লরার ক্যাচ হাতের মুঠোয়, ২০২৫-এর কপিল অমনজ্যোৎ
ICC Women's World Cup India 2025: দু'বার ফসকে যাওয়া ক্যাচও কেউ ধরতে পারে! গভীর সংকল্পে স্থিত আর ভাগ্যদেবীর স্নেহধন্যা দামাল মেয়ে অমনজ্যোতের কথা লেখা থাকবে পাঠ্যবইয়ের পাতায়।
১৯৮৩ সালের ২৫ জুন। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে বিশ্বকাপ ঘরে আনে টিম ইন্ডিয়া। সেই দৃশ্য দেখেছেন এমন ভারতীয়কে যদি জিজ্ঞেস করা হয়, চোখকান বুজে বলবেন, টার্নিং পয়েন্ট ছিল কপিল দেবের ক্যাচ। বিশ্বকাপে ১৭ উইকেট নেওয়া মদন লাল বিশ্বাস করতে পারেননি কপিল এই অসাধ্যসাধন করতে পারবেন। ৪২ বছর পর নভি মুম্বইয়ে সেই মহাকাব্য পুনরাভিনয় হলো। এবারেও একজন প্রটাগনিস্ট পাঞ্জাবি, অমনজ্যোৎ কৌর।
সেমিফাইনালের ধারা বজায় রেখে ফাইনালেও শুরু থেকে দাপট দেখাচ্ছিলেন লরা উলভার্ট। যেভাবে নিখুঁত নিশানায় বল মাঠের বাইরে পাঠাচ্ছিলেন, বোঝা যাচ্ছিল তিনি সংকল্পে অবিচল, বড় স্বপ্নে স্থির। আনেরি ডের্কসনের সঙ্গে জুটি বেঁধে জয়ের দিকে এগোচ্ছিলেন জেটগতিতে। সেঞ্চুরি করেও এতটুকুও আবেগ দেখাননি।
আসমুদ্রহিমাচল তখন ভাবছে, ম্যাচটা মাঠে ফেলে আসতে হবে? পঁচিশ বছরের অপেক্ষার ফয়সলা আজও হবে না? ঠিক তখনই অঘটন। দ্রুত ফিনিশ করতে বড় শট হাঁকাত চাইলেন উলভার্ট।
ব্যাট হাতে ৫৮ রান করেছিলেন দীপ্তি শর্মা। তবে প্রতিশোধের আগুন তখনও সবটা জ্বলেনি। দীপ্তির বল হাওয়ায় ভাসালেন উলভার্ট। বল যখন শূন্যে গোটা ভারত জানত, এই ক্যাচ মিস করলে ম্যাচ মাঠে রেখে আসতে হবে। দুবার হাত ফসকালো, ফসকালো না মনসংযোগ। শেষ মুহূর্তে বলটাকে আঁকড়ে ধরলেন। সেই সময়টুকু লাখো মানুষের প্রাণের স্পন্দন থেমে গিয়েছিল। আর তারপর, করতালি, উল্লাস, আতসবাজির উৎসব। আর খেলা ঘুরে গেল সেখান থেকেই। তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ল দক্ষিণ আফ্রিকা।
মদন লাল কপিলের ১৯৮৩ সালের ক্যাচ সম্পর্কে পরে বলেছিলেন, ‘‘সেটাই ছিল ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট। আমি চোখ বন্ধ করেছিলাম। ভাবিইনি কপিল ক্যাচটা নিয়ে নেবে। এমনকী বিশ্বকাপ জয়ের কয়েক বছর পরে যখন ম্যাচের ভিডিও দেখছি, বিশ্বাস করতে পারিনি কপিল এ রকম একটি ক্যাচ নিয়েছে।’’
অনেক অনেক বছর পর রিচা, স্মৃতিরাও নিশ্চয়ই এমন, মদন লালের মতোই সাক্ষাৎকার দেবেন। বলবেন, দু'বার ফসকে যাওয়া ক্যাচও কেউ ধরতে পারে! গভীর সংকল্প আর ভাগ্যদেবীর স্নেহধন্যা দামাল মেয়ে অমনজ্যোতের কথা লেখা থাকবে পাঠ্যবইয়ের পাতায়।

Whatsapp
