আবার প্রকাশ্যে সোশ্যাল মিডিয়া ও বিজেপির সম্পর্ক! সামনে আসছে যে চাঞ্চল্যকর তথ্য

স্বঘোষিত মোদি সমর্থক তথা বিশিষ্ট লেখিকা মধু কিশওয়ার নিজের বই ‘মোদি, মুসলিম অ্যান্ড ইন্ডিয়া’ বইতে লিখেছেন, ২০১৩ সালে গুজরাতের বাহরুচের একটি সভায় মোদির সঙ্গে তাঁর পরিচয় করিয়ে দেন শিবনাথই।

সহ-লেখক: রবি নায়ার, আবির দাশগুপ্ত

 

শিবনাথ ঠুকরাল (Shivnath Thukral), ২০২০-র মার্চ মাস থেকে ভারতে হোয়াটসঅ্যাপ আইএনসি-র (ফেসবুক, অধুনা মেটা-র মালিকানাধীন) জননীতি নির্ধারণ বিভাগের প্রধান। এক সময় ওপালিনা টেকনোলজিজ, যা কিনা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi), প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর (PMO), ভারতীয় জনতা পার্টি (BJP) এবং কেন্দ্রীয় সরকারের বস্ত্র মন্ত্রককে সফটওয়্যার-সংক্রান্ত সহায়তা প্রদানের বরাত পেয়েছিল, সেই সংস্থায় অংশীদারিত্ব ছিল শিবনাথের।

বর্তমানে বিভিন্ন বিষয়ে মেটা-র হয়ে ভারতে তদবির করেন শিবনাথ। ২০১৭-র ২৪ অক্টোবর ফেসবুকে যোগদানের আগে ওপালিনা (Opalina) সংস্থায় নিজের অংশীদারিত্ব ছেড়ে দেন শিবনাথ। কিন্তু ওই সংস্থায় এখনও অংশীদারিত্ব রয়েছে তাঁর বাবা কুলভূষণ ঠুকরাল এবং সেই সুবাদেই এখনও বিজেপি এবং মোদির হয়ে কাজ করে চলেছেন তিনি।

 

ভারত সরকারের কর্পোরেট বিভাগে নথিভুক্ত তথ্য অনুযায়ী, শিবনাথ একসময় সর্বভারতীয় খবরের টেলিভিশন চ্যানেল এনডিটিভি-র ব্যবসা এবং অর্থনৈতিক বিষয়-সংক্রান্ত শাখা চ্যানেল এনডিভি প্রফিটেরও ম্যানেজিং এডিটরের পদ সামলেছেন। ২০১৫-র মার্চ থেকে ২০১৭-র অক্টোবর ওপালিনা সংস্থার ডিরেক্টর পদে কর্মরত ছিলেন শিবনাথ। ২০১৪ সালের অক্টোবর থেকে ওপালিনা সংস্থায় ৭.৫ শতাংশ অংশীদারিত্ব ছিল তাঁর।

 

আরও পড়ুন: ট্যুইটারের নতুন নীতিতে মুখ থুবড়ে পড়বে বিজেপি-র রণকৌশল?

 

ফেসবুকে যোগ দেওয়ার ঠিক ন’দিন আগে ওপালিনা সংস্থা থেকে ইস্তফা দেন শিবনাথ। একই সঙ্গে সংস্থায় নিজের অংশীদারিত্ব বাবা কুলভূষণের নামে হস্তান্তরিত করেন। অর্থাৎ নিজে ফেসবুকে যোগ দিলেও, ওপালিনা সংস্থায় তাঁর অংশীদারিত্ব পরিবারের মধ্যেই রেখে থেকে যায়। 

 

শুরুতে, ২০১৭-র মার্চ থেকে ২০২০-র মার্চ পর্যন্ত ভারত এবং দক্ষিণ এশিয়ায় ফেসবুকের জননীতি নির্ধারণ বিভাগের প্রধান ছিলেন শিবনাথ। পরবর্তীকালে সেই পদ ছেড়ে ভারতে হোয়াটসঅ্যাপের জননীতি নির্ধারণ বিভাগের প্রধানের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। পাশাপাশি, ২০২০-র অক্টোবর থেকে ২০২১-এর সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ভারত, দক্ষিণ এবং মধ্য এশিয়ায় ফেসবুকের জননীতি নির্ধারণ বিভাগের অন্তর্বর্তী প্রধানের ভূমিকাও পালন করেন শিবনাথ, ঠিক যে-সময় ভারতে ফেসবুকের তৎকালীন নীতি নির্ধারণ বিভাগের প্রধান আঁখি দাস বিজেপি-র প্রতি পক্ষপাতিত্বের অভিযোগে পদত্যাগ করেন।

 

২০১৩-র এপ্রিল মাসে ওপালিনা সংস্থাটির যাত্রা শুরু হয়। তাতে সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশীদারিত্ব রয়েছে সতীশচন্দ্র এবং গৌরব শর্মার। তাঁরা আবার টাইমস গ্রুপের প্রাক্তন কর্মী, ওপালিনা সংস্থার ডিরেক্টর অর্থাৎ সর্বময় কর্তাও।

 

মোদির সঙ্গে দহরম-মহরমের জন্য পরিচিত শিবনাথ। ২০১৪-র মে মাসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আগে, ২০১৩ সালে মোদির নির্বাচনী প্রচারে কাজ করেছিলেন তিনি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ফেসবুকের এক প্রাক্তন কর্মী আন্তর্জাতিক টাইম পত্রিকাকে জানান, শাসক দলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার জন্যই ২০১৭ সালে শিবনাথকে নিয়োগ করে ফেসবুক। শাসক দলের সঙ্গে শিবনাথের ঘনিষ্ঠতা সম্পর্কে যে তাঁরা ওয়াকিবহাল ছিলেন, টাইম পত্রিকাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তা মেনেও নেন ভারতে ফেসবুকের আধিকারিকরা। ফেসবুকের যে স্বীকারোক্তি টাইম উদ্ধৃত করে, সেই অনুযায়ী সংস্থার তরফে বলা হয়, “ভারত এবং বিশ্বের অন্যত্র আমাদের কিছু কর্মী যে বিভিন্ন প্রচারমূলক কর্মসূচির সমর্থক ছিলেন, সে ব্যাপারে ওয়াকিবহাল আমরা।”

 

স্বঘোষিত মোদি সমর্থক তথা বিশিষ্ট লেখিকা মধু কিশওয়ার নিজের বই ‘মোদি, মুসলিম অ্যান্ড ইন্ডিয়া’ বইতে লিখেছেন, ২০১৩ সালে গুজরাতের বাহরুচের একটি সভায় মোদির সঙ্গে তাঁর পরিচয় করিয়ে দেন শিবনাথই।

 

মোদি এবং বিজেপি-র হয়ে ওপালিনা সংস্থার কাজের খতিয়ান

ইন্টারনেট দুনিয়া থেকে প্রাপ্ত প্রমাণপত্র ঘাঁটলে বোঝা যায়, সোশ্যাল মিডিয়ায় মোদির উপস্থিতি মজবুত করতে এবং ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি-র ডিজিটাল প্রচারের পালে হাওয়া টানতে সফটওয়্যার পরিষেবা প্রদান করেছিল ওপালিনা। সংবাদমাধ্যমের গবেষণায় একটি ট‍্যুইটার বটের (স্বয়ংক্রিয় সফটওয়্যার প্রোগ্রাম যা নিজের নেটওয়ার্কের মধ্যে থাকা সমস্ত প্রযুক্তি এবং ব্যক্তির সঙ্গে সংযোগ স্থাপনে সক্ষম) হদিশ মেলে, যা মোদির ট‍্যুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে ট‍্যুইট করত এবং ফেসবুকের প্রোফাইল ছবির জন্য একটি বিশেষ ফ্রেমও তৈরি করা হয়েছিল, যা মোদি সমর্থকদের নিজের ছবিকে ‘ম্যায়ঁ ভি চৌকিদার’ লেখা ফ্রেমে মুড়ে ফেলার পক্ষে সহায়ক ছিল। নির্বাচনের একমাস আগে ‘ম্যায়ঁ ভি চৌকিদার’ লেখা প্রেমে নিজেদের ছবি মুড়ে ফেলেছিলেন বিজেপি-র নেতা, মন্ত্রী, কর্মীরা। বিজেপি-র নির্বাচনী প্রচারে ওই ফ্রেম কাজে লাগানো হয়েছিল। ওই ট‍্যুইটার বট এবং ‘ম্যায়ঁ ভি চৌকিদার’ লেখা ফ্রেম, দুটোই ওপালিনার বানানো।

 

'ম্যাঁয়ভিচৌকিদার' হ্যাশট্যাগ চালুর ট‍্যুইটার বট

রাফাল যুদ্ধবিমান কেনায় দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনের আগে কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গাঁধী মোদির বিরুদ্ধে ‘চৌকিদার চোর হ্যায়’ রব তুলেছিলেন। তার আগে একাধিকবার নির্বাচনী প্রচারে নিজেকে দেখের ‘চৌকিদার’ অর্থাৎ পাহারাদর হিসেবে বর্ণনা করতে শোনা গিয়েছিল মোদিকে। দুর্নীতিপরায়ণ রাজনীতিক এবং ব্যবসায়ীদের দেশকে লুঠ করতে না দেওয়ার প্রতিশ্রুতি স্বরূপই নিজেকে ওই উপমা দিয়েছিলেন মোদি। কিন্তু ফরাসি সংস্থা দাসোঁর থেকে রাফাল যুদ্ধবিমান কেনায় অন্যায় ভাবে অনিল অম্বানির বেসরকারি সংস্থাকে তিনি ৩৬টি রাফাল বিমান কেনার বরাত পাইয়ে দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে।

 

মোদির বিরুদ্ধে প্রচারে সেই অভিযোগকে হাতিয়ার করে মাঠে নামতেই কংগ্রেসের তরফে ‘চৌকিদার চোর হ্যায়’ ধ্বনি তোলা হয়। তার মোকাবিলায় মোদির নির্বাচনী প্রচারের দায়িত্বে থাকা লোকজন পাল্টা ‘ম্যায়ঁ ভি চৌকিদার’ ধ্বনি তুলে মাঠে নেমে পড়েন, যাতে মোদিকে চোর বলা মানে সকলকে চোর বলে অপমান করার গ্লানিবোধ এবং আবেগ তৈরি করা যায়। মোদি এবং তাঁর সমর্থকরা নির্বাচনী প্রচারে একযোগে #ম্যাঁয়ভিচৌকিদার লিখে পোল্ট করতে থাকেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। যে বা যাঁরা ওই হ্যাশট্যাগ লিখে পোস্ট করেন সোশ্যাল মিডিয়ায়, তাঁদের জন্য মোদির নিজস্ব টুইটার হ্যান্ডল থেকে কৃতজ্ঞতাস্বরূপ ব্যক্তিগত মেসেজেরও ব্যবস্থা করা হয়।

 

সংবাদমাধ্যমের গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ওপালিনার তৈরি একটি ট‍্যুইটার বটই মোদির হ্যান্ডল থেকে জবাবি ব্যক্তিগত ট‍্যুইটগুলো পাঠাত। হ্যাশট্যাগ-সহ এই ট‍্যুইট এবং তার জবাবি ট‍্যুইটের কিছু উদাহরণ রইল নিচে।

ট্যুইটগুলো দেখুন:

<blockquote class="twitter-tweet"><p lang="en" dir="ltr"><a href="https://twitter.com/SFDC_AB?ref_src=twsrc%5Etfw">@SFDC_AB</a> Gratitude for adding strength to the <a href="https://twitter.com/hashtag/MainBhiChowkidar?src=hash&amp;ref_src=twsrc%5Etfw">#MainBhiChowkidar</a> movement. 130 crore Indians will work together to build a strong India. Read my message: <a href="https://t.co/hLWbC6ea5S">pic.twitter.com/hLWbC6ea5S</a></p>&mdash; Narendra Modi (@narendramodi) <a href="https://twitter.com/narendramodi/status/1106884149472829440?ref_src=twsrc%5Etfw">March 16, 2019</a></blockquote> <script async src="https://platform.twitter.com/widgets.js" charset="utf-8"></script>

 

<blockquote class="twitter-tweet"><p lang="en" dir="ltr">@Proud_Hindu_PS Your support gives great strength to the <a href="https://twitter.com/hashtag/MainBhiChowkidar?src=hash&amp;ref_src=twsrc%5Etfw">#MainBhiChowkidar</a> movement. Here is my message: <a href="https://t.co/cVgbGFOhIZ">pic.twitter.com/cVgbGFOhIZ</a></p>&mdash; Narendra Modi (@narendramodi) <a href="https://twitter.com/narendramodi/status/1106762657988861952?ref_src=twsrc%5Etfw">March 16, 2019</a></blockquote> <script async src="https://platform.twitter.com/widgets.js" charset="utf-8"></script>

 

<blockquote class="twitter-tweet"><p lang="en" dir="ltr">@AyushTi14387767 Thank you for the valuable support to the <a href="https://twitter.com/hashtag/MainBhiChowkidar?src=hash&amp;ref_src=twsrc%5Etfw">#MainBhiChowkidar</a> movement. Here is a message: <a href="https://t.co/Lnb8vie5bl">pic.twitter.com/Lnb8vie5bl</a></p>&mdash; Narendra Modi (@narendramodi) <a href="https://twitter.com/narendramodi/status/1106903537903198208?ref_src=twsrc%5Etfw">March 16, 2019</a></blockquote> <script async src="https://platform.twitter.com/widgets.js" charset="utf-8"></script>

ট‍্যুইটারে গিয়ে খুঁজলে এই ট‍্যুইটগুলি খুঁজে বার করা অসম্ভব। “from:narendramodi #MainBhiChowkidar” লিখে খুঁজলে শুধুমাত্র একটি ট‍্যুইট খুঁজে পাওয়া যায়। জবাবি ট‍্যুইট মেলে না একটিও। মোদির ট‍্যুইটার হ্যান্ডল @narendramodi-থেকে জবাবি ট‍্যুইটগুলি করা হলেও, তাঁর রিপ্লাই টাইমলাইনেও জবাবি ট‍্যুইটের হদিশ মেলে না। বরং জবাবি ট‍্যুইটগুলি দেখলে বোঝা যায়, ‘info 2020’ নামের একটি থার্ড পার্টি ট্যুইটার গ্রাহককে ব্যবহার করে পাঠানো হয়। গুগলের অত্যাধুনিক সার্চ প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে মোদির নিজস্ব অ্যাকাউন্ট থেকে পাঠানো ওই ট‍্যুইটগুলি উদ্ধার করা সম্ভব হয় এইভাবে:

দেখুন: https://www.google.com/search?q=site%3Atwitter.com+%22info+2020%22+%40narendramodi&rlz=1C1ONGR_enIN974IN974&oq=&sourceid=chrome&ie=UTF-8 

 

ট্যুইটটি দেখুন:

<blockquote class="twitter-tweet"><p lang="en" dir="ltr">@AyushTi14387767 Thank you for the valuable support to the <a href="https://twitter.com/hashtag/MainBhiChowkidar?src=hash&amp;ref_src=twsrc%5Etfw">#MainBhiChowkidar</a> movement. Here is a message: <a href="https://t.co/Lnb8vie5bl">pic.twitter.com/Lnb8vie5bl</a></p>&mdash; Narendra Modi (@narendramodi) <a href="https://twitter.com/narendramodi/status/1106903537903198208?ref_src=twsrc%5Etfw">March 16, 2019</a></blockquote> <script async src="https://platform.twitter.com/widgets.js" charset="utf-8"></script>

 

‘info 2020’ আসলে ওপালিনার তৈরি প্রোডাক্ট, তা-ও জবাবি টুইট দেখে বোঝা সম্ভব নয়। কিন্তু গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ওপালিনা টেকনোলজিস সংস্থার সঙ্গে সংযুক্ত ট‍্যুইটার অ্যাকাউন্টের গতিবিধিতে নজরদারি চালালে বোঝা যায়, ‘info 2020’  নামক ট‍্যুইটার গ্রাহকের মাধ্যমে একাধিক পক্ষের হয়ে ওই ধরনের হ্যাশট্যাগ নিয়ে একাধিক পরীক্ষানিরীক্ষা চলছিল। ওপালিনা ব্যবহৃত বিভিন্ন ট‍্যুইটার অ্যাকাউন্ট থেকেই এই পরীক্ষানিরীক্ষা চালানো হয়।

 

উদাহরণস্বরূপ @OpalinaDemo2 (link | archive | screenshot) ট‍্যুইটার হ্যান্ডেলের প্রোফাইল ছবিতে ওপালিনা টেকনোলজিসের লোগো বসানো রয়েছে। ওই হ্যান্ডেলটির ফলোয়ার তালিকায় যে ৩৪টি হ্যান্ডেল রয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম হল ওপালিনার সহ-প্রতিষ্ঠাতা গৌরব শর্মার ব্যক্তিগত ট‍্যুইটার হ্যান্ডেল @gaurav0403 এবং সংস্থায় কর্মরত তাঁর অন্য সহযোগীদের অ্যাকাউন্ট, যাতে শামিল @OpalinaHelp এবং @opalina_clients নামের দু’টি হ্যান্ডেলও, যার প্রোফাইল ছবিতেও শোভা পাচ্ছে সংস্থার লোগো। @imagehost01 নামের যে হ্যান্ডলটি রয়েছে, তার বর্ণনায় লেখা রয়েছে, ‘সমস্ত অসাধারণ জিনিসের একটাই শিকড়- ওপালিনা টেকনোলজিস’। হ্যাশট্যাগের মাধ্যমে প্রচার অভিযানের পরীক্ষানিরীক্ষা চালায় এই ট‍্যুইটার হ্যান্ডেলগুলি।

 

‘info 2020’ থেকে ওপালিনার আরও যে সমস্ত পণ্য নিয়ে পরীক্ষা চালাতে দেখা গিয়েছে, তা হল— নির্দিষ্ট হ্যাশট্যাগ লেখা ট্যুইটের স্বয়ংক্রিয় জবাবি ট‍্যুইট পাঠানোর প্রযুক্তি। তার মধ্যে বিপণণী সংস্থা অ্যামাজনের অ্যালেক্সা ব্র্যান্ডের প্রচারও দেখা গিয়েছে, যা ওই ‘info 2020’-কে ব্যবহার করেই হয়েছে।

ট্যুইটটি দেখুন:

<blockquote class="twitter-tweet"><p lang="en" dir="ltr">I’m turning 7 on November 6th, and joining the fun is a piece of cake! 🎂 Here&#39;s a hint...on Saturday, wish me a &quot;Happy Birthday&quot;! <a href="https://twitter.com/hashtag/AlexaHappyBirthday?src=hash&amp;ref_src=twsrc%5Etfw">#AlexaHappyBirthday</a> <a href="https://t.co/byt5GOyAJb">pic.twitter.com/byt5GOyAJb</a></p>&mdash; Alexa (@alexa99) <a href="https://twitter.com/alexa99/status/1455932579782139906?ref_src=twsrc%5Etfw">November 3, 2021</a></blockquote> <script async src="https://platform.twitter.com/widgets.js" charset="utf-8"></script>

 

 

গবেষণায় দেখা গিয়েছে, বাজারে অ্যালেক্সা এসে পৌঁছনোর আগে ওপালিনার পরীক্ষা নিরীক্ষামূলক হ্যান্ডেল থেকে তার প্রচার চালানো হয়। ‘info 2020’ থেকেও অ্যালেক্সা নিয়ে চালানো হয় প্রচার অভিযান। ২০২০-র ৩ নভেম্বর প্রচার শুরু হয়। ওই সময় যে ব্যক্তি #AlexaHappyBirthday লিখে টুইট করেন, তাঁরা অ্যালেক্সার ট‍্যুইটার হ্যান্ডল @Alexa99 থেকে জবাবি ট‍্যুইট পান। উদাহরণ রইল নিচে।

 

ট্যুইটগুলো দেখুন: 

<blockquote class="twitter-tweet"><p lang="en" dir="ltr">I&#39;m not the only one who&#39;s special day falls over this weekend! 🎂 Say &quot;Alexa, happy birthday&quot; to unlock more party favors. <a href="https://t.co/3jw07cV8em">pic.twitter.com/3jw07cV8em</a></p>&mdash; Alexa (@alexa99) <a href="https://twitter.com/alexa99/status/1324862982267002882?ref_src=twsrc%5Etfw">November 6, 2020</a></blockquote> <script async src="https://platform.twitter.com/widgets.js" charset="utf-8"></script>

 

<blockquote class="twitter-tweet"><p lang="en" dir="ltr">What better way to celebrate than sharing one of my favorite things—fun facts! 💡 Say “Alexa, happy birthday!&quot; to unlock more party favors. <a href="https://t.co/3rSmseygmP">pic.twitter.com/3rSmseygmP</a></p>&mdash; Alexa (@alexa99) <a href="https://twitter.com/alexa99/status/1325102053450977287?ref_src=twsrc%5Etfw">November 7, 2020</a></blockquote> <script async src="https://platform.twitter.com/widgets.js" charset="utf-8"></script>

 

 

ওই জবাবি ট‍্যুইটও যায় ‘info 2020’ হ্যান্ডেল থেকেই। @OpalinaDemo2-র মতো হ্যান্ডল থেকে প্রচার শুরু হয় ২০২০-র ৩১ অক্টোবর থেকে, বাজারে অ্যালেক্সা এসে পৌঁছনোর কয়েক দিন আগে।

 

<blockquote class="twitter-tweet"><p lang="pl" dir="ltr"><a href="https://twitter.com/hashtag/123complexhAshTag456?src=hash&amp;ref_src=twsrc%5Etfw">#123complexhAshTag456</a> 🎤 heheheej</p>&mdash; Image Host (@imagehost01) <a href="https://twitter.com/imagehost01/status/1322477353084231680?ref_src=twsrc%5Etfw">October 31, 2020</a></blockquote> <script async src="https://platform.twitter.com/widgets.js" charset="utf-8"></script>

 

 

@OpalinaDemo2 থেকে গ্রাহকদের উৎসাহিত করতে লেখা ‘এটি একটি প্রচারমূলক CTA ট‍্যুইট, অনুগ্রহ করে #123ComplexHashtag456  লিখে, ইমোজি সহকারে জবাব দিন’-ও চোখে পড়ে। CTA বলতে বোঝায় ‘কলস টু অ্যাকশন’, যার মাধ্যমে সাধারণ টুইটার ব্যবহারকারীকে গ্রাহকে পরিণত করার প্রচেষ্টা চলে অভূতপূর্ব সাড়া পাওয়ার লক্ষ্যে। তাতে কাজও হয়। ওপালিনার পরীক্ষা নিরীক্ষামূলক হ্যান্ডল থেকে করা ট‍্যুইটের জবাবে ইমোজি-সহ নির্দিষ্ট ওই হ্যাশট্যাগ লিখে ট‍্যুইট করেন বহু মানুষ।

 

 

অ্যালেক্সার জন্মদিন উপলক্ষে @OpalinaDemo2 হ্যান্ডেল থেকে একটি জবাবি ট‍্যুইটও নজরে এসেছে। ওই স্বয়ংক্রিয় জবাবও যায় 'info 2020' থেকে। অর্থাৎ অ্যালেক্সা-র নিজস্ব হ্যান্ডেল @Alexa99-এর পরিবর্তে জন্মদিনের শুভেচ্ছাবার্তার জবাবি ধন্যবাদ যায় @OpalinaDemo2 থেকে। তাতে আবার #AlexaHappyBirthday-র পরিবর্তে #123ComplexHashtag456 ট্রিগার হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করা হয়। অর্থাৎ প্রচার শুরু হওয়ার পরও পরীক্ষামূলক হ্যাশট্যাগের ব্যবহার চোখে পড়ে। মোদির #ম্যায়ঁভিচৌকিদার প্রচার ওপালিনার তৈরি স্বয়ংক্রিয় ট‍্যুইটার হ্যান্ডেল ব্যবহার করেই চালানো হয়।

 

ফেসবুকে 'ম্যায়ঁভিচৌকিদার' ফোটোফ্রেম

একই ভাবে ফেসবুকে #ম্যায়ঁভিচৌকিদার লেখা ফোটোফ্রেমের মাধ্যমে প্রচারও ওপালিনার তৈরি। ২০১৯-এর ২৪ মার্চ সকালে ১০টা বেজে ১৭ মিনিটে তৎকালীন বিজেপি-র সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের ফেসবুক পেজেই #ম্যায়ঁভিচৌকিদার প্রচারের সূচনা। তাতে শাহের ছবির উপর বসান ওই ফ্রেমের নিচে, ডান দিকে সুপার ইম্পজ করে মোদির ছবি বসানো ছিল। ফ্রেমের নিচে, বাঁদিকে হিন্দিতে লেখা ছিল #ম্যায়ঁভিচৌকিদার।

 

 

ওই ফোটোফ্রেমও ওপালিনারি তৈরি বলে ঠাহর হয়। কারণ শাহের পেজে উদ্বোধনের আগে সংস্থার কর্মীদের সেটি নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা করতে দেখা যায়। ‘George George’ নামের একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট, যা কিনা ওপালিনা কর্মীদের চালানো বলেই ঠাহর হয়, তাতে ওই ফ্রেমটি প্রথম পরীক্ষা করা হয়। ২০১৯-এর ২৪ মার্চ সকালেই ৮টা বেজে ৪৩ মিনিটে ওই অ্যাকাউন্টের প্রোফাইল ছবিতে প্রথম ফ্রেমটি বসানো হয়, শাহের পেজে উদ্বোধনের দেড় ঘণ্টা আগে।

 

 

‘George George’ নামের ফেসবুক অ্যাকাউন্টটি ওপালিনার পরীক্ষামূলক অ্যাকাউন্ট কী ভাবে বোঝা যায়? ওই অ্যাকাউন্টের বন্ধু তালিকায় তিন জন রয়েছেন, সতীশ ওপালিনা, ডিএসএম শিবা এবং জেয়া জেজে। ডিএসএম শিবার নামে অ্যাকাউন্টটিতে গ্রাহকের পরিচয় দেওয়া রয়েছে ওপালিনা টেকনোলজিসের কর্মী হিসেবে। জেয়া জেজে নিজের লিঙ্কড ইন প্রোফাইলে ওপালিনা কর্মী হিসেবে নিজের পরিচয় দিয়েছেন। সতীশ ওপালিনাও একটি পরীক্ষামূলক অ্যাকাউন্ট, যার বন্ধু তালিকায় রয়েছেন সতীশ চন্দ্র, যিনি ওপালিনার অন্যতম ডিরেক্টর।

 

যে সময় ‘George George’ নিজের প্রোফাইল ছবিতে #ম্যায়ঁভিচৌকিদার ফ্রেমটি বসান, সেই একই সময় ডিএসম শিবাও ওই ফ্রেমটিকে টেনে আনেন নিজের প্রোফাইল পিকচারে, সকাল ৮টা বেজে ৫০ মিনিটে, শাহের ছবিতে ফ্রেম বসার ৮৩ মিনিট আগে।

 



মোদির ফেসবুক পেজের কমেন্ট সেকশনে কাটছাঁট করা

প্রধানমন্ত্রীর দফতরের চিঠিপত্র সামলানোর কাজেও ওপালিনার তৈরি প্রযুক্তির ব্যবহার। ওপালিনার কর্মী বিমল কুমার নিজের লিঙ্কডইন প্রোফাইলে যে রেজিউমে আপডেট করেছেন, তাতে সংস্থায় নিজের কাজের খতিয়ান দিয়েছেন। প্রোফাইলটি এই মুহূর্তে সাধারণের নজরদারি থেকে আলড়াল করে রাখা হয়েছে। কিন্তু তা যে সময় সকলের দর্শনযোগ্য ছিল, সেই সময় প্রমাণ করে রাখেন গবেষণায় নিযুক্ত সাংবাদিকরা। সেই নিয়ে যোগাযোগ করা হলে বিমল জানান, তিনি এই ধরনের কোনও কাজ করেননি। ভুলবশত কোনও ভাবে লিঙ্কড ইন প্রোফাইলে তা যোগ করে থাকতে পারেন তিনি।

 

ওপালিনায় নিজের কাজের খতিয়ান দিতে গিয়ে বিমল রেজিউমে-তে দু’টি কাজের কথা  বিশেষ ভাবে উল্লেখ করেছিলেন। প্রথমটি হল ‘NM Comments Moderation Panel’, যা কিনা মোদির ফেসবুক প্রোফাইল পেজের কমেন্ট সেকশন থেকে জনসাধারণের মন্তব্য কাটছাঁট করা বোঝায়। দ্বিতীয়টি হল, ‘NM Letters’, যার আওতায় প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে জমা পড়া চিঠিপত্র ম্যানেজ করার প্রযুক্তি সামলানো।

 

 

রেজিউমে তথ্য যোগ করেও কেন তা আড়াল করলেন বিমল? ওপালিনার তরফে কি তেমন নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল তাঁকে? সাংবাদিকদের বিমল জানান, এমন কোনও নির্দেশ পাননি তিনি। সত্যি কি মোদির ফেসবুক কমেন্ট এবং প্রধানমন্ত্রীর দফতরের চিঠিপত্র সামলানোর কাজ করেছেন তিনি? বিমল জানান, করেননি। তাহলে রেজিউতে তেমনটা লিখেছিলেন কেন? তাঁর জবাব, ‘‘ভুলবশত হয়ে গিয়ে থাকবে।’’ গবেষণারত সাংবাদিকদের হাতে উঠে আসা তথ্যই এখানে তুলে ধরা হল। লিঙ্কডইন প্রোফাইল আড়াল করায়, বিমলের প্রোফাইলে গিয়ে তাঁর রেজিউমে যাচাই করা সম্ভব হয়নি।

 

বস্ত্র মন্ত্রকের ‘কটন ইজ কুল’ প্রচারে ট‍্যুইটার বটের ব্যবহার

শিবনাথ ফেসবুকে যোগ দেওয়ার আগে, ২০১৭-র ১৬ মে ভারত সরকারের বস্ত্রমন্ত্রকের নিজস্ব ট‍্যুইটার হ্যান্ডেল এবং তৎকালীন বস্ত্রমন্ত্রী স্মৃতি ইরানির ট‍্যুইটার হ্যান্ডেলের জন্য একটি প্রচারমূলক হ্যাশট্যাগ তৈরি করে ওপালিনা। পরবর্তী কালে #কটনইজকুল লেখাটি শেয়ার করতে দেখা যায় তৎকালীন হাই প্রোফাইল টুইটার ব্যবহারকারীদের। সেই তালিকায় শামিল ছিলেন বিজেপি-র প্রথম সারির নেতা থেকে সাংবাদিক, সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার এবং তারকারাও, যা পরবর্তী কয়েক দিনে অসংখ্য ট্যুইটার ব্যবহারকারীদের ট্যুইটেও শোভা পায়। ১৭ মে তা উদযাপন করতেও দেখা যায় স্মৃতিকে।

 

 

মোদির সমর্থনে তৈরি ‘The True Picture’ ওয়েবসাইটের সঙ্গেও ওপালিনার সংযোগ ধরা পড়ে। ওই ওয়েবসাইটের বিরুদ্ধে ভুয়া খবর ছড়ানোর অভিযোগ রয়েছে। ওয়েব সার্চে ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যায়, ওই ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন www.opalina-র হোস্টিংয়ের পরীক্ষামূলক পর্যায়েও রয়েছে। দিল্লির ব্লু ক্র্যাফ্ট ডিজিটাল সার্ভিসেস নামের একটি সংস্থা ওই ওয়েবসাইটটি চালায়।

 

শিবনাথ ফেসবুকে যোগ দেওয়ার আগে ওপালিনা মোদি সরকারের হয়ে আরও একাধিক প্রকল্পে কাজ করেছে। ২০১৬-র সেপ্টেম্বরে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ বিভাগ ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম TwitterSeva-র সঙ্গে হাত মেলানোর কথা ঘোষণা করে, যার মাধ্যমে ২০০-র বেশি অ্যাকাউন্ট থেকে সাধারণ মানুষের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তথ্য সম্প্রচার এবং সচেতনতা তৈরির কথা জানানো হয়।

 

TwitterSeva প্ল্যাটফর্মটি ট‍্যুইটারের জন্য তৈরি করেছিল ওপালিনা, যা নিজের ব্লগে পরবর্তীকালে প্রকাশ করেন ভারতে ট‍্যুইটারের তৎকালীন আধিকারিক রাহিল খুরশিদ। বর্তমানে আমেরিকায় থাকেন রাহিল। তিনি জানিয়েছেন, ওপালিনার সঙ্গে নিবিড় যোগ এবং ওপালিনার উপদেষ্টা হওয়ার কারণেই শিবনাথকে চিনতেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘ট‍্যুইটারের নিজের সহযোগী রয়েছে। সংস্থার ক্ষমতাবৃদ্ধিতে বহু সংস্থা আমাদের সহযোগী ছিল। তার মধ্যে ওপালিনা ছিল অন্যতম।’’ ওপালিনার কাজের প্রশংসা করে রাহিল বলেন, ‘‘ট‍্যুইটারের জন্য ওপালিনা গুরুত্বপূর্ণ ছিল। ওদের পরিষেবায় সন্তুষ্ট ছিলাম আমরা। সময়ে কাজ সারতে পারত ওরা এবং বরাবরই তা ফলপ্রসূ হতো এবং ওদের পারদর্শিতাও চোখে পড়ত।’’


দেশের সর্বাধিক জনবহুল রাজ্য উত্তরপ্রদেশের পুলিশকে বিনামূল্যেই TwitterSeva-র পরিষেবা প্রদান করা হয়েছিল। কোনও টাকাপয়সার লেনদেন বা দরপত্র হাওকার ব্যাপার ছিল না। পরবর্তীকালে কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রকের জন্যও একই ধরনের প্ল্যাটফর্ম তৈরি করে দেয় ওপালিনা, যার মধ্যে ছিল রেল মন্ত্রক, বিদেশ মন্ত্রক এবং বস্ত্র মন্ত্রকও।

 

এই ধরনের জনসংযোগ এবং গ্রাহক পরিষেবামূলক কোনও প্ল্যাটফর্মের জন্য সেই সময় কোনও দরপত্র হাঁকা না হলেও, তার আগে একাধিক দরপত্র হাঁকা হয়, আবার পরে বাতিলও করে দেওয়া হয়। তাতে এই ধরনের ডিজিটাল পরিষেবার জন্য খরচপাতি কেমন পড়বে জানতে চাওয়া হয়, যার মধ্যে MyGov.in এবং বিভিন্ন মন্ত্রকের পৃথক ওয়েবসাইটের জন্য সোশ্যাল মিডিয়া অ্যানালিটিক্স সামিল ছিল। এর মাধ্যমে সমাজমাধ্যমে সরকারি সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রতিক্রিয়া-সংক্রান্ত তথ্য এককাট্টা করাই লক্ষ্য ছিল মূলত।

 

২০১৭-র জুন মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে নিজেদের ওয়েবসাইটে রদবদল ঘটায় ওপালিনা। তাতে নিজেদের ব্যবসায়িক প্রোফাইলের ওজন বাড়াতে ‘বিগ ডেটা অ্যানালিটিকস’ কথাটি যোগ করে তারা। গ্রাহকের তালিকায় যোগ করে ভারত সরকার এবং ট‍্যুইটারের নাম। ওই সময় থেকেই ওপালিনার আর্থিক অবস্থারও প্রভূত উন্নতি চোখে পড়ে। ২০১৩-’১৪ অর্থবর্ষে তাদের আয় যেখানে মাত্র ১৯ লক্ষ টাকা ছিল, ২০১৭-’১৮ অর্থবর্ষে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৭ কোটি ৬৭ লক্ষ টাকায়। ২০২০-’২১ অর্থবর্ষে একধাক্কায় তা ১০ কোটি ২৫ লক্ষ টাকায় পৌঁছে যায়।

 

 

গবেষণারত সাংবাদিকদের তরফে এ-বছর ১৮ এপ্রিল এই নিয়ে শিবনাথ, বর্তমান বস্ত্রমন্ত্রী পীযূষ গয়াল, বস্ত্র সচিব উপেন্দ্র প্রসাদ সিংহ, প্রাক্তন বস্ত্রমন্ত্রী স্মৃতি এবং ওপালিনার সহ প্রতিষ্ঠাতা গৌরব শর্মা এবং কেন ফিলিপের কাছে প্রশ্নের তালিকা পাঠানো হয়। প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের জনসংযোগ এবং তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের অফিসার অন স্পেশাল ডিউটি হীরেন জোশি, ভারতে ফেসবুকের জনসংযোগ বিভাগের ডিরেক্টর বিপাশা চক্রবর্তীর কাছেও তথ্য চাওয়া হয়। তাঁদের মধ্যে শুধুমাত্র গৌরব শর্মার জবাবই পাওয়া গিয়েছে, বাংলায় যার তর্জমা করলে দাঁড়ায়, "আপনারা যে প্রশ্নগুলি পাঠিয়েছেন, তা ফাঁদ পেতে শিকার ধরা এবং আমাদের সংস্থার গোপন তথ্য হাতিয়ে নিজেদের অসাধু উদ্দেশ্য সাধনের চেষ্টা ছাড়া কিছু নয়। আইনি পথে সম্পত্তির মালিকানা সংক্রান্ত তথ্য গোপনীয়তা রক্ষার অধিকার খাটিয়ে আমরা এর বিরুদ্ধে সম্ভাব্য সব ধরনের পদক্ষেপ করতে পারি। আমাদের সম্পত্তির তথ্য চুরির প্রচেষ্টা অথবা প্ররোচনার দায়ে এ নিয়ে ফৌজদারি মামলা দায়ের করতেও দ্বিধা করব না আমরা।" বাকিদের কাছ থেকে এখনও উত্তর মেলেনি। পাওয়া গেলে তার আপডেট দেওয়া হবে।

 

সৌজন্য: 'দ্য নিউজলন্ড্রি'। অনুবাদ: পম্পি অধিকারী

More Articles