"৫ কোটি না দিলে..." সলমানকে হুমকি! বিশ্নোই গ্যাংয়ের সঙ্গে জড়িয়ে অভিনেতার প্রাক্তন?
Salman Khan Lawrence Bishnoi Threat: সোমি প্রকাশ্যে গুজরাতের সবরমতি জেলে বন্দি গ্যাংস্টার লরেন্স বিশ্নোইকে জুম কলের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।
দুঃসময় কাটছে না ভাইজানের। বহুকাল থেকেই তাঁকে নিশানায় রেখেছে কুখ্যাত গ্যাংস্টার লরেন্স বিশ্নোইয়ের গ্যাং। সম্প্রতি মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মন্ত্রী বাবা সিদ্দিকীকে খুন করেছে এই গ্যাং। বাবা সিদ্দিকীর চেয়েও খারাপ অবস্থা যে অপেক্ষা করে আছে সলমানের জন্য এমন হুমকিও ইতিমধ্যেই দিয়েছে এই গ্যাং। মুম্বই ট্র্যাফিক পুলিশকে হুমকি বার্তা পাঠিয়ে এই গ্যাং অভিনেতা সলমান খানের কাছে ৫ কোটি টাকা দাবি করেছে। হুমকি দেওয়া হয়েছে, সলমান যদি টাকা না দেন তাহলে তাঁর পরিণতি মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মন্ত্রী বাবা সিদ্দিকীর চেয়েও খারাপ হবে। "সলমান খান যদি বেঁচে থাকতে চান এবং লরেন্স বিশ্নোইয়ের সঙ্গে শত্রুতা শেষ করতে চান, তাহলে তাঁকে ৫ কোটি টাকা দিতে হবে। এই হুমকিকে হালকাভাবে নিলে সলমান খানের অবস্থা বাবা সিদ্দিকীর চেয়েও খারাপ হবে,” লেখা হয়েছে ওই বার্তায়।
গত ১২ অক্টোবর সলমান খানের ঘনিষ্ঠ বন্ধু এনসিপি নেতা বাবা সিদ্দিকীকে (৬৬) মুম্বইয়ের বান্দ্রায় তাঁর বিধায়ক পুত্র জিশান সিদ্দিকীর অফিসের বাইরে গুলি করে হত্যা করা হয়। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত চারজনকে আটক করেছে পুলিশ। মূল ষড়যন্ত্রকারী সন্দেহভাজন শুভম লোনকার সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, বাবা সিদ্দিকীর হত্যার পিছনে লরেন্স বিশ্নোই গ্যাংয়ের হাত রয়েছে। গত কয়েক মাস ধরেই সলমান খানকে লরেন্স বিশ্নোইয়ের গ্যাং থেকে বারবার হুমকি দিয়ে চলেছে। গত ১৪ এপ্রিল বান্দ্রায় সলমানের বাসভবনের বাইরে দুই বন্দুকধারী পাঁচ রাউন্ড গুলি চালায়। কেন সলমান খানকে নিশানায় রেখেছে এই গ্যাং?
আরও পড়ুন-ইউটিউব দেখে গুলি চালানোর শিক্ষা! বাবা সিদ্দিকীকে যেভাবে খুনের পরিকল্পনা করা হলো
এই দ্বন্দ্বের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে ১৯৯৮ সালের কৃষ্ণসার হরিণ হত্যা! লরেন্স বিষ্ণোই যে সম্প্রদায়ের অন্তর্গত, তারা কালো হরিণকে পবিত্র মনে করে। তাই সলমানের দু'টি কৃষ্ণসার হরিণ শিকার এবং হত্যার বদলা নিতেই ক্রমাগত হুমকি দিয়ে চলেছে এই গ্যাং। লরেন্স বিশ্নোই কিন্তু নিজে এই মুহূর্তে জেলে বন্দি। কারাগারে আটক থাকা সত্ত্বেও, লরেন্স বিশ্নোই তাঁর বিশাল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে পাঞ্জাবি গায়ক সিদ্ধু মুসাওয়ালা সহ অনেক হাই-প্রোফাইল লোকের হত্যাকাণ্ড পরিচালনা করেছেন। তবে সলমান খানের নিরাপত্তা ভেদ করে তাঁর কাছে পৌঁছনো কি সহজ? কীভাবেই বা তাঁর বাড়ির সামনে গুলি চলেছিল? সলমানের তথ্য কে দেয় এই গ্যাংস্টারদের?
এই ক্ষেত্রে একটি নাম উঠে আসছে। তিনি প্রাক্তন বলিউড অভিনেত্রী এবং সলমান খানের প্রাক্তন বান্ধবী সোমি আলি। সোমি প্রকাশ্যে গুজরাতের সবরমতি জেলে বন্দি গ্যাংস্টার লরেন্স বিশ্নোইকে জুম কলের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। সোমি আলি লিখেছেন, "নমস্তে, লরেন্স ভাই। আমি শুনেছি এবং দেখেছি যে আপনি জেল থেকেও জুম কল করেন। তাই আমি আপনার সঙ্গে কয়েকটি বিষয়ে আলোচনা করতে চাই। দয়া করে আমাকে জানান, কীভাবে এটি করা যায়। রাজস্থান আমার কাছে বিশ্বের সবচেয়ে প্রিয় জায়গা। আমি আপনার মন্দিরে প্রার্থনা করতে যেতে চাই। তবে প্রথমে ভিডিও কল দিয়েই শুরু হোক। বিশ্বাস করুন, এই চ্যাটটি আপনার নিজের ভালোর জন্যই, আমি কৃতজ্ঞ থাকব।"
আরও পড়ুন- জেলে বসেই সিদ্দিকিকে খুনের চক্রান্ত! কে এই লরেন্স বিশ্নোই?
১৯৯০-এর দশকে সলমান এবং সোমি আলি একটি সম্পর্কে ছিলেন। সোমি আলি এর আগে সলমান খানের বিরুদ্ধে গার্হস্থ্য হিংসার অভিযোগ এনেছিলেন। সলমান অবশ্য সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন। নভি মুম্বই পুলিশ সলমান খানকে হত্যার ষড়যন্ত্রের অভিযোগে লরেন্স বিশ্নোই গ্যাংয়ের সদস্য সুখবীর বলবীর সিং ওরফে সুখাকে গ্রেফতার করেছে। পানভেল টাউন পুলিশের একটি দল হরিয়ানার পানিপত থেকে সুখাকে গ্রেফতার করেছিল। সলমান খানকে নিকেশ করার পরিকল্পনায় AK-47, M16 এবং AK92 সহ অত্যাধুনিক অস্ত্রের ব্যবহার জড়িত ছিল, যেগুলি পাকিস্তান থেকে ভারতে পাচার করা হয়েছিল।
এই ঘটিনার সঙ্গে কি সোমি আলির কোনও সম্পর্ক রয়েছে? একজন গ্যাংস্টারের সঙ্গে কেউ কেনই বা ভিডিও কল করতে চাইবেন? জুন মাসে সলমান খানকে তাঁর পানভেলের কাছে ফার্মহাউসের কাছে ঘুরে বেড়ানোর সময়েই টার্গেট করা হয়েছিল। পুলিশের মতে, বিশ্নোই এবং নেহরার গ্যাং সলমান খানের গতিবিধির উপর নজরদারির জন্য ৬০ থেকে ৭০ জনকে মোতায়েন করেছিল। চক্রান্তকারীরা নাবালকদের শার্প শুটার হিসেবে নিয়োগ করত এবং পাকিস্তান থেকে অস্ত্র জোগাড় করত বলে অভিযোগ।