বিটলস ফিরছে! মৃত্যুর ৪৩ বছর পর AI-এর সাহায্যে ফিরছেন জন লেনন!

Beatles AI Music Release: লেননের মৃত্যুর পর তাঁর স্ত্রী ইয়োকো ওনো ম্যাককার্টনিকে একটি টেপ দেন।

১৯৮০ সালে মারা গেছিলেন জন লেনন। বিশ্বের ঘাড় ধরে ততদিনে ব্যান্ডের দর্শন ও সঙ্গীতের দাপট দুই-ই দেখিয়ে দিয়েছে বিটলস। বিটলসে সমস্যা এসেছে। বিটলস ছন্নছাড়া হয়েছে। জন লেনন আর তাঁর স্ত্রীকে তোলা হয়েছে অপরাধীর কাঠগড়ায়। এতকিছুর মাঝেও তবু বিটলস বিশ্বের ব্যান্ড সঙ্গীতের ইতিহাসের হল অব ফ্রেমে আটকে থাকা ধ্রুবতারা। লেননের ব্যক্তিগত খ্যাতি বা বিতর্ক বিটলসের সফরে নানা বাঁকেই বাধা হয়েছিল এ কথা সত্য, তবে মৃত্যুর ঠিক আগে লেনন তাঁর শেষ গানগুলি রেখে গেছিলেন বিটলসের সঙ্গীর জন্যই। এই এত বছর পর, বিটলস নিজেদের শেষ গান প্রকাশ করতে চলেছে। আর বিটলসের শেষ গান প্রকাশের নেপথ্যে রয়েছে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স! জন লেননের গলার স্বরকে পৃথক করতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে (AI) ব্যবহার করে বিটলস এই গানের রেকর্ড প্রকাশ করতে প্রস্তুত।

১৯৭৮ সালে জন লেনন একটি গান লেখেন। ১৯৮০ সালে প্রয়াত হন তিনি। ৪৩ বছর পর সেই গানটিই প্রকাশ পেতে চলেছে। বিটলসের সদস্য পল ম্যাককার্টনি বিবিসিকে সম্প্রতি জানিয়েছেন, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের সাহায্যে লেননের কণ্ঠ আলাদা করে বের করা হয়েছে এবং গানটি সম্পূর্ণ করা হয়েছে। এই বছরের শেষের দিকেই প্রকাশিত হবে সেই গান। যদিও ম্যাককার্টনি বিবিসির সাক্ষাত্কারে গানটির নাম স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেননি। তবে বিবিসির মতে, গানটি সম্ভবত 'নাউ অ্যান্ড দেন’, ১৯৭৮ সালে এই গানটিই লেখেন লেনন। লেননের মৃত্যুর পর তাঁর স্ত্রী ইয়োকো ওনো ম্যাককার্টনিকে একটি টেপ দেন। সেই টেপে ছিল লেননের বেশ কিছু গান, আর টেপটির উপরে লেখা ছিল 'ফর পল'। অসমাপ্ত সেই গানটি ডেমো হিসাবে রেকর্ড করা হয়েছিল, লেনন পিয়ানো বাজিয়েছিলেন তাতে এবং গেয়েওছিলেন।

 

আরও পড়ুন- সুতোয় ঝুলছে চাকরি, ChatGPT-এআইয়ের ধাক্কায় কাজ হারিয়ে পথে বসতে পারেন আপনিও!

১৯৯০-এর দশকে লেননের দেওয়া সেই টেপ থেকে 'ফ্রি অ্যাজ আ বার্ড' এবং 'রিয়েল লাভ’ নামে দু'টি গান মুক্তি পায়। সেই গানগুলি অনেকটা তৈরিই ছিল। ওই টেপের সমস্ত গানে একটি আওয়াজ ছিল। নাউ অ্যান্ড দেন গানটিতে সবচেয়ে জোরে ছিল সেই আওয়াজ। শব্দটিকে সরিয়ে পরিচ্ছন্ন করে সুরটিকে আলাদা করে তা প্রকাশ করা কঠিন হয়ে পড়েছিল।

পল ম্যাককার্টনি তিনটি গানই প্রকাশ করতে আগ্রহী ছিলেন। কিন্তু ভিন্ন মত দেন জর্জ হ্যারিসন। নাউ অ্যান্ড দেন গানটির বিষয়ে সবচেয়ে কম উত্সাহী ছিলেন তিনি। তাঁর মনে হয়েছিল, গানটি কিছুই হয়নি। ফলে এই গানটিকে নিয়ে আর কিছু করাই হয়নি সেই থেকে।

 

"গানটার নামটা খুব ভালো ছিল না, নতুন করে অনেকটাই খাটতে হতো। তবে এটায় একটি সুন্দর অংশ ছিল এবং সেটা জন গাইছিল। জর্জের পছন্দ হয়নি। বিটলস গণতন্ত্র মেনে চলে, ফলে আমরাও সেই ভালো না লাগাকে মান্যতা দিয়ে আর এগোইনি," ১৯৯৭ সালে বলেছিলেন ম্যাককার্টনি।

তারপর, এই প্রায় চার দশক পরে ম্যাককার্টনি জানালেন, কণ্ঠ এবং পিয়ানো - যা একই ট্র্যাকে রেকর্ড করা হয়েছিল তা এআই ব্যবহার করে আলাদা করা হয়েছে। নতুনভাবে তা রেকর্ড করা হয়েছে। তবে এর আগে একবার লেননের গলার আওয়াজকে আলাদা করতে AI ব্যবহার করেছিলেন পল ম্যাককার্টনি। ২০২২ সালে ব্রিটিশ যুক্তরাজ্যের গ্ল্যাস্টনবারি ফেস্টিভ্যালে লেননের সঙ্গে ওইভাবেই 'ডুয়েট' গেয়েছিলেন তিনি। বলেছিলেন, এই মুহূর্ত তাঁর জন্য বিশেষ। হোক না ভার্চুয়াল, তবু জনের সঙ্গে এক মঞ্চে এতদিন পরে যদি এভাবে গাওয়া যায় ক্ষতি কী?

More Articles