মাত্র একটির দাম ১ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা! টাটা-আম্বানিরাও যে মুরগি কিনতে হিমশিম খান
World's Expensive Chicken : এই মুরগিটি খেতে নাকি অত্যন্ত সুস্বাদু। কিন্তু তার জন্য আপনাকে পকেট থেকে খসাতে হবে ‘মাত্র’ ২০০০ মার্কিন ডলার।
কালো, সাদা, নীল, বাদামি – রংবেরঙের পালকে মোড়া শরীর। ছোট্ট একটা চোখ, ঢাউস একটা চেহারার থেকেও নজর পড়বে অন্য একটি দিকে। একেবারে নিচে ঢাউস দুটো পা, একেবারে হাতির মতো! পেশিবহুল, তেজিয়াল। হঠাৎ এক নজর দেখলে মনে হবে, হয়তো গোদের মতো কোনও রোগ হয়েছে। এমন ভাবনা আসার পর হয়তো তার দিক থেকে চোখও ফিরিয়ে নেবেন। এখানেই সবচেয়ে বড় ভুলটা করবেন। না, কোনও ভিনগ্রহের প্রাণী নয়। সামান্য একটি নিরীহ, ভদ্র মুরগি। কিন্তু তার হাতির মতো বিশাল পেশিবহুল পা-ই যাবতীয় সন্দেহের মূলে।
অবশ্য ভয় পাওয়ার কিছু নেই। তার চেয়ে বরং পরিচয় করে নেওয়া যাক এই বিশেষ অতিথির সঙ্গে। ভালো নাম ডং তাও চিকেন; কিন্তু গোটা পৃথিবী তাকে ভালোবেসে ডাকে ‘ড্রাগন চিকেন’ বলে। রূপকথার ড্রাগনের মতোই অবিশ্বাস্য মোটা, পেশিবহুল দুটি পা নিয়েই দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছে তারা। এদিকে মুরগির কথা বললেই অনেকের মনে চলে আসবে সেই প্রশ্নটি। ‘আচ্ছা, এটি কি খাওয়া যায়?’ তার উত্তর হল, হ্যাঁ, খাওয়াই যায়। আরও ভালো করে বললে, এই মুরগিটি খেতে নাকি অত্যন্ত সুস্বাদু। কিন্তু তার জন্য আপনাকে পকেট থেকে খসাতে হবে ‘মাত্র’ ২০০০ মার্কিন ডলার। ভারতীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ প্রায় ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা!
আরও পড়ুন : মুরগির মাংস খেলেই ম্যাচে হার! ফুটবলের বিচিত্র কুসংস্কারের এই ইতিহাস অজানাই
মাত্র একটি মুরগির দাম দেড় লাখ টাকারও বেশি! হ্যাঁ, এখানেই গোটা বিশ্বের যাবতীয় মুরগির থেকে আলাদা এই ড্রাগন চিকেন। আসল বাড়ি ভিয়েতনামে। এই দেশের হ্যানয় প্রদেশের মধ্যেই কিছু কিছু জায়গায় এই বিশেষ মুরগির চাষ হয়। আর প্রধানত বংশানুক্রমিক ভাবেই এই মুরগির চাষ করা হয়। কেন? কারণ প্রাচীন সময় স্রেফ ভিয়েতনামের রাজ পরিবারের জন্যই এই মুরগি নিয়ে যাওয়া হতো। সাধারণ মানুষের ধরাছোঁয়ার বাইরে ছিল ড্রাগন চিকেন। এখন অবশ্য সেই রাজপাট নেই, আমজনতাও এই মুরগির মাংস বাড়ি এনে দিব্যি রান্না করে বানিয়ে খেতে পারেন। কিন্তু ভীষণ ধনী না হলে এই মাংস তো কেনাই যাবে না। এক ধাক্কায় দেড় লক্ষ টাকা খরচ করার মতো কজনই বা আছে!
কিন্তু কেন এত দাম? ডং তাও মুরগির মধ্যে কী এমন বিশেষত্ব আছে? দেখতেও বেশ কুৎসিত, তাহলে এত দাম কেন? আসলে, খুব কম জায়গায় এই মুরগির চাষ করা হয়। আর সাধারণ মুরগি চাষের মতো নিয়ম মানলে এখানে হবে না। ড্রাগন চিকেনের পরিচর্যা করতে হবে যত্ন নিয়ে, ধৈর্য ধরে। সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হল এদের পা। সাধারণত জন্মানোর পরই এই মুরগিকে বাইরে ছেড়ে দেওয়া হয়। উদ্দেশ্য একটাই, যত বেশি পারে ও দৌড়াক, হাঁটুক। যত বেশি চলাচল করবে, ততই মজবুত, শক্তিশালী আর মোটা হবে এদের পা। লাল রঙের পুরু এই পা-ই এদের ইউএসপি।
আরও পড়ুন : অল্প পুঁজিতে বিশেষ মুরগি পালন, লক্ষ টাকা রোজগারের হাতছানি, জেনে নিন কীভাবে
এছাড়াও যত্ন নিয়ে চাষ না করলে, খাওয়ার দিকে নজর না রাখলে এই মুরগির মাংস সুস্বাদু হয় না। কেবল মাংস নয়, ড্রাগন চিকেনের ওই মোটা পা-ও রান্না করে খান ভিয়েতনামের বাসিন্দারা। বিশেষ করে লুনার নিউ ইয়ারের সময় এই মুরগির মাংস আর পা রান্না করে খাওয়া হয়। তার ওপর চাষও হয় সামান্য কিছু জায়গায় এতকিছুর জন্যই এই মুরগির দাম এতটা বেশি। ১ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা খরচ করে একবার খেয়ে দেখবেন নাকি এই মুরগি!