বিপুল ভোটে দুর্দান্ত জয়, হরিয়ানায় কংগ্রেসের মুখ রাখলেন কুস্তিগির বিনেশই
Vinesh Phogat: কংগ্রেস আশাজনক ফল না করতে পারলেও নিরাশ করেননি বিনেশ। নির্বাচন কমিশনের ওয়েবলাইট অনুযায়ী, হরিয়ানার জুলানা আসনে ৬৫ হাজার ৮০টি ভোট পান এই কুস্তিগির।
অলিম্পিকের মঞ্চে সর্বশক্তি দিয়ে লড়ার পরেও, এমনকী প্রাথমিক ভাবে জয়ের পরেও ভাগ্যের ফেরে ফিরতে হয়েছিল তাঁকে খালি হাতে। কপালে জোটেনি পদক। তবে ফেরাল না তাঁকে রাজনীতির মঞ্চ। এই বছর হরিয়ানার বিধানসভা ভোটে কংগ্রেসের হয়ে প্রার্থী হয়েছিলেন কুস্তিগির বিনেশ ফোগট। হরিয়ানার জুলানা আসন থেকে প্রায় ৬ হাজার ভোটের ব্যবধানে বিজেপি প্রার্থীকে হারিয়ে জয়ী হলেন ভূমিকন্যা বিনেশ।
কুস্তির রিংয়ে প্রথম থেকেই সিদ্ধহস্ত বিনেশ। তবে এই প্রথম বার রাজনীতির আখরায় নেমেছিলেন তিনি। শেষ অলিম্পিকে ওজন বেড়ে যাওয়ার কারণে শেষ মুহূর্তে প্রতিযোগিতা থেকে ছিটকে যান বিনেশ। অলিম্পিকের সেই ব্যর্থতা ভুলে এবার হরিয়ানা থেকে ভোটে দাঁড়ান তিনি। এবারে এক্সিট পোলকে কার্যত মিথ্যা করে হরিয়ানায় পিছিয়ে পড়ে কংগ্রেস। কংগ্রেস আশাজনক ফল না করতে পারলেও নিরাশ করেননি বিনেশ। নির্বাচন কমিশনের ওয়েবলাইট অনুযায়ী, হরিয়ানার জুলানা আসনে ৬৫ হাজার ৮০টি ভোট পান এই কুস্তিগির। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপির যোগেশ কুমার পেয়েছেন ৫৯ হাজার ৬৫টি ভোট। আইএনএলডির সুরেন্দর লাথার এই আসনে ১০ হাজার ভোট পেয়ে তৃতীয় স্থানে ছিলেন। আর দুষ্মন্ত চৌটালার জেজেপি এবং আম আদমি পার্টি যথাক্রমে চতুর্থ এবং পঞ্চম স্থানে ছিল সেখানে।
আরও পড়ুন: গণনা শুরু হতেই কংগ্রেসের হারাল খেই, হরিয়ানাতে তৃতীয় বারেও ফুটতে চলেছে পদ্মই?
হরিয়ানায় সামগ্রিক ফলাফল কংগ্রেসের খারাপ হলেও বিনেশের জয় যে সেই ক্ষতে খানিকটা প্রলেপের মতো কংগ্রেসের জন্য, তাতে সন্দেহ নেই। সকাল থেকেই হরিয়ানার এই আসনটিতে এগিয়েছিলেন বিনেশ। অবশেষে ঝুলিতে এল বহু কাঙ্ক্ষিত জয়ও। গত প্যারিস অলিম্পিকে ফাইনালে উঠেও শেষপর্যন্ত প্রতিযোগিতা থেকে ছিটকে যান বিনেশ ফোগট। জেতা ব্রোঞ্জ পদকটিও বাতিল হয়ে যায় তাঁর। বহু আদালতের দ্বারস্থ হয়েও লাভের লাভ হয়নি কিছু। বরং ভাঙা বুক নিয়েই প্যারিস থেকে দেশে ফিরতে হয় তাঁকে।
সেখান থেকে ফিরেই রাজনীতির ময়দানে নেমে আসেন বিনেশ। যোগ দেন কংগ্রেসে। হরিয়ানা বিধানসভা ভোটে জুলানা আসন থেকে কংগ্রেস প্রার্থীও করে তাঁকে। অলিম্পিকের আগেই বিজেপিক প্রাক্তন সাংসদ তথা কুস্তি ফেডারেশনের দুর্নীতিগ্রস্ত মাথা ব্রিজভূষণ সিংয়ের বিরুদ্ধে আন্দোলনের পথে হেঁটেছিলেন বিনেশরা। সেই থেকেই ক্ষমতাসীন সরকার তথা বিজেপির সঙ্গে তেমন সৌহ্রার্দ্যের সম্পর্ক নই বিনেশদের। যদিও প্য়ারিস অলিম্পিক থেকে ছিটকে যাওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী মোদি তাঁকে ফেন করেছিলেন বলে শোনা যায়। তবে সেই ফোনে সাড়া দেননি বিনেশ। বিজেপির বিরুদ্ধে বারবারই আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতেই দেখা গিয়েছে এই হরিয়ানা-কন্য়াকে।
আরও পড়ুন:চুল কেটে, পোশাক ছোট করেও শেষরক্ষা হল না! কেন রাতারাতি ওজন বেড়ে গেল বিনেশের?
গোটা হরিয়ানায় কংগ্রেসের ফলাফল খারাপ হলেও মুখ রেখেছেন বিনেশ। বিনেশের এই জয়ে তাঁকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন তাঁর কুস্তির ময়দানের সহযোদ্ধা বজরং পুনিয়া। প্রসঙ্গত একই দিনে কংগ্রেসের পতাকা কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন এই দুই পদকজয়ী কুস্তিগির। নিজের এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করে পুনিয়া জানান, এই লড়াই শুধুমাত্র একটি জুলানা আসনের জন্য ছিল। তাঁর এই লড়াই ছিল দেশের সবচেয়ে শক্তিশালী অত্যাচারীর বিরুদ্ধে। আর তাতেই জয়ী হয়েছেন বিনেশ। এ জন্য তাঁকে শুভেচ্ছা। বিজেপির বিরুদ্ধে হরিয়ানা ভোটে বেশ আক্রমণাত্মক মেজাজে দেখা গিয়েছে বিনেশকে। ভোটেও অব্যাহত রইল সেই ধারা। তাঁর সেই আক্রমণাত্মক মেজাজ কি হরিয়ানার পরে গোটা দেশেই ভারী কাজের জিনিস হয়ে উঠতে চলেছে কংগ্রেসের জন্য? হরিয়ানায় বিপুল ভোটে জিতে যাওয়া বিনেশের কাঁধে কোন গুরুদায়িত্ব সঁপতে চলেছে কংগ্রেস? নজর থাকবে সেদিকেও।