ঘিঞ্জি দার্জিলিং আর নয়, এবার সাধ্যের মধ্যেই অচেনা পাহাড়! গরমের ছুটিতে যাবেন কোথায়?

Offbeat Tourist spot : প্রথম বৃষ্টির স্বাদ এখানে অপরূপ, অফবিট ভ্রমণের তালিকায় নয়া সংযোজন কালিম্পং-এর সামালবং

পাহাড় প্রেমে চিরকালই বাঙালির অন্যরকম উন্মাদনা। আর তার সঙ্গে যদি যোগ হয় গ্রামীণ নিরিবিলি পরিবেশের স্বাদ, তবে তো ষোলোকলা পূর্ণ। তার ওপর প্রচণ্ড তাপে প্রকোপে এখন কার্যত ফুটছে কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গ। এখনও খেতে কলমে শুরু হয়নি বৈশাখ মাস, তাতেই এই পরিস্থিতি। এরপর টানা গরমকালটাই তো পড়ে রয়েছে। এরই মধ্যে রয়েছে সপ্তাহান্তে বেশ কিছু ছুটিও। আর ছুটি মানেই বাঙালির মনটা ঘুরুঘুরু যে করে এ আর নতুন কি! কিন্তু যান্ত্রিক সময়ে দাঁড়িয়ে লম্বা ছুটির অবকাশ প্রায় নেই বললেই চলে। তাই ভরসা বলতে ওই সপ্তাহান্তের ছুটিটুকুই। বর্তমানে একটা প্রবণতা প্রায়শই লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে ঘিঞ্জি একঘেঁয়ে জায়গায় বদলে এখন অফবিট ভ্রমণকেই বিকল্প হিসেবে বেছে নিচ্ছেন সকলে। আর সেই তালিকাতেই উঠে আসছে একের পর এক নতুন জায়গার সন্ধান।

এরকমই একটি জায়গা হল কালিম্পংয়ের সামালবং। মনটা পাহাড় পাহাড় করলে সহজেই ঢু মেরে আসা যায় উত্তরবঙ্গের এই অপূর্ব সুন্দর গ্রামটি থেকে। ভিড়ে ঠাসা দার্জিলিংয়ে যাদের অনীহা তাদের জন্য দারুন বিকল্প পরিবেশের সন্ধান দেবে সামালবং। বছরের যে কোন সময়েই নিজেকে ঢেলে সাজিয়ে তোলে কালিম্পংয়ের গ্রামটি। তবে প্রথম বর্ষার সাজ এখানে অপরূপ। যেন সদ্য স্নান করা আলুথালু অথচ ভীষণ পরিপাটি একটা আমেজ। প্রাণ ভরে শ্বাস নেওয়া যায় যেখানে। একটা যেন অদ্ভুত নিরিবিলি আমেজ এখানে এসে জমাট বেঁধেছে। কোনও ব্যস্ততা নেই, কোনও হুল্লোড় নেই, আছে কেবল নিখাদ শান্তির খোঁজ।

আরও পড়ুন - লাখ টাকা বাঁচানোর সুবর্ণ সুযোগ! মালদ্বীপ ভ্রমণের স্বাদ মিলবে ভারতেই, হানিমুন সারুন এখানে

ভ্রমণপ্রিয় বাঙালি অবশ্য পাহাড় মানেই খোঁজেন নতুন কিছু দৃশ্যের সন্ধান তার সুযোগও রয়েছে এখানে। একাধিক ভিউ পয়েন্ট রয়েছে সামালবং-এ। সেখান থেকে মন ভরে পাহাড় দেখা যায় সহজেই। পাহাড়ের কোলে বেড়ে ওঠা এই ছোট্ট গ্রামটি মূলত কৃষিপ্রধান। ধান, আদা, এলাচ, ভুট্টার চাষ হয় পাহাড়ের ঢালেই। চারদিকে চোখ মেললেই তাই কেবল সবুজের সমারোহ। যেন নিমেষে কলকাতার গুমোট পরিবেশ থেকে বহু ক্রোশ দূরে এক স্বর্গের মুখোমুখি এনে দাঁড় করায় এই জায়গা।

কাঞ্চনজঙ্ঘার বিস্তৃত রেঞ্জ, নীচ দিয়ে বয়ে যাওয়া অপরূপ রেলি নদী, আর পাহাড়ি গ্রামীণ পরিবেশ, সহজ সরল মানুষ সব মিলিয়ে যেন সৌন্দর্যে ভরপুর এই স্থান। এছাড়াও এখান থেকে কাছেই রয়েছে হনুমান মন্দির। এক্কেবারে পাহাড়ের কোলে। আছে ছোট্ট মনাস্ট্রি। আছে পবিত্র গীর্জাও। কাছেই রয়েছে সিঞ্জি গ্রাম। সেখান থেকে ওপর দিকে তাকালেই চারখোল। সে আর এক পর্যটন কেন্দ্র। এখান থেকে চারখোল, পানবু, লাভা, লোলেগাঁও ঘুরে আসতে পারেন সহজেই। পাশাপাশি এই সামালবং থেকে সিল্ক রুটের পথেও যাওয়া যায়। কাছাকাছিই রয়েছে বেশ কিছু হোম স্টের ব্যবস্থাও। মাত্র হাজার দুয়েক টাকার সঞ্চয়ে ঘুরে আসতে পারেন এই গ্রাম থেকে।

কীভাবে যাবেন : এনজেপিতে থেকে সরাসরি গাড়িতে ৭০ কিমি দূরে সামালবং। ব্যক্তিগত গাড়ি বুক না করে কম খরচে শেয়ার গাড়িতেও পৌঁছে যেতে পারেন সহজেই। আবার প্রথমে কালিম্পং এসে সেখান থেকে শেয়ার গাড়িতে করেও যাওয়া যায় সামালবং। দূরত্ব ওই ২৭ কিমি মতো। গরমের ছুটিতে তাই এবার বেছে নাইট পারেন উত্তরবঙ্গের এই জায়গাটিকে।

তথ্য সূত্র : সামালবং-এর ফেসবুক পেজ।

More Articles