হাজার বছরের পুরনো মমির গায়ে লেগে আছে ত্বক! পেরুর যে ঘটনায় শিউরে উঠবেন আপনিও

Peru mummy : ১০০০ বছর পুরনো মমির গায়ে লেগে ত্বক ও চুল! পেরুতে পাওয়া নয়া আবিষ্কার ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে ইতিমধ্যেই

হাতে গোনা কয়েক বছর নয়, ইতিহাস বলছে এর বয়স প্রায় হাজার বছর। এতগুলো দিন ধরে ওখানেই শায়িত ছিল এমনই একটি মমির সন্ধান মিলেছে সম্প্রতি। যদিও এ ঘটনা বিশেষ কিছুই নয় তবে, বিশেষ যেটা, তা হয় মমির শরীরে এখনও লেগে আছে ত্বক, এমনকী লোমের অংশও। ঘটনা সামনে আসতেই রীতিমতো চোখ কপালে তুলেছেন খোদ বিজ্ঞানীরাও। কীভাবে এত এত বছর পরও ত্বক এবং লোমের অস্তিত্ব পাওয়া গেল সেই নিয়ে গবেষণাও শুরু হয়েছে ইতিমধ্যে।

আধুনিক সময়ে দাঁড়িয়ে ইতিহাসের সঙ্গে হঠাৎ মুলাকাত হলে এমন বেশ কিছু আশ্চর্য্য ঘটনা সামনে আসে যার প্রভাব পড়তে পারে বিশেষ চমকপ্রদ। সম্প্রতি পেরুতে পাওয়া এই মমির হদিশও তাই ব্যতিক্রম কিছুই নয়। তবে আশ্চর্যজনক তো বটেই।হাজার বছরের পুরনো এই বিশেষ মমির সন্ধান মিলেছে পেরুর রাজধানী শহর লিমা থেকে কিছুটা দূরে। পুরাতত্ত্ববিদরা আবিষ্কার করেন মমিটি। সময় যাচাই করে দেখা গিয়েছে সুপ্রাচীন ইনকা সভ্যতারও আগে সমাধিস্থ করা হয়েছিল মমিটি।মমির আকার আকৃতি দেখে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এটি কোনও কিশোরের মমি।

মমি সম্পর্কে সাধারণ ধারণা যেমনটা, ঠিক তেমনই মাটির নিচে অস্তিত্ব মেলে এর। মাটির নিচে সংরক্ষণের জন্য নির্দিষ্ট কাপড়ে মুড়িয়ে রাখা ছিল দেহটি। সঙ্গে ছিল সংরক্ষণের নানা দ্রব্যও। পাশাপাশি ছিল সেরামিক ও দড়িও। তবে এটুকু মধ্যে আশ্চর্যের কিছুই নেই, কিন্তু এতবছর পরও ওই দেহাংশে ত্বকের অংশ ও চুলের হদিশ কীভাবে মিলতে পারে সে নিয়েই চলছে জোরদার তরজা। সম্প্রতি নেট মাধ্যমে ভাইরালও হয়েছে এই ঘটনাটি।

আরও পড়ুন - মৃত্যুর পরেও মেলেনি কবর! কীভাবে আত্মহত্যা করেছিলেন রহস্যময়ী ক্লিওপেট্রা?

জানা গিয়েছে এমন ঘটনা বিশ্বের ইতিহাসে বিরল। ১০০০ বছর পরও কিশোরের দেহ যে অবস্থায় পাওয়া গিয়েছে তা এর আগে কখনও সম্ভব হয়নি।পুরাতত্ত্ববিদ ওমিরা হুয়ামান এই বিশেষ প্রকল্পের দায়িত্বে রয়েছেন। এমনিতে পাহাড়ের চূড়ায় গড়ে ওঠা মাচু পিচুর ইনকা সভ্যতার জন্য বিখ্যাত পেরু। তবে এর আগে হিসপ্যানিক পূর্ববর্তী সংস্কৃতির জন্যও বিখ্যাত ছিল এই এলাকা। এরপর ধীরে ধীরে ক্ষমতায় আসে ইনকা সভ্যতার সম্রাটরা। মূলত দেশের তীরবর্তী এলাকা ও অ্যান্ডেসেই এই সভ্যতা বিস্তারলাভ করতে থাকে।

এখনও পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী ওই কিশারের মমিটি আজ থেকে প্রায় ১১০০ থেকে ১২০০ বছর আগেকার, বলেই দাবি পুরাতত্ত্ববিদদের। সম্ভবত লাইমা বা ইচমা সভ্যতার সময় এই কিশোরটি জন্মেছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে। যদিও এই ঘটনা এই প্রথম নয়, গত বছরই সাজামারকুইলাতে পাওয়া গিয়েছিল এমনই একটি প্রাচীন মমির হদিশ। আজকের পাওয়া মমিটির থেকে তার দূরত্বও বেশ কম, ওই ২০০ মিটারের কাছাকাছি। শুধু তাই নয়, রহস্যের হদিশ পাওয়া মাত্রই ওই এলাকার খনন কার্যে হাত লাগান পুরাতত্ববিদরা।

ইতিমধ্যেই পাওয়া গিয়েছে, প্রায় আটটি শিশু ও বারোটি কিশোরের দেহাবশেষ। চাঞ্চল্যকর দিকটি হল প্রতি ক্ষেত্রেই দেহগুলি পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, সেগুলি প্রায় ৮০০ থেকে ১২০০ বছর আগের। মনে করা হচ্ছে, এই দেহগুলি সেই সময়ে উৎসর্গ করা হয়েছিল। এবং সংরক্ষণের ক্ষেত্রেও বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হতো সেই সময়। সম্প্রতি উঠে আসা কিশোর মমির আবিষ্কার গবেষণায় নয়া মোড় যে আনবে সে বিষয়েও নিশ্চিত বিজ্ঞানীরা। হাজার বছর ধরে মাটির নিচে শায়িত থাকা ইতিহাসও যে বাসিবের মাটিতে দাঁড়িয়ে ফের প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠতে পারে, এমনকী বিজ্ঞানকেও সরাসরি প্রশ্ন ছুঁড়তে পারে তার প্রমাণ মেলে এই ঘটনায়।

More Articles