দীর্ঘ চুম্বন-প্রণালী: সুমন সাধু
Queer Poems: সুমন সাধুর কলমে একগুচ্ছ কবিতা
শীৎকারগুচ্ছ
এ ভরাট দখিনাদুয়ারে উড়ে আসে এলোমেলো চুল
মুখে তাম্বুল ছাপ
আঙুলের কোটরে ধরে রাখি হ্রস্ব-ই শীৎকারগুচ্ছ
মুখে মুখে বেনিয়াসহকলা-র হাসিটি খেলে যায়
আর চাপ চাপ দাড়িটির মুখে লেপ্টে থাকে শ্বেতচন্দন রেখা
গতরের সাধ হয় আলতা পেড়ে বেনারসি
অথচ সহাস্য যুবক লোমশ বুকে ঢেউ খেলিয়ে
চলে যায় পাখিদের ওমে
কিছু ওমজাত ধারণার বশে উত্থিত লিঙ্গের সহনশীলতা দেখি
আমাদের হ্রস্ব-ই মুখে মুখে থুতুটি ছিটিয়ে দেয়
অনন্তে ভিজে ওঠে দীর্ঘ চুম্বনপ্রণালী

আহ্! মরণ
পিয়াস লাগিয়া জলদ সেবিনু, বজর পড়িয়া গেল
রাই-অঙ্গে নেচে ওঠে অতিতরুণ শ্যাম
মনে পড়ে ছোটবেলার দশক নব্বুইয়ের দিনক্ষণ
আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে সেই প্রথম কানুর পিরিতি
বাবা বলল, বাহ আমার সুন্দরী ছেলে
পাড়ার সুদর্শন নয়নকাকা বলল, লক্ষ্মীটি
রবীন্দ্রনাথ বলল, গুণবতী ভাই আমার
আয়না বলল, আয় রে আয় নদীর জলে ঝাঁপ দিয়া পড়ি
আহ্! মরণ অধিক শেল
সেই প্রথম অমিয়া সাগরে গরল খেয়ে সব পাপ ঘুচে গেল

দেওয়াল লিখন
পুবের দেওয়ালে দুর্গা-অপু
পশ্চিমে তারকোভস্কি, কিম-কি দুক
উত্তরে নন্দলাল বসু
দক্ষিণে যামিনী রায়
ঈশানে ঋতুপর্ণ ঘোষ
নৈঋতে উপর-নিচ দুটো অপ্রাসঙ্গিক পোস্টার
আমি আর প্রতীক

নাভিটি নিম্নমুখী
আগুন চোখে তার দহন আলোর ইশারা
সে আকাশ ভেবে জড়িয়ে ধরে
সে তার চোখের বিরাম
অকুল ধারায় বৃষ্টি নামে
গহন সবুজ যে শরীরে
সেখানে শুধু জলের দাগ
আর জলের দাগ
মনের মরমিয়া ওঠে
সে তবু নাভিনিম্নের আয়না
তাকে স্বভাবে হারাই

যদি প্রেম দিলে না…
জীবন তুমি বেজে ওঠো
স্বভাবে কিংবা অভাবে
তোমার ধ্বনিটির নাম হোক শঙ্খ
নাভিমূলে গঙ্গাজল ছিটিয়ে ছিটিয়ে
তোমায় শুদ্ধ করব, শেখাব পুণ্যার্থ ব্রত
আমাদের ব্রতচারী আন্দোলনে একদিন গলা
মিলিয়েছিল তোমার-আমার অ্যালেন গিনসবার্গ
আমরাও তাঁর মতো হতে চেয়েছিলাম
কোনো এক অভিসারী বরষার রাতে আমরা পড়েছিলাম
‘দ্য ওয়েট অফ দ্য ওয়ার্ল্ড ইজ লাভ’
শরীরী দোলাচলে কিন্তু অথচ যদি-র লম্বা পথ পেরিয়ে
আমার দেহে লুটিয়ে পড়েছিল সরু কল্কার পাড়
জীবন কী অবলীলায় বেজে ওঠে

Whatsapp
