মোচা নয়, আসন্ন ঘূর্ণিঝড়ের আসল নামের আড়ালে রয়েছে বিশ্ববিখ্যাত এক কফি!
Cyclone Mocha: ঘূর্ণিঝড়ের নামের নেপথ্যে রয়েছে এক কফি! যে সে কফি নয়, বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় এক কফি এটি।
বেশ কিছুদিন ধরেই লঘু এক মস্করা ঘুরে বেড়াচ্ছে ফেসবুকে। ঝড় ধেয়ে আসছে বাংলা এবং ওড়িশার বুকে। ঝড় কতখানি কী বিপদ ঘটাবে সেই নিয়ে দুশ্চিন্তা নয়, বাঙালির চিন্তা ঝড়ের নাম নিয়ে। ঝড় নাকি বাঙালির প্রিয় পদ ঘণ্ট এই নিয়ে তর্কাতর্কিও চলছে। দোষও দেওয়া যায় না, ঝড়ের ইংরেজি বানান বলছে উচ্চারণ 'মোচা', অথচ আসলে তার নাম মোকা। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ঘূর্ণিঝড়ের পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার আগে দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে একটি নিম্নচাপ অঞ্চল তৈরি হবে। তারপর এই সপ্তাহান্তেই দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে তৈরি হতে পারে ঘূর্ণিঝড় ‘মোকা’। কিন্তু মোচা নাকি মোকা, এই দ্বিধার অবসান ঘটাবে কে? ঝড়ের বাহারি নামকরণ নিয়ে প্রতিবারই এক কাটাছেঁড়া চলে বটে। ঝড়ের নামের উৎস খুঁজতে খুঁজতে বিচিত্র পথে এগোতে হয়। এবারের পথটিও তেমনই। ঘূর্ণিঝড়ের নামের নেপথ্যে রয়েছে এক কফি! যে সে কফি নয়, বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় এক কফি এটি।
বিভিন্ন দেশ বিভিন্ন ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ করে। ঘূর্ণিঝড়ের নাম ‘মোকা’ দিয়েছে ইয়েমেন। আরব সাগরের প্রান্তে অবস্থিত যুদ্ধবিধ্বস্ত এই ইয়েমেনের বন্দর শহরের নাম 'মোখা' বা ‘মুখা’, যদিও উচ্চারণ অনুযায়ী সে 'মোকা। এছাড়া মোকা শব্দটির আভিধানিক কোনও অর্থই নেই। তাহলে কফি এল কোত্থেকে? ১৯ শতক পর্যন্ত মোখা ছিল ইয়েমেনের রাজধানী সানার প্রধান বন্দর। এই মোখা শহরেই চাষ হয় বিখ্যাত কফি ‘মোকা’র। বলাবাহুল্য, কফিটির নাম দেওয়া হয়েছে বন্দর শহরটির নামেই। মোকা কফি এতই জনপ্রিয় যে বিদেশেও এর চাহিদা প্রবল। আর এই মোখা বন্দর দিয়েই বিদেশে মোকা রপ্তানি করা হয়।
আরও পড়ুন- চুলের তেলে থামল ঘূর্ণিঝড়! জগদীশচন্দ্র বসুর কল্পবিজ্ঞানের গল্প বিস্ময় জাগায় আজও
WMO/ESCAP-এর সুপারিশ অনুযায়ী যে কোনও ঘূর্ণিঝড়ের নাম ঠিক করা হয়। মোট ১৩টি দেশের সুপারিশ মাথায় রেখেই ঘূর্ণিঝড়ের নাম ঠিক করা হয়। 'প্যানেল অন ট্রপিকল সাইক্লোন' নামের একটি তালিকা থাকে, সেখান থেকেই প্রতিটি ঝড়ের নাম ঠিক করা হয়। ১৬৯ টি নামের প্রস্তাব দেওয়া হয়। প্রতিটি দেশই সুযোগ পায় নিজের পছন্দ মতো ঝড়ের নাম দেওয়ার। সেই মতোই এবারের ঝড়ের নাম মোকা (মোচা নয় কোনওভাবেই)।
দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে যে নিম্নচাপ অঞ্চল তৈরি হতে পারে তা শক্তি সঞ্চার করে ৬ মে নাগাদ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে। এই মোকা ঘূর্ণিঝড় যে আছড়ে পড়বেই এমন কোনও নিশ্চ্যতা যদিও এখনও মেলেনি আবহাওয়া দফতরের পক্ষে। তবে ৬ থেকে ১০ মে-র মধ্যে ঘূর্ণিঝড় মোকা ধেয়ে আসতে পারার আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হওয়াতে উপকূলবর্তী রাজ্যগুলিতে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ ভারী ঝড়বৃষ্টির সম্ভাবনা থেকেই যায়। বঙ্গোপসাগর লাগোয়া তামিলনাড়ু, ওড়িশার পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গেও ঝড় বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। আমেরিকা ও ইউরোপের আবহাওয়া সংস্থা অবশ্য জানাচ্ছে, ১৪ মে বাংলাদেশ ও মায়ানমার উপকূলে স্থলভাগে আছড়ে পড়তে পারে এই ঘূর্ণিঝড়।

Whatsapp
