রঘুর পর আরও এক হাতিকে দত্তক, জমে উঠেছে 'এলিফ্যান্ট হুইস্পারার্স' বোম্মান-বেলির সংসার

Elephant Whisperers Bomman-Bellie Calf : অবশ্য এখানেই থেমে থাকেননি বোম্মান আর বেলি। সম্প্রতি নিজেদের ‘সংসার’ আরও বড় করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা।

মাত্র ৪১ মিনিটের একটি ছবি। আর সেটাই গোটা পৃথিবীর আপামর মানুষের মনে জায়গা করে নিল। অনাথ হাতির সঙ্গে মানুষের এমন মধুর সম্পর্ক, তাও কোনও সিনেমা নয়, একেবারে বাস্তব ছবি। মনের ভেতর কোথাও একটা দাগ কেটে গিয়েছে এই বিশেষ তথ্যচিত্রটি। আর তাকেই সম্মান জানিয়েছে গোটা বিশ্ব। অস্কারের মঞ্চে সেরার শিরোপা ছিনিয়ে নিয়েছে এটি। কথা হচ্ছে ‘দ্য এলিফ্যান্ট হুইস্পারার্স’ সম্পর্কে। ভারতের এক দম্পতি আর তাঁদের ছোট্ট এই হাতিকে নিয়েই তৈরি হয়েছে এক মায়ার গল্প।

অস্কারের মঞ্চে সেরা তথ্যচিত্রের শিরোপা পাওয়ার পর জনপ্রিয়তা আরও বেড়ে গিয়েছে। নীলগিরির থেপ্পাকাডু এলিফ্যান্ট ক্যাম্পের কথা এখন গোটা দুনিয়া জানে। সবাই এখানে একবার হলেও আসতে চাইছেন দেখতে চাইছেন রঘুকে। রঘু, সেই ছোট্ট অনাথ হাতির ছানা, যাকে ‘এলিফ্যান্ট হুইস্পারার্স’-এ দেখা গিয়েছিল। রাতারাতি সেলেব্রিটি হয়ে গিয়েছে সে। এখন অবশ্য বেশ মজাতেই আছে রঘু। খাচ্ছে দাচ্ছে, খেলে বেড়াচ্ছে। সেলেব্রিটি বলে কথা! থেপ্পাকাডুর এই ক্যাম্পে পর্যটকদের সংখ্যাও আগের থেকে বেড়ে গিয়েছে। এতসবের মাঝে চুপ করে বসে থাকেন বোম্মান আর বেলি।

আরও পড়ুন : অস্কারের মঞ্চে কলকাতার মেয়ে! ‘এলিফ্যান্ট হুইস্পারার্স’-এর দৌলতে বিরল কৃতিত্ব বাঙালি কন্যার

রঘুকে কোলেপিঠে করে মানুষ করেছেন তাঁরা। বোম্মান আর বেলিও এই ক্যাম্পের অনেকটা জায়গা জুড়ে রয়েছেন। রয়েছে তাঁদের সংসার। সেখানে রয়েছে রঘু। সেই গল্প বিশ্বের মঞ্চে উঠে আসার পর তাঁদের আনন্দের আর শেষ নেই। অনাথ রঘুকে হারিয়ে যেতে দেননি তাঁরা, বরং ভালোবাসা দিয়ে আগলে রেখেছেন। হাতিও সেই ভালোবাসা ফিরিয়ে দেয় তাঁদের। এসব নিয়েই এখন বোম্মান আর বেলির সংসার। অস্কারের সোনালি ট্রফির আলো সেই মুহূর্তগুলোকে আরও রঙিন করে রাখে।

অবশ্য এখানেই থেমে থাকেননি বোম্মান আর বেলি। সম্প্রতি নিজেদের ‘সংসার’ আরও বড় করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা। সরকার চালিত থেপ্পাকাডু এলিফ্যান্ট ক্যাম্পে আরও একটি অনাথ হাতিশাবকের দায়িত্ব নিয়েছেন তাঁরা। মুদুমালাইয়ের কাছে ধর্মপুরী থেকে এই হাতির শাবকটিকে উদ্ধার করা হয়েছে। বন দফতরের তরফে বহুবার চেষ্টা করা হয়েছে, যাতে ছোট্ট হাতিটি তার দলে চলে যায়। কিন্তু কিছুতেই কিছু হয়নি। শেষমেশ বোম্মান আর বেলিই হয়ে ওঠেন তাঁদের ভরসা।

আরও পড়ুন : অস্কারজয়ী দুই হাতিকে দেখতে ভিড় পর্যটকদের! রাতারাতি বিখ্যাত ভারতের এই পর্যটনকেন্দ্র

একমুখ হাসি নিয়ে এই অনাথ, একলা হাতিটিকেও আগলে নিয়েছেন বোম্মান আর বেলি। এদিকে হাতিটিও পেয়ে গিয়েছে স্নেহের পরশ। সবসময় এলিফ্যান্ট হুইস্পারার্সদের হাতের সঙ্গে শুঁড় পেঁচিয়ে রাখে। রঘুর পাশাপাশি নতুন এই সদস্য আসায় দায়িত্বও বাড়ল। এখনও নাম ঠিক করা হয়নি এই হাতির। তবে ইতিমধ্যেই বোম্মান আর বেলির এই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে গিয়েছে। চার মাসের ছোট্ট হাতিটির কোনও ক্ষতি হতে দেবেন না ওই দম্পতি, জানেন নেটিজেনরা।

সবাই আরও খুশি, কারণ রঘু একজন খেলার সঙ্গী পেয়ে গেল। সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে কেবল একটাই কথা। বোম্মান আর বেলি যেন স্বয়ং ঈশ্বরের দূত। অবিলম্বে তাঁদের নিয়ে আরও বড় পরিকল্পনা করা হোক। আরও পশু নিজের পরিবার ফিরে পাক। সত্যিই, যদি বোম্মান আর বেলির মতোই যদি সবাই হতেন, সবাই ভালোবাসায় ভরিয়ে দিতেন পৃথিবী! নেটিজেনদের মুখে এখন এমন স্বপ্নের কথাই উঠে আসছে।

More Articles