বাজেট প্রকাশের পর ফের বাড়ল রেপো রেট, কোন বাধা আসতে চলেছে সম্পতি ক্রয়ের পথে?
Repo rate hiked : সাধারণ মানুষের জমি বাড়ি ক্রয়ের স্বপ্নে জোর ধাক্কা, এই নিয়ে চলতি অর্থবর্ষে টানা ছয়বার বাড়ল রেপো রেট
সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে এই বছরের বাজেট। তার জেরে বিভিন্ন জিনিসের দামের হেরফের নিয়ে ইতিমধ্যেই আলোচনা তুঙ্গে। সেই সঙ্গে মহিলা এবং বয়স্কদের জন্যও বাজেটে একাধিক ছাড়ের উল্লেখ করেন নির্মলা সীতারমন। বাজেট প্রকাশের পর থেকেই সুদের হার, কর ইত্যাদি বিষয় নিয়ে হিসেবের খাতা খুলে বসেছে সাধারণ মানুষ। আর ঠিক এই আবহে নতুন করে চিন্তার ভাঁজ পড়তে চলেছে কপালে। প্রকাশিত বাজেটের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে এবার রিজার্ভ ব্যাংকের তরফ থেকেও জারি করা হল নির্দেশিকা। আবারও বাড়ানো হল সার্বিক রেপো রেট। এর আগে গত ডিসেম্বর মাসেও রেপো রেট ৩৫ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়েছিল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। বর্তমানে RBI-র গভর্নর শক্তিকান্ত দাস আবারও ২৫ বেসিস পয়েন্ট রেপো রেট বৃদ্ধির কথা ঘোষণা করলেন। ফলে বর্তমান রেপো রেট বেড়ে দাঁড়াল ৬.৫ শতাংশ।
রেপো রেট কী?
সহজ কথায় বলতে গেলে রেপো রেট হল এক প্রকার সুদের হার। আমরা যখন ব্যক্তিগত কোনও সম্পত্তি যেমন বাড়ি, গাড়ি, জমি ইত্যাদি ক্রয়ের জন্য ব্যাংকের থেকে নগদ অর্থ ঋণ নিই, তখন সেই অর্থ একটি নির্দিষ্ট হারে বা সুদে নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে ব্যাংকে ফেরত দিতে হয়। কিন্তু এই অর্থ গুলো আসলে আসে রিজার্ভ ব্যাংক থেকে। অর্থাৎ অন্যান্য ব্যাংক প্রয়োজনে অর্থের যোগানের জন্য ধার নেয় রিজার্ভ ব্যাংক থেকে। এবং এই অর্থ পরিশোধের যে সুদের হার দিতে হয় ব্যাংকগুলিকে তাকেই বলা হয় রেপো রেট। সুতরাং রিজার্ভ ব্যাঙ্ক রেপো রেট বাড়ানো মানে সেই চাপ এসে পড়বে অন্যান্য ব্যাংকগুলোর ওপর। এবার সেই ব্যাংকগুলো থেকে যখন সাধারণ মানুষ সম্পত্তি ক্রয়ের জন্য ঋণ নিতে যাবে, তখনই পড়তে হবে বিপদে। আগের থেকে বেশি পরিমাণে গুনতে হবে সুদের হার।
আরও পড়ুন - ৭.৫ শতাংশ সুদ, বাজেটে দেশের মহিলাদের কী দিল মোদি সরকার?
প্রসঙ্গত জেনে রাখা দরকার, এই নিয়ে চলতি অর্থবর্ষে পরপর ছয়বার বাড়ল রেপো রেট। দেশের সার্বিক মুদ্রাস্ফীতি রোধ করার জন্যই বারবার রেপো রেট বৃদ্ধির পথে হাঁটছে রিজার্ভ ব্যাংক, এমনটাই মনে করা হচ্ছে। কিন্তু এর জেরে বিপদে পড়তে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। জমি, বাড়ি অথবা গাড়ি কেনার জন্য ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার জন্য চিন্তার ভাঁজ পড়ছে কপালে। নির্ধারিত মূল্যের থেকে অনেক বেশি হারে শোধ করতে হচ্ছে টাকা। কিন্তু রেপো রেট বৃদ্ধির জেরে এতদিন পর্যন্ত দেখা গিয়েছে ব্যাংকে জমানো ফিক্সড ডিপোজিট অর্থের ক্ষেত্রেও সুদের হার বাড়ায় ব্যাংক। যদিও এই বিষয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি।
আমানতকারীদের মূলত দুটি ভাগে ভাগ করা যায়। এক, যাদের বয়স কম এবং সম্পত্তি ক্রয়ের নিরিখে যারা ব্যাংক থেকে লোন নিচ্ছে। আর দুই, যাদের জমানো অর্থ অথবা ফিক্সড ডিপোজিট থেকে প্রাপ্ত সুদের টাকায় সংসার চলে। দ্বিতীয়দের ক্ষেত্রে সাধারণ ভেবে রেপো রেট বাড়লে প্রাপ্ত সুদের টাকার পরিমাণও বৃদ্ধি পায়। যদিও এই বিষয়ে কোনও সদুত্তর এখনই দিচ্ছে না ব্যাংক। তবে রেপো রেট বৃদ্ধির নেতিবাচক প্রভাবের জের যে আগামী মাস থেকে টানতে হবে সাধারণ মানুষকে, সেকথা নিশ্চিত ভাবেই বলা চলে। সুতরাং ব্যাংক লোনের ভরসায় যারা সম্পত্তি ক্রয়ের চিন্তা করছিলেন তারা এই সম্প্রতিক নির্দেশিকাটি ভালো করে ঝালিয়ে নিতে ভুলবেন না।