উপরাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী ঘোষণা এনডিএ-র! কেন রাধাকৃষ্ণণকে বাছল বিজেপি?

Radhakrishnan: আরএসএস করার পর ১৯৭৪ সালে জনসংঘের রাজ্য কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য হন তিনি। ১৯৯৬ সালে জনসংঘ থেকে বিজেপির জন্ম। সে বছরই তিনি রাজ্য সম্পাদক নির্বাচিত হন।

২১ জুলাই হঠাৎ উপরাষ্ট্রপতির পদ থেকে ইস্তফা দেন জগদীপ ধনখড়। পদত্যাগপত্র জমা দেওয়ার পর থেকেই প্রাক্তন উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়ের খোঁজ নেই। পাঁচ বছরের মেয়াদ শেষ হওয়ার অনেক আগেই স্বাস্থ্য সংক্রান্ত কারণে পদত্যাগ করেছেন তিনি। এরই মধ্যে নতুন উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনের দিন ঘোষণা হয়ে গেছে। আগামী ৯ সেপ্টেম্বর নির্বাচন। কে হবেন পরবর্তী উপরাষ্ট্রপতি, সেদিনই জানা যাবে।

১৭ অগাস্ট নয়াদিল্লিতে এনডিএ-র বৈঠকের পর, এনডিএ-র উপরাষ্ট্রপতি প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছেন বিজেপি সভাপতি জে পি নাড্ডা। বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ উপরাষ্ট্রপতি পদে প্রার্থী করেছে মহারাষ্ট্রের রাজ্যপাল সিপি রাধাকৃষ্ণণ-কে। তামিলনাড়ুর বাসিন্দা, বয়স ৬৮ বছর। ১৭ বছর বয়স থেকে রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘের (আরএসএস) সদস্য রাধাকৃষ্ণণ। পরে জনসংঘ ও বিজেপি-তে যোগ দেন।

 আরও পড়ুন- কেন স্বাধীনতা দিবসের মঞ্চ আরএসএস প্রশস্তির জন্য বেছে নিলেন মোদি?

কে এই রাধাকৃষ্ণন?

১৯৫৭ সালে তামিলনাড়ুর তিরুপুরে জন্ম রাধাকৃষ্ণণের। আরএসএস করার পর ১৯৭৪ সালে জনসংঘের রাজ্য কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য হন। ১৯৮০ সালে জনতা পার্টি অবলুপ্ত হলে জনসংঘের প্রাক্তন সদস্যরা বিজেপি গঠন করেন। ১৯৯৬ সালে তামিলনাড়ুর বিজেপির রাজ্য সম্পাদক পদে নির্বাচিত হন। এরপর ১৯৯৮ সালে কোয়েম্বত্তুর আসন থেকে জিতে লোকসভার সদস্য হন রাধাকৃষ্ণণ। ২০০৩ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত তামিলনাড়ু বিজেপির সভাপতিও ছিলেন।

২০২৪ সালের ৩১ জুলাই রাধাকৃষ্ণণ মহারাষ্ট্রের রাজ্যপাল হিসেবে শপথ নিয়েছিলেন। এর আগে ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ২০২৪-এর জুলাই পর্যন্ত ঝাড়খণ্ডের রাজ্যপাল পদে নিযুক্ত ছিলেন।

উপরাষ্ট্রপতি পদে কেন বিজেপি-র পছন্দ রাধাকৃষ্ণন?
ওয়াকিবহাল মহলের একাংশ বলছেন, তামিলনাড়ুর মানুষের মন জয় করতেই বিজেপি রাধাকৃষ্ণণকে প্রার্থী করেছে। ২০২৬ সালে ওই রাজ্যে বিধানসভা ভোট। কেন্দ্র নতুন শিক্ষানীতি রূপায়ণ করতে চাইছে, আর তাতেই তামিলনাড়ুর জনগণ ক্ষুব্ধ। শাসকদল ডিএমকে অভিযোগ করেছে, বিজেপি জোর করে হিন্দি চাপাতে চাইছে। তারা বারবার দাবি করেছে, বিদ্যালয়গুলিতে হিন্দি বাধ্যতামূলক না করায় রাজ্যের দুই হাজার কোটিরও বেশি পাওনা টাকা কেন্দ্রীয় সরকার আটকে রেখেছে।

আরও পড়ুন- নির্বাচন কমিশনের সাংবাদিক সম্মেলনের পরও যেসব প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে  

লোকসভা ও রাজ্যসভার সদস্যরাই উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোট দিতে পারেন। এখন দুই কক্ষের মোট সদস্যসংখ্যা ৭৮৬। ৩৯৪টি ভোট পেলে উপরাষ্ট্রপতির পদ পাবেন রাধাকৃষ্ণণ। লোকসভায় এনডিএ-র সদস্য সংখ্যা ২৯৩ জন, রাজ্যসভায় ১৩৪। মোট সংখ্যা ৪২৭। অন্যদিকে বিরোধীদের সংখ্যা ৩৫৫।

তবে কি রাধাকৃষ্ণণকে প্রার্থী করে বিজেপি বুঝিয়ে দিল, সত্যপাল মালিক ও জগদীপ ধনখড়দের মতো নতুন সদস্যদের দল আর রাখতে চাইছে না? গুরুত্বপূর্ণ পদ তাঁদেরই দেওয়া হবে যাঁরা সংঘের সঙ্গে দীর্ঘদিন জড়িয়ে? তাছাড়া তামিলনাড়ুর মানুষের মন জয় অর্থাৎ 'ভোটের রাজনীতি' মূল লক্ষ্য সেটাই পরিষ্কার বুঝিয়ে দিল বিজেপি এই সিদ্ধান্ত নিয়ে।

More Articles