ইজরায়েল গাজা যুদ্ধে ভারত কী চায়? উত্তর লুকিয়ে ৭৩ বছর আগের এই ঘটনায়...
India Supports Israel : ভারত আর ইজরায়েলের এত ভাব হলো কীভাবে? ভারত তো ইজরায়েলের জন্ম হোক তাই চায়নি এককালে!
গাজাতে যুদ্ধের চার সপ্তাহ পেরিয়ে গিয়েছে। অমানবিকতা, নৃশংসতা কোন পর্যায়ে যেতে পারে তা হাঁ করে দেখছে বিশ্ব। দেখা ছাড়া কীই বা করণীয়? হ্যাঁ, ত্রাণ পাঠানো যায়, যুদ্ধ থামুক এই নিয়ে একজোট হওয়া যায়, যুদ্ধবিরতির ডাক দেওয়া যায়। অনেক রাষ্ট্রই চেয়েছে গাজা ইজরায়েলের এই যুদ্ধ থামুক। হামাস ১৪০০ মানুষের প্রাণ নিয়েছে ইজরায়েলে, বদলা নিতে ইতিমধ্যেই ১০ হাজারের কাছাকাছি মানুষকে হত্যা করেছে ইজরায়েলি সেনা। এর মধ্যে নারী ও শিশুই অধিকাংশ। যুদ্ধ না জেতা অবধি থামবে না ইজরায়েল, স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে সেই রাষ্ট্র। যুদ্ধ যাতে না থামে তাই কি চাইছে ভারত? বিশ্বের এই গণতান্ত্রিক দেশটি যুদ্ধবিরতির সপক্ষে ভোট দেয়নি। গাজা-ইজরায়েল যুদ্ধ নিয়ে আশ্চর্যজনকভাবে চুপ এই দেশ। কেন?
ভারতের এই যুদ্ধবিরতির পক্ষে না দাঁড়ানোর সিদ্ধান্তে অবাক ও লজ্জিত কংগ্রেসের প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বঢরা জানিয়েছিলেন, মানবতার প্রতিটি আইনই বিকৃত করেছে ইজরায়েল। ফিলিস্তিনি মানুষদের খাদ্য, জল, চিকিৎসা, যোগাযোগ এবং বিদ্যুৎ থেকে বিচ্ছিন্ন রেখে সব দিক থেকে শেষ করে দেওয়ার চেষ্টায় রয়েছে ইজরায়েল। ভারত যুদ্ধবিরতি চাইছে না মানে, ভারত চাইছে মানুষকে এভাবেই হত্যা করা হোক! দেশের ক্ষমতাসীন সরকার কী বলছে? ক্ষমতাসীন বিজেপি বলছে, ভারতের অবস্থান একেবারেই সঠিক কারণ দেশ কখনই 'সন্ত্রাসবাদের পক্ষে নয়'।
প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বলছেন, খুনের বদলা খুন- এই নীতিই পুরো বিশ্বকে অন্ধ করে দেয়। অথচ ভারত অহিংসা এবং সত্যের নীতির উপর ভিত্তি করেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। বিজেপি অবশ্য বারেবারেই বলেছে ফিলিস্তিন ইস্যুতে ভারতের অবস্থান দৃঢ় এবং যথাযথ। বিজেপি গাজার প্রতি সমবেদনা ও সমর্থনকে একেবারে দেশিয় স্তরে নিয়ে গিয়ে ফেলেছে স্বাভাবিক নিয়মেই। কেরলে জামাত-ই-ইসলামির যুব শাখা আয়োজিত সমাবেশে অংশগ্রহণের বিষয়ে কংগ্রেস এবং বামদের আক্রমণ করে বিজেপি কংগ্রেস এবং বাম দলগুলির 'দেশবিরোধী আচরণ' নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করে দিয়েছে।
আরও পড়ুন- বোমা-রকেটে ছারখার গাজা! কেন পিরিয়ড বন্ধের ওষুধ খুঁজছেন যুদ্ধবিধ্বস্ত মহিলারা!
গাজায় ইসরায়েলের হামলাকে 'গণহত্যা' বলে মনে করেছেন বাম নেতা সীতারাম ইয়েচুরি এবং ডি রাজা। এত বড় একটি ঘটনায় ভারত কেন এত নির্লিপ্ত তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। এখানেও কি ধর্মের ভিত্তিতেই ভারত সমর্থন জানাচ্ছে ইজরায়েলকে আর গাজার বিরোধিতা করছে? ভারত আর ইজরায়েলের সম্পর্ক জানতে গেলে পিছিয়ে যেতে হবে ১৯৯৯ সালে। ৩ মে, ১৯৯৯। ভারত জানতে পারে জম্মু ও কাশ্মীরের কার্গিল-দ্রাস সেক্টরে পাকিস্তানি সেনাদের অনুপ্রবেশ ঘটছে। এর তিন সপ্তাহ অপারেশন বিজয় নামে একটি অভিযান শুরু করে ভারত। কিন্তু তখন ভারতের হাতে তেমন অস্ত্র কই! ভারতীয় প্রতিরক্ষা বাহিনী তখনও আদ্যিকালের বন্দুক, পুরনো সামরিক প্রযুক্তি দিয়েই লড়ে। এই ঢাল তরোয়াল দিয়ে কৌশলে বাঙ্কারে লুকিয়ে থাকা পাকিস্তানি সৈন্যদের খুঁজে বের করা সমস্যার। বাধ্য হয়ে সামরিক সাহায্যের আর্জি জানায় ভারত, সারা বিশ্বের কাছেই। কিন্তু ১৯৯৮ সালেই পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন দেশগুলি প্রযুক্তিগত, অর্থনৈতিক এবং অস্ত্র নিষেধাজ্ঞার মুখোমুখি হয় ভারত। এমন অবস্থায় কেবল একটি দেশই ভারতের সমর্থনে এগিয়ে আসে- ইজরায়েল।
ইজরায়েল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বন্ধু হওয়া সত্ত্বেও ভারতকে মর্টার এবং গোলাবারুদ দিয়ে সাহায্য করেছিল। ভারতীয় বিমান বাহিনীকে তার Mirage 2000H ফাইটার জেটের জন্য লেজার-গাইডেড ক্ষেপণাস্ত্রও সরবরাহ করেছিল ইজরায়েল। শুধু তাই নয়, পাকিস্তান সেনাবাহিনীর কৌশলগত অবস্থানগুলি শনাক্ত করতে ইজরায়েল তার সামরিক স্যাটেলাইট থেকে তোলা ছবিও সরবরাহ করে।
কিন্তু এত ভাব হলো কীভাবে? ভারত তো ইজরায়েলের জন্ম হোক তাই চায়নি এককালে!
১৯৪৭ সালের ১৫ অগাস্ট ভারত স্বাধীন হয়। স্বাধীনতা লাভের পরই আন্তর্জাতিক স্তরে ভারতকে যে কঠিন কূটনৈতিক মতামত জানাতে হয় তা ছিল প্যালেস্তাইন ভাগ বিষয়ে। ভারত প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর নেতৃত্বে, ১৯৪৭ সালের ২৯ নভেম্বর প্যালেস্তাইন ভাগের বিষয়ে রাষ্ট্রসঙ্ঘের সাধারণ পরিষদের প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ভোট দেয়।
নেহরু এই অবস্থান নেন নৈতিক ও ভূ-রাজনৈতিক কারণের উপর ভিত্তি করে। নৈতিক ভিত্তিতে, নেহরু মহাত্মা গান্ধীর পথই বেছে নেন। গান্ধী বলতেন যে ইহুদিরা আমেরিকা ও ব্রিটেনের সাহায্যে প্যালেস্তাইনের উপর নিজেদের চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে গুরুতর ভুল করেছিল। গান্ধীর মতে, প্যালেস্তাইন আরবদেরই ছিল যেভাবে ইংল্যান্ড ছিল ইংরেজদের বা ফ্রান্স ছিল ফরাসিদের।
তাছাড়া নেহেরু ও গান্ধী দু'জনেই ধর্মের ভিত্তিতে দেশভাগ হলে কী হয়, সেই ভয়াবহতা প্রত্যক্ষ করেছিলেন। আরও রক্তপাতের সমর্থনে ছিলেন না কেউই। যদি একান্তই দেশ ভাগ করতে হয় তবে তা ফিলিস্তিনি আরবদের সম্মতিতেই করা উচিত বলে বিশ্বাস করতেন গান্ধী নেহরু।
ভূ-রাজনৈতিক ক্ষেত্রে, নেহরু জানতেন ভারত নতুন দেশ। সেই মুহূর্তে ভারতের অনেক বিদেশি সমর্থন প্রয়োজন, বিশেষ করে আরব দেশগুলির সমর্থন তো কাম্য বটেই। মৌলানা আবুল কালাম আজাদও জানতেন ভারতে বৃহৎ মুসলিম জনগোষ্ঠীর মধ্যে বিদ্রোহ হতে পারে এই নিয়ে, যদি সরকার ইজরায়েলের জন্মকে সমর্থন করে। এমনকী 'জাতীয় স্বার্থের' বিষয় উল্লেখ করে প্যালেস্তাইন ভাগের পক্ষে ভোট দেওয়ার জন্য আলবার্ট আইনস্টাইনের আবেদনও প্রত্যাখ্যান করেন নেহরু।
আরও পড়ুন- ২০ দিনে ৩,৩০০ শিশুর মৃত্যু! কেন এত শিশু মারা যাচ্ছে গাজার যুদ্ধে?
অবশেষে ১৯৪৮ সালের ১৪ মে জন্ম হয় ইজরায়েলের। এর কিছু পরেই ইজরায়েল ভারত সহ অন্য দেশগুলিকে ইহুদি জাতিকে স্বীকৃতি দেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে চিঠি পাঠায়। ভারত প্রথমে সেই অনুরোধে সাড়া দেয়নি। পরে ১৯৫০ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর ভারত আনুষ্ঠানিকভাবে ইজরায়েলকে স্বীকৃতি দেয়। তবে কূটনৈতিক সম্পর্ক তৈরি হয় আরও কয়েক দশক পরে। ইজরায়েলের সমস্ত আরব প্রতিবেশী ইহুদি রাষ্ট্রের সঙ্গে যুদ্ধবিরতিতে সই করার পরেই ভারতের ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দিয়েছিল। এমনকী তৎকালীন তুরস্কের মতো একটি মুসলিম দেশও ১৯৪৯ সালে ইজরায়েল রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেয়।
ইজরায়েলের সঙ্গে জওহরলাল নেহরুর প্রথম চিঠি আদানপ্রদান হয় ১৯৬২ সালে। চিনের সঙ্গে যুদ্ধের সময় ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড বেন-গুরিয়নকে চিঠি লিখেছিলেন নেহরু। আরব দেশগুলির সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের টানাপড়েন এড়াতে নেহরু অস্ত্র ও গোলাবারুদ চেয়েছিল ইজরায়েলের কাছ থেকে, তবে এই শর্তে যে সেগুলি ইজরায়েলের পতাকা ছাড়াই পাঠানো হবে। বেন-গুরিয়ন কিন্তু সাহায্য করতে অস্বীকার করেন। অবশেষে ভারত ইজরায়েলের পতাকা লাগানো চালান গ্রহণ করতে সম্মত হলে তখনই ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কে জড়ায় ইজরায়েল।
পাকিস্তানের সঙ্গে ১৯৭১ সালের যুদ্ধের সময় ভারত আবার ইজরায়েলের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বাধ্য হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তখন ইসলামাবাদকেই সমর্থন করছে। তা সত্ত্বেও, ইজরায়েল ভারতকে সাহায্য করে। তবে ১৯৭১ সালে ইজরায়েলের কাছ থেকে সাহায্য নিলেও ইন্দিরা গান্ধী কিন্তু ফিলিস্তিনিদেরই কট্টর সমর্থক ছিলেন। ইন্দিরা গান্ধীর সরকার ধারাবাহিকভাবে ফিলিস্তিনিদের অধিকারকে সমর্থন করে এসেছে, ইজরায়েলি দখলদারিত্বের নিন্দা করে এসেছে।
১৯৭৪ সালে ভারত আনুষ্ঠানিকভাবে ফিলিস্তিনি জনগণের একমাত্র বৈধ প্রতিনিধি হিসাবে ইয়াসির আরাফাতের নেতৃত্বে প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশনকে (PLO) স্বীকৃতি দেয়। আরাফাত ইন্দিরার সম্পর্ক ছিল একেবারেই দাদা-বোনের মতো। ইন্দিরা গান্ধীর আমলে ইয়াসির আরাফাত বেশ কয়েকবার ভারত সফরে আসেন। ভারত ১৯৭৫ সালে পিএলওকে নয়াদিল্লিতে অফিস খোলারও অনুমতি দেয়। ১৯৮৪ সালে ইন্দিরা গান্ধীর হত্যার পর আরাফাত তাঁর শেষকৃত্যেও এসেছিলেন। ১৯৮৮ সালে পিএলও স্বাধীনতা ঘোষণা করার পর ভারত সাদরে প্যালেস্তাইন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেয়।
ফিলিস্তিনের প্রতি ভারতের অটুট সমর্থন সত্ত্বেও ইজরায়েলের সঙ্গেও কিন্তু এদেশের সম্পর্ক গভীর হচ্ছিল। আসলে দু'টি ঘটনা ভারতের মধ্যপ্রাচ্য নীতিকে বদলে দিয়েছিল। প্রথমত, সোভিয়েত ইউনিয়নের পতন এবং স্নায়ুযুদ্ধের অবসানের সঙ্গে সঙ্গে ভারত সমাজতান্ত্রিকতা থেকে বেরিয়ে অর্থনীতির উদারীকরণ ঘটাতে চেয়েছিল। এর অর্থ নতুন জোটের সন্ধান। দ্বিতীয়ত, ১৯৯০ সালের অগাস্টে কুয়েতে ইরাক আক্রমণ করে। ইয়াসির আরাফাতের নেতৃত্বাধীন পিএলও কুয়েত আক্রমণে ইরাককে সমর্থন করেছিল, যা আরব বিশ্বকে অবাক করে দেয়। ফিলিস্তিন কুয়েতকেই সমর্থন করবে বলে আশা করা হয়েছিল। কুয়েত নিজেও রাজনৈতিক ও আর্থিক দিক থেকে ফিলিস্তিনের অন্যতম প্রধান সমর্থক ছিল। পিএলও-র ইরাকপন্থী অবস্থান প্যালেস্তাইনের পক্ষে সুখকর ছিল না। কুয়েতের স্বাধীনতার পর প্রায় চার লাখ ফিলিস্তিনিকে দেশ থেকে বের করে দেওয়া হয়।
তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী পিভি নরসিমহা রাও তখন ইজরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ককে আরও খানিক মজবুত করার চেষ্টা করেন। কার্গিল যুদ্ধের পর, অটল বিহারী বাজপেয়ীর নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকার ২০০০ সালে তৎকালীন বিদেশমন্ত্রী যশবন্ত সিংকে প্রথম দ্বিপাক্ষিক সফরে ইজরায়েলে পাঠায়। তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লালকৃষ্ণ আডবাণীও সেই বছর ইজরায়েল সফর করেন। কার্গিল যুদ্ধের পর ভারত নিজের নড়বড়ে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার আধুনিকীকরণের তাগিদে ইজরায়েলের সাহায্য চেয়েছিল। বারাক-১ সারফেস টু এয়ার মিসাইল সিস্টেমের জন্য ভারত ২০০০ সালে ইজরায়েলের সাথে প্রথম প্রতিরক্ষা চুক্তি করে।
আরও পড়ুন- গাজায় নিথর ৩,৫০০ শিশু! বেঁচে থাকা সন্তানদের গায়ে নাম লিখে রাখছেন কেন মা-বাবারা?
বারাক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থাটি প্রাথমিকভাবে নৌ প্রতিরক্ষার জন্য তৈরি করা হয়েছিল। ভারতীয় নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজে তা স্থাপন করাই উদ্দেশ্যে ছিল। তবে চুক্তিতে শুধু বারাক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা বিক্রিরই উল্লেখ ছিল না। চুক্তি অনুযায়ী ইজরায়েল ভারতকে অস্ত্র তৈরির আধুনিকতম প্রযুক্তিও দেবে যাতে ভারত নিজেই নিজের ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করতে পারবে। শুধু প্রতিরক্ষা নয়, ভারত ও ইজরায়েল কৃষি, প্রযুক্তি এবং গবেষণা ও উন্নয়নের মতো অন্যান্য ক্ষেত্রেও একে অপরের সহযোগিতা করেছে।
২০০৩ সালে প্রথম ইজরায়েলি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে এরিয়েল শ্যারন ভারত সফরে আসেন। ততদিনে ইজরায়েল ভারতের অস্ত্রের দ্বিতীয় বৃহত্তম সরবরাহকারী হয়ে ওঠে। ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদি যখন প্রধানমন্ত্রী হন তখন ভারত-ইজরায়েল সম্পর্ককে আরও খানিক নিবিড় করতে চেষ্টা করেন। ২০০৬ সালে যখন তিনি গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী, তখন মোদি একটি এগ্রিটেক প্রদর্শনীতে অংশ নিতে ইজরায়েলে যান এবং ইহুদি জনগণ ও রাষ্ট্রের ব্যাপক প্রশংসা করেন। ২০১৭ সালের ৪ জুলাই ইজরায়েল সফরকারী প্রথম ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী হন মোদি। মোদি ইজরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর ডাকনামেই ডাকেন, ‘বিবি' বলে।
এখন গাজার যুদ্ধে ভারত যখন ইজরায়েলকেই সমর্থন জুগিয়েছে। চরম নৃশংসতা সত্ত্বেও যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে ভোট দেয়নি ভারত। "ভারতের জনগণ এই কঠিন সময়ে ইজরায়েলের পাশে আছে, দৃঢ়ভাবে আছে। ভারত দৃঢ়ভাবে এবং দ্ব্যর্থহীনভাবে সব ধরনের সন্ত্রাসবাদের নিন্দা করে,” প্রধানমন্ত্রী মোদি হামাসের হামলার নিন্দা জানিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টও লেখেন। মুশকিল হচ্ছে, 'ভারতের জনগণ' ইজরায়েলের পাশে আছে না কি সরকার ইজরায়েলের পাশে আছে। অস্ত্র নির্ভরতার সঙ্গে জুড়ে আছে ইহুদি সমর্থন ও হামাসকে সবক শেখানও। জঙ্গি ঠেকাতে গিয়ে ১০ হাজারের কাছাকাছি মানুষের মৃত্যু কি ন্যায্য তবে? ভারত রাষ্ট্র যুদ্ধবিরতি চাইছে না। আর দেশের জনগণ?