কেন, কখন, কী ভাবে রেগে যায় জেন-জি?

Gen Z Protest: অদূর ভবিষ্যতে ভারতবর্ষেও যদি জেন-জি মুভমেন্ট হয় তাহলে বহু ভাষাভাষী, জাতপাত বা ধর্মের বিভেদ ঘুচিয়ে আজকের ছেলেমেয়েরা ঐক্যবদ্ধ হতে পারবে তো?

“বড় বেশি প্রত্যাশা নিয়ে এই (বিদ্রোহের) পথে আসিনি, বরঞ্চ এই জন্য লড়ে যাচ্ছি যে আমার আর কোনো পথ খোলা নেই”।

২২ বছরের ডেভিড হগ কথাটি বলেছিলেন ২০১৮ সালে, আমেরিকার এক স্কুলে পড়াকালীন বন্দুকের গুলি থেকে কোনোক্রমে রক্ষা পেয়ে কিছুদিনের মধ্যেই দেশব্যাপী ইয়ুথ আন্দোলনে নেতৃত্ব দেবেন তিনি। আশা বা প্রত্যাশা এই প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা রাখে না, দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে, তাদের আর তাই পথে নামা ছাড়া উপায় নেই, এমন বার্তাই বিশ্বের মানুষকে দিতে চেয়েছিল তরুণ নেতা হগ। তাঁর কথার সঙ্গে ভারত, বাংলাদেশ, নেপাল বা আফ্রিকার তরুণ তরুণীরা একমত হয়েছিল কি? আজকের জেন জি, যাদের সাথে গেমিং, আলস্য আর অনিদ্রার মতো ট্যাগ আকছার জুড়ে দেওয়া যায়,তারা নাকি রাস্তায় নেমে বিদ্রোহ করে রাজনীতির পটবদল ঘটাচ্ছে।

অন্তত গত চার-পাঁচ বছরে এই দৃশ্য দেখা গেছে অনেক দেশেই; Intense disillusionment বা চূড়ান্ত মোহভঙ্গই এই আন্দোলনের নেপথ্যে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত একটি সমীক্ষা দেখাচ্ছে যে বর্তমানে ১৮ থেকে ৩৫ বছরের ছেলেমেয়েরা রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার প্রতি কোনরকম আস্থা রাখতে পারছে না, হোক না তা গণতন্ত্র। এই জেন  জেড অর্থাৎ ১৯৯৭ থেকে ২০১০ এর মধ্যে জন্ম নেওয়া ও বেড়ে ওঠা প্রজন্ম, যারা একাধারে ডিজিটাল মিডিয়া, কোভিড, ক্লাইমেট চেঞ্জ বা প্রতিনিয়ত বদলে যাওয়া ভোগবাদের সাথে বড় হয়ে উঠছে, তাদের রাজনৈতিক ভাষ্য যে আগের প্রজন্মের থেকে আলাদা হবে, সেটা অত্যন্ত স্বাভাবিক। আমরা যেমন টিভি-রেডিওর আগের যুগ কল্পনা করি অত্যন্ত কষ্টে, তেমনি আজকের প্রজন্ম টাচস্ক্রিনের আগের সময় ফিরে যেতে পারে না চাইলেই। এই জেনারেশন জেড যখন পথে নেমেছে তাদের নানা দাবিদাওয়া নিয়ে, কেনিয়া, ইন্দোনেশিয়া, আমেরিকা, শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ ও সম্প্রতি নেপালে, তখন এই আন্দোলনের গতিপ্রকৃতির দিকে তাকানো যাক একবার।

আরও পড়ুন- কর্মক্ষেত্রেনারী পুরুষে বেতনের ফারাক! বৈষম্যের কারণ উঠে এল সমীক্ষায়

কেনিয়াতে ২০২৪ সালে আর্থিক বিলকে কেন্দ্র করে জেন জি আন্দোলন শুরু হয়, যার নাম দেওয়া হয় youthquake (তারুণ্যের ভূমিকম্প)। জনতার উপর ১৩.৫% কর থেকে ২০% কর চাপানোর প্রস্তাব গৃহীত হলে বোঝা যায় যে সাধারণ মানুষের করের টাকা আসলে IMF এর লোন পরিশোধ করতে সাহায্য করবে। প্রায় এই একই কারণে শ্রীলঙ্কাতেও ২০২২ সালে ইয়ুথ মুভমেন্ট হয়। ৪ বিলিয়ন ঋণ, এশিয়ান ব্যাংক, জাপান ও চিনকে ফেরত দিতে গিয়ে অর্থনীতির বেহাল দশা এবং শেষে আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারের উৎখাত হয় শ্রীলঙ্কায়। নেপালে সেপ্টেম্বর মাসেই হয়ে যাওয়া জেন জি মুভেনন্টকে প্রাথমিকভাবে তুচ্ছ ‘সোশ্যাল মিডিয়া ব্যান’ দেখিয়ে বিদ্রুপ করা হলেও দ্রুত বোঝা যাচ্ছিল যে এর শিকড় আরও গভীরে প্রোথিত। বেকারত্ব, কাজ না পেয়ে ভারত বা অন্যান্য প্রতিবেশী দেশে চলে যেতে বাধ্য হওয়া এবং তারই মধ্যে রাজনৈতিক নেতাদের স্বজনপোষণের ফলে এক ধরনের পরজীবী অর্কমন্য শ্রেণির উত্থান রাগিয়ে দিচ্ছিল নব্যযুবাদের। এই অরাজকতার মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যান আগুনে ঘি ঢালার মতো কাজ করেছে। শাসক জানে আজকের দিনে ফেসবুক বা টুইটারে গণআন্দোলনের ডাক দেওয়া হয়, তাই কি এই সিদ্ধান্ত? প্রশ্ন করেছেন বিদ্রোহীরা, উত্তরও দিয়েছেন তারা। রাস্তায় নামার আগে কী ভাবে সংঘবদ্ধ হতে হয় তার নিয়মকানুন বদলে গেছে গত কয়েক বছরে। আন্দোলনের শামিল হওয়ার প্রকরণও বদলেছে।

আফ্রিকার পুলিশ জেন জি আন্দোলন দমনের জন্য প্রথাগত পদ্ধতি বেছে নিয়েছিল। টিয়ার গ্যাস ছুঁড়ছিল, গ্রেফতার করছিল, লাঠিচার্জ করছিল। কিন্তু তারা অবাক হলেন যখন আঠেরো কুড়ির ছেলেমেয়েরা রাস্তায় নেমে প্রতিবাদের মধ্যেই সেলফি তুলছে, লাইভ করছে এবং তা সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দিচ্ছে সেই মূহুর্তেই। অর্থাৎ তাদের প্রতি পুলিসের আচরণ এবং রাষ্ট্রের প্রতিক্রিয়ার ছবি এক সেকেন্ডের মধ্যে ভারত বা রাশিয়ার এক তরুণ দেখতে পাবেন হাজার মাইল দূরে বসেও। চলমান আর্কাইভে ধরা থাকবে সরকারের অমানবিক ব্যবহার। সোশ্যাল মিডিয়া নিয়ে একধরনের নঞর্থক ব্যাখ্যা মোটামুটি সর্বস্তরেই গ্রহণযোগ্য। কিন্তু এর অন্যথা দেখা যায় জেন জি আন্দোলনে, এই সেপ্টেম্বর মাসেই নেপালের আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীরা বলেছে যে ফেসবুক বা টিকটক নেপালের শ্রেণিবৈষম্যকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়। সমাজের উচ্চবিত্তরা কী ভীষণ বিলাসবহুল জীবনচর্চায় মেতে থাকে, তারা বিদেশে গিয়ে কত কোটি টাকা ব্যয় করে ক্রুজে চড়ে, ব্যাগ বা জুতোর পেছনে লক্ষ টাকা খরচা করে আর তার ছবি যখন ফেসবুকে ভাইরাল হয় তা বেকার যুবক যুবতীদের রোষ বাড়িয়ে তোলে। তখন তারা ফেসবুকেই সেই রাগ জাহির করে। আবার সেই ফেসবুকই আন্দোলনের কথা ছড়িয়ে দিতে সাহায্য করে মধ্যবিত্তদের মধ্যে। সোশ্যাল মিডিয়া যেমন শ্রেণি-বিদ্বেষকে আরও মজবুত করে, তেমনই শ্রেণি-সংহতি তৈরি করতে সাহায্য করে। আজকের পঞ্চাশ বা ষাটোর্ধ বিদ্বজনদের কলমে যেভাবে সোশ্যাল মিডিয়া বিরোধিতা দেখা যায়, সেখানে আন্দোলন প্রসারে এই ধরনের প্ল্যাটফর্মের ভূমিকা,এমনকি ধীরে ধীরে রাগ পুঞ্জীভূত হয়ে বিদ্রোহের পথ প্রশস্ত করার কথাও তারা সহজেই এড়িয়ে যায়, এড়িয়ে যেতে চায়। নেপালে দশ হাজার তরুণ-তরুণী কোনোরকম ভোটকেন্দ্রে সশরীরে হাজির হয়নি, অনলাইন পোলে একটি ইন্টারিম সরকার তৈরি করে তারা। এই পোলিং সংঘটিত হয়েছে এক অনলাইন পোর্টালে, পোর্টালটি গেমারদের জন্য নির্মিত। রাতারাতি রাজনীতির পটবদল হয়ে যাচ্ছে অনলাইন ভোটে। সুতরাং সোশ্যাল মিডিয়া শুধু রিল, মিম বা অলস গেমিং এ সীমাবদ্ধ নেই আর। আন্দোলনের ডাক বা প্রচার ডিজিটাল মিডিয়ামে ভাইরাল হলেও রাস্তায় নেমে বিদ্রোহের তা বিকল্প নয়, বরং পরিপূরক। অর্থাৎ রাজপথে তরুণরা নামছে, এবং ফেসবুক, ইন্সটাগ্রাম তাদের সহযোগী; এই ডিজিটাল জনসংযোগের গুরুত্ব এখনও না বোঝা মানে কার্যত অন্ধ হয়ে থাকা। নতুন প্রজন্ম আর কিছু বুঝুক না বুঝুক, এই সংযোগের শক্তিটুকু বুঝেছে।

আরও পড়ুন- নেপালের জেন জি-র বিক্ষোভের কারণ, কারা এই নেপোকিডস?

আমরা দেখেছি বিশ বছরের ছেলেমেয়েরা জাপানি মাঙ্গা কার্টুনের কালো পতাকা উড়িয়েছে সরকারের বিরুদ্ধে। সম্প্রতি ইন্দোনেশিয়ার স্বাধীনতা দিবসে সেখানকার কলেজের ছাত্ররা জাতীয় পতাকার বদলে কালো পাইরেট পতাকা (পপুলার আইকন: জাপানি ওয়ান পিস কার্টুনের পতাকা) উড়িয়ে 'ডার্ক ইন্দোনেশিয়া' শ্লোগান তুলেছে। তাদের দাবি ছিল প্রেসিডেন্ট প্রাবো সুবিয়ান্তের বিরুদ্ধে, অতিরিক্ত কর আর যথেচ্ছ মিলিটারি মোতায়েনের বিরোধিতা করে। এই একই পাইরেট পতাকা সেপ্টেম্বরে নেপালি ছেলেমেয়েদের হাতে দেখা যায়। কীভাবে একটি কার্টুন পলিটিক্যাল রেজিস্টেন্সের অংশ হয়ে দাঁড়াল, তাও দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে, কাঁটাতার পেরিয়ে,সেই বোঝাপড়াই রাজনৈতিক আন্দোলনের চরিত্রকে আমূল বদলে দেয়। এটাও ভেবে দেখা প্রয়োজন, একটা চূড়ান্ত ভোগবাদী সমাজ, যেখানে বিনোদন, টিভি, OTT শুধুমাত্র মনোরঞ্জনের জন্যই বানানো হয়েছিল, সেখানে তার থেকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ চিহ্ন তুলে নিয়ে তাকে কীভাবে তুলে আনা হচ্ছে জনপ্রিয় প্রতিবাদে, এও সম্ভব বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে যাওয়া সোশ্যাল মিডিয়ার ভিডিওর দৌলতে। দেশ, জাতি, ধর্ম পেরিয়ে তরুণ-তরুণীরা একই সুরে, গানে বা ছবিতে প্রতিবাদের ভাষা খুঁজে পাচ্ছে।

ভিন্ন দেশের জেন-জি আন্দোলন কি হিংসাত্মক না অহিংসার পথ অবলম্বন করছে? কার্যত দুটোই। সেনেগাল, টোগো, ঘানা বা জিম্বাবুয়ের রাস্তায় তরুণ-তরুণীরা গণতান্ত্রিক উপায় বিদ্রোহ করে চলেছে। অন্য দিকে ইথিওপিয়া, সোমালিয়া বা লিবিয়ায় সশস্ত্র আন্দোলন দেখা যাচ্ছে। নেপালের ছাত্রবিপ্লব অত্যন্ত ধ্বংসাত্মক রূপ নিয়েছে। পার্লামেন্টে আগুন, সমস্ত সরকারি প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর করে তারা আন্দোলন উদযাপন করেছে সোশ্যাল মিডিয়াতে এসে। হাতে লাঠি, পিছনে দাউ দাউ করে আগুন আর তারই সামনে হাসিমুখে ছবি তুলে জয়ের বার্তা দিচ্ছে তারা সারা পৃথিবীকে। এ যেন ওয়াকিন ফিনিক্স এর জোকার ছবির দৃশ্য; হিংসা, আগুন ও বিজয়ের উদ্ধত, ফেটে পড়া হাসি। আবার এটাও মানতে হবে যে অন্যত্র জেন-জি আন্দোলন হয়েছে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতেই, মিছিল, মিটিং বা জমায়েত করে। কিন্তু সব ক্ষেত্রেই সরকারের দমনমূলক নীতিতে অদ্ভুত সাদৃশ্য। কারফিউ, জরুরি অবস্থা, সমস্ত ডিজিটাল মাধ্যমে নিষেধাজ্ঞা, ব্ল্যাকআউট, গ্রেফতার, গুম, মৃত্যু। শাসকের মুখ আসলে এক, যে দেশেই যাই না কেন।

আঞ্চলিক স্তরে হলেও এই প্রত্যেকটি আন্দোলনে আন্তর্জাতিক প্রাসঙ্গিকতা আছে। বিশেষ করে আফ্রিকা বা দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া, বলা যেতে পারে তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলিতে কেন এই ধরনের জেন জেড মুভমেন্ট গত কয়েক বছরে বেড়ে চলছে তা নিয়ে চর্চা তুঙ্গে। এখন পৃথিবীর কোনো দেশই তার রাষ্ট্রীয় কাঠামো বা অর্থনৈতিক সার্বভৌমত্ব বড় দেশগুলির ক্ষমতার নাগপাশ থেকে বেরিয়ে এসে নির্ধারণ করতে পারে না। নয়া উদারনীতিবাদ, কর্পোরেট ক্যাপিটালিজম ও ভোগবাদের দৌলতে বাংলাদেশ থেকে নেপালের বাজার নিয়ন্ত্রণ করে চলেছে আমেরিকা, চিন বা ইউরোপীয় সংস্থা। ভারত বা আফ্রিকার দেশগুলো বিংশ শতকে লড়েছিল স্বাধীনতার যুদ্ধ। ভারতের ভগৎ সিং বা দক্ষিণ আফ্রিকার এক সংগ্রামী তরুণ নেতার সামনে বিদেশি শত্রু ছিল সশরীরে; তাদের লুট, নৃশংসতা, বর্ণবিদ্বেষবাদ একেবারে চোখের সামনে প্রকট হয়েছিল। আজকের জেন জি-র যুদ্ধ সরলরৈখিক নয়। দেশে অধিষ্ঠিত দুর্বল সরকার আমেরিকা বা শক্তিশালী রাষ্ট্রের হাতে নিজের বাজারক ছেড়ে দিচ্ছে মুক্তহস্তে, চাকরি, জিনিসের দাম বা ন্যূনতম মজুরি কোনোটাই পাচ্ছে না সদ্য পড়াশোনা শেষ করা ছেলেমেয়েরা। ফলে যুদ্ধটা শুধু স্বদেশী-বিদেশী খোপে সীমাবদ্ধ থাকে না আর। আজকের বিদ্রোহ, বিপ্লব তাই ট্রান্সন্যাশানাল, আন্ত:রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার বিরুদ্ধে সার্বিক লড়াই।

আরও পড়ুন- শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ,নেপাল || বারবার গণবিক্ষোভ যা শেখাল

ছোট একটা উদাহরণ দেওয়া যাক, কয়েক বছর আগে কেনিয়া ৩০০ বিলিয়ন ডলার চিনের থেকে ধার নেয় তাদের স্ট্যান্ডার্ড গজ রেলওয়ে তৈরি করবার জন্য কিন্তু এই প্রজেক্টে চাকরি দেওয়া হয় মাত্র ৩০০০ যুবককে। এই রেলের বেশিরভাগ কাজই অটোমেটেড অর্থাৎ মেশিন পরিচালিত। আফ্রিকার মত দেশে যেখানে প্রত্যেক বছর প্রায় ১০ থেকে ১২ মিলিয়ন যুবক-যুবতী চাকরির বাজারে আসে, সেখানে এই ধরনের রেল যোগাযোগ তৈরি করেও তরুণদের কাজ দিতে না পারা একটা অসম্ভব ক্ষোভের জন্ম দেয়। কর্নেল ইউনিভার্সিটির আফ্রিকান স্টাডিজের গবেষক রাদোয়া সাদ বলছেন, আফ্রিকা বা তৃতীয় বিশ্বের দেশের আন্দোলনকে বুঝতে গেলে দেশের সীমারেখা পেরোতেই হবে। যেমন কঙ্গোতে খনিজ সম্পদ উত্তোলন করা হলে তা দিয়ে অস্ত্র তৈরি করে গাজায় যুদ্ধ চালানো হয়, তাই আজকের জেন-জির বিদ্রোহও আঞ্চলিক বা দেশীয় পরিসরে সীমাবদ্ধ থাকতে পারেনা। তাদের লড়তে হয় ক্লেপ্টোক্রেসির বিরুদ্ধে, যেখানে শুধুমাত্র ভ্রষ্ট রাজনীতিবিদ বা ক্রিমিনাল মব নয় বরঞ্চ একটা বহুমুখী দ্বন্দ্ব চলে বিদেশী আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধেও।

প্রশ্ন করতে ইচ্ছে করে, অদূর ভবিষ্যতে ভারতবর্ষেও যদি জেন-জি মুভমেন্ট হয় তাহলে বহু ভাষাভাষী, জাতপাত বা ধর্মের বিভেদ ঘুচিয়ে আজকের ছেলেমেয়েরা ঐক্যবদ্ধ হতে পারবে তো? অস্পৃশ্যতা, মব লিঞ্চিং, গৃহহিংসার দেশে তরুণ তরুণীরা বেকারত্ব, দুর্নীতি বা খাদ্যের প্রশ্নে সংঘবদ্ধ হবে? দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া নাকি এখন যুব আন্দোলনের উর্বর জমি। তাই, কালের ঘরে চোখ রেখে বসে আছি।

More Articles