হুবহু পৃথিবীর মতো দেখতে নয়া গ্রহ, মিলতে পারে প্রাণের সন্ধান! যে তথ্য উঠে এল গবেষণায়

New earth sized planet : বর্তমানে সন্ধান পাওয়া K2-415b প্ল্যানেটটির ক্ষেত্রে গবেষকরা কেপলার টেলিস্কোপ থেকে ডেটা বিশ্লেষণ করার সময় নতুন তারকাটিকে খুঁজে পেয়েছেন।

মহাকাশ মানেই নিরন্তর রহস্য। খালি চোখে যার আঁচ অবধি করা যায়। কিন্তু সেখানেই প্রতিনিয়ত ঘটে চলেছে নানা কিছু। মহাকাশে ঘটে চলা ঘটনা প্রবাহের জেরেই তো পৃথিবীতে প্রাণের অস্তিত্ব। তবে বর্তমান যুগে প্রায়শই শোনা যায় পৃথিবীতে থাকতে থাকতে হাঁপিয়ে উঠে মঙ্গল গ্রহে অথবা চাঁদে জমি কেনার কথা ভাবছেন অনেকেই। এরকম বেশ কিছু খবর প্রকাশ্যে এসেছে বারবারই। মহাকাশে পৃথিবী বাদে অন্য আর কোথাও বাসস্থানের পরিবেশ আছে কিনা সেই নিয়েও চলেছে নিরন্তর গবেষণা।

এইসবের মধ্যেই সম্প্রতি একটি খবর আরও উস্কে দিয়েছে চর্চাকে। জানা গিয়েছে, জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের আন্তর্জাতিক একটি দল সম্প্রতি মহাকাশে ‘K2-415b’ নামক একটি গ্রহের অস্তিত্ব নিশ্চিত করেছে। পৃথিবী থেকে মাত্র ৭২ আলোকবর্ষ দূরে একটি এম বামন নক্ষত্রকে ঘিরে প্রদক্ষিণ করছে এই এক্সোপ্ল্যানেটটি। আরও জানা গিয়েছে, এটি নাকি আকারেও পৃথিবীর প্রায় সমান।

খবরটি সামনে আসতেই, মহাকাশ চর্চায় একটি নতুন দিক খুলে গিয়েছে। আকারে পৃথিবীর মতো, আবার সেই একই ভাবে এই গ্রহটিও তার নক্ষত্রের চারিপাশে প্রদক্ষিণ করছে, তাহলে কি অদূর ভবিষ্যতে সেখানেও বসবাসের সম্ভাবনা রয়েছে? ভাবাচ্ছে এই সবই। এই এক্সোপ্ল্যানেটটি এবং নক্ষত্রটিকে নিয়ে বিজ্ঞানীরা বেশ কিছু পরিসংখ্যানও সংগ্রহ করেছেন ইতিমধ্যেই এবং ফলাফলগুলি arXiv প্রিপ্রিন্ট সার্ভারে পোস্ট করেছেন।

আরও পড়ুন - থেমে গেল পৃথিবীর কেন্দ্রের ঘূর্ণন! উলটোদিকে ঘুরছে গ্রহের কেন্দ্র, কোন আশঙ্কার মুখে মানুষ?

তবে এই গ্রহে প্রাণের অস্তিত্ব আছে কিনা অথবা ভবিষ্যতে সেই সম্ভাবনা আছে কিনা সেই বিষয়ে এখনও নিশ্চিত হতে পারেনি বিজ্ঞানীরা। তবে প্রচেষ্টা চলছে। ওই বামন নক্ষত্রকে ঘিরে প্রদক্ষিণ করছে এমন আরও কোনও গ্রহ থাকলে, তাদের ওপর মাধ্যাকর্ষণ শক্তির প্রয়োগের মাধ্যমে এই ধরনের নক্ষত্রকে প্রদক্ষিণ করা অন্যান্য গ্রহগুলিকেও সনাক্ত করা যেতে পারে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।

এখানেই শেষ নয়, এর পরে, ওই নক্ষত্রের সাপেক্ষে গ্রহের অবস্থান নির্ধারণ করা হয়। গ্রহের বায়ুমণ্ডলের মধ্য দিয়ে যাওয়া নক্ষত্রের আলো, সেই বায়ুমণ্ডলের গঠন সম্পর্কে আরও জানতে ব্যবহার করা যেতে পারে। এছাড়াও, গ্রহ দ্বারা অবরুদ্ধ আলোর পরিমাণ গ্রহের আকার গণনা করতেও ব্যবহার করা হয়। সর্বোপরি গ্রহটি ওই নক্ষত্র থেকে কতটা দূরে অবস্থান করছে তাও জানা যায়। এবং এই সব তথ্যের ওপর ভিত্তি করে বিজ্ঞানীরা একটা সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারেন।

বর্তমানে সন্ধান পাওয়া K2-415b প্ল্যানেটটির ক্ষেত্রে গবেষকরা কেপলার টেলিস্কোপ থেকে ডেটা বিশ্লেষণ করার সময় নতুন তারকাটিকে খুঁজে পেয়েছেন। তারা TESS থেকে তথ্য অধ্যয়ন করে অনুসন্ধানের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। K2-415b, এবং এর হোস্ট নক্ষত্র অধ্যয়ন করে, গবেষণা দলটি জানিয়েছে যে, এর আকার পৃথিবীর খুব কাছাকাছি, যদিও এর ভর অনেক বেশি। এবং এটি তার হোস্ট নক্ষত্রটির থেকে কম দূরত্বের মধ্যেই প্রদক্ষিণ করছে। রয়েছে নির্দিষ্ট একটি কক্ষপথও। পৃথিবীর হিসেবে প্রায় চারদিন সময় নেয় প্রদক্ষিণ করতে। যেহেতু হোস্ট নক্ষত্রের খুব কাছাকাছি একটি কক্ষপথে অবস্থান করছে গ্রহটি, তাই গবেষকরা আশার আলো খুঁজে পেয়েছেন। মনে করা হচ্ছে, এই কারণেই এটি বাসযোগ্য হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। যদিও এক্ষেত্রে হোস্ট নক্ষত্রটি সূর্যের চেয়ে অনেক বেশি শীতল। তবে উক্ত গ্রহটির একটি বায়ুমণ্ডল রয়েছে বলেও মনে করেছেন বিজ্ঞানীরা। তাই সব মিলিয়ে এই হদিশ মহাকাশ বিজ্ঞান একটি নতুন দিক খুলে দিয়েছে যে, তা বলাই বাহুল্য।

More Articles