পরপর দশবার হার্ট অ্যাটাক ঐন্দ্রিলার! শেষরক্ষা কি হবে না
Aindrila Sharma: ঐন্দ্রিলা শর্মার শারীরিক অবস্থার অবনতির খবরে ফের শুরু হয়েছে প্রার্থনা।
লড়তে লড়তে হেরে যাবেন ঐন্দ্রিলা? একের পর এক ঘটনার ঘনঘটায় ফের এই প্রশ্নেই উত্তাল সোশ্যাল দুনিয়া। প্রত্যেক মুহূর্তে চওড়া হচ্ছে আশঙ্কার মেঘ! কালো হয়ে আসছে অন্ধকার! তাহলে কি জিততে গিয়েও হেরেই যাবেন বছর ২৩ এর অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা শর্মা? এই প্রশ্নের দাবদাহ আর মারাত্মক দুশ্চিন্তার আবহের মধ্যেই ফের শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছে ঐন্দ্রিলার। বহরমপুরের মেয়ে ফের ১০ বার আক্রান্ত হয়েছেন হৃদরোগে! চিন্তা বাড়িয়ে ফের কমে এসেছে হৃদস্পন্দনের মাত্রা।
হাওড়ার বেসরকারি ওই হাসপাতাল সূত্রে খবর, শনিবার বিকেলের দিকে ফের একবার হৃদরোগে আক্রান্ত হন অভিনেত্রী। তাঁকে সিপিআর দেওয়া হয়। খুব কম হলেও সামান্য সাড়া দেন অভিনেত্রী। এরপরেই বাড়ানো হয় ভেন্টিলেশনের মাত্রা। অর্থাৎ যে কৃত্রিম যন্ত্রের সাহায্যে তিনি রয়েছেন, সেই যন্ত্র ঠিক কতটা প্রয়োজন, সেই মাত্রা বাড়িয়ে প্রায় ১০০ শতাংশ করা হয় বলে খবর। এই অশনিসংকেতর মধ্যেই ঐন্দ্রিলা সংক্রান্ত সমস্ত লড়াইয়ের পোস্ট ফেসবুক থেকে মোছেন অভিনেতা তথা ঐন্দ্রিলার প্রিয় বন্ধু সব্যসাচী চৌধুরী। বাড়ে জল্পনা। শুরু হয় ঐন্দ্রিলা নিয়ে টানাপড়েন।
আরও পড়ুন: কেন ঐন্দ্রিলাকে নিয়ে সমস্ত ফেসবুক পোস্ট মুছে দিলেন সব্যসাচী? বাড়ছে জল্পনা
হাসপাতালের ওই সূত্র ইনস্ক্রিপ্ট-কে জানিয়েছেন, শনিবার একবার নয় রাতের দিকে একাধিক বার হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছেন অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা। চিকিৎসক পরিবারের মেয়ে ঐন্দ্রিলার শারীরিক অবস্থা খারাপ হয়েছে আরও। একদিকে সংক্রমণ অন্যদিকে ফের হৃদস্পন্দনের মাত্রা হুহু করে কমতে থাকা বাড়িয়েছে আশঙ্কা। এমনকি প্রায় ১০ বার নাকি কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়েছে ঐন্দ্রিলার।
প্রসঙ্গত, এখনও পর্যন্ত অচেতন রয়েছেন অভিনেত্রী। তাঁর জ্ঞান আসা তো দূর শনিবার থেকে একাধিক সমস্যায় আরও ঘোরালো হয়েছে পরিস্থিতি। চিকিৎসকদের চেষ্টা চলছে নিরন্তর। কিন্তু রবিবারের যা পরিস্থিতি, তাতে ফের মিরাকল ঘটুক, এমনটাই চাইছেন চিকিৎসকদের একটা বড় অংশ।
প্রসঙ্গত, গত ১ নভেম্বর আচমকা জ্ঞান হারান অভিনেত্রী।সেদিনই তাঁকে ভর্তি করানো হয় হাওড়ার বেসরকারি হাসপাতালে। সেখানেই হয় অস্ত্রোপচার। মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণজনিত সমস্যা শুরু হয়। ভেন্টিলেশনে দেওয়া হয় ঐন্দ্রিলাকে। এরপর সপ্তাহখানেক পর পরিস্থিতি ভালো হয়। ১৪ নভেম্বর ফের আসে ভালো খবর। কিন্তু ১৭ নভেম্বর সকালে হৃদরোগে আক্রান্ত হন তিনি। পরিস্থিতি খারাপ যায়। সেই যাত্রায় প্রাণ বাঁচে অভিনেত্রীর। ১৮ নভেম্বর মধ্যরাতে তাঁর মৃত্যুর গুজব ছড়ায়। ১৯ নভেম্বর সকলের দিকে পরিস্থিতি তুলনামূলক ভালো থাকলেও বিকেলে হঠাৎ খারাপ হয় সবটা। আবার বিপদের দিকে এগিয়ে যান অভিনেত্রী। ২০ তারিখের অবস্থাও প্রায় এক। বরঞ্চ বিপদ বেড়েছে আরও।
ঐন্দ্রিলা শর্মার শারীরিক অবস্থার অবনতির খবরে ফের শুরু হয়েছে প্রার্থনা। সোশ্যাল দুনিয়া জুড়ে শুরু হয়েছে অভিনেত্রীকে ঘিরে পোস্ট। সকলের একটাই প্রার্থনা, ফিরে এসো ঐন্দ্রিলা!
এই প্রার্থনা ঐন্দ্রিলা শর্মা হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর থেকেই দেখা গিয়েছে। প্রত্যেক মুহূর্তে তারকা জগৎ থেকে শুরু করে সাধারণ জনতা, প্রত্যেকেই মশগুল থেকেছেন অভিনেত্রীর সুস্থ হওয়ার আবেদনে। এমনকি বহরমপুরের অলিগলিতে চলেছে পুজো। মন্দির, মসজিদে প্রার্থনায় সরব হয়েছেন অগণিত সাধারণ মানুষ। অনেকেই বলেন, বাংলার বিনোদুনিয়ায় এই ছবি এর আগে খুব কম দেখা গিয়েছে। যেখানে একজন ধারাবাহিকের অভিনেত্রীকে নিয়ে এই ব্যতিব্যস্ততা মারাত্মক হয়েছে।
যদিও অভিনেত্রীর বিশেষ বন্ধু সব্যসাচীর দিন কাটছে হাসপাতালেই। একটা সময় অভিনেতাকে রাখা হয়েছে ঐন্দ্রিলার শয্যার কাছেই। কারণ হিসেবে জানা যায়, সব্যসাচী স্পর্শে খানকিটা সাড়া দিচ্ছেন ঐন্দ্রিলা। এমনকি একাধিকবার বিভিন্ন খবর নিয়ে হাজির হয়েছেন সব্যসাচী। শনিবার গভীররাতে তিনি বিস্তারিত জানান অভিনেত্রীর শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে। কিন্তু বেলা বাড়তেই সেই সমস্ত পোস্ট ডিলিট করেন সব্যসাচী। ফের শুরু হয় আলোচনা। তাহলে কি ফের খারাপের দিকে যাচ্ছেন ঐন্দ্রিলা? এই সমস্ত জল্পনার মধ্যেই হাওড়ার বেসরকারি হাসপাতাল সূত্রও শোনাল খারাপ খবর!
মুর্শিদাবাদের বহরমপুর শহরে জন্ম অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা শর্মার। বাবা উত্তম শর্মা চিকিৎসক। মা নার্সিং কলেজের ওয়ার্ডেন। দিদিও চিকিৎসক। কিন্তু ঐন্দ্রিলা চিকিৎসক নয়, হতে চান শিল্পী। ছোটবেলা থেকেই ভালো নাচ করতেন তিনি। কিন্তু যখন একাদশ শ্রেণিতে পড়ছেন মেয়েটি, ঠিক সেই সময়েই জানা গেল মারণরোগ ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েছেন ঐন্দ্রিলা। শুরু হল নতুন লড়াই। ফের জিতলেন তিনি। ফিরে এলেন। মাত্র ১৮ বছর বয়সেই পা পড়ল কলকাতায়। সুযোগ পেলেন ধারাবাহিকে অভিনয় করার। ঝুমুর ধারাবাহিকে কাজ শুরু করলেন। সেখান থেকেই পরিচয় হল সব্যসাচীর সঙ্গে।
এরপর আবার! সুখের সময় ফের হানা দিল ক্যান্সার।এবারও নতুন লড়াইয়ে নামলেন তিনি। সঙ্গে সব্যসাচী, আর তাঁর পরিবার। চলল যুদ্ধ। খানিকটা জিতলেন ঐন্দ্রিলা। ফিরলেন নতুন করে। কিন্তু সুখ আর সইল কই! আবারও মৃত্যুর মুখোমুখি হলেন অভিনেত্রী!