সন্ত্রাসবিরোধী বার্তা প্রচারের জন্য এই ৩৩টি দেশকেই কেন বাছল ভারত?
Anti-Terror Outreach: প্রথম প্রতিনিধিদল জাপানের উদ্দেশ্যে রওনা হবে। তৃণমূল সাংসদ ইউসুফ পাঠান এই দলে না যোগদানের সিদ্ধান্ত নেওয়ায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে এই দলে জুড়ে নেওয়া হয়েছে
পহেলগাঁও হামলার পর সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের বার্তা পৌঁছে দেওয়ার জন্য একটি বিশেষ প্রতিনিধি দল তৈরি করেছে ভারতের কেন্দ্র সরকার। সেই দলে তালিকা বহির্ভূতভাবে কংগ্রেস নেতা শশী থারুরের অন্তর্ভূক্তি নিয়ে ইতিমধ্যেই বিতর্ক তৈরি হয়েছে। সরকারের বক্তব্য, এই বিশেষ প্রতিনিধি দলটি বিশ্বের নানা দেশে গিয়ে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের 'জিরো টলারেন্স' নীতির প্রচার করবে। প্রাথমিকভাবে এই কাজের জন্য ৩৩টি দেশকে বেছে নেওয়া হয়েছে। এই বিশাল কূটনৈতিক উদ্যোগ শুরু হচ্ছে ২১ মে থেকেই। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে দেশের ঐক্যমত্য এবং দৃঢ় দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরার জন্য বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সাংসদ সমন্বয়ে গঠিত সাতটি প্রতিনিধিদল এই ৩৩টি দেশ এবং জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ সফর করবে। বিদেশ সচিব বিক্রম মিশ্রি জানিয়েছেন, রবিবারের মধ্যেই এই প্রতিনিধিদল রওনা হয়ে যাবে। কোন ৩৩টি দেশকে বাছা হলো? কীভাবেই বা এই দেশগুলিকে নির্বাচিত করা হলো?
বিক্রম মিশ্র এই নির্বাচনের বিশদ ব্যাখ্যা করেছেন। এই ৩৩টি দেশের মধ্যে ১৫টিই জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য, যার মধ্যে আবার ৫টি দেশ স্থায়ী এবং ১০টি দেশ অস্থায়ী সদস্য। এছাড়াও, এই তালিকায় আরও পাঁচটি দেশ রয়েছে যারা অদূর ভবিষ্যতে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য হবে। আরও কিছু দেশ যারা সাধারণত বিশ্ব মঞ্চে নিজেদের বক্তব্য স্পষ্টভাবে পেশ করে তাদেরও নির্বাচিত করা হয়েছে। জেডিইউর সঞ্জয় কুমার ঝা-এর নেতৃত্বে ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান এবং সিঙ্গাপুর সফরকারী প্রতিনিধিদলটি প্রথম রওনা হচ্ছে, জাপান হচ্ছে প্রথম গন্তব্য।
আরও পড়ুন- কংগ্রেসের সঙ্গে দূরত্ব? কেন শশী থারুরকে সন্ত্রাসবিরোধী প্রতিনিধি হিসেবে বেছে নিল কেন্দ্র?
পাকিস্তান নিজেও কিন্তু বর্তমানে নিরাপত্তা পরিষদের আবর্তিত সদস্যদের মধ্যেই রয়েছে এবং আগামী ১৭ মাস পাকিস্তানের এই সদস্যপদ বহাল থাকবে। পাকিস্তানও অবশ্যই তাদের অবস্থান তুলে ধরার এবং ভারতবিরোধী দাবি করার চেষ্টা করবে বলেই মনে করছে প্রতিনিধি দলটি।
কেন্দ্র সরকার যে বিভিন্ন দলের সাংসদদের একসঙ্গে নিয়ে বিভিন্ন দেশ পরিদর্শনের পরিকল্পনা করেছে এবং সেই সংশ্লিষ্ট দেশগুলির আমলা এবং রাজনৈতিক প্রতিনিধিদের কাছে ভারতের বক্তব্য এবং অবস্থান তুলে ধরতে চাইছে তা এক বড় বার্তা বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ। এই প্রতিনিধিদল নির্বাচনের মাধ্যমে বিশ্বকে ভারত সরকার এই বার্তাই দিতে চায় যে ভারত সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ, দলমত নির্বিশেষে।
আরও পড়ুন- যে ১১টি শর্তে পাকিস্তানকে ৮ হাজার কোটি টাকা ঋণ দিল আইএমএফ
গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে সন্ত্রাসী হামলার প্রতিক্রিয়ায় এই মাসের শুরুতেই পাকিস্তান এবং পাক-অধিকৃত কাশ্মীরের সন্ত্রাসী শিবিরগুলিতে অপারেশন সিঁদুরের মাধ্যমে প্রত্যাঘাত চালিয়েছিল ভারত। সেই অভিযানের পরেই এই প্রতিনিধিদল গঠন করে সন্ত্রাসবিরোধী বার্তা প্রচারে উদ্যোগী হয়েছে ভারত। সাতটি প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে থাকবেন কংগ্রেসের শশী থারুর, বিজেপির রবি শঙ্কর প্রসাদ এবং বৈজয়ন্ত পান্ডা, জেডিইউর সঞ্জয় কুমার ঝা, এনসিপির সুপ্রিয়া সুলে, শিবসেনার শ্রীকান্ত একনাথ শিন্ডে এবং ডিএমকে-র কানিমোঝি।
বিজেপির অপরাজিতা সারঙ্গি, ব্রিজ লাল, প্রসান বড়ুয়া এবং হেমাঙ্গ জোশী এবং সিপিএমের জন ব্রিটাস সহ নয়জন সদস্যের সমন্বয়ে গঠিত সঞ্জয় কুমার ঝা-এর প্রতিনিধিদল প্রথম জাপানের উদ্দেশ্যে রওনা হবে। তৃণমূল সাংসদ ইউসুফ পাঠান এই দলে না যোগদানের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর তৃণমূল কংগ্রেসের অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে এই দলে জুড়ে নেওয়া হয়েছে। একনাথ শিন্ডের নেতৃত্বে প্রতিনিধিদলটি পরবর্তী সফরে যাবে।