"মিমিকে আমার ঘরে পাঠিয়ে দেওয়া হলে...", ধর্ষণের হুমকি থেকে রেহাই নেই মিমিরও!

Mimi Chakraborty Rape Threat: মিমিকে আমার ঘরে পাঠিয়ে দেওয়া হলে আমি দিয়ে দেব ১০ লাখ ওঁর পরিবারকে।” গোটা পোস্টটিই অশ্রাব্য অশ্লীল শব্দে ভরপুর!

বিচার চাইতে গিয়ে ঠিক যে কীসের বিচার চাইছেন মানুষ তা গুলিয়ে যায় অনেক সময়। ধর্ষণের মতো ইস্যুকে 'হুজুগ' বানিয়ে তোলা অনেকেই তাই একইসঙ্গে 'উই ওয়ান্ট জাস্টিস'ও বলছেন, আবার কোন কোন মেয়েদের জন্য ধর্ষণ বাড়ছে এই জাতীয় খাপও বসাচ্ছেন সোশ্যাল মিডিয়াতে। একইসঙ্গে আরজি করের নির্যাতিতা তাঁদের 'বোন' হয়ে উঠছেন, আর অন্য মেয়েরা 'রাস্তার'! রাজনৈতিক বিরোধিতা করতে গিয়ে আখেরে মহিলাকেই নিশানা করছেন অনেকে। যেমন নিশানায় এসেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাক্তন সদস্য, সাংসদ এবং অভিনেত্রী মিমি চক্রবর্তী। ১৪ অগাস্ট মেয়েদের রাত দখলের কর্মসূচিতে পথে নেমেছিলেন মিমি। রাজনৈতিকভাবে তাঁর বিরোধিতা করা যেতেই পারে, তাঁকে ব্যক্তিগতভাবেও কারও পছন্দ নাই হতে পারে। তা বলে একটি ধর্ষণের বিরোধিতা করতে গিয়ে আরেকটি ধর্ষণের ডাক! সোশ্যাল মিডিয়াতে এমনই পোস্ট করা হয়েছে মিমিকে নিয়ে!

মঙ্গলবার, ২০ আগস্ট মিমি সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করেছেন, আরজি করের ধর্ষণ-খুন মামলার প্রতিবাদে পোস্ট করার পরে ধর্ষণের হুমকি পেয়েছেন তিনি। অশালীন মেসেজের তো ইয়ত্তা নেই! ওই পোস্টে কলকাতা পুলিশের সাইবার সেল বিভাগকেও ট্যাগ করেছেন মিমি। মিমি লিখেছেন, “আর আমরা নারীদের জন্য ন্যায়বিচার দাবি করছি? এ তো মাত্র কয়েকটা উদাহরণ, যেখানে ধর্ষণের হুমকিকে স্বাভাবিক করে তোলা হয়েছে! টক্সিক পুরুষরা ভিড়ের মধ্যে মুখোশ পরে এসে বলছে যে তারা মহিলাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। এই তাঁদের বেড়ে ওঠার শিক্ষা?”

মিমির পোস্ট:

 

যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্রের প্রাক্তন সাংসদ মিমি চক্রবর্তী আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসক-পড়ুয়ার ধর্ষণ মৃত্যুর প্রতিবাদে ১৪ অগস্ট মধ্যরাতে পথে নেমেছিলেন। সোশ্যাল মিডিয়াতে কদর্যভাষায় অপদস্থ করা হলো মিমি চক্রবর্তী। সরাসরি ধর্ষণের হুমকি পাচ্ছেন একজন প্রাক্তন সাংসদ! আমাদের রাজ্যে ধর্ষিতাদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয় ১০ লক্ষ টাকা। সেই মতো আরজি করের মৃতার পরিবারকেও ১০ লক্ষ টাকা সাহায্য দেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মেয়ে হারানোর 'ক্ষতি' ১০ লাখ টাকা নিয়ে পূরণ করতে চাননি নির্যাতিতার বাবা-মা।

এই ক্ষতিপূরণ প্রসঙ্গেই মিমি চক্রবর্তীকে সরাসরি ধর্ষণের হুমকি দিয়েছেন এক ব্যক্তি। ওই ব্যক্তি স্পষ্ট লিখছেন, “আজ যদি এই ঘটনা মিমির সঙ্গে ঘটত তাহলে কী করত? মিমির পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা দিত নাকি? মিমিকে আমার ঘরে পাঠিয়ে দেওয়া হলে আমি দিয়ে দেব ১০ লাখ ওঁর পরিবারকে।” গোটা পোস্টটিই অশ্রাব্য অশ্লীল শব্দে ভরপুর!

আরেকজন আবার পোস্ট করেছেন, “রেপটা মিমির সাথে হলে ভালো হতো"! ধর্ষণের সংস্কৃতিকে সোশ্যাল মিডিয়া কোন স্তরে নিয়ে গেছে তা খুব স্পষ্ট। তারকাদের প্রতি বিভিন্ন কারণেই মানুষ ক্ষুব্ধ থাকেন। তারকাদের আক্রমণ করার মধ্যে দিয়ে 'ইগো' শান্ত করা নতুন বিষয়ও না। কিন্তু ধর্ষণের হুমকি একটি অপরাধ! মিমির পাশে দাঁড়িয়ে চলচ্চিত্র পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায় পোস্ট করেন, "সেলেবদের ঘৃণা করুন কিন্তু ভেবেচিন্তে। জেলে ইন্টারনেট নাও পেতে পারেন।’

More Articles