কলকাতায় খুব কাছেই অজানা সমুদ্রপাড়, কীভাবে যাবেন বাগদা সি বিচ?

Offbeat weekend destination : ঘিঞ্জি দীঘা পুরী নয়, কাছাকাছি রয়েছে নতুন এক সমুদ্র দেখার সুযোগ, সামনের ছুটিতে যেতেই পারেন বাগদা সি বিচ...

ভ্রমণ নিয়ে বাঙালির এতদিনের ধারণা ক্রমশ বদলাচ্ছে। এখন আর পরিচিত ঘিঞ্জি এলাকায় ভ্রমণ করতে চান না কেউই। বদলে ঝোঁক বেড়েছে অফবিট ভ্রমণের প্রতি। এর আসল কারণ অবশ্য ব্যস্ত কর্মজীবনের মাঝে লম্বা ছুটির অবকাশের অভাব। ফলে সপ্তাহান্তের ছুটিটুকুই কেবল ভরসা। তাই বাঙালির দিপুদা নিয়ে যতোই আগ্রহ থাকুক না কেন, সপ্তাহান্তের ছুটিতে নতুন জায়গার খোঁজে বেরিয়ে পড়াই এখন নয়া ট্রেন্ড।

ব্যস্ত জীবনের মাঝে এই ছুটিটুকুই হল পড়ে পাওয়া চোদ্দ আনা। তাই বছরের শুরুতে ছুটির তালিকা হাতে পেয়েই অনেকে হিসেবে করে সাজিয়ে নেন ঘুরতে যাওয়ার প্ল্যান। দূরে কোথাও ভ্রমণ করার বদলে এখন কাছাকাছি ভ্রমণকেই বিকল্প হিসেবে বেছে নেন বেশিরভাগ। এর একটা বড় সুবিধার দিক হল, খুব আগে থেকে টিকিট বুকিং নিয়ে দুশ্চিন্তা করতে হয় না। চটজলদি প্ল্যান করে একটা গাড়ি নিয়ে অথবা ভাঙা পথে জার্নিতে সহজেই পৌঁছে যাওয়া যায়। এতে পরিচিত বদ্ধ পরিবেশ থেকে পালিয়ে এসে একটা অন্যরকম মুক্ত বাতাস নেওয়ার পাশাপাশি পকেটের সঙ্গেও বেশ সমঝোতা চলে। আর সেই তালিকাতেই রোজই নতুন করে সংযোজিত হচ্ছে এমন কিছু জায়গা যা এতদিন ছিল প্রায় লোকচক্ষুর অন্তরালে। এরকমই একটি অফবিট জায়গার খোঁজ রয়েছে কলকাতার খুব কাছেই।

ঘিঞ্জি দীঘা পুরী নয়, কলকাতার কাছেই রয়েছে অজানা একটা সমুদ্র ভ্রমণের সুযোগ। জায়গাটির নাম বাগদা সি বিচ। শান্ত নিরিবিলি পরিবেশে এখানে যেন এক্কেবারে অন্যরকম রূপে ধরা দেয় সমুদ্র। বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে ভ্রমণপ্রিয় বাঙালির কাছে কেবল দীঘা পুরী নয়, গোপালপুর, তাজপুর, মন্দারমনিও বেশ পরিচিত উইকেন্ড ট্রিপ হিসেবে গণ্য করা হয়। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে বাগদা সি বিচ একেবারেই নতুন ভ্রমণের জায়গা। ওড়িশার বালাসোরের কাছে অবস্থিত এই সি-বিচ সম্পর্কে এখনও অনেকেই জানেন না। তাই ভিড়ও বেশ কম। প্রকৃতি এখানে ঢেলে সাজিয়েছে নিজেকে। গোটা সি বিচ জুড়ে রাজত্ব ফলায় ঝাঁকে ঝাঁকে লাল কাঁকড়া। এদের এই অবাধ বিচরণ থেকেই এই সমুদ্র পাড়ের নাম করা হয়েছে বাগদা সি বিচ। পাশেই রয়েছে ঝাউ বনের এক রহস্যময় পরিবেশ।

offbeat weekend destination bagda sea beach eco resort dublagadi balasore weekend destination near kolkata

কীভাবে যাবেন?

ওড়িশার বালাসোর রেলস্টেশন থেকে অটো বা ট্রেকারে ৩০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই ঝাউ জঙ্গলে ঘেরা নিরিবিলি সমুদ্রতট। হাওড়া অথবা শিয়ালদহ থেকে ট্রেনে সহজেই যাওয়া যায় উড়িষ্যা। এছাড়াও সড়কপথে কলকাতা থেকে দূরত্ব ওই সাড়ে পাঁচ ঘন্টার আশেপাশে। অনেকেই ভাড়া অথবা ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে দুম করে প্ল্যান করে চলে যেতে পারেন বাগদা সি বিচ।

এখানে থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা কী?

কলকাতা থেকে ভরপুর বেরিয়ে সহজেই রাতে আবার ফিরে আসা যায় ঠিকই, তবে চাইলে এখানে গিয়ে দিন দুয়েক কাটিয়েও আসতে পারেন নিরিবিলি পরিবেশে। সেজন্য রয়েছে যথাযথ থাকা খাওয়ার ব্যবস্থাও। যদিও খুব পরিচিত পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে মানচিত্রে এখনো জায়গা পায়নি বলে এখানে ভিড় যেমন কম তেমনি খুব বেশি থাকার জায়গাও নেই তবে কিছু ক্যাম্প আর কটেজ আছে। চাইলে ইজিপিসো ব্যাকপ্যাকের্স-এর ক্যাম্পে দুটো রাত কাটিয়ে যেতে পারেন। থাকা-খাওয়া সমেত মাথাপিছু খরচ পড়বে মোটামুটি ১,৪০০ টাকা। এছাড়াও এখানে রয়েছে আরও অনেক বিনোদনের সুযোগ। তাই সন্ধ্যার নিরিবিলি পরিবেশে সমুদ্রস্রোতের শব্দ শুনতে শুনতে আগুনে পোড়ানো মাংসের গন্ধ আর ছুটি কাটানোর এমন সুযোগ হাতছাড়া করবেন না।

More Articles