থানীয় আধিকারিকদের সঙ্গে দেখা করেন কঙ্গনা। চণ্ডীগড় বিমানবন্দরে কী কী ঘটেছে, তা আধিকারিকদের কাছে ব্যাখ্যা করেন। নিরাপত্তারক্ষীর বিরুদ্ধে হেনস্থার অভিযোগও করেছেন তিনি। অভিনেত্রী-সাংসদের অভিযোগের ভিত্তিতে ওই নিরাপত্তারক্ষীকে আটক করা হয়েছে।

More Articles