কলাপাতা ফেলে প্রতিবাদ! বিজেপির বনধে রাজ্যজুড়ে কোথায় কোথায় বিপর্যস্ত ট্রেন পরিষেবা?
BJP Bangla Bandh: সকাল থেকেই বিভিন্ন স্টেশনে ট্রেনের ওভারহেড তারে কলাপাতা ফেলে ট্রেন চলাচল বন্ধ করার চেষ্টা করেছেন বিজেপির কর্মীরা
আরজি করে তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ ছাত্রসমাজ। সেই মিছিলে পুলিশের জুলুমের বিরুদ্ধে বুধবার বনধের ডাক দেয় বিজেপি। কলকাতা তো বটেই, বিভিন্ন জেলাতেও এই বনধের প্রভাব পড়েছে। ব্যাপক পরিমাণে রেল অবরোধ করছেন বিজেপি সমর্থকেরা। বুধবার সকাল থেকেই বিভিন্ন স্টেশনে ট্রেনের ওভারহেড তারে কলাপাতা ফেলে ট্রেন চলাচল বন্ধ করার চেষ্টা করেছেন তাঁরা। ব্যারাকপুর রেল স্টেশন সংলগ্ন ১৪ নম্বর রেলগেটের কাছে বিজেপি রেল অবরোধ করে। বিজেপি নেতা কৌস্তভ বাগচী, ব্যারাকপুর সাংগঠনিক জেলা বিজেপি সভাপতি মনোজ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে সকাল সাড়ে ৬টা থেকেই রেল অবরোধ শুরু হয়। সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে শিয়ালদাহ রানাঘাট শাখার ট্রেন চলাচল। বিভিন্ন স্টেশনে দাঁড়িয়ে পড়ে আপ- ডাউন লোকাল ট্রেন এবং দূরপাল্লার ট্রেনগুলি। ব্যারাকপুর স্টেশনে বিজেপির মিছিলকে কেন্দ্র করে অশান্তি ছড়ায়। বিজেপির মিছিলকে ধাওয়া করেন তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা। রেল লাইন ধরে ছুটতে দেখা যায় বিজেপি নেতা কৌস্তভ বাগচীকে। পরে পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে।
মানকুণ্ডু স্টেশনে বিজেপির কর্মীরা রেল অবরোধ করলে বেশ কিছুক্ষণ স্টেশনে আটকে পড়ে ডাউন এবং আপ লাইনের ট্রেন। পরে পুলিশ এসে বিক্ষোভকারীদের হটাতে শুরু করলেই উত্তেজনা ছড়ায়। বিজেপি কর্মীদের হটাতে পুলিশ লাঠিচার্জ শুরু করে। ছোড়া হয় কাঁদানে গ্যাসও।
বনগাঁ, হাওড়া-ব্যান্ডল, কাটোয়াতেও রেল পরিষেবা ব্যাহত হয়েছে বনধের জেরে। সকাল ৬টা নাগাদ বনগাঁ উত্তরের বিধায়ক অশোক কীর্তনীয়ার নেতৃত্বে বিজেপির কর্মী সমর্থকরা বনগাঁ স্টেশনে অবরোধ করে দেন। শিয়ালদহ-হাসনাবাদ লাইনেও ব্যাহত হয় পরিষেবা। বসিরহাট ভ্যাবলা স্টেশনে রেল অবরোধ করে বিজেপি, যার জেরে ডাউন হাসনাবাদ ও শিয়ালদা ডাউন লোকাল দাঁড়িয়ে রয়েছে স্টেশনে। বিজেপির ডাকা এই ১২ ঘণ্টা বন্ধের সমর্থনে পুরুলিয়া রেল স্টেশনের রেলপথে দাঁড়িয়ে বিজেপি কর্মীরা স্লোগান দিতে থাকায় কিছুক্ষণের জন্য পুরুলিয়া টাটা, পুরুলিয়া আদ্রা ও পুরুলিয়া রাঁচি লাইনে ব্যাহত হয় ট্রেন চলাচল। পরে পুলিশ গিয়ে বিজেপি কর্মীদের সরিয়ে দেয়, স্বাভাবিক ছন্দ ফিরে পায় ট্রেন চলাচল।
আরও পড়ুন- বনধে উত্তাল বাংলা! ভাটপাড়ায় গুলি! কোচবিহার থেকে আসানসোল, কোথায় কী পরিস্থিতি?
হুগলি, কাটোয়া, শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখা, মুর্শিদাবাদ, কৃষ্ণনগরে প্রভাব পড়েছে ট্রেন চলাচলে। বিভিন্ন লাইনে দাঁড়িয়ে আছে লোকাল ট্রেন। বিজেপির ডাকা বন্ধে সকালেই রেল অবরোধ হয় হুগলি স্টেশনে। ব্যান্ডেল-হাওড়া লোকাল আটকেছেন বিজেপি কর্মী সমর্থকরা। রেললাইনে শুয়ে পড়েন বিজেপি কর্মীরা।
মুর্শিদাবাদেও ট্রেন অবরোধ করে বিজেপি। প্রথমে জিয়াগঞ্জ স্টেশনে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন বন্ধ সমর্থকেরা। মুর্শিদাবাদ স্টেশনে বিজেপি কর্মীরা ডাউন ভাগীরথী এক্সপ্রেস আটকে দেন। পুলিশ এসে অবরোধকারীদের সরাতে চেষ্টা করলে পুলিশের সঙ্গে ঝামেলায় জড়ান বিজেপির কর্মীরা। পুলিশ অবশেষে বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে ভাগীরথী এক্সপ্রেসকে মুর্শিদাবাদ স্টেশন থেকে রওনা করায়। তবে আবার বহরমপুর স্টেশনে এই এক্সপ্রেসকে আটকান বিজেপির বন্ধ সমর্থকরা।
রামপুরহাট স্টেশনেও রেল অবরোধ। রামপুরহাট-বর্ধমান প্যাসেঞ্জার ট্রেন আটকে দেয় বিজেপির বিক্ষোভকারীরা। ট্রেনের সামনে বসে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন তারা। সকাল থেকে ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয় শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখাতেও। লক্ষ্মীকান্তপুর লাইনের একাধিক স্টেশনে ওভারহেড তারে কলাপাতা ফেলাতে রেলের ওভারহেড তারের বিদ্যুৎ সংযোগ ব্যাহত হয়ে শিয়ালদহ থেকে লক্ষ্মীকান্তপুর, কাকদ্বীপ, নামখানাগামী ট্রেন চলাচল বন্ধ। ট্রেন চলাচল ব্যাহত হওয়ায় সকাল থেকেই ওই লাইনের একাধিক স্টেশনে ভিড় হয় রেল যাত্রীদের।