আর ফেরা হবে না ওশিনের, মৃত্যুর পরে ভাইরাল নেপালের বিমানসেবিকার টিকটক ভিডিও!
Nepal Plane Crash: মৃত্যুর কিছুকাল আগে, মোবাইল ক্যামেরায় বিমানের মধ্যে থেকেই একটি ভিডিও রেকর্ড করে টিকটকে পোস্ট করেছিলেন ওশিন।
"উড়তা হি ফিরু ইন হাওয়াও মে কহি, ইয়া ম্যায় ঝুল যাউ ইন ঘটাও মে কহিঁ, এক কর দু ম্যায় আসমান অউর জমিন।"
আকাশ আর মাটিকে এক করেও ফেলেছিলেন ওশিন। বিমানে করে মেঘের মধ্যে দিয়ে পাখির মতোই উড়ে যেতেন। মাঝে মাঝে এই টুকরো ওড়াউড়ি নিজের মোবাইলে ধরেও রাখতেন। নেপালের পোখারায় মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনার পর ডানা কাটা গিয়েছে, জীবনও। ইয়েতি এয়ারলাইন্সের বিমান টুকরো হয়ে মাটিতে মিশেছে, রক্ত মাংসের দলা হয়ে গিয়েছেন ওশিন, বিমান সেবিকা। টিকটকার হিসেবেও বেশ জনপ্রিয়ই ছিলেন তিনি নেটমাধ্যমে। মৃত্যুর কিছুকাল আগে, মোবাইল ক্যামেরায় বিমানের মধ্যে থেকেই একটি ভিডিও রেকর্ড করে টিকটকে পোস্ট করেছিলেন ওশিন। পিছনে 'জো জিতা ওহি সিকন্দরে'র সেই বিখ্যাত গান, উড়তা হি ফিরু...। সোশ্যাল মিডিয়ায় এখন সেই ভিডিওটিই ঘুরে বেড়াচ্ছে। ওশিন আলে মাগার রবিবার নতুন পোখরা বিমানবন্দরে অবতরণের সময় ইয়েতি এয়ারলাইন্সের বিমানটিতে থাকা আরও ৭১ জনের সঙ্গেই মারা গিয়েছেন।
বিমানে থাকা চার কেবিন ক্রু সদস্যের মধ্যেই ওশিন ছিলেন। দীপ আহলাওয়াত নামে একজন টুইটার ব্যবহারকারী ওশিনের এই ভিডিওটি শেয়ার করেছেন। ক্যাপশনে লিখেছেন, "যতদিন আপনি বেঁচে আছেন ততদিন জীবনকে সম্পূর্ণভাবে বাঁচুন, কারণ মৃত্যু অপ্রত্যাশিত!" মৃত্যুর কেই বা প্রত্যাশা করে। জীবন সম্ভাবনা, মৃত্যু চিরকালই আশঙ্কা। প্রাণোচ্ছ্বল ওশিনের ভিডিওটি মন খারাপকে বাড়িয়ে দিয়েছে কয়েকগুণ। মন্তব্যে মন্তব্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। যে মর্মান্তিক মৃত্যুর মুখে পড়েছেন ওশিন তা মেনে নিতে পারছেন না সাধারণ মানুষ। যে মানুষ বিমানের মধ্যে থেকে ভিডিও করতেন, তিনি বিমান দুর্ঘটনাতেই মারা যাচ্ছেন, জীবন কার জন্য কী পথ বিছিয়ে রেখেছে কেউই কি জানে?
The Air hostess in #YetiAirlinesCrash
— Deep Ahlawat 🇮🇳🎭 (@DeepAhlawt) January 15, 2023
Live life to the fullest as long as you are alive because death is unexpected!
Just sharing TikTok video of Air Hostess Oshin Magar who lost her life in #NepalPlaneCrash today
जहां भी रहो ऐसे ही रहो!
Rest in Peace !!💐#Nepal #planecrash pic.twitter.com/Bh6DBDnhnt
আরও পড়ুন-শোনেননি বাবার বারণ, কথা দিয়েছিলেন ‘ফিরে আসব’, নেপাল দুর্ঘটনায় মৃত বিমানসেবিকার পরিবারে হাহাকার
ওশিন তাঁর বাবার ইচ্ছার বিরুদ্ধে সেদিন বাড়ি ছেড়ে বেরিয়েছিলেন। সংক্রান্তির দিনে তো 'যাই' বলতে নেই। মেয়ে পরিবারের সঙ্গেই মাঘে সংক্রান্তি উত্সব উদযাপন করুক, চেয়েছিলেন মোহন আলে মাগার। অবসরপ্রাপ্ত ভারতীয় সেনা কর্মী মোহন আলে মাগার জানিয়েছিলেন, মেয়েকে এমন বিশেষ দিনে কাজে যেতে বারণই করেছিলেন তিনি। ওশিন বলেছিলেন, দু'টি ফ্লাইটের কাজ শেষ করেই বাড়ি ফিরে আসবেন। পোখরাতে কাজ শেষ হলে সোজা বাড়ি ফিরে আবার উৎসবে মাতবেন। কথা রাখতে পারেননি ওশিন।
ওশিন দুই বছর ধরে ইয়েতি এয়ারলাইন্সে কাজ করছিলেন। মূলত নেপালের চিৎওয়ানের মাডির বাসিন্দা ওশিন চাকরি শুরু করার পর থেকে কাঠমান্ডুতেই থাকতেন। গত ছয় মাস ধরে বাবা-মাও ওশিনের সঙ্গেই ছিলেন। দুই বছর আগে বিয়েও করেন ওশিন। স্বামী বর্তমানে যুক্তরাজ্যে রয়েছেন। আর ওশিন? নেই, শুধু ঝলমলে কিছু ভিডিওতে মেয়ের থেকে যাওয়াকে নিয়ে বাকি ক'টা দিন কাটিয়ে দেবেন তাঁর বাবা মা।