এশিয়ার প্রথম মহিলা লোকো পাইলট, এবার বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের হাল ধরবেন এই চালকই

Vande Bharat Express Woman Loco Pilot: ১৯৮৮ সালে ভারতের প্রথম মহিলা ট্রেন চালক হিসেবে স্বীকৃতি পান সুরেখা।

বন্দে ভারত এক্সপ্রেস ট্রেন ভারতে নতুন। ভারতের একাধিক রেলপথে চালু হওয়ার পর থেকেই নানাভাবে শিরোনামে থেকেছে এই আধুনিক ট্রেন। এবার এই বন্দে ভারত ট্রেনকে গন্তব্যে পৌঁছে দিলেন এশিয়ার প্রথম মহিলা লোকো পাইলট সুরেখা যাদব। ভারতীয় রেলের নতুন চালু হওয়া এই সেমি-হাই-স্পিড বন্দে ভারত এক্সপ্রেস ট্রেনচালকের ভূমিকায় এই প্রথম দেখা গেল কোনও মহিলাকে।

সুরেখা যাদব পশ্চিম মহারাষ্ট্রের সাতারা জেলার বাসিন্দা। ১৩ মার্চ অর্থাৎ সোমবার প্রথম বন্দে ভারত এক্সপ্রেস ট্রেনটি নিয়ে পাড়ি দেন তিনি। মুম্বইয়ের সোলাপুর স্টেশন এবং ছত্রপতি শিবাজি মহারাজ টার্মিনাসের মধ্যে বন্দে ভারত এক্সপ্রেস ট্রেনের চালক ছিলেন তিনি। ট্রেনটি ৪৫০ কিলোমিটারেরও বেশি দীর্ঘ যাত্রা শেষ করে নির্ধারিত সময়ের পাঁচ মিনিট আগেই ছত্রপতি শিবাজি মহারাজ টার্মিনাস স্টেশনে পৌঁছে যায়। ৮ নম্বর প্ল্যাটফর্মে বন্দে ভারতকে নিয়ে পৌঁছনোর পরেই এশিয়ার প্রথম মহিলা লোকো পাইলট সুরেখাকে সংবর্ধিত করা হয়।

১৯৮৮ সালে ভারতের প্রথম মহিলা ট্রেন চালক হিসেবে স্বীকৃতি পান সুরেখা। দেশের প্রথম মহিলা ট্রেনচালিকা হিসেবে তাঁর কৃতিত্বের জন্য রাজ্য এবং জাতীয় স্তরে অনেক পুরস্কারেই সম্মানিত হয়েছেন তিনি। তবে নতুন যুগের অত্যাধুনিক বন্দে ভারত ট্রেনের লোকো পাইলট হওয়ার সুযোগ তাঁর সেই কৃতিত্বকে আরও অনেকাংশে বাড়িয়ে তুলেছে। বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের প্রথম মহিলা লোকো পাইলট হয়ে মধ্য রেলওয়ের মুকুটেও নয়া পালক জুড়েছেন সুরেখা।

আরও পড়ুন- আইনের পথে ব্রাত্য মহিলারা! দেশের সুপ্রিম কোর্টের প্রথম মহিলা বিচারপতি আজও আড়ালেই

ছত্রপতি শিবাজি মহারাজ টার্মিনাস থেকে পুনে অবধি ডেকান কুইন ট্রেনের প্রথম মহিলা লোকো পাইলট ছিলেন সুরেখা। পশ্চিমঘাটের পাহাড়ি অঞ্চলের মধ্য দিয়ে এই ট্রেনের যাতায়াত। ২০২১ সালে, আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষ্যে প্রথম সম্পূর্ণ মহিলাচালিত মুম্বই-লখনউ বিশেষ ট্রেনের নেতৃত্বও দিয়েছিলেন সুরেখা। সেই দিন, সুরেখা যাদব সহকারি লোকো পাইলট হিসাবে সায়ালি সাওয়ারদেকারের সঙ্গে ডেকান কুইন ট্রেনটি চালান। লীনা ফ্রান্সিস ট্রেন ম্যানেজার বা গার্ডের দায়িত্ব পালন করেন। আর প্রধান টিকিট পরিদর্শক জিজি জন এবং দীপা বৈদ্যের নেতৃত্বে ছয়জন মহিলা প্রধান ভ্রমণ টিকিট পরীক্ষকদের একটি দল যাত্রীদের সহযোগিতা করেন।

এশিয়ার প্রথম শহরতলির মোটরওম্যান ছিলেন মমতাজ কাজী। মুম্বই এবং কল্যাণের ছত্রপতি শিবাজী মহারাজ টার্মিনাসের মধ্যে চলা মহিলাদের এক বিশেষ ট্রেন, কে৯৯ লোকাল পরিচালনা করেন তিনিই। ট্রেনে গার্ডের কাজ করতেন ময়ূরী কাম্বলে।

সোনাবাই এবং রামচন্দ্র ভোঁসলের সন্তান সুরেখার পড়াশোনা সাতারাতেই। সেখান থেকে কারাদ সরকারি পলিটেকনিক কলেজ থেকে ইলেকট্রিক্যান ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ডিপ্লোমা করেন তিনি। আশির দশকের মাঝামাঝি সময়ে রেলওয়ে রিক্রুটমেন্ট বোর্ডের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন সুরেখা। ১৯৮৬ সালে শিক্ষানবিশ সহকারি চালক হিসেবে সেন্ট্রাল রেলওয়েতে যোগদান করেন সুরেখা যাদব।

২০১০ সালে, সুরেখাকে 'ঘাট চালক' হিসাবে মনোনীত করা হয়, অর্থাৎ যিনি পশ্চিমঘাট পাহাড়ি উপত্যকার মধ্য দিয়ে ট্রেন চালাবেন। মহারাষ্ট্রেরই কল্যাণে ড্রাইভার্স ট্রেনিং সেন্টারে প্রশিক্ষক হিসেবেও কাজ করেছেন তিনি।

More Articles