৩৭০ ধারা বিলোপের পর প্রথম বিধানসভা ভোটে কী চাইছেন কাশ্মীরের আমজনতা?
Jammu & Kashmir Election 2024: প্রতিবাদ জানানোর জন্য একটাই রাস্তা আছে যা হল - পোলিং বুথে গিয়ে বিজেপির বিপক্ষে ভোট দেওয়া
গত বৃহস্পতিবার যখন শ্রীনগর এয়ারপোর্টে নামলাম সেদিনই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জনসভা করেন। সকাল থেকেই শহরের রাস্তাঘাট দোকানপাট বন্ধ ছিল। কারণ, প্রধানমন্ত্রী আসছেন শহরে। ট্যাক্সিচালকও বললেন, আজ ব্যবসা একদম খারাপ এবং আপনি যে হোটেলে যাচ্ছেন সেখানেও ঘুর পথে যেতে হবে কিংবা রাস্তা বন্ধ পাবেন। শেষে হাঁটতেও হতে পারে। এই ধরনের অনেক সতর্কবাণী শুনলাম। যাই হোক, শহর যে জনশূন্য তা বোঝাই যাচ্ছিল। একটু পরে প্রধানমন্ত্রী যেখানে সভা (কাশ্মীর ক্রিকেট স্টেডিয়াম) করলেন সেই মাঠেও গেলাম। একটা খোলা মাঠে সভা না করে কেন প্রধানমন্ত্রীকে কাশ্মীরের একটা বদ্ধ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে জনসভা করতে হচ্ছে, সেই কারণটা সহজেই বোঝা যায়। আসলে বদ্ধ স্টেডিয়াম নিরাপত্তায় ঘিরে দেওয়া সহজ।
প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে আবার সেই একই কথা বললেন, তিনটে খানদান বা তিনটে বংশ (আব্দুল্লাহ পরিবারের ন্যাশনাল কনফারেন্স মুফতি পরিবারের পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টি বা পিডিপি এবং কংগ্রেস) কাশ্মীরে লুটপাট করেছে। তাঁর বক্তব্য, এদের সেই লুটপাটের রাজত্ব থেকে কাশ্মীরকে এবারে নতুন যুগের সূচনা করতে হবে, আর সেই জন্যই এবারে ভোট দিতে হবে বিজেপিকে। প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে, বিজেপি তো চার মাস আগের লোকসভা নির্বাচনে কাশ্মীর উপত্যকার কোনও আসনে প্রার্থীই দেয়নি, তাহলে সেই দলের প্রচার করতে প্রধানমন্ত্রী শ্রীনগরে আসছেন কেন? এই প্রশ্নটা কিন্তু মানুষের মুখে মুখে শোনা যাচ্ছিল। সভায় ভিড় হয়েছিল, স্টেডিয়াম ভর্তি লোক ছিল সবই ঠিক কিন্তু প্রধানমন্ত্রী কেন বিজেপির হয়ে সেই লড়াইতে প্রচার করতে এসেছেন যেখানে বিজেপির কোনও প্রভাবশালী প্রার্থী সেভাবে নেই?
আরও পড়ুন- ৩৭০ ধারা রদের পক্ষেই সুপ্রিম কোর্ট, কী ব্যখ্যা দিচ্ছে শীর্ষ আদালত?
কাশ্মীরের এবারের নির্বাচন বিশেষ কেন? কারণ, প্রথমত পাঁচ বছর আগে ৩৭০ ধারা বিলুপ্ত হওয়ার পর এই প্রথম কাশ্মীরে নির্বাচন হচ্ছে। ২০১৪-তে শেষবার কাশ্মীরে বিধানসভার ভোট হয়েছিল, তার পরে ১০ বছর বাদে এই প্রথম আবার বিধানসভার ভোট হচ্ছে। দ্বিতীয়ত, ৩৭০ ধারা বিলোপ করাকে বিজেপি যেভাবে সাফল্য হিসেবে এতদিন তুলে ধরেছে, তা সত্যি কিনা সেটা দেখার একটা পরীক্ষা হচ্ছে এই নির্বাচন। কাশ্মীর কি মনে করে, ৩৭০ ধারা কার্যকরী সফল পদক্ষেপ ছিল? ভারতে জুড়ে বিজেপি যা বলার চেষ্টা করে এসেছে তার একটা পরীক্ষার রিপোর্ট হবে এই নির্বাচন। এই প্রশ্নটা নিয়ে কাশ্মীরের ডাল লেকের ধারে, পথে-ঘাটে, শপিংমলে শ্রীনগরের মানুষের সঙ্গে কথা বলি, তাঁদের থেকে নানান ধরনের উত্তর পেয়েছি এবং সেগুলো মিশ্র প্রতিক্রিয়ায় ভরা।
ডাল লেকের ধারে শিকারা চালকদের জিজ্ঞেস করি, পরিস্থিতি কি স্বাভাবিক হয়েছে? আগের থেকে উন্নতি হচ্ছে? তাঁরা বলেন, কাশ্মীরের যে যুবকরা আগে পাথর ছুড়তো সেইটা হয়তো বন্ধ হয়েছে কিন্তু সেই যুবকরা এখন ড্রাগস ধরতে বাধ্য হয়েছে। তারা এখন মাদকের নেশায় পড়েছে। কারণ, চাকরি নেই কর্মসংস্থানের অভাব। তাঁরা আরও বলেন, কেন্দ্রের শাসন এখনও চলছে কাশ্মীরের নিযুক্ত লেফটেন্যান্ট গভর্নর সিনহার হাত ধরে। তিনি যেহেতু এখন কাশ্মীরের প্রশাসক তাই রাজ্যে এখন কোনও সরকার বা বিধানসভা নেই। বললেন, "দেখুন ডাল লেকের কী অবস্থা! বাইরে আপনারা কয়েকটা সুন্দর সুন্দর হাউস বোট দেখতে পাবেন কিন্তু পেছনে আজও এখানে লক্ষ লক্ষ মানুষ থাকেন নোংরা গন্ধময় পরিবেশে। লেকের ভাসমান বাসিন্দাদের জন্য একটা অ্যাম্বুলেন্স হাসপাতাল নেই, একটা টয়লেট নেই।" ডাল লেক চত্বরে পর্যটকদের মধ্যে এই অভিযোগগুলো কান পাতলেই শোনা যায়।
নাম জানাতে অনিচ্ছুক একজন পথচারী জানালেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে এটা বলা মুশকিল। কারণ, আজও বাকি রাজ্যের ভোটের সময় আমরা দেখি যে যখন ভোট হয় রাজনৈতিক দলগুলোর অফিস জমজমাট থাকে। কাশ্মীরে কিন্তু সেটি আজও হচ্ছে না। সেভাবে কোনও পথসভা বা জনসভা হচ্ছে না। আপনি ন্যাশনাল কনফারেন্সের অফিসে গিয়ে যে নেতাদের সঙ্গে দেখা করবেন সেটি হবার জো নেই। বাইরে সেনা কর্মীরা আপনাকে আটকে দেবেন। অ্যাপয়েন্টমেন্ট থাকলে তবেই ভেতরে ঢুকতে পারবেন! এইরকমই হচ্ছে এখানকার অবস্থা। কাজেই অন্য রাজ্যে যেরকম একটা জমজমাট নির্বাচনী পরিবেশে ভোট হয় এখানে কিন্তু সেটা হচ্ছে না। তবে তার পরেও এটা ঠিক, এখানে পর্যটক আসছেন। আগে যারা উগ্রপন্থার ভয়ে এখানে আসতে দ্বিধায় থাকতেন, সেই আতঙ্ক ভুলে লক্ষ লক্ষ পর্যটক কিন্তু কাশ্মীরে আসছেন।
দেখা হল, বারাসাত থেকে আসা এক পরিবার, মমিনুল মোল্লা এবং তাঁর আরও দুই বন্ধু এবং তাঁদের স্ত্রীর সঙ্গে। তাঁরা বললেন, "কত কী শুনেছিলাম, কাশ্মীরে গণ্ডগোল হতে পারে বলে। কিন্তু এখানে তো নিশ্চিন্তে ঘুরে বেড়াচ্ছি, দারুণ লাগছে। তাঁদের মুখে একধরনের আশ্বাস শোনা গেল। এই সার্বিক পরিবেশে ফুরফুরে মেজাজে কোনও ভয়ের ছাপ ছাড়া ঘুরে বেড়াচ্ছেন। এমনটা বারবার শোনা গেল পর্যটকদের মুখে। এটাও কাশ্মীরের ছবি।
৩৭০ ধারা বিলোপ সবকিছু পাল্টে দিতে পারেনি ঠিকই কিন্তু তারপরেও এক স্বাভাবিক সুস্থতার পরিবেশ অনেকটাই ফিরেছে। পর্যটন হচ্ছে, বাণিজ্য যে হচ্ছে এগুলো অস্বীকার করার উপায় নেই।
শ্রীনগরে আসার আগে ছিলাম জম্মুতে। সেখানে কিন্তু নির্বাচনী পরিবেশ অনেক বেশি জমজমাট এবং স্বাভাবিক। জম্মুর নির্বাচনে যে আকর্ষণীয় ঘটনা ঘটেছে তা হল, জম্মুর আসন সংখ্যা এবারে কাশ্মীরের তুলনায় বৃদ্ধি পেয়েছে। জম্মুতে ডিলিমিটেশন এক্সারসাইজের জন্য আসন বেড়েছে ছ'টা এবং কাশ্মীরে বেড়েছে মাত্র একটা। ফলে এটা নিয়ে কাশ্মীরে ক্ষোভ রয়েছে। মুসলিম প্রধান কাশ্মীরে জনসংখ্যার প্রায় ৬০% কিংবা তারও বেশি। আর জম্মুর জনসংখ্যা ৪০% গোটা রাজ্যে। কাশ্মীরে আসন সংখ্যা ৪৭, সেই জায়গায় জম্মুর আসন ৪৩। অনেকেই মনে করছেন, বিজেপিকে সুবিধা করে দিতেই এই পদক্ষেপ করা হয়েছে। কারণ বিজেপির জম্মুতে হিন্দু প্রধান অঞ্চলে আধিপত্য বেশি। যদিও বিজেপির এটার পেছনে একটা গেম প্ল্যান আছে। তাদের লক্ষ্য, জম্মুতে যত বেশি সম্ভব আসন জেতা এবং কাশ্মীরের ছোটখাট দলগুলোকে অর্থাৎ ইঞ্জিনিয়ার রশিদ কিংবা সাজ্জাদ গনি লোন কিংবা গুলাম নবি আজাদ-এর মতো নেতাদের দলগুলো যদি কয়েকটা আসন পায়, তাদের সঙ্গে তো বিজেপির অনানুষ্ঠানিক জোট হয়েই আছে। তাদের নিয়েই যদি বিজেপি বৃহত্তম দল হিসেবে গোটা রাজ্যে সরকার গড়তে পারে। যা বোঝা যাচ্ছে, এই উদ্দেশ্য নিয়েই বিজেপি গোটা রাজ্যের নির্বাচনে জেতার জন্য এগোচ্ছে। একটু আগে বলছিলাম, প্রধানমন্ত্রী মোদি জনসভা করে গেলেন শ্রীনগরে। সেই সভা করে বিজেপি দেখাতে চাইছে যে, তারা সরকার গড়ার ব্যাপারে সচেতন। এবং কাশ্মীরে তাদের ক্ষমতা সীমিত হতে পারে কিন্তু জম্মুতে তাদের ক্ষমতা বেড়েছে। ফলে সেটাকে কাজে লাগিয়ে তারা ক্ষমতা দখলের স্বপ্ন দেখছে।
গুরুত্বপূর্ণ হল, কংগ্রেস আর ন্যাশনাল কনফারেন্স কিন্তু একজোট হয়ে এবার নির্বাচনে লড়ছে। আর মেহেবুবা মুফতি নেতৃত্বাধীন পিডিপি লড়ছে এককভাবে, যাদের সঙ্গে জোট সরকার গঠন করে ২০১৪ সালে বিজেপি রাজ্য সরকার গঠন করেছিল। এই তিনটি দলই অর্থাৎ কংগ্রেস, ন্যাশনাল কনফারেন্স বা পিডিপি প্রত্যেকেই ৩৭০ ধারা ফিরিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে। যদিও তারা প্রত্যেকেই জানে ক্ষমতায় এলে কাজটা খুব কঠিনই হবে। মানুষের ভাবাবেগকে উস্কানি দেওয়ার বিষয়টি এখানে রয়েছে। কারণ, কাশ্মীরের বহু মানুষ বিশ্বাস করেন ৩৭০ ধারা ছিল ভারতের সঙ্গে তাঁদের যোগাযোগের সূত্র, যা বাতিল করা হয়েছে। সেই ভাবাবেগকে উস্কে দেওয়ার চেষ্টা করছে এই তিনটি দল। এখন বিজেপির স্ট্র্যাটেজির বিরুদ্ধে তাদের আবেদনে মানুষ কতটা সাড়া দেবে সেটা দেখার জন্য ৮ অক্টোবর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
আরও পড়ুন- কাশ্মীরের শান্তি নষ্টের মূল কারিগর, কাশ্মীর টাইগার আসলে কারা?
এবার আসা যাক বামপন্থীদের প্রসঙ্গে। বামপন্থীরা অর্থাৎ সিপিআইএম ইন্ডিয়া জোটের শরিক হিসেবেই ভোটে লড়ছে কিন্তু বাস্তবে কাশ্মীরে বামপন্থীদের প্রভাব খুবই সীমিত।, বলা ভালো, কাশ্মীরের কুলগাম নামক একমাত্র বিধানসভা আসনে সীমাবদ্ধ মহম্মদ ইউসুফ তারিগামি যিনি সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য। তারিগামি পরপর চারবার এই কুলগাম আসন থেকে জিতে বিধায়ক হয়েছেন। বিধানসভায় সিপিআইএম দলের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। কিন্তু তাৎপর্যপূর্ণভাবে এবারে তাঁকে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ফেলেছেন এমন একজন প্রার্থী যিনি জামায়াতে ইসলামির নেতা সায়ার আহমেদ রাশি। যে জামাত কাগজে-কলমে একটি নিষিদ্ধ সংগঠন কিন্তু ইঞ্জিনিয়ার রশিদের দলের সঙ্গে সমঝোতা করে সেই জামায়াত ইসলামির অনেক নেতা এবার কাশ্মীরের ভোটে লড়ছেন। এবং এমনই একটি আসনে সায়ার আহমেদ রাশির সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে মহম্মদ ইউসুফ তারিগামির। তারিগামি পঞ্চম বারের মতো আসনটি ধরে রাখতে পারেন, সেদিকে সাগ্রহে নজর রাখছে গোটা রাজ্য। কাশ্মীরের শ্রীনগরে রাজনৈতিক বিশ্লেষক শেখ বাশারাত হোসেন বলছিলেন, বামপন্থীদের একটা দুর্বল ব্যাপার হল, গোটা রাজ্যে তাঁরা সেভাবে সংগঠন বিস্তার করতে পারেনি বা বলা ভালো যে সিপিআইএম কেন্দ্রিক জনপ্রিয়তা নেই। বরং একজন ব্যক্তির জনপ্রিয়তা কেন্দ্রিক বিষয়টি। সেই ব্যক্তিটি হচ্ছেন মহম্মদ ইউসুফ তারিগামি। তাঁর ব্যক্তিগত আবেদনেই কুলগাম আসনটি বারবার সিপিএম জিতেছে। কিন্তু তিনি সেই মাপের নেতা নন বা সংগঠনও এতটা জোরালো নয়। বামপন্থীরা পুরো জম্মু-কাশ্মীরময় তাদের নেটওয়ার্ক ছড়িয়ে দিতে পেরেছে এমনটা কিন্তু নয়। ফলে এইবারও তাদের তাকিয়ে থাকতে হচ্ছে ওই একটি আসনের দিকেই।
মাস চারেক আগে যখন জম্মু-কাশ্মীরে লোকসভা ভোট হয়েছিল, তখন প্রায় ৫৯ শতাংশ ভোট পড়েছিল। যা দেখে অনেককেই চমকে গিয়েছিল। কাশ্মীরে সন্ত্রাস ছিল সুতরাং এত ভোট পড়তে পারে এটা অনেকেই ভাবতে পারেননি। এখন বিধানসভা নির্বাচনে প্রথম দফায় ১৮ সেপ্টেম্বর ৬০ শতাংশের বেশি ভোট পড়েছে। এবং দ্বিতীয় ও তৃতীয় দফায় ২৫ সেপ্টেম্বর এবং ১ অক্টোবরও যে সেখানে ভোটদানের হার কম হবে না সেটা এখনই বোঝা যাচ্ছে। কাশ্মীরিরা এত বেশি সংখ্যায় কেন ভোট দিতে নেমে আসছেন? কেন তারা পোলিং বুথে যাচ্ছেন? এই প্রশ্নটার উত্তর খুঁজতে গিয়ে নানা জনের সঙ্গে কথা বলে যে উত্তর পেয়েছি সেটাও কিন্তু খুব আকর্ষণীয়। তাঁরা বলছেন যে, ৩৭০ ধারা বিলোপের কারণে এত বেশি সংখ্যায় মানুষ ভোট দিতে যাচ্ছে ভাবলে ভুল হবে। অনেকে বলছেন, তাঁরা শান্তিপূর্ণ কাশ্মীর চান। অনেক অশান্তি হয়েছে, অনেক অস্থিরতা হয়েছে এর জন্য তাঁদের জীবন ছারখার হয়ে গেছে। একটা-দুটো প্রজন্ম স্বাভাবিক সুস্থ জীবনযাপন কী সেটাই ভুলে গেছে। তাঁরা এবার স্বস্তিময় ও শান্তিপূর্ণ কাশ্মীরের পক্ষে ভোট দিতে যাচ্ছে। কেউ কেউ আবার বলছেন, ৩৭০ ধারা বিলোপ করার ফলে তাঁরা এতটা ক্ষুব্ধ যে তাঁরা মনে করছেন এটার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানোর জন্য একটাই রাস্তা আছে যা হল - পোলিং বুথে গিয়ে বিজেপির বিপক্ষে ভোট দেওয়া।
জম্মুর রাজৌরি থেকে ঘুরতে আসা মহম্মদ শরকর আর তাঁর পরিবারের সঙ্গে দেখা হল, তাঁরা কিন্তু ভিন্ন কথা বললেন। তাঁরা বিজেপিকে নিয়ে উচ্ছ্বসিত। "বিজেপি তাঁদের রাজ্যে এত পরিবর্তন এনেছে যে সেটা বলে বোঝানো যাবে না এবং তাঁরা বিজেপির পরিবর্তন গুলোর পক্ষে ভোট দিচ্ছেন।
সব মিলিয়ে নানা ধরনের প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেল। একটা বিষয়ে অবশ্য সবাই একমত হয়েছেন। কাশ্মীরের যে পূর্ণ অঙ্গরাজ্যের তকমাটা কেড়ে নেওয়া হয়েছে, এটা একটা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসেবে আছে এবং কেন্দ্রের নিযুক্ত একজন লেফটেন্যান্ট গভর্নর যাকে ব্রিটিশ আমলের বড়লাটের সঙ্গে তুলনা করা যায় এবং তাঁর হাত ধরেই কাশ্মীর শাসিত হচ্ছে এটা রাজ্যের মানুষজন মেনে নিতে পারছেন না। তাঁরা চান পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা পেয়ে মুখ্যমন্ত্রী যেন পূর্ণ রাজ্যের মন্ত্রী হন। অনেকে ভোট দিতে যাচ্ছেন স্টেটহুডের স্বীকৃতি ফিরিয়ে আনার দাবিকে সমর্থন করে। এরকম নানা কারণ আছে ভোট পড়ার। বাস্তবতা হলো, শেষ পর্যন্ত জম্মু-কাশ্মীরবাসী এবারের বিধানসভায় বিপুল সংখ্যায় পোলিং বুথে গিয়ে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনে নিজেদের মতামত জানিয়ে আসছেন।