শাহরুখের মাস মাইনের থেকেও বেশি বাড়ি সাজানোর খরচ! কীভাবে তৈরি হলো মন্নত?

Shah Rukh Khan Mannat: ডিজাইনার হিসাবে মন্নতই ছিল গৌরীর প্রথম কাজ।

মন্নত, ল্যান্ডস এন্ড। যেখানে জমি শেষ, সেখানেই শাহরুখের স্বপ্নের বাসা। যে স্বপ্নের সামনে ২ নভেম্বর কাতারে কাতারে মানুষ জড়ো হন দেশের শেষ তারকাকে একবার দেখবেন বলে। তারকা বারান্দায় আসেন, হাত নাড়েন। ভারতবর্ষ শান্তি পায়। মন্নত শাহরুখের প্রাণ, বাদশার আশ্রয়। শাহরুখ খান, গৌরী খান এবং তাঁদের তিন সন্তানের আবাস মুম্বইয়ের এই বিশাল সমুদ্রমুখী বাংলো মন্নত। শুধু আবাস নয়, অগণিত পর্যটকদের আকর্ষণ এই বাড়ি, কিং খানের লাখো ভক্ত মন্নতের বাইরে স্রেফ ছবি তোলার জন্যই আসেন। কখনও কখনও শাহরুখের এক ঝলক দেখতেও পান। গৌরীর নতুন কফি টেবিল বই 'মাই লাইফ ইন ডিজাইন'-এর প্রকাশ অনুষ্ঠানে শাহরুখ জানিয়েছিলেন মন্নত কেনার পুরো কাহিনিই। কীভাবে মন্নত শাহরুখদের বাসা হয়ে উঠল ধীরে ধীরে সেই সম্পর্কে গল্প করেন শাহরুখ।

আসলে মন্নত বরাবরই ছিল সাধ্যাতীত। যখন প্রথম মন্নত কিনেছিলেন শাহরুখ তখন কীভাবে যে টাকা জুটিয়েছিলেন নিজেই অবাক হন। শাহরুখ দিল্লির পাঠান পরিবারের সন্তান। দিল্লিতেই জন্ম, বেড়ে ওঠা। দিল্লিতে মানুষের বড় বাড়ি মানে বাংলো। বাড়ি বা বাংলোতে থাকতেই অভ্যস্ত সেখানকার মানুষ। কিন্তু মায়ানগরীর আদবকায়দা অন্য একেবারেই। মুম্বইয়ে সামান্য এক কামরার বাড়ি জোটাতে পকেট গড়ের মাঠ! মুম্বইয়ের নিজস্ব নিয়ম, সেখানে অ্যাপার্টমেন্টগুলি আরও বেশি ব্যয়বহুল। শাহরুখরা এতে অভ্যস্ত নন। টাকাপয়সা তখন বিশেষ নেই একেবারেই। শাহরুখ বলেছিলেন, তাদের প্রথম বাড়িটি মন্নত থেকে খুব বেশি দূরে ছিল না। ওই বাড়িটি একজন পরিচালক তাদের ধার দিয়েছিলেন থাকতে।

আরও পড়ুন- মন্নতকেও হারাবে শাহরুখের ম্যানেজারের বাড়ি! কত বেতন পান পূজা দাদলানি?

শাহরুখ বলেছেন, “আমাদের খুব বেশি টাকা ছিল না। আমরা কিছু টাকা জোগাড় করার সঙ্গে সঙ্গেই বলেছিলাম যে আমরা এই বাংলোটি কিনতে চাই। এটা আমাদের একেবারেই সাধ্যের বাইরে ছিল। কিন্তু কিনে ফেললাম। এই বাড়ি কেনাটা সত্যিই একটা ব্যাপার। তারপর আমাদের বাংলোটি পুনর্নির্মাণ করতে হয়েছিল, কারণ তখন বাড়িটার বেশ জরাজীর্ণ দশা। একে তো বাড়ি কিনে ফেলেছি সর্বস্ব দিয়ে, তারপরে বাড়ি সাজানোর আর টাকা নেই। আমরা একজন ডিজাইনারকে ডাকলাম। তিনি আমাদের বললেন, তিনি যেভাবে বাড়িটা ডিজাইন করবেন ভেবেছেন, তাতে যা টাকা লাগবে তা আমি এক মাসে যে বেতন পাই তার চেয়ে ঢের বেশি।"

আরও পড়ুন- শাহরুখের নিজস্ব স্বর্গ ‘মন্নত’-এর অন্দর কেমন?

এই ডিজাইনারকে দিয়ে কাজ করানো একপ্রকার অসম্ভব। তখন ওই একটি ধানের শিষের শিশিরবিন্দুর মতো জেগে ওঠেন গৌরী। ডিজাইনার হিসাবে মন্নতই ছিল গৌরীর প্রথম কাজ। শাহরুখ জানিয়েছেন, তাঁর বাড়িতে তাঁর প্রিয় ঘর হচ্ছে লাইব্রেরিটি। "লোকে নাকি বলে আমি আমার বেশিরভাগ সময় বাথরুমে কাটাই, তবে আসল সত্য হচ্ছে আমি আমার লাইব্রেরিটি সবচেয়ে বেশি পছন্দ করি। এটি বাড়ির এক এমন অংশ যা আমার অফিসের মতোই, এতে কোনও ইলেকট্রনিক্স নেই। এটি একটি লাইব্রেরি, আমি এতে বসে থাকতে পছন্দ করি। আমি লাইব্রেরির বই পড়েছি অনেক দিন হয়ে গেল, তবে বেশ বুদ্ধিদীপ্ত এবং স্মার্ট মনে হয় লাইব্রেরিতে সময় কাটিয়ে," শাহরুখ জানিয়েছেন।

শাহরুখের কাছে পরিবারের সংজ্ঞা শিখেছেন অনেক মানুষই। একান্তই বাইরে না থাকলে বাড়িতেই সকলে রাতের খাবার খান। "আমাদের একসঙ্গে ডিনার করতে হবে এবং সেই ডিনারগুলিতে, আমরা আলোচনা করি সেদিন কার কাজ কেমন হলো," গল্প করতে করতেই জানিয়েছেন শাহরুখ। আর জানিয়েছেন, মন্নত আসলে ভারতীয় পরিবারের এক চিরায়ত কামনা। দেশের শেষ এই তারকার বাড়ি স্বাভাবিকভাবেই যে মানুষের কাছে হয়ে উঠবে 'মন্নত'সম, বলা বাহুল্য।

 

More Articles